নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাইকেল চালানো স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। ইহা ক্ষুধা উদ্রেক করে!

হঠাৎ ধুমকেতু

আমি মহিউদ্দিন খালেদ। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। পড়তে ভালোবাসি। নিজের একটা চিন্তা জগত আছে। সেখানে চারপাশের অনেক কিছু নিয়ে অনেক নিঃশব্দ আলোচনা হয়! সেই আলোচনা গুলোর সাথে বৃহত্তর জগতের সংযোগ ঘটাতে ইচ্ছে করে!

হঠাৎ ধুমকেতু › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাকিব রাজন দের মৃত্যু কিভাবে ঠেকানো যায়?

০৬ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:২৫

বাংলাদেশে খুনিদের মধ্যে খুলনার খুনিরাই সম্ভবত সবচেয়ে সৃষ্টিশীল। এরশাদ সিকদার নাকি সুপার গ্লু দিয়ে নাক বন্ধ করে মানুষ হত্যা করত। শরীফ এবং তার সহপিশাচ রা শিশু রাকিবের মল দ্বার দিয়ে মোটর সাইকেলের চাকায় হাওয়া দেবার কম্প্রেসরের নল ঢুকিয়ে কম্প্রেসর চালু করে দিয়েছে।রাকিবের হত্যাকারী শরীফ এবং এর সহপিশাচদের শাস্তি নির্ধারণ করার জন্য আইনবিদ হবার দরকার নাই।এদের মলদ্বার দিয়ে ট্রাকের চাকায় হাওয়া দেবার কম্প্রেসরের নল ঢুকিয়ে কম্প্রেসর চালু করে দিতে হবে। যতক্ষণ না মরছে ততক্ষন কম্প্রেসর চালু থাকবে। মরার পর পিশাচগুলোকে লাথি মেরে পশুর নদীতে ফেলে দেয়া হবে।

কিন্তু এর ফলাফল?

না, এটা কোন ভাবেই রাকিব, রাজন দের পৈশাচিক মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে পারবেনা। এসব বঞ্চিত শিশু কিশোর রা বাসা বাড়িতে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা খেয়ে মরবে, এদের খুঁটির সাথে বেঁধে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মারা হবে, এদের মলদ্বার দিয়ে ঢুকে যাবে কম্প্রেসরের নল, এরা অনিরাপদ কারখানায় কাজ করতে গিয়ে হাই ভোল্টেজ শক খেয়ে মরবে।রাকিব রাজন্ দের মত সৌভাগ্যবান(?) দুই একজন ফেসবুক ,পত্রিকা, টিভি কাভারেজ পাবে। সেসব ক্ষেত্রে খুনিরা বিপাকে পড়বে। ফাঁসিটাসি ও হয়ে যেতে পারে। বাকী যারা প্রচারের আলো পাবেনা তাদের ক্ষেত্রে সামান্য কিছু টাকা পয়সা খরচ করে খুনিরা সব কিছু ম্যানেজ করে ফেলবে এবং পরবর্তী খুনের জন্য আত্নবিশ্বাস সঞ্চয় করবে।

রাকিব যে গ্যারেজে কাজ করত সেখানে তাকে দিনে ৫০ টাকা দিত। গ্যারেজের মালিক যদি বিড়ি সিগারেট খায় তাহলে তার বিড়ি সিগারেটের খরচের চেয়ে কম হচ্ছে রাকিবের বেতন। অর্থাৎ প্রায় বিনা পয়সায় সে একটা ছেলেকে পেয়ে গিয়েছিল যাকে দিয়ে তার ওয়ার্কশপের দরকারী কাজ চলে যায়। তার ইনভেস্টমেন্ট কস্ট এ রাকিব একাউন্টে প্রায় কিছুই রাখতে হয়নি। অর্থাৎ রাকিব এর সার্ভিস টা সে প্রায় দৈব বলে ধরে নিয়েছিল!

