নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাইকেল চালানো স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। ইহা ক্ষুধা উদ্রেক করে!

হঠাৎ ধুমকেতু

আমি মহিউদ্দিন খালেদ। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। পড়তে ভালোবাসি। নিজের একটা চিন্তা জগত আছে। সেখানে চারপাশের অনেক কিছু নিয়ে অনেক নিঃশব্দ আলোচনা হয়! সেই আলোচনা গুলোর সাথে বৃহত্তর জগতের সংযোগ ঘটাতে ইচ্ছে করে!

হঠাৎ ধুমকেতু › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইস্টিশনে বসে আছি

০২ রা মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৩১

ছুটির দিন দেখে ঘুম ভাঙ্গার পরও চোখ বন্ধ করে শুয়েছিলাম।কিছুক্ষণ পর ঘুম ঘুম ঘোরের মধ্যে অদ্ভুত একটা দৃশ্য মনের চোখে ফুটে উঠেই মিলিয়ে গেল। সাদা ডায়াসে কাল কাল কাঁটাওয়ালা একটা বড় দেয়াল ঘড়ি।সেকেন্ড মিনিট ঘন্টার কাঁটা সব ঠিকঠাক আছে। শুধু একটা থেকে শুরু করে বারটা পর্যন্ত ঘরগুলোর জায়গায় এসে শিউরে উঠলাম! কোথায় এক দুই তিন?তার বদলে সবগুলো ঘরেই বারটা দেখাচ্ছে! ঘড়ির কাঁটা ঘুরে ঘুরে যেখানেই যাক না কেন, ঘড়িতে সব সময়ই বারটা বাজতেছে!

স্বপ্ন অথবা এধরনের স্বাপ্নিক বিষয়গুলোকে আমি খুবই গুরুত্ব দিই। কারন আমার মনে হয় এগুলো মানুষের অতল মনের কিছু নিঃখুত হিসাব নিকাশের ফল। চারপাশের বিশেষ কোন ঘটনা(সব সময় বিশেষ ঘটনা নাও হতে পারে) সম্পর্কিত তথ্যগুলো অতল মনে গিয়ে পৌঁছানোর পর তথ্যগুলো সেখানে বিশ্লিষ্ট হয়। সেই বিশ্লেষণের ভিত্তিতে সেই ঘটনার সম্ভাব্য পরিণতির একটা প্রতীকি ছবি অতল মন তৈরি করে। সেই দৃশ্যগুলোই আমরা সাধারণত স্বপ্নে দেখি। সবসময় স্বপ্নে দেখতে হবে এমন ও কথা নেই। খুব গভীর মনঃসংযোগের সাথে কোন বিষয় নিয়ে মন যদি নিজের তাগিদেই ভাবতে শুরু করে তাহলে জেগে থাকা অবস্থায় ও এধরনের দৃশ্য মনের চোখ দিয়ে দেখা সম্ভব।

মন কখন একটা জিনিষ নিয়ে নিজের তাগিদে ভাবে? জবাব খুব সহজ।কোন ঘটনা যখন আপনার অস্তিত্বের সাথে সম্পর্কিত হয়।তবে এখানে কথা আছে। ঘটনা টা যে আপনার অস্তিত্বের সাথে সম্পর্কিত সেটা যদি আপনি না বুঝতে পারেন তাহলে আপনার মন এধরনের ঘটনায় বিন্দুমাত্র বিচলিত হবে না।

স্বাপিক দৃশ্যটা দেখার পর আমি স্পষ্টতই বুঝতে পারলাম এটা আমার চারপাশের কোন ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণের ফল। হ্যাঁ, গত আঠাশে এপ্রিল ঘটে যাওয়া ‘মেয়র নির্বাচন নামক যে ভয়াবহ প্রহসন’ টি এই ২০১৫ সালের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থার সভ্য পৃথিবীর ছোট্ট একটা স্বাধীন দেশে বসে আমরা সহ্য করতে বাধ্য হয়েছি সেটা আমার অতল মনে খুব শীতল একটা সত্য বার্তা পাঠিয়ে দিয়েছে। সেই বার্তার সারমর্ম- আমরা এক ভয়াবহ ঘড়ির ফাঁদে আটকা পড়ে গেছি। যে ঘড়ির কাঁটা নড়ছে ঠিকই। কিন্তু সময়ের কোন পরিবর্তন নাই। সেখানে সব সময় বারটা বাজতেছে!

একটা গনতান্ত্রিক নির্বাচন এবং একটা পেশিতান্ত্রিক নির্বাচনের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? একটা গনতান্ত্রিক নির্বাচনে নির্বাচিত ব্যক্তি ‘দায়ীত্বে’ যায়,ক্ষমতায় যায়না।কারণ গনতান্ত্রিক সিস্টেমটাই এমন যেখানে ক্ষমতা সব সময় জনগনের হাতে থাকে। নির্বাচিত প্রতিনিধির হাতে থাকে সন্মানজনক দায়ীত্ব। সিস্টেম ই সেখানে নির্বাচিত প্রতিনিধিকে জনগনের কাছে দায়বদ্ধ রাখে। সবচেয়ে খারাপ লোকটাও যদি গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয় সে খুব খারাপ কিছু করে ফেলতে পারবে না, কারন সিস্টেম তাকে বাঁধা দেবে।

