নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাইকেল চালানো স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। ইহা ক্ষুধা উদ্রেক করে!

হঠাৎ ধুমকেতু

আমি মহিউদ্দিন খালেদ। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। পড়তে ভালোবাসি। নিজের একটা চিন্তা জগত আছে। সেখানে চারপাশের অনেক কিছু নিয়ে অনেক নিঃশব্দ আলোচনা হয়! সেই আলোচনা গুলোর সাথে বৃহত্তর জগতের সংযোগ ঘটাতে ইচ্ছে করে!

হঠাৎ ধুমকেতু › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমরা কি আরেকটা লঞ্চডুবি দেখার অপেক্ষায় থাকব??

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ২:০৮

২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখের প্রথম আলোর প্রথম পেজে ছাপা হওয়া ‘লঞ্চের যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ঠিক করবে মালিক না সরকার?’ শিরোনামের প্রতিবেদন টি যে বার্তা দিচ্ছে সেটা ভয়াবহ।সেই বার্তার অন্তরবার্তা মেনে বলি- আসুন আমরা আবার ফেসবুকে লঞ্চডুবির ভিডিও দেখার জন্য প্রস্তুত হই। গরিব ক্রীতদাস গুলো ডুবে মরলে আমার আপনার কি? আমি আপনি ত বড়লোক মানুষ! ইচ্ছা হলে প্লেনে চড়ে বাড়ি যেতে যেতে শালা কুত্তাদের মরণ চিৎকার দিয়ে পানিতে ডুবে যাওয়া দেখতে দেখতে বিনোদন নিতে পারি! নিম্ন আয়ের ক্ষমতাহীন ক্রীতদাস গুলোর এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার কি অধিকার?

প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ীঃ

১। বিআইডাব্লিওটিএ বলছে- বাড়তি যাত্রী বহন লঞ্চ দুর্ঘটনার অন্যতম কারন এবং ধারণ ক্ষমতার বেশি যাত্রী নিলে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

২। লঞ্চ মালিক দের সঙ্ঘটন বলছেন-অতিরিক্ত যাত্রী মালিকেরা কখনোই বহন করে না। সরকার যে যাত্রী সংখ্যা লিখে দেয় সেটাই আসল ধারণ ক্ষমতা নয়।

উপরের দুটি পয়েন্ট গভীর মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করুন। সরকারী প্রতিষ্ঠান বিআইডাব্লিওটিএ প্রতিটা লঞ্চে যাত্রী ধারণ ক্ষমতা নির্ধারন করে দিয়েছে যার ব্যত্যয় হলে কঠোর শাস্তির ঘোষণা দেয়া আছে। লঞ্চ মালিক দের সংঘটন সরকার কর্তৃক নির্ধারিত যাত্রী ধারণ ক্ষমতা না মেনে নিজেদের খেয়াল খুশিমত যাত্রী উঠায় এবং লঞ্চ ডুবিয়ে মানুষ হত্যা করে। কারন তারা সরকার ঘোষিত কঠোর শাস্তির আদৌ পরোয়া করেনা!

লঞ্চ মালিক রা যে সাধারণ মানুষ কে মানুষ হিসেবে না দেখে ক্রীতদাস বা কুত্তা বিলাই হিসেবে দেখে সেটা প্রতিবেদনে প্রকাশিত তাদের নিম্নোক্ত দুটো সংলাপেই পরিষ্কার।

সংলাপ-১
‘আমার জাহাজের দাম ১০ কোটি টাকা। অতিরিক্ত যাত্রী নিলে হয়ত এক লাখ টাকা বেশি পাওয়া যাবে। এজন্য আমি জাহাজ কে ডুবিয়ে দেব কেন?’

হিসাব টা টাকার। অতিরিক্ত যাত্রী নিলে এক লাখ টাকা না পেয়ে ২০ কোটি টাকা পেলে জাহাজ ডুবিয়ে দিতে কোন সমস্যা নাই। কেন সমস্যা নাই? জাহাজে যারা চড়ছে তারা ত কেউ তার মত মানুষ নয়। তারা ক্রীতদাস অথবা কুত্তা বিলাই।

সংলাপ-২

‘ আমাদের কোনো কর্মচারী অতিরিক্ত দামে টিকিট বিক্রি করছে-এমন অভিযোগ সত্য নয়। কেউ অভিযোগ করে প্রমান দিতে না পারলে তাকে নদীতে ফেলে দেব। প্রমান করতে পারলে আমার নাম বদলে দেবেন।’

