নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাইকেল চালানো স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। ইহা ক্ষুধা উদ্রেক করে!

হঠাৎ ধুমকেতু

আমি মহিউদ্দিন খালেদ। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। পড়তে ভালোবাসি। নিজের একটা চিন্তা জগত আছে। সেখানে চারপাশের অনেক কিছু নিয়ে অনেক নিঃশব্দ আলোচনা হয়! সেই আলোচনা গুলোর সাথে বৃহত্তর জগতের সংযোগ ঘটাতে ইচ্ছে করে!

হঠাৎ ধুমকেতু › বিস্তারিত পোস্টঃ

আপনার সন্তান কে কারা পড়াচ্ছেন?

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:১১

শিশুটার বয়স চার বছর। শিশুটা আজকে প্রথম বাবার হাত ধরে স্কুলে যাবে। মা তাকে নতুন সেলাই করা স্কুলের জামা পরিয়ে দিয়েছে। চুল আঁচড়ে দিয়েছে। তারপর ছোট্টমনির ব্যাগের ভেতর পানির বোতল টা ভরে দিয়েছে। ছোট্টমনির চোখে মুখে আনন্দ এবং উত্তেজনার ছাপ! শুরু হতে যাওয়া জীবনের এ নতুন অধ্যায় কে সে স্বাগত জানিয়েছে।

শিশু আজ প্রথম স্কুলের গেট পার হয়ে ভেতরে ঢুকবে। এই স্কুল ই শিশুর জন্য খুলে দেবে সারা পৃথিবীর দরজা। এই স্কুলেই শিশু মাতৃভাষা বাংলা শুদ্ধভাবে লিখতে এবং পড়তে শিখবে। এই স্কুলেই শিশু আন্তর্জাতিক ভাষা ইংরেজি শিখবে। এই স্কুলেই শিশু বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী এবং নিরপেক্ষ ভাষা গণিত শিখবে। এবং এই স্কুলেই শিশু বিশ্বজয়ের ভাষা ‘ভালোবাসা’ শিখবে। হ্যাঁ, জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মানুষ কে ভালবাসতে না পারলে বিশ্ব কে জয় করা সম্ভব নয়।

কিন্তু শিশুকে স্কুলে এসব কে শেখাবেন?

স্কুলে শিশুকে শিক্ষাদানের দায়িত্বে যারা আছেন তাদের সম্পর্কে আমরা কতটুকু জানি?

স্কুলে যিনি বাংলা পড়ান তার কি বাংলা বিষয়ে আগ্রহ আছে নাকি বাংলার চেয়ে ভাল সাবজেক্ট(?) তাকে পড়াতে দেয়া হয় নাই বলে মনে মনে তিনি প্রিন্সিপালের চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করেন? ঘটনা যদি এরকম হয় তাহলে এই শিক্ষক বা শিক্ষিকার হাত থেকে আপনার শিশুকে ‘উদ্ধার’ করা উচিত।
স্কুলে যিনি ইংরেজি পড়ান তিনি নিজে কি এই ভাষাটার চর্চা করেন? আমি ইংরেজির পণ্ডিত না। কিন্তু একেবারে বাস্তব অভিজ্ঞতায় বেসিক গ্রামার জানেন না এরকম শিক্ষক কে স্কুলে ইংরেজি পড়াতে দেখেছি। ভুল জিনিষ শৈশবে একবার মাথায় ঢুকে গেলে বের করা কঠিন।পরে দেখবেন মাস্টার্স পাশ করার পর আপনার ছেলে ইংরেজি তে ইমেইল লিখছে- আই উইল বি ডু দিস! হাসবেন না। এগুলো চোখে দেখা জিনিষ।

স্কুলে যিনি গণিত পড়ান তিনি কি গণিত বিষয় টা উপভোগ করেন? নাকি কোচিং সেন্টারে গণিতের বাজার ভাল দেখে পড়ানোর জন্য গণিত বেছে নিয়েছেন? তিনি কি নিজে বুঝে অঙ্ক করান নাকি নোটবই দেখে অঙ্ক মুখস্ত করে এসে অঙ্ক করান? বই থেকে যে অঙ্কটি তিনি এইমাত্র করালেন সেই রকম আরেকটা অঙ্ক বানিয়ে দিলে উনি নিজেই কি সেটা করতে পারবেন? ‘গণিত জানেনা অথচ গণিত পড়ায়’ এরকম গণিত শিক্ষকের হাতে সন্তানের গণিত শিক্ষার ভার দিলে তাকে আজীবন কষ্ট পেতে হবে। জীবনের কোন অঙ্কই সে মেলাতে পারবে না!

