নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাইকেল চালানো স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। ইহা ক্ষুধা উদ্রেক করে!

হঠাৎ ধুমকেতু

আমি মহিউদ্দিন খালেদ। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। পড়তে ভালোবাসি। নিজের একটা চিন্তা জগত আছে। সেখানে চারপাশের অনেক কিছু নিয়ে অনেক নিঃশব্দ আলোচনা হয়! সেই আলোচনা গুলোর সাথে বৃহত্তর জগতের সংযোগ ঘটাতে ইচ্ছে করে!

হঠাৎ ধুমকেতু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৃদ্ধং চিত্তচাঞ্চল্যং স্ত্রীং ঝাঁটাপিটং ( রম্য রচনা)

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৩০

বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতা চলিতেছে। বিচারক খায়েশ খান, প্রবৃত্তি রায় এবং উন্মোচন চৌধুরী যথাসময়ে এসে আসন অলঙ্কৃত করিলেন।



৩২ নম্বর সুন্দরী মঞ্চে আসিল। দেখিয়া ত তিন বিচারকের চক্ষু চড়কগাছ! ইহা কি প্রকারে সম্ভব??



খায়েশ খানের বয়স পঁয়তাল্লিশ এবং বিবাহিত। কিন্তু বিবাহিত এবং পঁয়তাল্লিশ বছর বয়স হইলেই যে মনের সমস্ত খায়েশ চাপা পড়িয়া যাইতে হইবে তাহা কে কহিয়াছে? কাজেই তিনি যূগলখাটে শয়নরত গিন্নি নাক ডাকানো শুরু করিলেই চোখ বন্ধ করিয়া সানি লিউনি’র কল্পনায় বিভোর হইতেন। কখনো কখনো এতটাই বিভোর হইতেন যে তাহার কল্পনা কাটিবার আগেই পাখি ডাকিত অর্থাৎ ভোর হইত!



খায়েশ খান দেখিলেন মঞ্চের উপর দাঁড়াইয়া আছে সানি লিউনি! খায়েশ খানের হৃৎকম্প বাড়িয়া গেল। তিনি খুক করিয়া একটি কাশি দিয়া কাশি আবার গিলিয়া ফেলিলেন।



প্রবৃত্তি রায়ের বয়স সাত-চল্লিশ। তিনিও বিবাহিত এবং প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রনের সাধনায় এখনো পুরাপুরি সফল হইতে পারেন নাই! সাধনার সময় যে ‘শয়তানী’ টা বারে বারে কামিনী রূপে আসিয়া তাহার সাধনায় বিঘ্ন ঘটাইত তাহার নাম কেটরিনা কেফ! শয়তানী কে মনের ‘পবিত্র সাধন ঘর’ হইতে তাড়াইবার নিমিত্ত যেসকল পন্থা তিনি অবলম্বন করিতেন তাহাতে বিশেষ ফল ত হইতই না, বরং শয়তানী ঘরের মধ্যে আরো বেশি করিয়া গাঁড়িয়া বসিত। শয়তানীর বসিবার ভঙ্গি দেখিয়া তিনি সাধনারত অবস্থাতেই চমকিয়া চমকিয়া উঠিতেন!



প্রবৃত্তি রায় দেখিলেন মঞ্চের উপর দাঁড়াইয়া আছে কেটরিনা কেফ! তাহাকে দেখিয়া তিনি তৎক্ষণাৎ চক্ষু মুদিয়া বিচারকের আসনে বসিয়াই প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রন সাধনায় রত হইলেন। ফলাফল- তিনি উভয় সঙ্কটে পড়িলেন। চক্ষু বন্ধ করিলেও চক্ষুর সামনে কেটরিনা । চক্ষু খুলিলেও চক্ষুর সামনে কেটরিনা ! প্রবৃত্তি রায় চুড়ান্ত অসহায় হইয়া বিড় বিড় করিয়া ‘চিত্ত চাঞ্চল্য প্রশমন মন্ত্র’ পাঠ করিতে লাগিলেন- বৃদ্ধং চিত্ত চাঞ্চল্যং স্ত্রীং ঝাঁটাপিটং! বৃদ্ধং চিত্ত চাঞ্চল্যং স্ত্রীং ঝাঁটাপিটং!!



