নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাইকেল চালানো স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। ইহা ক্ষুধা উদ্রেক করে!

হঠাৎ ধুমকেতু

আমি মহিউদ্দিন খালেদ। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। পড়তে ভালোবাসি। নিজের একটা চিন্তা জগত আছে। সেখানে চারপাশের অনেক কিছু নিয়ে অনেক নিঃশব্দ আলোচনা হয়! সেই আলোচনা গুলোর সাথে বৃহত্তর জগতের সংযোগ ঘটাতে ইচ্ছে করে!

হঠাৎ ধুমকেতু › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের মানসিকতায় নারী এবং সূর্য দীঘল বাড়ি

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:৫৪

১৫/০৪/২০১৫, বাংলাদেশ

শ্রদ্ধেয় আবু ইসহাক,
আমার সালাম নেবেন।আজ থেকে কুড়ি বছর আগে আপনার রচিত ‘সূর্য দীঘল বাড়ি’ নামে একটা উপন্যাস পড়েছিলাম। তারপর কুড়ি বছর আমি এই উপন্যাসের মধ্যে বাস করেছি। এই উপন্যাস নিয়ে একটি চলচ্চিত্র নির্মান হয়েছে আমি জানি। কিন্তু কখনো দেখার প্রয়োজনবোধ করিনি। বাক্যের মাধ্যমে আমার মাথার মধ্যে যে চলচ্চিত্র আপনি তৈরি করে দিয়েছেন সেটাই বার বার দেখেছি। কুড়ি বছরে আপনার এই একটি মাত্র উপন্যাসের আচ্ছন্নতা কেটে যাওয়া দূরে থাক সেটা বরং তীব্র থেকে তীব্র আকার ধারন করেছে। মানসিক ভাবে আমি যত বেশি বেশি পরিনত হয়েছি তত বেশি বেশি আবিস্কার করেছি লেখক হিসাবে আপনার ক্ষমতার অসীমতা।কিন্তু আজকে আপনার স্তুতি করার জন্য আমি লিখতে বসি নাই।বরং অত্যন্ত মনোবেদনার সাথে আপনাকে জানাতে চাইছি আজ থেকে পঞ্চাশ ষাট বছর আগে আপনি আপনার জীবনের মহা মূল্যবান কিছু সময় নষ্ট করেছিলেন। সূর্যদীঘল বাড়ি লিখে আপনি উলু বনে মুক্তা নয়, কোহিনুর হীরা ছড়িয়েছিলেন। হায়, কি বেকুব ই না আপনি ছিলেন!
আপনার উপন্যাসের মূখ্য চরিত্র জয়গুন। হাস ডিম পাড়লে জয়গুন বড় ছেলে হাসুকে দিয়ে হাসের ডিম চারটা জুম্মাবারে মসজিদে পাঠায়। মসজিদের ইমাম জয়গুনের পাঠানো হাসের ডিম ফেরত দেয়। কারন- ‘বেপর্দা আওরতের চিজ!’, ‘সে একলা একলা মমিন্সিং যায় টেরেনে কইরা!’

ইমাম সাহেব এবং তার সঙ্গী সাথীরা সেই চল্লিশ বা পঞ্চাশের দশকে জীবন যোদ্ধা জয়গুনের প্রতি যে মানসিকতা নিক্ষেপ করেছিল আজকে দুহাজার পনের সালে আমরা ‘ভার্সিটি পরিহিত উচ্চ অশিক্ষিত’ রা নারীদের প্রতি একই মানসিকতা নিক্ষেপ করি।আপনার এই বইটি বিএ ক্লাসে পাঠ্য ছিল। মেয়ে হবার কারনে ভার্সিটি পড়ার সূযোগ না পেয়ে কলেজে বিএ পড়া এক বোনের বালিশের তলা থেকে নিয়েই আমি এই বইটি পড়েছিলাম। বিস্মিত হয়ে ভাবি আমাদের শিক্ষা মন্ত্রনালয় কি মনে করে এই বইটাকে জাতীয় পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন? আমাদের নকল নবীশ এবং মূখস্ত নবীশ প্রজন্ম যে সাত জন্মেও ‘বেপর্দা আওরতের চিজ!’, ‘সে একলা একলা মমিন্সিং যায় টেরেনে কইরা!’ ডায়লগের অর্থ বুঝতে পারবেনা সেটা কি তারা বুঝতে পারে নাই? বর্তমান শিক্ষামন্ত্রনালয় আশা করি এরকম ভুল করবে না। তারা হিন্দি ‘জব তক হ্যায় জান’ এর অনুবাদ বা জি বাংলা সিরিয়াল ‘বোঝেনা সে বোঝেনা’র পান্ডুলিপি বি এ ক্লাসে দিয়ে দিতে পারে। এতে শিক্ষার্থীদের আর নকল করে পাশ করতে হবে না। এমনিতেই সবাই এ প্লাস পাবে।

