নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কান্না হাসির এই খেলা ঘরে।আমি এক জীবন্ত মাটির পুতুল।সব খেলা সাঙ্গ হবে একদিন।অপূর্ণ স্বপ্নদের কাকুতি থেমে যাবে।মায়ার পৃথিবীর সাথে হবে চির ছাড়াছাড়ি।

ক্লে ডল

বিধাতা তোমার দয়ার আশায় ই প্রতিটি দীর্ঘশ্বাসের শেষে নতুন স্বপ্ন বুনি।

ক্লে ডল › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাঠানুভূতিঃ হুমায়ুন আজাদের "আমারা কি এই বাঙলাদেশ চেয়েছিলাম।

২১ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৪



হুমায়ুন আজাদের “আমরা কি এই বাঙলাদেশ চেয়েছিলাম” পড়ার পর আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়েছে বইটা ১৪ বছর আগে লেখা আর ৪২ বছরের ইতিহাস। আমার কাছে মনে হয়েছে একেবারে হুবহু বর্তমান। বইটাকে আমার মনে হয়েছে ভীষণ নিরপেক্ষ, নির্মোহ এক সমালোচনা গ্রন্থ। যারা বাংলাদেশ নামক এ অসহায় দেশের অসহায়ত্বের ক্রমইতিহাস নিরপেক্ষভাবে জানতে আগ্রহী তাদের জন্য বইটা অবশ্য পাঠ্য।

বইটি শুরু হয়েছে ২০০২ এর ‘অপারেশন ক্লিন হার্টের সমালোচনা দিয়ে। তারপর লেখক ফিরে গেছেন একাত্তর এ।
একে একে করে গেছেন একসময়ের উত্তেজিত ছাত্রনেতা শেখ মুজিবের পরবর্তীতে রাজনৈতিক মহানেতা হয়ে ওঠার গল্প, তার উত্থানের গল্প, প্রস্থানের গল্প। যারা শেখ মুজিবকে একেবারে দেবতার আসনে বসিয়ে দেন আবার যারা তাকে শুধু কুচক্রীর কাতারে ফেলে দেন তাদের জন্য লেখকের কথাগুলো অসাধারণ লেগেছে মুজিবকে আমরা প্রচণ্ড সমালোচনা করতে পারি, তিনি সমালোচনার উর্ধে নন, অনেক সীমাবদ্ধতা তাঁর ছিল; কয়েক দশক ধ'রে তো কোটি কোটি বাম প্রাণভ'রে তার সমালোচনা করছে। কিন্তু সত্য হচ্ছে তিনি মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক, বাঙলাদেশের মহাস্থাপতি। …...মুজিবের হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে নৃশংস ও অভাবিত হত্যাকাণ্ডগুলোর একটি। সবচেয়ে বিশাল ও ভারি যে লাশটি বাংলাদেশ নিজের বুকের কবরে বয়ে চলছে, সেটি মুজিবের লাশ

মেজর জিয়াকে লেখক স্রেফ ঐতিহাসিক আকস্মিকতা এবং পরিস্থিতির ভাগ্যবান পুত্র বলেছেন। একজন সেনানায়কের কাছ থেকে দেশনেতাসুলভ আচরণ প্রত্যাশা করা যায় না সেটাই লেখক বোঝাতে চেয়েছেন এভাবে জিয়ার কাছে চাইতে পারি না যে তিনি হবেন জর্জ ওয়াশিংটন। জিয়া যা, তাই হয়েছিলেন- মিনি আইউব খাঁ। সামরিক একনায়কেরা দেখা দেয় দেবদূতের মতো, এমনকি ইয়াহিয়ার মতো খুনিকেও মনে হয় জেসাস ক্রাইস্ট। তারা বলে, দেশকে উদ্ধারের জন্যেই তারা দায়িত্বভার নিয়েছে, তাদের কোন ক্ষমতার লোভ নেই, সৈনিক থাকতেই তারা পছন্দ করে,যথাসময়ে তারা জনগণেত হাতে ক্ষমতা দিয়ে আবার সেনানিবাসে ফিরে যাবে। যথাসময়টি আর আসে না

