নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাইকেল চালানো স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। ইহা ক্ষুধা উদ্রেক করে!

হঠাৎ ধুমকেতু

আমি মহিউদ্দিন খালেদ। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। পড়তে ভালোবাসি। নিজের একটা চিন্তা জগত আছে। সেখানে চারপাশের অনেক কিছু নিয়ে অনেক নিঃশব্দ আলোচনা হয়! সেই আলোচনা গুলোর সাথে বৃহত্তর জগতের সংযোগ ঘটাতে ইচ্ছে করে!

হঠাৎ ধুমকেতু › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুক্তির গান- যুগে যুগে

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:১০

-আ...আমি বব হেলার কে ভালোবাসি বাবা!



-জেনেশুনে তুই একজন আউট ল কে বিয়ে করবি?



-বাবা, মা কিন্তু একজন আউট ল কে বিয়ে করেছিল! জেনে শুনেই!!



বিখ্যাত ওয়েস্টার্ণ গল্প ‘আউট ল’ তে বাবা বিল হাডসন এবং তার উনিশ বছর বয়সী কন্যা লরা হাডসনের কথোপকথন। গল্পের নায়ক যে বব হেলার সেটা বলাই বাহুল্য। ওয়েস্টার্ণ গল্পে বব হেলার এর মত আউট ল রাই নায়ক। সুন্দরী লরা হাডসন রা এদেরই প্রেমে পড়ে।



এই আউট ল দের চরিত্রের প্রধান দুইটা দিক। এক- এরা শত্রু কে কখনো ক্ষমা করে না। যে শত্রু তার স্ত্রী কে হত্যা করেছে, সন্তান কে হত্যা করেছে, ভাই কে হত্যা করেছে, বাবা কে হত্যা করেছে, বাড়ী জ্বালিয়ে দিয়েছে তাকে সে আজ হোক কাল হোক হত্যা করবেই। দূই- এরা কাপুরুষ নয়। এরা শত্রুকে কখনো নিরস্ত্র অবস্থায় অথবা পেছন থেকে গুলি করে হত্যা করবে না।



এদের চরিত্রের দ্বিতীয় দিক টার দিকে তাকালে বুঝা যায় এরা মানুষ হিসেবে উন্নত। মানুষ হিসেবে উন্নত না হলে কেউ তার পরম শত্রুকে নিরস্ত্র অবস্থায় বাগে পাবার পরেও তার হাতে একটা লোডেড পিস্তল তুলে দিয়ে বলতে পারে না-হয় মার, অথবা মর!



এই উন্নত মানুষ গুলোর আউট ল তে পরিণত হবার কারন কি? সবচেয়ে গ্রহনযোগ্য কারন হল- প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থা সব মানুষের সম অধিকার তথা সব মানুষের জন্য আইনের সম প্রয়োগ নিশ্চিত করতে পারে না।



সভ্যতার প্রয়োজনেই রাষ্ট্রকাঠামো, সমাজ কাঠামো এসব নির্মান করা হয়। কিন্তু এ কাঠামো ধরে রাখার দায়িত্ব যে মানুষের, ক্ষমতার স্পর্শে সে মানুষের ভেতরে জেগে উঠে অসভ্যতা! অসভ্যতা যখন রাষ্ট্র এবং সমাজের আইন কে স্পর্শ করে তখন আইন আর সবার জন্য সমান থাকে না। আইন যখন সবার জন্য সমান থাকে না তখন আইন সবাই কে সুরক্ষা দেয় না। সেক্ষেত্রে আইনের আশীর্বাদ বঞ্চিত মানুষ টি যখন বিপদে পড়ে তখন সভ্যতার মুখোশে লুকিয়ে থাকা অসভ্যতার চেহারা তার সামনে নগ্ন ভাবে ধরা পড়ে। অসভ্যতার এ নগ্ন দৃশ্যের অত্যাচার মানুষ টার মস্তিষ্ক কে এক ধরনের পরিবর্তন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নিয়ে যায়। মস্তিষ্ক যখন পূনরায় সাম্যাবস্থায় ফিরে আসে তখন নিম্নে উল্লিখিত দূ’টি ভাষার যে কোন একটি ভাষায় মানুষটার মস্তিষ্ক তার সাথে কথা বলে-



১। পৃথিবীতে দূর্বল শ্রেনীর মানুষ কে সব সময় শক্তিশালী শ্রেনীর মানুষের দাস হয়ে থাকতে হবে। দাস হয়ে ভাল থাকার একমাত্র উপায় হল প্রভু শ্রেণীর মন যূগিয়ে চলা। কাজেই প্রভু শ্রেণীর লোকের ইচ্ছা এবং নির্দেশনা অনুযায়ী চোখ কান নাক গলাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ বন্ধ রেখে মুখে তেলতেলে হাসি ফুটিয়ে প্রভু শ্রেনীর লোকের সামনে দাঁড়াতে হবে। প্রভু শ্রেণীর বিধান কেই অনস্বীকার্য জাগতিক বিধান বলে মান্য করতে হবে এবং এই মান্য করার ফল হিসেবে নিজের জীবনে কোন সাঙ্ঘাতিক বিপর্যয় নেমে আসলে সেটাকে নিয়তির বিধান বলে মেনে নিতে হবে!