উন্মোচন চৌধুরী র বয়স আটষট্টি এবং তিনি ই উপস্থিত বিচারক দিগের মধ্যে একমাত্র অবিবাহিত পুরুষ! অবিবাহিত হইবার কারনেই লাগাম ছাড়া কল্পনা করিবার পর ও উনার অপরিমিত সৃষ্টিশীল(!) মনের কোনও কোনায় একটু খানিও অপরাধবোধ জাগিত না এবং তাহার সাম্প্রতিক কল্প-আকাশে লাস্যময়ী যে তরুনী টি সম্প্রতি ডানা মেলিয়াছিল তাহার নাম পাখি! পাখীকে নিয়ে বৃদ্ধ চৌধুরী’র কল্পনা যে এতখানি পাখা বিস্তার করিয়াছে তাহার কিছুই পাখি জানেনা,বুঝেনা- বুঝেনা, সে বুঝে না!!



উন্মোচন চৌধুরী দেখিলেন মঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে আছে লাস্যময়ী পাখি! পাখিকে দেখিয়া তিনি বিচারকের আসন হতে উঠিয়া মঞ্চের দিকে প্রায় চলিয়াই যাচ্ছিলেন। পাশে উপবিষ্ট প্রবৃত্তি রায় হাত ধরিয়া থামাইলেন! বুড়ার ‘রুচির সূক্ষ্মতার অভাব’ দেখিয়া প্রবৃত্তি রায় রীতিমত ‘অসংস্কৃত’ বোধ করিলেন!



যে রমনী একই সময়ে তিন পুরুষ কে তিন রুপ দেখাইতে পারে সে অবশ্যই মানবী নয়! সে আসলে ডাইনী এবং পুরুষের চিত্ত চাঞ্চল্যের মিটার এর হাতে রহিয়াছে। প্রথম ভেলকি তেই তিন পুরুষের চিত্ত চাঞ্চল্যের প্রাবল্য লক্ষ্য করিয়া ডাইনি মুচকি হাসি দিল। তারপর তিনজনার ‘চিত্ত চাঞ্চল্য মিটার’ ঘুরাইয়া সর্বোচ্চ তে লইয়া গেল!



মিটার ঘুরাইবার ফল এরূপ ফলিল। তিন পুরুষের দুই বিবাহিত জন তাহাদের বর্তমান স্ত্রী দিগকের কাছে তথ্য গোপন রাখিয়া যথাক্রমে সানি লিউনি(!) এবং কেটরিনা কেফ(!) কে বিবাহ করিবার সিদ্ধান্ত গ্রহন করিলেন এবং অবিবাহিত জন বৃদ্ধ কালে আসিয়া তাহার কল্পনার সীমা পাখি(!) নামক ‘বাস্তব বেড়া’ দিয়ে চুড়ান্ত ভাবে টানিবার সিদ্ধান্ত নিলেন!



ডাইনী ঘটনা এমন ভাবে সাজাইল যাহাতে সকলে জানিল এবং বুঝিল তাহারা তিন জন ই একই দিনে আলাদা আলাদা রমনী কে বিবাহ করিতে যাইতেছে।



তিন বদলোক পাহাড়ের উপরে এক বিশাল তিনরুম ওয়ালা বাড়িতে বাসর রাত কাটাইবে বলিয়া সিদ্ধান্ত করিলেন । বদলোক দের লস্কর রা পুরা পাহাড়কে এমন আলোকমালায় সজ্জিত করিল যে প্রেতপুরি’র ডেকোরেটর রা পর্যন্ত দেখিয়া লজ্জা পাইল!