অভিযোগ কারী দোষী হলে তাকে পানিতে ফেলে দেয়া হবে। সে নিজে দোষী হলে তার নাম ‘যদু’র বদলে ‘মধু’ রাখা হবে! কেন? কারন সে’ত বিরাট শাহেন শাহ! নাম বদলালেই তার বিরাট অপমান! আর যে অভিযোগ করছে সে কুত্তা বিলাই। ভদ্রলোক(!) কে অপমান করার জন্য তার নূন্যতম শাস্তি হওয়া উচিত ‘পানিতে ডুবিয়ে মারা’।

লঞ্চমালিক শ্রেণি’র পারিবারিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দীক্ষা বিষয়ে আমার জানা নেই ।কাজেই এদের উদ্যেশ্যে আমি কিছু বলবনা।
কিন্তু দেশের শিক্ষিত পরিবারে বড় হওয়া শিক্ষিত অফিসারকূল, যারা এসব নরপশুর কাছে নৈতিকতা বিক্রির টাকায় সামনের ঈদে গরু কোরবানি দেবার এবং বৌয়ের শাড়ি কেনার চিন্তা ভাবনা করছেন তাদের উদ্যেশ্যে বলছি- ভাইজান, আপনাদের কোরবানি আল্লাহ পাক কবুল করবেন না। কারন আপনাদের কোরবানি হচ্ছে মানুষ কোরবানি’র বিনিময়ে উপার্জিত টাকায় গরু কোরবানি! আশা করি আপনারা এদেশের সাধারণ জনগণ কে মানুষ ভাবেন। লঞ্চ মালিক দের মত ক্রীতদাস ভাবেন না।

আমরা যারা লঞ্চ মালিক বা সরকারী কর্মকর্তা কোনটাই নই, তারাও কিন্তু দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারি না। পত্রিকার রিপোর্ট থেকে এটা পরিষ্কার- সামনের ঈদে যাত্রীবোঝাই লঞ্চ না ডোবার জন্য সুস্পষ্ট কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না এবং সেক্ষেত্রে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন কোন না কোন যাত্রীবোঝাই লঞ্চ ডুবছেই(পরিসংখ্যানের নিয়মেই সবগুলো লঞ্চ ডুববে না)! এটা বোঝার পর ও আগেই প্রতিবাদ না করে আপনি যদি লঞ্চ ডোবার পর ফেসবুকে গরম গরম স্ট্যাটাস দিয়ে লাইক কামানোর জন্য বসে থাকেন তাহলে বলতে হবে আপনি নিজেও দেশের সাধারণ মানুষ কে অর্থাৎ নিজেকে মানুষ ভাবেন না। ক্রীতদাস, মতান্তরে ‘পিঠ ভর্তি লাথি এবং পেট ভর্তি ভাত খেয়ে তুষ্ঠ কুত্তা বিলাই’ ভাবেন।



মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:০২

আহসান২০২০ বলেছেন: একথা এখন আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে দেশ এবং এই দেশের মানুষ এখন ৭০, ৬৯ সালের চেয়েও বিভীষিকাময় জীবন-যাপন করছে।

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:৩৪

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: বিভীষিকা সময়ের সাথে আরো বাড়াতে না চাইলে দূর্নীতি’র বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে। কারন দূর্নীতিগ্রস্ত সমাজ কাঠামোয় ক্ষমতা এবং টাকালোভী মানুষ (আমলা, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, চাকুরিজীবি) রা এত বেশি শক্তি সঞ্চয় করতে পারে যে এদের মুখের কথাই আইন হয়ে যায়। একটা দেশের বিশাল জনগোষ্টী যখন ক্ষুদ্র একটা ‘নরকের কীট’ শ্রেণীর অশ্লীল লালসা পূরণ করার জন্য সজ্ঞানে অথবা অজ্ঞানে নিজের জীবন ব্যয় করে তখন সারাদেশ খুব স্বাভাবিক ভাবেই বিভীষিকাপূরি’তে পরিণত হয়।

২| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:৩৮

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: আমাদের দেশের সাংবাদিকরা তো শুধু সংবাদ পরিবেশন করেন । তাতে নৈতিকতার কোন মেসেজ আছে কি না তা দিয়ে তাদের কি দরকার !

সরবার বলবে লঞ্চমালিকদের দোষ - লঞ্চ মালিকরা বলবে - পাবলিক উঠে কেন ? আর পাবলিক বলবে - সরকার ব্যাবস্থা নেয় কেন ?

এই চক্র চলছে - চলতেই থাকবে ভ্রাতা ।

ভালো থাকবেন ।

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:২৫

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: আমরা সবাই ক্ষমতাশালীদের ক্রীতদাস। আমাদের চাইলেই পানিতে পানিতে চুবিয়ে, আগুনে পুড়িয়ে, কনক্রিটের তলায় চাপা দিয়ে মেরে ফেলা যায়।
আপনিও ভাল থাকবেন ভ্রাতা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.