অপরদিকে পেশিতান্ত্রিক নির্বাচনে জোর করে ক্ষমতাদখলকারী ব্যক্তি জনগনের হাত থেকে ক্ষমতা লুটে নেয় এবং তার দায়ীত্ব কি হবে সেটা সে নিজেই নির্ধারন করে। যদি এমন হত ক্ষমতা লুন্ঠনকারী ব্যক্তি ‘রাষ্ট্রে বা নগরে সর্বস্তরের নাগরিকের সমঅধিকার নিশ্চিত করা’কে দায়ীত্ব হিসেবে নেবে তাহলে পেশিতান্ত্রিক নির্বাচনে কোন সমস্যা ছিল না। বরং এরকম একজন পেশিবহুল রাষ্ট্র নায়ক বা নগর নায়ক একটা রাষ্ট্র বা নগরের জন্য পরম আশীর্বাদ বয়ে আনতে পারত। কিন্তু সেটা হবার নয়। কেন হবার নয় সেটা বোঝার জন্য সেই সব পেশিবহুল দের ‘ক্যারিয়ার বিল্ডিং প্রসেস’ দেখতে হবে।

আমাদের দেশে যারা ক্ষমতাশালী পেশিমানব হিসেবে আত্নপ্রকাশ করে তারা তাদের পেশি ক্যারিয়ার শুরুই করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে। ত্রাস, সন্ত্রাস, হত্যা, চাঁদাবাজি ইত্যাদির মাধ্যমে তারা একটু একটু করে ক্ষমতা সঞ্চয় করে। তারপর সঞ্চিত ক্ষমতা বিনিয়োগ করে পুঁজিপতিদের সাথে আঁতাত করে।পুঁজিপতিদের সাথে আঁতাতের ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে অর্জিত ক্ষমতার ইঞ্জিনে তরল ডিজেলের মত প্রবাহিত হয় তরল টাকা! হুঙ্কার দিয়ে গর্জে উঠে ইঞ্জিন!! কেউ যদি নিতান্ত মূর্খ না হয় তাহলে এই ব্যাকগ্রাউন্ডের লোকজনের কাছে কোন গ্রাউন্ডেই ‘নগরের সর্বস্তরের নাগরিকের সমঅধিকার নিশ্চিত করাকে দায়ীত্ব হিসেবে নেবে’ টাইপের চিন্তাভাবনা আশা করবে না। বরং এটা খুব সহজেই বুঝতে পারবে যে, পেশিতন্ত্রের চর্চার ফলে সর্বোচ্চ যে অরাজক অবস্থা একটা রাষ্ট্রে সৃষ্টি হওয়া সম্ভব সেটাই এরা সৃষ্টি করবে ।

যেই ক্ষমতা টা বিন্দু বিন্দু আকারে সব মানুষের মধ্যে বন্টিত থাকার কথা ছিল সেটা যখন গুটিকয় মানুষের হাতে চলে যায় তখন ‘ন্যায্য ক্ষমতা বিন্দু’ হারানো সেই সব মানুষের বেশির ভাগ ধীরে ধীরে ‘আত্নমর্যাদাহীন ভয়ে তটস্থ হয়ে জীবনধারনকারী কীটে’ পরিনত হয়। আর কোটি মানুষের ক্ষমতার অবৈধ দখল দার গুটিকয় মানুষের সবাই ধীরে ধীরে ‘আত্ন-উপলব্ধিহীন ক্ষমতা এবং টাকা লিপ্সু দানবে’ পরিনত হয়।যেই সমাজে এসব ঘটে সেই সমাজ টা তখন আর মানব সমাজ থাকেনা। সেটা হয়ে যায় একটা ‘দানব ভার্সেস কীটের খাঁচা’। খাঁচার ভেতর দানব কীটদের কে সব সময় কোন ঠাঁসা করছে!

এইরকম শীতল উপলব্ধির দিনে মনে উপহাস হয়ে বাজে পুরোনো বাংলা সিনেমার গান। জানি কিছুই হবেনা। তবু বেঁচে থাকার জন্য গানের কলি একটু পরিবর্তন করে দিয়ে গাই-
স্টেশনের রেলগাড়ি টা-

থেমে আছে ঘড়ির কাঁটা!
স্টেশনে বসে আছি- কখন ছুটে বারটা, কখন ছুটে বারটা!

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মে, ২০১৫ দুপুর ১:০৬

নাজমুল হাসান মজুমদার বলেছেন: সুন্দর করে লিখেছেন

০২ রা মে, ২০১৫ দুপুর ১:১৭

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: ধন্যবাদ নাজমুল ভাই।

২| ০২ রা মে, ২০১৫ দুপুর ১:৩৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো হয়েছে স্বপ্ন বিশ্লেষণ।

০২ রা মে, ২০১৫ দুপুর ১:৪৮

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: ধন্যবাদ হাসান মাহবুব ভাই।

৩| ০২ রা মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৮

সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ এভাবে বিষয়টা বিশ্লষণ করার জন্য।

০২ রা মে, ২০১৫ রাত ৮:৫৮

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

৪| ০২ রা মে, ২০১৫ রাত ৮:১৫

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: bnp আসলে চাদাবাজি, লুটতরাজ সব বন্ধ হয়ে যেত? তারা একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। তাদের কাছে কিছু আশা করা যায় না , বরং bnp আসলে জামাত আর যুদ্ধাপরাধিরা পান চিবতে চিবতে বেশ্যালয় গমন করত

০২ রা মে, ২০১৫ রাত ৯:০৪

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: হায় ভ্রাতা, কি লিখলাম আর কি বুঝলেন? বিএনপি আসলে সব বন্ধ হত এই গুঢ় তত্ত্ব আপনি এই লেখার কোথায় পেলেন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.