তিন অবগুন্ঠিতা নববধূ বাসর শয্যায় বসিয়া আছে সদ্য জীবন বিনিময় করা প্রাণনাথ দিগের অপেক্ষায়!



খায়েশ খান খাটে উঠিয়া নব্বধুর ঘোমটা উঠাইলেন এবং চিড়িক করিয়া লাফ দিলেন! এ কি!! কোথায় সুন্দরী সানি লিউনি! এ যে তার সতের বছরের অতি পুরাতন গিন্নী! খায়েশ খান হাত দুইটা সারেন্ডারের ভঙ্গিতে তুলিয়া ইঁক ইঁক করিতে লাগিলেন!



ডাইনী খায়েশ খানের গালে সজোরে চপেটাঘাত করিয়া বলিল- হারামজাদা এখনই তোর বৌ এর কাছে যা! পা ধরিয়া ক্ষমা চা। মাথায় যদি আর কোন দিন বদ মতলব ঢুকছে তাইলে পাজামার ফিতার সাথে ফাঁসি দিয়া মারমু!!



প্রায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রবৃত্তি রায়ের সাথেও হইল। শুধু ডাইনী কেন তাহাকে একটার জায়গায় দুইটা থাবড়া দিল সেটা জগতের আরো একটা অমিমাংসীত রহস্য হইয়া থাকিল।



উন্মোচন চৌধুরি অবিবাহিত থাকায় তাহার ক্ষেত্রে ডাইনীর প্রোগ্রাম কাজ করিল না এবং তিনি ঘোমটা উঠাইয়া চোখের সামনে জলজ্যান্ত পাখিকেই দেখিতে পাইলেন! নিঃশ্বাস দূরত্বে লাস্যময়ী পাখির সুগন্ধ পাইয়া তাহার হৃদস্পন্দন অত্যাধিক বাড়িয়া গেল এবং কোন কিছু উন্মোচন করার আগেই তিনি হৃদযন্ত্র বন্ধ হইয়া শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করিলেন।



মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:০০

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: বিচারক খায়েশ খান, প্রবৃত্তি রায় এবং উন্মোচন চৌধুরী
‘চিত্ত চাঞ্চল্য প্রশমন মন্ত্র’ পাঠ করিতে লাগিলেন- বৃদ্ধং চিত্ত চাঞ্চল্যং স্ত্রীং ঝাঁটাপিটং! বৃদ্ধং চিত্ত চাঞ্চল্যং স্ত্রীং ঝাঁটাপিটং!!
=p~

অসাম লিখেছেন ভ্রাতা +++++

ভালো থাকবেন :)

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৫২

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: ধন্যবাদ রায়হান ভ্রাতা। আপনি সবসময় উৎসাহ দেন এবং গঠনমূলক সমালোচনা করেন। এটা খুব ভাল লাগে।

২| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:০১

মামুন রশিদ বলেছেন: মজা পেয়েছি ।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:০৫

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: ধন্যবাদ মামুন ভাই

৩| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০১

আজমান আন্দালিব বলেছেন: বড়ই মজা পেলুম।

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৮

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আন্দালিব ভাই।

৪| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:০২

সুমন কর বলেছেন: মজার। !:#P ভাল লিখেছেন।

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৯

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ সুমন ভাই।

৫| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৩৫

এম এম করিম বলেছেন: মজাদার নাম............মজার গল্প।

++++

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫০

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ করিম ভাই।

৬| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪০

জেরিফ বলেছেন: মজা পেলুম ।

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫১

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।

৭| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩১

আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: হেব্বি, হেব্বি। কোন কথা হবে না।

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫২

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: হুম! হালুম!!

৮| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৩

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: :) :) :)

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৩

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: হুম! হালুম!!

৯| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:২৫

আদম_ বলেছেন: মাইর হইছে তয় সাউন্ড হয় নাই........।

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৩

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: ইনফ্রাসনিক সাউন্ড!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.