নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাইকেল চালানো স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। ইহা ক্ষুধা উদ্রেক করে!

হঠাৎ ধুমকেতু

আমি মহিউদ্দিন খালেদ। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। পড়তে ভালোবাসি। নিজের একটা চিন্তা জগত আছে। সেখানে চারপাশের অনেক কিছু নিয়ে অনেক নিঃশব্দ আলোচনা হয়! সেই আলোচনা গুলোর সাথে বৃহত্তর জগতের সংযোগ ঘটাতে ইচ্ছে করে!

হঠাৎ ধুমকেতু › বিস্তারিত পোস্টঃ

মল-ট্যাগ

১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৬

রাতের অন্ধকারে শক্তিশালী শত্রুর ঘরের দরজায় মলত্যাগ করে শত্রুকে বিব্রত করার একটা প্রচলন একসময় ছিল(এখনো হয়ত আছে)। সেই পুরোনো অভ্যাস ই বর্তমানে ভার্চুয়াল জগতে ভিন্ন চেহারায় দেখা যায়। মানুষ একই। শুধু ‘ত্যাগ’ এর জায়গায় ‘ট্যাগ’। ‘মল’ এর জায়গায় ‘পর্ণোগ্রাফির ক্লিপ!’

যেকোন দিন সকালবেলা আপনার টাইম লাইনে ঢুকে আপনি দেখতে পারেন কে বা কারা আপনার টাইম লাইনে মলত্যাগ করে গেছে অর্থাৎ পর্ণোগ্রাফির ক্লীপ ট্যাগ করে দিয়েছে। উদ্যেশ্য অবশ্যই আপনাকে পর্ণোগ্রাফি দেখানো নয়! উদ্যেশ্য আপনাকে বিব্রত করা। যাতে আপনার টাইম লাইনে যারা ঢুকবে তারা দেখে যেন ভাবে এই লোকটা একটা অশ্লীল লোক। পর্ণোগ্রাফির অশ্লীল জগতের সাথে এর যোগাযোগ।

তবে এটা যে সবসময় ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটে তা নয়। যতদূর জানি, শয়তানের ফাঁদে পড়ে(!) অইসব সাইটে অতিরিক্ত ঘোরাঘুরি করলে ঘোর লাগা অবস্থায় কোথাও চাপ পড়ে ফ্রেন্ডলিস্টের বন্ধু বান্ধবের সাথে অইসব ইয়ে জিনিষ ট্যাগ হয়ে যেতে পারে। এরপরেও কেউ যে ইচ্ছে করে কারো ওয়ালে গিয়ে এসব ট্যাগ করে আসেনা সেকথা নিশ্চিত করে বলা যায়না।

নিজের ওয়ালে এধরণের ‘মল-ট্যাগ’ হতে দেখা ওয়াল এর মালিকের জন্য যথেষ্ট বিব্রতকর। কেন বিব্রতকর তার কারণ অনুসন্ধান করা যাক।

সভ্যতার কোন পর্যায়ে মানুষ জামা কাপড় পরতে আরম্ভ করেছে সেটার সঠিক ইতিহাস আমি জানিনা। তবে অনুমান করা যায়, নগ্নতার চেয়ে বেশি সুন্দর কিছু যখন মানুষ অনুভব করতে পেরেছে তখন থেকে সে নগ্নতাকে ঢাকতে চেয়েছে। একবার পোষাকের অন্তরালে চলে যাবার পর পোষাক মানুষের পরিচয় নির্ধারণ করা শুরু করেছে! পোষাক বলে দিয়েছে কে সর্দার, কে সাধারণ কালা আদমী। পোষাক বলে দিয়েছে কে রাজা, কে প্রজা। পোষাক বলে দিয়েছে কে সৈনিক, কে শিল্পী। পোষাক বলে দিচ্ছে কে বিজ্ঞাপনের মডেল, কে সাধারণ গৃহবধু! এভাবে পোষাক মিশে গেছে বৃহত্তর মানব সংস্কৃতির মূলবিন্দুতে।

রাসায়নিক বিক্রিয়া সব সময় দ্বি-মূখী প্রক্রিয়া। একদিকে এসিড এবং ক্ষার বিক্রিয়া করে লবন এবং পানি উৎপাদন হতে থাকলে অন্যদিকে বিপরীত প্রক্রিয়ায় কিছু এসিড এবং ক্ষার ও উৎপন্ন হতে থাকে। সভ্যতার পোষাক রসায়নে ফ্যাশনের লবন এবং পানি যতবেশি উৎপন্ন হয়েছে, লবন এবং পানির আড়ালের নগ্ন এসিড এবং ক্ষারের প্রতি মানুষের আকর্ষণ ও তত বেড়েছে! নগ্নতা যখন নগ্ন ছিল তখন সেটা ছিল মানুষের কাছে ডালভাত। নগ্নতা যখন ‘পোষাকের আড়াল থেকে নিজেকে প্রকাশ করা’র শিল্পমাত্রায় ঢুকে গেল তখন সেটা হয়ে গেল চরম কৌতুহলের বিষয়। যে বস্তুর দিকে মানুষ আলাদা করে ফিরে তাকানোর কোন প্রয়োজন একসময় অনুভব করেনি সেই বস্তু উঁকি মেরে দেখার জন্য তৈরি হল পিপহোল! শরীর কে পোষাকে মুড়ে নিয়ে মানুষের মন কেন্দ্রীভুত হল নগ্নতায়!