২। পৃথিবীতে কোন মানুষ ই অন্য মানুষের দাস হয়ে জন্মগ্রহণ করেনা। অশিক্ষা, কুসংস্কার এবং কাপুরুষতার কারনেই একজন মানুষ আরেকজন মানুষের দাসে পরিণত হয়। যে দাসে পরিণত হয় তার ভূমিকা টাই এখানে মুখ্য। তার অশিক্ষা, কুসংস্কার এবং অবচেতন মনের অহেতুক ভয় তাকে প্রথমত মানসিক ভাবে দাসে পরিণত করে। মানুষ যখন মানসিক ভাবে দাসে পরিণত হয় তখন সে নিজে নিজের যোগ্যতা বিচার করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। নিজেকে নিজে বিচার করার ক্ষমতা যখন কেউ হারিয়ে ফেলে তখন তাকে যে কেউ বিনে পয়সায় শুধুমাত্র প্রশংসা দিয়েও কিনে নিতে পারে! যে সমাজে মানুষ বেচাকেনা হয় সে সমাজে মানুষ কখনো মানুষের মর্যাদা নিয়ে বাস করে না। সেখানে মূর্খরা দাস এবং ধূর্ত রা প্রভু হিসেবে যার যার অবস্থানে নিজেকে শৃঙ্খলিত করে রাখে। কাজেই অশিক্ষা, কুসংস্কার এবং অবচেতন মনের অহেতুক ভয় থেকে যদি মানুষের চিত্ত কে মুক্ত করা যায় তাহলে দাস শ্রেণী সমাজ থেকে বিলুপ্ত হয়। যে সমাজে দাস শ্রেণী নেই, সে সমাজে প্রভু শ্রেণী ও নেই!



কোন মানুষের মস্তিষ্ক যদি তার সাথে দ্বিতীয় প্রকার ভাষায় কথা বলে তখন নিজের অজান্তেই সেই মানুষের মনটা মুক্ত হয়ে যায়। সে তখন সমাজের সিংহ ভাগ দাস মানসিকতার মানুষের সাথে আর নিজেকে মানিয়ে চলতে পারে না। তাতে অবশ্য তার খুব একটা অসুবিধা হয় না। কারন তার ব্যক্তিগত আনন্দ অথবা দুঃখের জন্য সে কারো উপর নির্ভর করে না।



মুক্ত মনের মানুষের সংখ্যা পৃথিবীতে সব সময় কম। কিন্তু তাই বলে পৃথিবীতে তাদের অবদান কম নয়! মুক্তমনের মানুষরাই পৃথিবী টাকে যুগে যুগে চূড়ান্ত অধঃপতনের হাত থেকে রক্ষা করে আসছে। ‘মুক্তির গান’ এর একটুকরো অগ্নি শিখা অন্ধকার পৃথিবীর উপর দিয়ে আজো উড়াউড়ি করে বলেই পৃথিবীটা শেষ পর্যন্ত তলিয়ে যায় না চূড়ান্ত অশ্লীলতার তলায়।

মন্তব্য ১৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:২৮

মামুন রশিদ বলেছেন: ‘মুক্তির গান’ এর একটুকরো অগ্নি শিখা অন্ধকার পৃথিবীর উপর দিয়ে আজো উড়াউড়ি করে বলেই পৃথিবীটা শেষ পর্যন্ত তলিয়ে যায় না চূড়ান্ত অশ্লীলতার তলায়।


সুন্দর ।

২| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৪৪

আমি তুমি আমরা বলেছেন: চমতকার বলেছেন

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:০৫

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

৩| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৫৬

হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লিখেছেন।

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:০৬

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: ধন্যবাদ হাসান মাহবুব ভাই। আপনার ভক্ত আছি!

৪| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:১৯

সুমন কর বলেছেন: ভালো বলেছেন। সহমত।


শিরোনামের বানানে, যুগে যুগে হবে। সময় করে ঠিক করে দিয়েন।

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:০৭

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন ভাই। ঠিক করে দিছি!

৫| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৪২

কলমের কালি শেষ বলেছেন: জোশ বলেছেন । +++

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:০৭

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

৬| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৫৩

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন ভ্রাতা । ২য় ভালোলাগা +

শুভেচ্ছা :)

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:০৮

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভ্রাতা।

৭| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪১

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: অসাধারণ একটি পোস্ট ভাই!! মন্তব্যে আপনারই পোস্টের কয়েকটা লাইন দিতে চাইলাম। কিন্তু কোনটা ছেড়ে কোনটা নিই.... একেবারে আমার বলাটা বলে দিলেন.....! B:-)

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:০৯

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ বোন। আপ্লুত!

৮| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:২৮

রুমি৯৯ বলেছেন: মুক্ত মনের মানুষের সংখ্যা পৃথিবীতে সব সময়
কম। কিন্তু তাই বলে পৃথিবীতে তাদের অবদান
কম নয়! মুক্তমনের মানুষরাই
পৃথিবী টাকে যুগে যুগে চূড়ান্ত অধঃপতনের
হাত থেকে রক্ষা করে আসছে। ‘মুক্তির গান’
এর একটুকরো অগ্নি শিখা অন্ধকার পৃথিবীর
উপর দিয়ে আজো উড়াউড়ি করে বলেই
পৃথিবীটা শেষ পর্যন্ত তলিয়ে যায় না চূড়ান্ত
অশ্লীলতার তলায়।......চমত্কার !

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:১০

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

৯| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৩১

অতঃপর জাহিদ বলেছেন: অসাধারণ লাগলো, মুক্তি চাই সব সময় কিন্তু মুক্ত মনারা কি আনন্দ, দুঃখকষ্ট এর জন্য কারো উপর নির্ভরশীল না সেজন্যই কি এরা উদাসীন থাকে।

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:১২

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: মুক্তমনা দের কাছে আসলে আমরা প্রত্যাশা করি বেশি। শুধু মুক্তমনাদের কাছে প্রত্যাশা করে বসে না থেকে আমরা নিজেরাও চেষ্টা করতে পারি মুক্তমনা হতে! তাহলেই ‘দেয়াল’ আস্তে আস্তে ভেঙ্গে পড়ে!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.