পেটে, মগজে, শিরা, উপশিরায় ভারতকে বহন করে মুখে মুখে ভারত বিদ্বেষ একধরণের ভণ্ডামি লেখক দারুনভাবে তুলে ধরেছেন এ বইয়ে।

স্বৈরাচারে বহুমাত্রিকতা দানকারী এরশাদেরও সমালোচনা করেছেন কঠোর ব্যঙ্গাত্মকভাবে।
শেখ হাসিনার কথা বইয়ে কম এসেছে। প্রত্যেকের শাসনামলের শুরুতে প্রধান বিচারপতিদের কথাও উঠে এসেছে।বইয়ের ইতি টেনেছেন আবারো অপারেশন ক্লিন হার্টের নিন্দা, বিএনপি জামাত জোটের নিন্দা করে।

মুক্তিযুদ্ধ, শেখ মুজিবের শাসন, মেজর জিয়ার শাসন, এরশাদ, শেখ হাসিনা, বেগম জিয়ার শাসনকালের বিবরণ তির্যক ভাষায় ক্রমানুসারে বর্ণনা করেছেন।

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৭

রাজীব নুর বলেছেন: বইটা আমি পড়িনি।
পড়তেই হবে।

২১ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:০৮

ক্লে ডল বলেছেন: হ্যাঁ পইড়েন অবশ্যই।

২| ২১ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:০২

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: এটি হুমায়ুন আজাদের আরেকটি অনবদ্য গ্রন্থ, যাতে দেশের প্রতি গভীর প্রেম ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ফুটে ওঠেছে। ড. আজাদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা নতুন নয়। তার 'রাজনীতিবিদগণ' পড়ে হাসতে হাসতে কুটিকুটি। না পড়ে থাকলে পড়ে নিন - রসে টুইটুম্বুর।

নির্মোহ সমালোচনার কথা বলছেন? তিনি ছিলেন নিষ্ঠুরভাবে নির্মোহ, বাংলাদেশে আর কোন লেখক এমনভাবে লেখতে পেরেছেন কি না জানা নেই। এ নিষ্ঠুরতা তাকেও আঘাত করেছে। বললে অনেক কিছু বলতে হয়, কিন্তু এটিই তার জন্য শত্রু যোগাড় করেছে।

২১ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪০

ক্লে ডল বলেছেন: ঠিক বলেছেন। বইটিতে তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা স্পষ্ট। এ বইটিতেও বিশেষত এরশাদ এবং প্রধান বিচারপতিদের বর্ণনা পড়ে না হেসে পারিনি কিন্তু এই ভেবে কষ্ট হয়েছে আমারা ১৬ কোটি সাধারণ মানুষ এই গুটি কয়েক অসাধারণের খেলার পুতুল।

ঠিক আছে। বইটা পড়ব।

আপনার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা! :)

৩| ২১ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:০৯

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: বড় মাপের লেখক।






ভালো থাকুন নিরন্তর। ধন্যবাদ।

২১ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪১

ক্লে ডল বলেছেন: নিঃসন্দেহে।

আপনিও ভাল থাকবেন।

৪| ২১ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:২১

চাঁদগাজী বলেছেন:


"কিন্তু সত্য হচ্ছে তিনি মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক, বাঙলাদেশের মহাস্থাপতি। "

-মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক হচ্ছেন, স্বয়ং মুক্তিযোদ্ধারা, কোন একজন নন।

২১ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪৭

ক্লে ডল বলেছেন: মুক্তিযোদ্ধারা শুধু শেখ মুজিবের ডাকেই একতাবদ্ধ হয়েছিল। এক ডাকে প্রাণে বারুদ জ্বালানো এমন নেতা বাংলাদেশে অপরটি সৃষ্টি হয়নি। এমন কোন নেতা এদেশে নেই যার সাথে শেখ মুজিবের তুলনা হতে পারে।
রাজনৈতিক কোন দলপ্রধান হিসেবে তার ত্রুটি থাকতে পারে।

মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছিলেন মুজিবকে প্রাণে নিয়েই।

৫| ২১ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:২৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


যেই স্কেলে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, এটার সম্পর্কে ড: হুমায়ুন আজাদ ও শেখ সাহেবের ধারণা পরিস্কার হয়নি কোনদিন

২১ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২০

ক্লে ডল বলেছেন: বঙ্গবন্ধু তার যোগ্যতা এবং জনপ্রিয়তা অনুযায়ী জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেন নি। যে স্কেলে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, সে সম্পর্কে হয়ত তিনি ওয়াকিবহাল ছিলেন কিন্তু সে অনুযায়ী কাজ করতে পারেননি দালাল চাটুকারদের প্রভাবে।

৬| ২১ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:৪৫

আলআমিন১২৩ বলেছেন: মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছিলেন মুজিবকে প্রাণে নিয়েই -কথাটা সূন্দর বলেছেন । স্বাধীনতার পরেও বঙ্গবন্ধু শাসক না হয়ে বঙ্গবন্ধু হয়ে থাকলেই হয়তো ভালো হতো।

২২ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:১০

ক্লে ডল বলেছেন: যতার্থ বলেছেন। এত মহাকায় একজন ব্যক্তিত্ব নির্দিষ্ট কোন দলের হয়ে থাকতে পারেন না।

৭| ২১ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:৫১

জাহিদ অনিক বলেছেন: বই রিভিউ ভাল লাগে। পড়া হয় নি এটা এখনো। ঈদের ছুটিতে পড়ে ফেলব আশা রাখি ।

জিয়া যা, তাই হয়েছিলেন- মিনি আইউব খাঁ। - হুমায়ূন আজাদ ঠিকই লিখেছিলেন।

২২ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:৩০

ক্লে ডল বলেছেন: চমৎকার একটি বই। পড়বেন আশা করি।

শুভকামনা জানবেন।

৮| ২২ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১০:৩২

হাসান মাহবুব বলেছেন: বইটা পড়ি নি। আরেকটু বিস্তারিত লিখলে ভালো হতো।

২২ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:৪৮

ক্লে ডল বলেছেন: পরামর্শের জন্য কৃতজ্ঞ।

আপনার সার্বিক মঙ্গল কামনা করি। :)

৯| ২২ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:৫৩

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: এ বই 'দলকানা'গুলো পড়লেও উপকৃত হবে।

২৩ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১০:০২

ক্লে ডল বলেছেন: কাজ হলেও হহতে পারে তবে দলকানা তো কানা ই!

অসংখ্য ধন্যবাদ জুলিয়ান সিদ্দিকী। :)

১০| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:২২

কালীদাস বলেছেন: ক্লিনহার্টের সমালোচনায় কি বলছিল আরেকটু শেয়ার করতে পারেন? আগের দুই নেতার ব্যাপারে কমেন্ট করব না, ক্লিনহার্টের ব্যাপারে আমি আগ্রহী। ঐসময়কার জিনিষ ভালই মনে আছে, দেখি ড. আজাদ কি বলেছেন।

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:১১

ক্লে ডল বলেছেন: শুরুতেই লিখেছেন, বইটা তার কখনোই লেখা হয়ে উঠত না, যদি না দেশে তখনকার মত শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হত।

বইয়ের শুরু এবং শেষ ক্লিন হার্টের সমালোচনা দিয়ে।
"খুলে দেয়া হয়েছে 'অপারেশন ক্লিন হার্ট' নামক একটি নৃশংস প্রক্রিয়ার দরজা - দেশটি পরিণত হয়েছে আফ্রিকার জঙ্গলে।"

"বাংলাদেশ হয়ে উঠেছে বন্দীশিবির, বা গুলাগ দ্বীপপুঞ্জ। কলকারখানা বন্ধ করে সরকার খুলে বসেছে 'কারাগার ইন্ডাস্ট্রি'।".............