মানুষের নগ্ন মনের নগ্ন চাহিদা আছে বলেই পর্নোগ্রাফিতে কোটি টাকার বিনিয়োগ। অন-লাইনে পর্নোগ্রাফির সরব উপস্থিতি। সভ্যতার বিবর্তনে যদি মানুষের নগ্ন মনের নগ্ন চাহিদা ফুরিয়ে যায় তাহলেই কেবলমাত্র পর্নোগ্রাফির উৎপাদন বন্ধ হবে। সাধারন নিয়মে চাহিদা থাকলে উৎপাদন থাকবে এবং চাহিদা বৃদ্ধি করে উৎপাদন বৃদ্ধি করার প্রক্রিয়াও থাকবে।

কিন্তু তিন রুমের ফ্ল্যাটের ‘তিন’ সংখ্যায় যেমন টয়লেটের উল্লেখ থাকেনা সেরকম সভ্যজগতে বিচরণকারী মানুষের পরিচয়ের স্থানাংকেও মানুষের মনের এই অন্ধগলির উল্লেখ অনাকাংখিত। এটা মানুষের মনের একান্ত নিজস্ব নোংরামি। ‘প্রাইভেসি’ নামক দেয়াল দিয়ে একে ঢেকে না রাখলে মূহুর্তেই খসে পড়ে মানুষের অন্যসব অর্জন দিয়ে নির্মিত ব্যক্তিত্ত্বের পোষাক! পোষাকী সভ্যতায় শরীর ধ্বংস হবার চেয়ে অনেক বেশি ভয়ঙ্কর হল পোষাক ধ্বংস হওয়া।

কাজেই একজন মানুষ কে যখন কোন না কোন ভাবে প্রকাশ্য নগ্নতার সাথে যুক্ত করা হয় তখন তার ভেতরের নগ্নতা প্রকাশ হয়ে যাবার ভয় তাকে গ্রাস করে ফেলে। ভাবমূর্তির আড়ালে চাপা পড়া তার প্রবৃত্তিসর্বস্ব মূর্তি টা ঠক ঠক করে কাঁপতে থাকে সব হারানোর ভয়ে। সে নগ্ন ভাষায় ঘোষনা দেয়-নগ্নতার সাথে আমার বৈধ অবৈধ কোন ধরনের সম্পর্ক নাই!

তবে মনের কানাগলিতে এই ধরণের নোংরা চ্যানেলের বিচরন নাই এরকম মানুষ ও থাকা সম্ভব। তাদের মনকে তারা সৌন্দর্য্যের এমন মাত্রায় নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন যাতে করে এধরণের প্রবৃত্তিগত আনন্দ দিয়ে তাদের মন কে প্রকাশ্যে বা গোপনে তৃপ্ত করার কোন প্রয়োজন তারা অনুভব করেন না। এ ধরনের ট্যাগিং তাদের জন্য ভয়ের কারণ না হলেও যথেষ্ঠ বিরক্তির কারণ।

কাজেই একজন মানুষ হয়ে আরেকজন মানুষ কে এরকম অসহায় অথবা বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দেয়াটা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। কাজেই সজ্ঞানে কেউ যদি কারো ওয়ালে এরকম ‘মল-ট্যাগ’ করে থাকে তার উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত। আর অজ্ঞানে যাতে এধরনের অপরাধ সংগঠিত না হয় সেজন্য মনকে শাসন করা উচিত-যাতে সে সবসময় সজ্ঞান থাকে।


মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৩

চ্যাং বলেছেন: খাইচে!!!!!!!!! তালি আমরা ইতু চভ্য হইয়া গেচি<< যে এখনো মলত্যাগ(ট্যাগ) করিমু না। :|

১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৯

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: মল ট্যাগ এখন মল ত্যাগের মতই নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে।

২| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৬

লামাজ বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন।

১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০০

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৫

সাহসী সন্তান বলেছেন: খুবই সুন্দর এবং জনগুরুত্বপূর্ন পোস্ট! তবে ফেসবুকের ব্যাপারে বলতে গেলে, বর্তমানে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ কিছু নিয়ম চালু করেছে যে, কেউ কারো ওয়ালে কিছু পোস্ট দিতে গেলে বা টাইম লাইনে কিছু লিখতে গেলে আগে উক্ত টাইমলাইনের মালিকের অনুমতি নিতে হবে! যদি সে অনুমতি দেয় তাহলে ট্যাগকৃত ব্যক্তি কাউকে ট্যাগ করতে পারবেন, না হলে নয়! তবে সম্ভাবত এটা সবাই যানে না, যার ফলে এমন বিব্রতকর পরিস্থিতির স্বীকার হতে হয়!