সূর্য দীঘল বাড়িতে ফকিরের চ্যালা যখন জয়গুন কে ঘরের মধ্যে একলা পেয়ে ইভটিজ করে তখন জয়গুন হাতে থাকা চুনের ঘটটা চ্যালার মুখে ছুড়ে মারে এবং বলে- কুত্তার পয়দা, বাইর অ ঘরতন!আপনার বর্ণনামতে ফকির অপমানিত হয়ে বের হয়ে যায় এবং সেই চুনকালি মাখা মুখ আর কখনো দেখাতে আসে নাই। আপনার যথেষ্ট দূরদর্শিতা থাকলে আপনি এভাবে এই এপিসোড শেষ করতেন না। আপনি চ্যালা কে দিয়ে জয়গুন কে রেপ করাতেন এবং কলমের মুন্সিয়ানায় দেখিয়ে দিতেন এই রেপের ঘটনার জন্য আসলে জয়গুন ই দায়ী!

ভবিষ্যতে বাংলায় গল্প উপন্যাস লিখলে আরো সাবধানে লিখবেন। মেয়েদের কে জয়গুন না বানিয়ে ‘কোমল প্রেম পন্য’ বানিয়ে লিখবেন। মাঝে মাঝে ফেসবুকে আপডেট দেবেন। আমরা লাইক দিয়ে আপনাকে সেলিব্রেটি বানিয়ে দেব!

ইতি,
বিবর্তিত পিশাচ প্রজন্মের একজন অচল মাল।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১০:১৮

মনিরা সুলতানা বলেছেন: :(
হায় প্রজন্ম

২| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১০:২৫

নাহিদ রুদ্রনীল বলেছেন: কেমন যুগে বসবাস করছি আমরা। এই প্রজন্মের ভবিষ্যত কি?

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১০:৪৫

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: বর্তমান পরিবর্তন না হলে ভবিষ্যত অন্ধকার

৩| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:৩২

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: বিবেক বলে কিছু অবশিষ্ট নেই। এদের সামাজিক ও পারিবারিক মূল্যবোধ শূন্যের কোঠায়।

৪| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৩

এফ রহমান বলেছেন: চমৎকার উপন্যাস। আমার ভালো লেগেছিলো।

৫| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:০৭

মিন্টুর নগর সংবাদ বলেছেন: ++

৬| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৪

তাহসিনুল ইসলাম বলেছেন: এদের কোন লজ্জা নাই :(

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৪:১৫

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: ভাই, এসব আচরন না করার জন্য শুধু লজ্জা না থাকাই যথেষ্ট নয়। এরা এবং এদের সমর্থক দের মত আপনি তখনি হতে পারবেন যখন আপনি মেয়েদের মানুষ না ভেবে মাল ভাববেন। তখন আপনি কন্যা না জন্মে পুত্র জন্মালে অধিক খুশি হবেন। নিজেকে স্ত্রীর হাকিম ভাববেন। আপনার মানসিক বিকৃতিকে এক সময় জগতের সারসত্য ভাবতে শুরু করবেন। আমাদের সময় চলে যাচ্ছে নিজের দিকে ফিরে তাকাবার।

৭| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৮:২৬

ব্লগার আয়নাল ভাই ইতি বলেছেন: নব বর্ষের প্রাণ ঢালা শুভেচ্ছায়!
নব নব বারতায় আনন্দের উচ্ছলতায়
এসো হে বৈশাখ, এসো

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৪:০৯

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: আপনার মন্তব্যের অর্থ ধরতে পারি নাই।

৮| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ২:৩০

ইনজামামুল আমীন প্রীমন বলেছেন: ++

১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:২১

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

৯| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:৫৬

সুমন কর বলেছেন: চমৎকার একটি লেখার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৪:০৭

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন ভাই। এই লেখাগুলো লিখতে ও কষ্ট হয়।

১০| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৫ ভোর ৪:২৭

আহমাদ ইবনে আরিফ বলেছেন:

১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:২২

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: ধন্যবাদ আরিফ আপনাকে।

১১| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:০৭

সালাহউদ্দীন আহমদ বলেছেন:
আবু ইসহাক আমার ফুফা ছিলেন। অনেক আগেই গত হয়েছেন। জীবিত থাকলে আপনার এ পোস্ট তার দৃষ্টি আকর্ষণ করাতাম।

শুভেচ্ছা রইলো।

১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:২০

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: ধন্যবাদ। উনাকে নিয়ে লিখুন প্লিজ। কাছ থেকে যা দেখেছেন লিখুন। অনে্ক শুভেচ্ছা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.