ক্লিন হার্টের সময়কার কথা আমার মনে থাকার কথা না।রাজনৈতিক কোন সমালোচনা আমার আগে পড়া হয়নি। বা এ বিষয়ে আগ্রহও কম।
তবে বইটি এত সরস করে লেখা এবং বক্তব্যের দৃঢ়তা এত বেশি যে আপনি শুরু করলে শেষ করে উঠবেন।
সুযোগ পেলে অবশ্যই পড়বেন।

অশেষ শুভকামনা আপনার জন্য।

১১| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:২৪

আখেনাটেন বলেছেন: দিন দিন এই কথাগুলো আরোও ভয়ঙ্করভাবে সত্যি হয়ে উঠছে। এই অাক্ষেপের তীব্রতার স্কেল হু হু করে বেড়েই চলেছে।

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:০১

ক্লে ডল বলেছেন: আমরা আমজনতা আক্ষেপ করে যায়!!
আমার কাছে বর্তমানকার সবচেয়ে বড় দুটো আশঙ্কার বিষয় হল, নিয়োগের ক্ষেত্রে দলীয়করণ আর বিচারের ক্ষেত্রে দলকানা মনোভাব।

১২| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:৪২

জেন রসি বলেছেন: হুমায়ূন আজাদকে আমার আবেগপ্রবণ লেখক বলে মনে হয়। তার লেখায় যৌক্তিক ব্যাখ্যার চেয়ে রাগের বহিঃপ্রকাশ বেশী থাকে বলেই মনে হয়েছে। তবে তিনি খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজ করে গেছেন। যার জন্য তাকে জীবনও দিতে হয়েছে।










১৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:০৯

ক্লে ডল বলেছেন: আমি তাকে আবেগপ্রবণ না বলে ঔদ্ধত্য বলব। একজন মেধাবী উচ্চশিক্ষিত মানুষ! রাগ প্রকাশ করুক। কিন্তু তা প্রকাশের মাঝে নমনীয়তা থাকা উচিৎ ছিল।

'নারী' পড়তে যেয়ে রেখে দিয়েছি শুধু এ কারণে।

১৩| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:১৩

কালীদাস বলেছেন: অপারেশন ক্লিনহার্টের ব্যাপারে এখন তেমন ডকুমেন্টেশন পেলাম না নেটে। আমার নিজের স্মৃতিতে যতটুকু মনে আছে বলি। আমি তখন এইচএসসি দিয়েছি, এডমিশন পরীক্ষাগুলো শুরু হবে সেজন্য প্রেপ নিচ্ছিলাম। প্রথমে খারাপ সাইডটা বলি যে কারণে এটাকে সাপোর্ট করা যায় না:

একটা ডেমোক্রেটিক দেশে আর্মি নামাতে হচ্ছে ক্রাইম কন্ট্রোলে, এটা জাতির জন্য মোটেও গৌরবের ব্যাপার না। মোটেও না। কোনভাবেই না। এই কাজটা করবে পুলিশ বা পুলিশের স্পেশাল ফোর্সগুলো। সেকেন্ড হচ্ছে ইনডেমনিটি আইন করাটা। লীগ তখন যতই প্রতিবাদ করুক না কেন, দলের এই কাজটা করার একমাত্র কারণ ছিল ভবিষ্যতের মামলা এড়ানো, ঝামেলা এড়ানো। ২০১৫ তে দেখলাম আইনটা রদ হয়েছে। সব লেভেলে উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ সৎ থাকলে এই কাজটা করতে হত না।