একজন মানুষ যে বিষয়েই লিখুক বা যে বিষয়েই কথা বলুক না কেন তার একেবারে মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গি সে প্রকাশ করবেই। চুম্বকের যেমন চৌম্বক ক্ষেত্র মানুষের সেরকম ‘দৃষ্টিভঙ্গি ক্ষেত্র’! একটা মানুষ যখন চলে তার ‘দৃষ্টি ভঙ্গি ক্ষেত্র’ ও তার সাথে সাথে চলে।একজন মানুষ যখন কথা বলে তার দৃষ্টিভঙ্গি ক্ষেত্র ও তার সাথে সাথে কথা বলে! কাজেই আপনাকে দেখতে হবে যে শিক্ষক বা শিক্ষিকা আপনার সন্তান কে পড়াচ্ছেন তিনি সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গির লোক কিনা? ভুলেও মনে করবেন না- ‘উনি ত আমার বাচ্চাকে অঙ্ক শিখাচ্ছেন, তার সাম্প্রদায়িকতা অসাম্প্রদায়িকতায় কি আসে যায়?’ অঙ্ক শেখাতে গিয়েই সাম্প্রদায়িক মানসিকতার শিক্ষক তার দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ কোন না কোন মুহুর্তে ঘটাবেন এবং আপনার বাচ্চার মন কে কলুষিত করবেন।

কাজেই সতর্ক হোন। আপনার বাচ্চার স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা দের সম্পর্কে খোঁজ খবর নিন। পারলে মাঝে মধ্যে উনাদের সাথে কথা বলুন।
মনে রাখবেন, চাকরি করে আপনি দুনিয়া উল্টাই দেবেন না। চাকরির পাশাপাশি এগুলাও বড় দায়িত্ব।

এই অসম্ভব সুন্দর মহাবিশ্ব যিনি সৃষ্টি করেছেন তাঁর মহিমা বুঝতে চাইলে আপনাকে মুক্ত মনের মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। এবং আপনার সন্তান কে মুক্ত মনের মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চাইলে শুরুতে আপনার ভূমিকাটাই সবচেয়ে জরুরী।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৫৫

ঢাকাবাসী বলেছেন: নিজে ব্যাক্তিগত ভাবে চেক করে দেখেছি ৯৯% শিক্ষক ভাল ভাবে বাংলাই জানেনা, ইংরেজীর অবস্হা ভয়াবহ। এরা পড়ানোর চাইতে ছুটি, বোর্ড অপিসে গিয়ে বদলী পদোন্নতীর তদবির, প্রাইভেট পড়ানো, পলিটিক্স এসবেই বেশি আগ্রহ। মাগার কিছুই করার নেই এইসব হজম করতে হবে, ডিজিটাল লেখাপড়া! চিন্তার কিছু নেই নাহিদের হুকুমে সবাই জিপিএ সাড়ে পাঁচ! জয়বাংলা।

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৮

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: মৌলিক লেখাপড়া না শিখলে জিপিএ ধুয়ে পানি খেলেও কলিজা শুকনা থাকবে। শিক্ষিত না হলে প্রযুক্তির সেবাও নেবার উপায় নাই। অন লাইনের সুবিধাও শিক্ষিত রাই নিচ্ছে। যাদের ভাষা জ্ঞান নাই তারা মুরাদ টাকলামি করছে । যাদের যুক্তিবোধ নাই তারা গালাগালি করে শত্রু কে পরাস্ত করার চেষ্টা করছে। মৌলিক লেখাপড়া না জানলে এবং সুন্দর মনের মানুষ তৈরি না হলে প্রযুক্তি ভয়ঙ্কর বুমেরাং!

২| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৪৮

সকাল হাসান বলেছেন: এখনকার যুগে জ্ঞান বা শিক্ষার কোন দাম নাই! আছে শুধু অর্থের দাম!

আর এই অর্থটা পাওয়ার জন্য যতটুক জ্ঞান লাগবে ততটুক হইলেই সবাই খুশি! সেই জ্ঞান বা শিক্ষা শিক্ষিত লোক দিচ্ছে না মূর্খ লোক দিচ্ছে সেটা নিয়ে কে ভাবে বলেন!

আমি দুইবছর ধরে একই ইয়ারে একই সেমিস্টারে পড়ে আছি! কারন আমাদের ল্যাব না করিয়ে নাম্বার দিয়ে পাশ করিয়ে দিচ্ছে, আর আমি সেই বিনামূল্যে নাম্বার নিতে কোনভাবেই রাজি না! ল্যাব করাইতে পারে না যে তার কাছ থেকে বিনামূল্যে কেন নাম্বার হাতিয়ে নিব! আমি তো শিখতে আসছি, নাম্বার পেতে না - কিন্ত কে শুনে কার কথা! আমারেও ফেল করায়া রাইক্ষা তারা ঠিকই চলতাছে - আর বাসা থেইক্কা আমার 'অতি মাতবরি' করার গালি আমি খাইতেই আছি!

কিন্তু কেউ ভাবে না, যে এইভাবে পাশ করলে খালি নাম্বারই পাব, কোন কিছু শিখতে পারব না!

আমাদের সোসাইটির উপর আর এই শিক্ষাব্যবস্থার উপর আমি টোটালি হতাশ! এইভাবে আর যাই হোক, উন্নতি সম্ভব না!

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৬

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: হতাশ হলে হবেনা সকাল হাসান। কারন টা নিয়ে ভাবতে হবে। নিজের অবস্থান থেকে বলতে হবে আপনি যেটা অনুভব করবেন। শব্দের পেছনে যতক্ষণ যুক্তি থাকে ততক্ষণ শব্দ সাঙ্ঘাতিক একটা শক্তি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.