সুন্দর পোস্ট! অনেক ভাল লাগলো! ধন্যবাদ জানবেন!

৪| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১২

হামিদ আহসান বলেছেন: মানুষ হয়ে আরেকজন মানুষ কে এরকম অসহায় অথবা বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দেয়াটা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। কাজেই সজ্ঞানে কেউ যদি কারো ওয়ালে এরকম ‘মল-ট্যাগ’ করে থাকে তার উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত। আর অজ্ঞানে যাতে এধরনের অপরাধ সংগঠিত না হয় সেজন্য মনকে শাসন করা উচিত-যাতে সে সবসময় সজ্ঞান থাকে।

সহমত ...

৫| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৭

শাহাদাত হোসেন বলেছেন: আমি এখনো মল ট্যাগদের খপ্পরে পড়িনি ।

৬| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৪

আবু শাকিল বলেছেন: মল ট্যাগে একবার পড়েছিলাম।
সেই বিব্রতকর পরিস্তিতির কথা নাই বা বললাম!!

৭| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:২১

ক্যান্সারযোদ্ধা বলেছেন: মলট্যাগটা বয়সের দোষ, বয়স বাড়লে এটা কমে আসে। এ যোগে দেখেনি এমন একজন এডাল্টও পাওয়া ভার। ধন্যবাদ।

৮| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:১৪

দ্যা ব্যাকডেটেড বলেছেন: এ ধরনের সমস্যায় পড়লে শুরুতেই আপনার
অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড বদলে
নিন। এরপর যেসব পর্নো আপনার
টাইমলাইনে ইতিমধ্যে শেয়ার
হয়েছে সেগুলো মুছে ফেলুন এবং
রিপোর্ট করুন। সম্ভব হলে ভালো
অ্যান্টিভাইরাস দিয়ে আপনার
কম্পিউটারটি স্ক্যান করে নিন। এ
ক্ষেত্রে এফ-সিকিউর স্ক্যান, ট্রেন্ড
মাইক্রো স্ক্যান, ইস্যাট স্ক্যান,
মাইক্রোসফট নিরাপত্তা সফটওয়্যার
প্রভৃতির যেকোনো একটি দিয়ে
অনলাইনে সরাসরি স্ক্যান করুন।
যদি আপনার ব্রাউজার গুগল ক্রোম হয়
তবে browser-specific scan করুন। আপনার
ব্রাউজারটি সর্বশেষ সংস্করণ
হালনাগাদ করে নিন এবং আপনার
অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা
শক্তিশালী (স্ট্রং) করে ট্যাগ
রিভিউ দিয়ে রাখুন। কেউ যেন
কোনো কিছু ট্যাগ করলে আপনার
রিভিউ ছাড়া যেন টাইমলাইনে
দেখানো না হয়। এটি করতে চাইলে
Settings থেকে Timeline and Tagging
Settings-এ গিয়ে Who can add things to my
timeline?-এ Review posts that friends tag you
in before they appear on your Timeline
অপশনটি সক্রিয় করুন।

৯| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১:১৪

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: একসময় দইয়ের পাতিলে "বিশেষ কিছু" স্যুইপারকে দিয়ে ভড়িয়ে মিসাইলের মত মারতাম শত্রুর বাসার জানালায়।। কিন্ত "বড়" হবার সেপথ আর মাড়াই নি।।
কিন্তু আজ তাই দেখতে পাচ্ছি যত্রতত্র।।
ধন্যবাদ ভাল একটি প্রসঙ্গ তুলে ধরার জন্য।।

১০| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১:৪৬

নবাব চৌধুরী বলেছেন: লেখকের জন্য রইলো অনেকগুলো শুভকামনা,ধন্যবাদ ভ্রাতা সময়ের দাবীকৃত এমন একটা পোস্ট প্রদান করার জন্য।ভালো থাকবেন আশা রাখি।

১১| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:৩৩

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: একজন মানুষ হয়ে আরেকজন মানুষ কে এরকম অসহায় অথবা বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দেয়াটা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। কাজেই সজ্ঞানে কেউ যদি কারো ওয়ালে এরকম ‘মল-ট্যাগ’ করে থাকে তার উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত। আর অজ্ঞানে যাতে এধরনের অপরাধ সংগঠিত না হয় সেজন্য মনকে শাসন করা উচিত-যাতে সে সবসময় সজ্ঞান থাকে।

১২| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৫

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: ট্যাগ রিভিউ অপশন এনেবল করে রাখলেই হয়। ল্যাঠা চুকে গেলো। কত ট্যাগ করবি কর এইবার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.