নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফ্রম ডাস্ট আই হ্যাভ কাম, ডাস্ট আই উইল বি

আপন আলোয় আলোকিত হবার অব্যাহত চেষ্টা

আধখানা চাঁদ

যাহা বলিব সত্য বলিব, সত্য বই মিথ্যাও কিঞ্চিৎ বলিব (গল্প বলার সময়)

আধখানা চাঁদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার 'গয়নার বাক্স' দেখা

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৩

একটি বহুমাত্রিক ছবি গয়নার বাক্স ! ছবির কাহিণী আবর্তিত হয়েছে ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সালকে কেন্দ্র করে । শ্রীমতি রাসমনির (মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়) বিয়ে হয় ১১ বছর বয়সে, তার বয়সের দ্বিগুণ বরের সাথে। বিয়ের একবছরের মাথায় সেই স্বামী হারিয়ে ১২ বছর বয়সে বিধবা হন রাসমনি। বিয়েতে তিনি আনুমানিক ৫০০ ভরি সোনার গয়না পান।এর মধ্যে বালা,চুড়ি,সোনার চেইন, বিছা,সবই আছে। স্বামী বিয়োগের পর রাসমনি তার বাপের বাড়িতেই থাকতে থাকেন তার ভাইয়ের সাথে। বিয়ের সময়কার গয়নাগুলোর লোভেই মূলত সবাই রাসমনি কে তোয়াজ করে চলত। আর সময়ের সাথে সাথে ভাইয়ের ছেলের বউদের সেখান থেকে সামান্য কিছু গয়না উপহার হিসেবে দিতে থাকেন। যদিও দেবার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা রাসমণির থাকে না।



সোমলতা(কঙ্কণা সেন) ঐ বাড়ির বউ হয়ে আসে। তার কিছুদিনের মাথায় রাসমণি মারা যায়। কিন্তু সোমলতার কাছে ভূত হিসেবে রাসমনি বার বার আসতে থাকে। তার গয়নার বাক্সটিও সোমলতা কে সরিয়ে ফেলতে বলে। কোন এক বিশেষ কারণে রাসমণি সোমলতা কে বিশ্বাস করে। আর ভূত হিসেবে শুধুমাত্র তার সাথেই দেখা দেয়। কখনো উপদেশ দিয়ে, কখনো কষ্টের কথা ভাগাভাগির মাধ্যমে আবার কখনো সোমলতার বিপদে ত্রাণকর্তা রূপে হাজির হয় রাসমনি।



মাত্র ১২ বছর বয়সে বিধবা হবার কারণে স্বামী সোহাগ থেকে বঞ্চিত রাসমণি সোমলতা কে একরকম হিংসাই করে। ভরা যৌবনে এক শ্রমিক কর্তৃক দেহের আবেদন মেটানোর বাসনা এবং ধরা পড়ে সেই শ্রমিকের অকাল মৃত্যু তাকে ব্যাথিত করে । আবার সোমলতা পরবর্তীতে এক বাংলাদেশী কবি কর্তৃক প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করলে রাসমণি তাকে বলে যে পরজগতে পাপ-পুণ্য বলে কিছু নেই, যৌবন একবার গেলে আর আসেনা , ভোগ করে নাও যত পার তত।



পুরো ছবিতেই যৌবন একবার গেলে আর আসেনা এই বাক্যটি প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে বার বার উচ্চারিত হয়েছে। আর সেই যৌবন মানেই কোন এক উপায়ে শরীরি আবেদনে পৌঁছিয়ে দেয়া হয়েছে। ভালবাসা এক অর্থে বিশ্বাস আবার যৌবনের ভালবাসা শরীরি, সুতরাং স্বামী বা স্ত্রীর দিকে না তাকিয়ে যৌবনের চাহিদা মেটাও, এ ব্যাপারটা ভাল ঠেকেনি। ভালবাসার কথা বলা হয়েছে, আবার যৌবনের ভালবাসায় বিশ্বাসভংগ করতে উৎসাহিত করা হয়েছে। ভালবাসার আবেদন যে কেবল দৈহিক নয়, এটির মূল আবেদন যে আসে মন থেকে সেটির অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। যদিও সোমলতা শেষ অব্দি তার স্বামীর কাছেই ভালবাসার আনুগত্য প্রকাশ করে থাকে ।