ধারনা করা যায় রাকিবের মত একটা নিরিহ( মারা যাবার সময় ও সে শরীফ মামা বলতেছিল। হিংস্র হলে 'শরীফ কুত্তার বাচ্চা' বলত)এবং কাজে দক্ষ ছেলে শরীফের দোকান ছেড়ে পাশের দোকানে চাকরি নেয়ায় শরীফের দোকানের কাস্টোমার কমে গিয়েছিল এবং পাশের দোকানের কাস্টোমার বেড়ে গিয়েছিল। রাকিব যেহেতু মটর সাইকেলের চাকায় হাওয়া দিত সেহেতু যারা হাওয়া ভরতে আসত তারা নিশ্চয় রাকিব কে চিনত এবং রাকিব এর একটা ফেস ভ্যালু তাদের কাছে ছিল। কাজেই চোখের সামনে নিজের দোকান কে লস খেতে দেখে এবং পাশের দোকানের পসার বেড়ে যেতে দেখে শরীফের পুরো রাগটাই গিয়ে পড়ে বেচারা রাকিবের উপর। আমাদের দেশের মালিক শ্রেনী তা সে ওয়ার্কশপের মালিক হোক আর ইন্ডাস্ট্রির মালিক হোক মনে মনে ভাবে তাদের নিজেদের রিজিক আল্লাহ পাক দিচ্ছেন আর তাদের অধীনে যারা চাকরি করে তাদের রিজিক তারা দিচ্ছেন! কাজেই এরা অধিনস্তদের মানুষ মনে করেনা এবং অধিনস্তদের সব ধরনের ন্যায্য অধিকারই এদের কাছে ঔদ্ধত্য। শরীফের মাথায় এটা ভুলেও আসেনাই যে- তার চাকরি ছেড়ে অন্যের চাকরি নেয়াটা রাকিবের অধিকার এতে রাকিবের কোন অপরাধ নেই। মাথায় না আসার কারনে চাকরি ছেড়ে যাবার পরেও রাকিব কে সে মনে মনে নিজের ‘উদ্ধত হয়ে যাওয়া গোলাম’ ভেবেছে এবং সুযোগের অপেক্ষা করেছে কিভাবে তাকে সময়মত সাইজ করা যায়।
আমার ধারনা মল দ্বারে কম্প্রেসরের নল ঢুকিয়ে কম্প্রেসরের হাওয়া দেবার শাস্তি তার গ্যারেজে কাজ করার সময় ও শরীফ রাকিব কে দিয়েছিল। কারন কোন নির্দেশনা ছাড়াই তার সাংগপাংরা এটা শুরু করেছে এবং সংবাদপত্রের বর্ণনা অনুযায়ী প্রথম বারেই সফল হয়েছে। এর সম্ভাব্য কারন এই চরমতম শাস্তির সাথে তারা আগে থেকেই পরিচিত ছিল এবং তারা জানত ‘বস’ এর রাগ একটা জায়গায় গেলে এই শাস্তি শুরু করা যায়। আগে হয়ত হাওয়া কম দিছে সেজন্য রাকিব মরেনি। এবার রাগ বেশি ছিল দেখে হাওয়া ও বেশি হয়ে গেছে কাজেই রাকিব মরে গেছে।

রাকিব রাজন দের মৃত্যু কিভাবে ঠেকানো যায়?

উপায়-১
দেশে রাকিব রাজনের হত্যাকারীদের মানসিকতার যত মানুষ আছে তাদের সবার জেনেটিক অস্ত্রোপচার করে তাদের জীনের মধ্যে কিছু ‘মানবীয় বৈশিষ্ট্য’ ঢুকিয়ে দিতে হবে।সেই মানবীয় বৈশিষ্ট্য বহনকারী জীন সমূহ যাতে তাদের পরবর্তী বংশধরদের মধ্যেও সক্রিয় থাকে সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

উপায়-২
রাকিব রাজন নামক শিশু কিশোর শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার জন্য কার্যকর শ্রমিক আইন থাকতে হবে।

পাদটীকা
শরীফ প্রথম দিনই নিশ্চয় রাকিবের মলদ্বারে কম্প্রেসরের নল ঢোকানো শুরু করেনি। প্রথম দিন হয়ত থাপ্পড় দিয়েছিল। প্রথম দিন থাপ্পড় দেয়ার অপরাধে শরীফ কে যদি দুদিন সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করে আসতে হত তাহলে পরবর্তী ঘটনা কখনো ঘটতনা।কারো মলদ্বারে নল ঢোকানোর আগে নিজের মলদ্বারে নল ঢোকার দৃশ্য তার চোখের সামনে ভেসে উঠত এবং এই এইরকম কিছু করার আগেই তার নিজের নল নিঃসৃত জলের তোড়ে তার আন্ডারওয়ার ভিজে যেত। নির্যাতনকারীদের মাথায় যখন খুন এবং নির্যাতন করেও দিব্যি পার পেয়ে যাওয়ার হাজার টা উদাহরণ গিজ গজ করে তখনি তারা সাহসী হয়ে উঠে। পরিস্থিতি পাল্টাতে পারলে তাদের এই নির্যাতন বা খুনের সাহস কোনদিনও থাকবেনা। কাজেই এখন শরীফ এবং তার সহপিশাচদের সম পরিমান নৃসংশ ভাবে হত্যা করা হলে আমরা হয়ত আনন্দ পাব, কিন্তু শিশু কিশোর শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার কার্যকরী আইন দেশে চালু করতে না পারলে মৃত্যদন্ড দিয়ে পিশাচদের আত্নবিশ্বাসে আপনি বিন্দুমাত্র চিড় ধরাতে পারবেন না এবং এধরনের নিজের মন এবং মনুষ্যত্ববোধ কে বিবশ করে দেয়া খবরের হাত থেকে আমরাও রেহায় পাব না।



মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:২৯

নবাব চৌধুরী বলেছেন: এর বিচারটা হওয়া উচিত নারী ও শিশু নির্যাতন আইন এর অধিনে,কিন্তু সমস্যা হলো সেটা হচ্ছেনা ঐ যে রাঘব বোয়ালেরা বার বার কুকর্ম করে করেও পার পেয়ে যায়,আরেকটা অপরাধ করার মতো দুঃস্বাহস যোগায়।
লেখককে ধন্যবাদ এরকম একটা লেখা দেয়ার জন্য।
ভালো থাকবেন ভ্রাতা থাকলাম শুভকামনায়।

১৪ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৬

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনার জন্য ও অনেক শুভ কামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.