নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাইকেল চালানো স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। ইহা ক্ষুধা উদ্রেক করে!

হঠাৎ ধুমকেতু

আমি মহিউদ্দিন খালেদ। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। পড়তে ভালোবাসি। নিজের একটা চিন্তা জগত আছে। সেখানে চারপাশের অনেক কিছু নিয়ে অনেক নিঃশব্দ আলোচনা হয়! সেই আলোচনা গুলোর সাথে বৃহত্তর জগতের সংযোগ ঘটাতে ইচ্ছে করে!

হঠাৎ ধুমকেতু › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি অদৃশ্য নীল বোতল

১৩ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:৫০

দেশের হয়ে খেলা দেখা খুব কঠিন। খেলাটাকে আর উপভোগ করা যায় না। শুধু জয়টাকে উপভোগ করা যায়। প্রতিপক্ষের প্রতিটা মার হৃৎপিণ্ড এফোঁড় ওফোঁড় করে দেয়। প্রতিপক্ষের কাউকে ভাল খেলতে দেখলে মনে হয় তার উপর শয়তান ভর করেছে!প্রতিপক্ষের কেউ আউট হলে মনে হয় প্রেতাত্মা ধবংস হল!!দেশের খেলায় জয়ের আনন্দ পুরোপুরি পাশবিক। পরাজয়ের কষ্ট ও পুরোপুরি পাশবিক। এতে কোন নান্দনিকতা নেই।

এর কারন আছে। কারন হল দেশ আমাদের অস্তিত্বের মাটি। বিলাসিতার নান্দনিক অয়েল পেইন্টিং নয়। বাঘের গুহায় কেউ হানা দিলে বাঘের যে মানসিকতা হয়, মৌচাকে ঢিল ছুঁড়লে মৌমাছির যে মানসিকতা হয়, দেশ হিসেবে যখন আমরা অন্য কারো মুখোমুখি হই তখন আমাদেরও একই মানসিকতা হয়। এই মানসিকতায় জয়ের আনন্দ সীমাহীন। পরাজয়ের বেদনাও সীমাহীন! এখানে মাঝামাঝি কিছু নেই।

আজকে নিউজিল্যান্ডের কাছে বাংলাদেশ হেরে যাবার পর দেশের সব মানুষের মন তীব্র বেদনায় আচ্ছন্ন। (হ্যাঁ, যারা স্পষ্টত দেশের স্বাধীনতা বিরোধী এবং যারা দেশাত্নবোধহীন অর্থাৎ অস্পষ্টত স্বাধীনতাবিরোধী তারা এই ‘সব মানুষের তালিকা’ থেকে বাদ)। তীব্র বেদনায় আচ্ছন্ন একেকজন মানুষের বেদনার প্রকাশ হবে একেক রকম। কেউ ক্যাপ্টেন কে ঝেড়ে গালাগালি করবে, কেউ ভাগ্যকে দোষ দেবে, কেউ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেবে, কেউ উদাস হয়ে একটা বিড়ি ধরাবে, কেউ খামাকাই বৌ বাচ্চার উপর চোটপাট করবে,কেউ ক্যাসিনোতে গিয়ে জুয়া খেলবে, কেউ ড্রিঙ্ক করবে, কেউ মন থেকে সব কিছু ঝেড়ে ফেলে পরের ম্যাচের জন্য প্রস্তুত হবে! কিন্তু দুঃখের জায়গায় সবাই একই রকম নীল। সবার বুকে বিঁধতে থাকা কাঁটা একই রকম তীক্ষ্ণ।

সব মানুষের মনের এই দুঃখ গুলো সঞ্চয় করে যদি বিরাট বড় একটা বোতলে বন্দী করা যেত তাহলে খুব ভাল হত। কারন এই দুঃখের দাম আছে। এই দুঃখের উৎপত্তিস্থল দেশের জন্য ভালোবাসা। এই দুঃখ কণিকার হিমোগ্লোবিনের নাম দেশপ্রেম। দেশপ্রেম কোন লোকদেখানো বিনোদন অথবা করুনামিশ্রিত আবেগের ব্যাপার হওয়া উচিৎ নয়। দেশপ্রেমের নদী সস্তা আবেগে হঠাৎ হঠাৎ উদ্বেলিত কোন শাখা নদী হওয়া উচিত নয়। দেশপ্রেম আনুষ্ঠানিকতায় পর্যবিসিত কোন পিঠ রক্ষামূলক অনুষঙ্গ হওয়া উচিত নয়। দেশপ্রেম হওয়া উচিত মনের গহনে প্রবাহিত সব সময়ের এক সরব নদী যেটার সরবতা প্রমান করার জন্য জাতীয় পতাকা গায়ে জড়িয়ে দেশপ্রেমিক সাজতে হয় না।‘আত্নসন্মানবোধ’ এবং ‘দেশাত্নবোধ’- মনের মধ্যে এই শব্দ দুটো হওয়া উচিত সমার্থক।

এই ভালোবাসার দুঃখ কে যদি বিশাল একটা বোতলে বন্দি করা যেত তাহলে সম্ভব হলে আমি সেই বিশাল বোতল সামনে রেখে তরুণ প্রজন্মের উদ্যেশ্যে একটা প্রাক্টিক্যাল ক্লাস নিতাম। বোতল দেখিয়ে বলতাম- দেখ দেখ বোতলের ভেতর কি অমিত ভালোবাসা শক্তি ছটফট করছে! অবিশ্বাস্য হলেও সত্য এই শক্তি তোমার আমার ভেতরকার ই অন্তঃশক্তি। মানসিক ভাবে যথেষ্ট উন্নত নই বলে আমরা এই শক্তি কে কাজে লাগিয়ে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারি না। বরং এই শক্তি কাজে লাগিয়ে বিশ্বের বুকে যারা বড় হয়েছে তাদের আধিপত্যের কাছে বার বার মাথা নত করি।



মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ১০:৪৫

পরিশেষের অপেক্ষায় বলেছেন: চমৎকার

২| ১৪ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:৪৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: চমৎকার ভাবনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.