আর সাপোর্ট করা যায় কেন সেটা বলি: লীগের লোকজন ২০০১ পর্যন্ত রুট লেভেল যথেষ্ট ষন্ডামি দেখিয়েছে। ছোটখাট মাস্তানি, খুন, ছিনতাই, ডাকাতি কোন লেভেলে ছিল ভালই মনে আছে এখনও। জিনিষটা লীগ ইলেকশনে হারার পর সারেনি, ফাঁকা জায়গাটা খালি দখল করে দলের পান্ডাগুলো। জেলাশহরগুলোতে লীগের অফিসগুলো সিম্পলি নাম চেন্জড হয়ে দলের হয়ে যায়, অনেক সময় লোকও সেইম ছিল (বুদ্ধিমানদের জন্য)। ঐ অবস্হাতেই ক্লিনহার্ট শুরু হয়। ঐ দুইটা মাস পেপার খুললে কিছু লোকের আহাজারি দেখতাম ঢাকা শহরের। মানবতাবাদীরা এবং হয়রানির (!) শিকার হওয়া ভদ্রলোকেরা। কি টাইপের হয়রানি? ঢাকা শহরে হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেল দেখলেই কানে ধরে উঠবস করানো হত, এটা ছিল প্রেস্টিজ হ্যাম্পার। ফুটপাতে মোটরসাইকেল তখন কেউ তেমন একটা চালাত না, যে চেষ্টা করেছে সাথে সাথে জরিমানা, কপাল আরও খারাপ হলে কান ধরে উঠবস। ঐ দুইটা মাসই ছিনতাই মুটামুটি কমপ্লিট বন্ধ ছিল ঢাকার অনেক এলাকায়। কারণ আর্মির লোকজন কোন পার্টির সুপারিশন নিয়ে কাজ করত না ফিল্ডে, আইন ভাঙলে সবার জন্য সমান ট্রিট। সারা দেশে এক অবস্হা ছিল কিনা এখন পুরাপুরি মনে নেই, তবে এটা মনে আছে যে ঢাকার যে সাইডে আমরা থাকি, দলের লোকাল নেতারা এক পর্যায়ে জনৈক মন্ত্রীর কাছে তদবির করেছিল ক্লিনহার্ট বন্ধ করতে; লস সামাল দিতে পারছিল না আর, সব ক্যাডার জেলে।

দেশের প্রত্যেকটা মহল্লায় দুয়েকজন "অমুক ভাই" থাকে যাদের কাজই হল মাস্তানি করে বেড়ানো (বাংলাদেশের কালচার)। আমাদের আশেপাশের সব কয়টা এলাকার সব অমুক ভাইয়েরা জেলে গিয়েছিল ক্লিনহার্টে, দুয়েকটা লাকি ছিল ওগুলো দেশের বাইরে ভেগেছিল। কাজটা লোকাল পুলিশকে দেয়া হয়নি কারণ পুলিশের অনেকের ব্যাপারে ডাউট ছিল যে এরা লীগের লোক। দুঃখজনক হলেও করাপশনের এগেইনস্টে এই আর্মি প্রটেকশন খুব কার্যকর ছিল না, সম্ভবও না। অপারেশনের পারপাসই ছিল ক্রাইম কন্ট্রোল। অপারেশনের সাক্সেসের রেশ ধরেই আসে র‌্যাট এবং আরও পরে র‌্যাব, সেইম স্ট্রাকচারে।

ইনডেমনিটির ব্যাপারে আরেকটা কথা মনে পড়ল, জানিনা ড. আজাদ বইয়ে কথাগুলো উল্লেখ করেছেন কিনা। ক্লিনহার্টের ইনডেমনিটি ছিল সিম্পলি ক্ষমতা হারানোর পর পলিটিকালে জেল এড়ানোর ধান্দা। এই ক্ষেত্রে ১৯৭৫ এ মুশতাকের সাইন করা ইনডেমনিটি ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে জঘণ্য ক্রাইমগুলোর একটা। বঙ্গবন্ধুকে খুন করার মত সাহস তো দেখিয়েছেই, লোয়েস্ট ধরলেও সেনাবাহিনীর চেইন অফ কমান্ড ভাঙার জন্যও বিশাল শাস্তি প্রাপ্য হওয়ার কথা যাদের তাদের একজন রাষ্ট্রপ্রধান এভাবে মাফ করে কিভাবে? হাহ, পলিটিক্স। লীগের ৯৬ মেয়াদে আইনটার রদ করা ছিল খুবই ভাল একটা কাজ। মুশতাকের বিচার হওয়া উচিত ছিল, ঘৃণ্য রাজাকারদের সাথে এর পার্থক্য খুব বেশি না; যতদূর জানি ফাকিস্তানের সাথে কনফেডারেশনের চিন্তাও করেছিল নাকি দুয়েকবার।

