নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পড়ি এবং লেখি

সৃষ্টিশীল আলিম

ক্ষুদে সাহিত্যিক, সৃষ্টির নেশায় উন্মুখ

সৃষ্টিশীল আলিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

গোপন অধ্যায় :: উপন্যাস :: পর্ব : ১

০৯ ই মে, ২০১৭ সকাল ১১:০৮





এক.
মনের ভেতর কোনো ক্লেদ ছিলো না। সে আসবে বলে আমি সবগুলো খাবার আইটেমই স্তরে স্তরে সাজিয়ে রেখেছি। খাবারগুলো থেকে গরমের ধোঁয়া উঠছে। সে ধোঁয়া দেখে মনের মধ্যেও কেমন যেনো তুষ্টি অনুভব করলাম। বেলা দুটো বাজতেই অপেক্ষা করতে লাগলাম। কখনো দরজা খুলে বাহিরে তাকাই। প্রত্যাশিত কাউকে না পেয়ে দরজা বন্ধ করি। আবার কখনো বা জানালা দিয়ে বাইরে তাকাই। অপেক্ষার প্রহরগুলো সত্যিই কঠিন।

বেলা আড়াইটার সময় সে বাসায় এলো। বেশ ক্লান্ত-শ্রান্ত। হাতমুখ ধুয়ে খাবার টেবিলে আসার জন্য অনুরোধ করলাম। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একইসাথে বসে খাবার গ্রহণের মজাই আলাদা। খাওয়ার পর্বে যা যা লাগে সবকিছুরই যোগান দিতে লাগলাম। খাওয়া শেষ হলে সোজা বিছানায়। নিজে কখনোই দুপুরে বা বিকেলে ঘুমানোর চেষ্টা করিনি। আর এজন্য এসময় আমার ঘুমও পায় না। এটা অনেকটাই অভ্যাসের ব্যাপার। বিছানাতে এসেই তার পায়ের ব্যথা শুরু হয়ে গেলো। আসলেই কি পায়ের ব্যথা? আমি ম্লান হাসলাম। মনে হলো এ ব্যথাটি আমাকে দেখেই উঠেছে। আহা! নারী বুঝি ভঙ্গির সম্রাজ্ঞী।

আমি হাত পা ম্যাসেজ করে দিতে লাগলাম। তার মুখায়ব দেখে বুঝতে পারলাম সেও খুব আরাম অনুভব করছে। শুধু পায়ে নয়, শরীরের নানা জাগাতেই ম্যাসেজ করছি। একসময় আমার শরীরও গরম হয়ে উঠলো। গোপন বাসনার জন্য মুখিয়ে উঠলাম। আবেদন করতেই তা বিনয়ের সাথে প্রত্যাখান হলো। কিছুটা হতাশ হলাম। এ আর নতুন কী! সময়ে সব সয়ে যায়। প্রত্যেহই এরকম হতাশ হতে হতে এখন অপ্রাপ্তিটাই প্রত্যাশা করি! ম্যাসেজ চলতে থাকে। একসময় সে আরামে আরামে ঘুমিয়ে পড়ে। তার ঘুমের পরই শেষ হয় আমার সেবাপর্ব।

দুই.
রাতের বেলা। গবেষণার কাজ করছিলাম। কী মনে করে যেনো সে প্লেটে খাবার নিয়ে রুমে প্রবেশ করলো। সন্ধ্যা সাতটার সময় কঠিন বিপদে না পড়লে কখনোই খাই না। এতদিনে অবশ্য এ নিয়মটা তারও জানা হয়ে গেছে। যারা নিয়ম জানে তারাই নাকি আগে নিয়ম ভাঙে! প্রথাগত নিয়ম ভেঙে আমাকে বললো-খানি রেডি অইগেছ। আইয়ো। আমি কম্পিউটার থেকে চোখ না তুলেই বললাম-তুমি খাইলাও। আমি ফরে খাইমুনে। সে কিন্তু মোটেই ছেড়ে দেবার মতো পাত্রী নয়। পুনরায় কোমল কণ্ঠে বললো-খাবার ঠাণ্ডা অই যাইরো, আইয়ো। তার মিহিকণ্ঠের অনুরোধ আর ফেলতে পারলাম না। খেতে এলাম। ওহ্! আত ও তো ধোয়া অইছে না। ওবাও, আইরাম-বলেই আমি বেসিনে হাত ধুয়ে খাবার টেবিলে এলাম। প্লেটের মধ্যেই ভাত-তরকারি দেওয়া। দুজনেই শুরু করলাম। বরাবরের মতোই আমি ভাতের সাথে লেবুর টুকরো পছন্দ করি। সে হয়ত ভুলে দেয়নি। আমি খেতে খেতে লেবুর কথা বলতেই সে ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠে। আমাকে জব্দ করার জন্য কঠিন স্বরে বলে-সব ব্যাটাইনতেই বেটিনতরে গোলাম মনে খরে।

কথাটি শুনে আমি নিজের মধ্যেই কেমন যেনো হোঁচট খেলাম। এমন উত্তর আশারও ছিলো না, প্রত্যাশারও ছিলো। আমি অস্বস্থিবোধ করতে লাগলাম। কয় ব্যাটাইনতর লগে ঘর খরছো?-কথাটি বলতে গিয়েও থেমে গেলাম। আগুনে ঘি দিলে নাকি তা আরও দ্বিগুণ হয়। সেজন্য আমি আরও একটু সংযত হলাম। খানিকপর নরম স্বরে বললাম- পৃথিবীর কোনো ব্যাটাইনতে বেটিনতর লাগি খানি রেডি খরিয়া রাখে না। কিন্তু আমিও তো তোমার লাগি সবতা রেডি খরিয়া রাখি। কোনো জিনিসর তো ঘাটতি রাখি না। আমি তো অউ সময় তোমারে খই না যে-সব বেটিনতে সব ব্যাটাইনতরে গোলাম মনে খরে!

০৯.০৫.২০১৭
শিবগঞ্জ, সিলেট

মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই মে, ২০১৭ রাত ২:১৭

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: ভালো লাগলো গল্প। দ্বিতীয় পর্বের অপেক্ষায়

শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.