নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাইকেল চালানো স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। ইহা ক্ষুধা উদ্রেক করে!

হঠাৎ ধুমকেতু

আমি মহিউদ্দিন খালেদ। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। পড়তে ভালোবাসি। নিজের একটা চিন্তা জগত আছে। সেখানে চারপাশের অনেক কিছু নিয়ে অনেক নিঃশব্দ আলোচনা হয়! সেই আলোচনা গুলোর সাথে বৃহত্তর জগতের সংযোগ ঘটাতে ইচ্ছে করে!

হঠাৎ ধুমকেতু › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘কুতুব + নীলিমা’

১১ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:২৪

জুনায়েদ আলাভোলা কিছিমের মানুষ। কাজেই বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করে সে সিদ্ধান্ত নিল লেখক হবে! ফেসবুকে লেখালেখি করে তার হাত পেকেছিল। তার চারশ বিশ জন ফলোয়ার ও ছিল। কাজেই টিউশনি করার ফাঁকে ফাঁকে ‘হনুমানের উল্লাস’ নাম দিয়ে জুনায়েদ একটা উপন্যাস লিখে ফেলল।

নতুন লেখক কে বই প্রকাশ হবার পর পোস্ট ম্যানের দায়িত্ব পালন করতে হয়। হাতে সময় থাকলে এই দায়িত্ব পালনে আনন্দ আছে। জুনায়েদের হাতে যেহেতু প্রচুর সময় ছিল সেহেতু সে ফেসবুক ফ্রেন্ড, ফেসবুক গার্ল ফ্রেন্ড(!), ফেসবুক মুরব্বি সবার কাছে প্যাকেট করে করে কুরিয়ারে ‘হনুমানের উল্লাস’ এর কপি পাঠাতে লাগল। বলা বাহুল্য এরা সবাই জুয়ায়েদের লেখায় লাইক দিত। লাইক দিত না এরকম একজন ইনবক্স করে জুনায়েদের কাছে সৌজন্য কপি চাইলে জুনায়েদ গালি দিয়েছিল- শাআলা!
সেদিন ও জুনায়েদ কুরিয়ার অফিসে গিয়েছে। আজকে বই যাবে দুই ঠিকানায় দুইটা। একটা খুলনায় তার ছোটবেলার বন্ধু কুতুবের কাছে। আরেকটা নাটোরে নীলিমা’র কাছে! নীলিমার সাথে ফেসবুকে পরিচয়। জুনায়েদের লেখা নীলিমার কেন ভাল লাগে এই প্রশ্নের জবাবে নীলিমা বলেছে- আপনার লেখায় প্রেমের কচলাকচলি কম। আবার পড়ে হাসি ও আসে! এটুক শুনে জুনায়েদ গলে গিয়েছে। ধুম করে নীলিমাকে বলে বসেছে- লেখক দের বৌ হওয়া খুব কঠিন। লেখকের গল্পের নায়িকা মানেই লেখকের বৌয়ের সতীন! নীলিমা লজ্জায় নীল হবার ইমো দিয়েছে!

জুনায়েদ বই দুটাতে আলাদা আলাদা উপহার বানী বাসা থেকেই লিখে এনেছে। কুরিয়ার অফিসের পাশের দোকান থেকে বড় সাইজের দুটা খাম আর স্কচ টেপ কিনেছে। জুনায়েদ বই দুটা আলাদা আলাদা খামে ভরে স্কচ টেপ দিয়ে মুখ বন্ধ করল। মুখ যাতে না খোলে সেজন্য ডবল ডবল স্কচ টেপ মারল। ঠিকানা লেখার জন্য কলম টা হাতে নিয়েছে তখন হঠাৎ নতুন একটা গল্পের প্লট মাথায় আসায় জুনায়েদের মাথা কিঞ্চিত আউলা হল!মাথা আউলা হবার কারনে জুনায়েদ নীলিমার বইয়ের খামের উপর কুতুবের ঠিকানা এবং কুতুবের বইয়ের খামের উপর নীলিমার ঠিকানা লিখে ফেলল! কুতুবের ঠিকানা একটু বেশি খস খস করে লিখল। নীলিমার টা একটু কোমল ভাবে লিখল!

তারপর খাম দুটো কাউন্টারে দিয়ে আশি দুগুনে একশ ষাট টাকা নগদ দিয়ে রিসিট নিয়ে বের হয়ে আসল।



খুলনার কুতুব বই খুলল!

‘প্রিয় নীলিমা,
ভালোবাসা কখনো কখনো চুয়াত্তর পাতার একটা বই হয়ে একজন মানুষ থেকে আরেকজন মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে পারে। তোমাকে বুঝতে হবে!

ভালোবাসা সহ,
জুনায়েদ আখন্দ’

কুতুব জুনায়েদ কে শালা বলে গালি দিল এবং নীলিমা কে সার্চ করার জন্য তৎক্ষণাৎ ফেসবুকে বসল!




নাটোরের নীলিমা বইয়ের খাম নিয়ে ছাদে গেল! অন্য ছাদে টাঙ্কি মারা ছেলেটা নাই দেখে নিশ্চিন্ত মনে খাম খুলল। তারপর মলাট উল্টাল।

‘শালা কুতুইব্বা!

শালা, মনে করছ বই মাগনা দিছি!! বই পাবার সাথে সাথে বইয়ের দাম (একশ পঁচিশ টাকা) এবং কুরিয়ার খরচ(একশ টাকা!) মোট দুইশ পঁচিশ টাকা বিকাশ করবি।

আর দোস্ত! বইটা আশপাশে দুচার জনকে পড়তে দিস। যদি কেউ কিনতে চায়! তোকে দশ পার্সেন্ট কমিশন দিব!

ঘৃণা এবং ভালোবাসা সহ,
জুনায়েদ।‘

টাঙ্কি মারা ছেলে ততক্ষনে অন্য ছাদে চলে এসেছে।সে বিস্মিত হয়ে দেখল তার ‘সোনাপাখী’ কি যেন পড়তে পড়তে ধপ করে ছাদের উপর পড়ে যাচ্ছে! কাল্পনিক ভিলেন কে সে অশ্লীল গাল পাড়ল। তারপর কি করবে বুঝতে না পেরে একটা বিড়ি ধরাল!

ফেসবুকে কুতুব এবং নীলিমার পরিচয় হল। ইনবক্স কথোপকথনে জুনায়েদের আলাভোলামি নিয়ে দুজনের মধ্যে ব্যাপক হাসাহাসি হল! তারপর একদিন দেশের একটা মফঃস্বল শহরের একটা পার্কের বেঞ্চিতে চিকা মারা হল- কুতুব + নীলিমা!

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:০৮

সালমান মাহফুজ বলেছেন: বেশ ইন্টারেস্টেং স্টোরি ।

১১ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:৫০

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে!

২| ১১ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:১৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: হাহা!

১১ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:৫০

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: ধন্যবাদ হাসান মাহবুব ভাই।

৩| ১১ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:২৭

এম এম করিম বলেছেন: মজা লাগলো।

১১ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:৫১

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: ধন্যবাদ করিম ভাই।

৪| ১২ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:৩৩

হাবিবুর রহমান জুয়েল বলেছেন: ভালো লেগেছে...

৫| ১২ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:১৪

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: ধনযবাদ আপনাকে X(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.