এনিওয়ে, কমেন্টের জন্য থ্যাংকস। ভুলভাল কিছু বলে থাকলে আলোচনা চালানো যায় আজকের রাতটা :)

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:২৭

ক্লে ডল বলেছেন: বইয়ে ৭৫ এর ইনডেমনিটির কথা তিনি বলেননি। ঘটনাবহুল সে সময়ে, ওসমানী ও ভাসানি যে মোশতাক সরকারকে সমর্থন জানিয়ে অকৃতজ্ঞতা দেখিয়েছিল। তারপর চার নেতার খুন, জিয়ার ক্ষমতায় আসা এসবের বর্ণনার ভিড়ে সম্ভবত সে সময়ের ইনডেমনিটি কথা বাদ পড়ে গেছে। মীর জাফরের মত খন্দকার মোশতাকের নামও একটা গালি হওয়া উচিৎ ছিল আমার মনে হয়। এত বড় একটা চক্রান্ত সে করেছে , ইনডেমনিটিতে সাইন সে তুলনায় মামুলি!!
তবে ড. আজাদ ক্লিন হার্টের সময়কার ইনডেমনিটির কথা বলেছেন ‘দায়মুক্তির আইন'। অবশ্য এদেশে খুনিরা বরাবরই দায়মুক্ত।

আমি ২০০১ দুয়ের অরাজকতার কথা বলতে পারব না। তবে এখনকার নেতা পাতি নেতার মাস্তানি, দৌরাত্ম্যের কথা বলতে পারি। রাস্তার সামান্য অটোবাইক, ইঞ্জিনচালিত রিকশা আটকে চাঁদা নেওয়া আর গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে বড় অঙ্কের টাকা প্রার্থীর কাছ থেকে আদায় করা এক কথা নয়….
যোগ্যতার বদলে এখন টাকা আর দল দিয়ে পদ পাওয়া বা পদোন্নতি হচ্ছে। যা দীর্ঘমেয়াদে প্রভাব ফেলবে।

ভুলভাল কিছু বলেননি মনে হয়।
ক্লিন হার্ট সাপোর্টের যেসব কারণ দেখালেন আমার তো মনে হচ্ছে ক্লিন হার্ট ২ এখন ফরজ হয়ে গেছে। কিভাবে পরিবর্তন হবে, পরিবর্তিত হয়ে কি হবে তা বলতে পারব না, তবে দেশের শাসন ব্যবস্থায় পরিবর্তন হোক খুব করে চাইছি!!
এই দুই নেত্রী কেমন যেন একঘেয়ে হয়ে গেছে!!

অনেক ধন্যবাদ অলোচনায় আগ্রহ প্রকাশের জন্য। তবে দুঃখিত যে আমি যথাসময়ে আসতে পারিনি।

ভাল থাকবেন। :)

১৪| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৬

অনন্য দায়িত্বশীল আমি বলেছেন: নিঃসন্দেহে উনি জ্ঞানী কিন্তু আওয়ামী মানসিকতার তবে সেটা দোষের না কারণ নিরপেক্ষ বলে কিছু নেই। মেজর জিয়ার শাসন, এরশাদ, শেখ হাসিনা, বেগম জিয়ার শাসনকালের বিবরণ তির্যক ভাষায় দেয়ার কিছুই নেই কারণ এগুলো বাস্তবতা এবং এই বাস্তবতার হাত ধরেই আজকের গণতন্ত্র।

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১১:২৯

ক্লে ডল বলেছেন: নিরপেক্ষ বলে কিছু নেই? মানতে পারলাম না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.