ছবির আরেকটি দিক হল ৭১ এ আমাদের স্বাধীনতার ব্যাপারটি ইতিবাচক ভাবে দেখানো হয়েছে। সোমলতার মেয়ের প্রেমিক থাকে বাংলাদেশী মুক্তিযোদ্ধা। প্রেমের চাইতেও বেশি অগ্রাধিকার দেয় তারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ কে। আর শেষমেষ সেই গয়নার বাকসের ৫০০ ভরি গয়নাও মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহার হয়। ছবিতে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতটিও চমৎকার ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।



ছবিতে ট্র্যাডিশনাল কলকাতার ন্যাকামি টাইপ কথার বদলে আঞ্চলিক কথা বেশ উপভোগ্য। লম্বা লম্বা সিনেম্যাটিক ডায়লগের বদলে আঞ্ছলিক ভাষার কথা দর্শকদের আরো কাছে টেনেছে । নয়তো সোয়া দুঘন্টার ছবি হজম করা কষ্টদায়ক হত।



পরিশেষে, যারা ফেলানী হত্যার অবিচারে সকল প্রকার ভারতীয় পণ্য বর্জন করেছেন, তারাও হঠাৎ আমার মত ভুলক্রমে এই ছবিটি দেখে ফেলতে পারেন ! এই ভারত ই ঘোর বিপদে তখন আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল। আর এখন আমাদের ফেলানীরা কাঁটাতারে ঝুলে থাকে। আমি নাহয় ভুলক্রমে একটা ছবি দেখে ফেললাম, এর জন্যে অনুতপ্ত হলাম, ক্ষমাও চাইলাম। কিন্তু ফেলানীর কী হল ?



ভারতের করা বিচারও কী আমাদের জীবন নিয়ে খেলা করা ভুল না ??? এই ভুল কী তারা কখনও শোধরাবে ???

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৩

তানজিম রহমান বলেছেন: কাহিনীটা সুন্দর হতে পারতো কিন্ত কিছুটা কমেডি ধাঁচের হয়ে গেছে... এটা কমেডিই আসলে, তবে শেষের গানটা সুন্দর।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:২০

আধখানা চাঁদ বলেছেন: সহমত। আবহ সংগীত গুলোও বেশ ভাল ছিল ।

মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ ।

২| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:২৫

আমাবর্ষার চাঁদ বলেছেন: কিছুটা ভাল..........

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৩০

আধখানা চাঁদ বলেছেন: আপনি কী আমার নিক দেখিয়া অনুপ্রাণিত (আমি আধখানা, আপনে আমাবর্ষা চাঁদ )?! /:)

মজা করলাম ।

পোস্ট কষ্ট করে পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ।

৩| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৩৫

অচেনা কথা বলেছেন: মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয় ভালো লেগেছে, কিন্তু কঙ্কণা সেন এরটা মেকি মনে হয়েছে, আর শেষের দিকে সিনেমাটা ঝুলে গেছে।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৪৩

আধখানা চাঁদ বলেছেন: মৌসুমী আসলেই দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন। চরিত্রের প্রয়োজনীয়তাটাও এর একটা কারণ। কঙ্কণা সেন এর অভিনয় ও ভাল লেগেছে আমার কাছে। তোতলামো নিয়ে ভালই করেছেন।

আর শেষ তো একভাবে করতেই হত। ৫০০ ভরি সোনা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে দেয়াটা আমার কাছে ভালই লেগেছে।

কষ্ট করে পড়ার জন্যে এবং মন্তব্যের জন্যে অনেক ধন্যবাদ ।

৪| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৪৫

আমাবর্ষার চাঁদ বলেছেন: ভাই, আপনি মনে হয় আমার নিক দেইখ্যা অনুপ্রাণিত হইছেন........... কারন মুই আপনের চে ব্লগে বড়........... :D :D :D :D :D
মিসটেক মারছেন........... :D
আফনেরেও ধইন্না.......... B:-/

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:০৫

আধখানা চাঁদ বলেছেন: জেনে অনুপ্রাণিত হলুম ! ;)

হা হা হা...........

B-) B-) B-)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.