নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফ্রম ডাস্ট আই হ্যাভ কাম, ডাস্ট আই উইল বি

আপন আলোয় আলোকিত হবার অব্যাহত চেষ্টা

আধখানা চাঁদ

যাহা বলিব সত্য বলিব, সত্য বই মিথ্যাও কিঞ্চিৎ বলিব (গল্প বলার সময়)

আধখানা চাঁদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটগল্পঃ নিয়তি

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:২৭

রিডিং টেবিলের ওপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা বইখাতা। একপাশে দুটি পানির বোতল, ছোট টেবিল ফ্যান। টিভির রিমোট ইতঃস্তত পড়ে আছে বাঁকা হয়ে। রুমে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ডিশের লাইন, টেলিফোনের তার, কম্পিউটার ক্যাবল। রুদ্র'র আব্বু কিছুক্ষণ আগেও কম্পিউটারের ক্যাবলে আটকে প্রায় পড়ে যাচ্ছিলেন। রুদ্র দেখেও না দেখার মত রইল।

এক দৃষ্টিতে ল্যাপটপের স্ক্রিনে তাকিয়ে আছে রুদ্র। একটু পরেই তার ল্যাপটপ বন্ধ করে গোসল করতে যাওয়ার কথা। নামায পরে দুপুরের খাওয়ার কথা, বিকেলে ক্লাসে যাবার কথা। সবই করবে সে,অন্য আর সব দিনের মতই। কিন্তু রুদ্র জানে কিছু অস্বাভাবিকতা আছে। সেটা হল তার টেবিলের ছড়ানো ছিটানো বইগুলোর মাঝে একপাতা হালকা নীল রঙের ট্যাবলেট আছে। রুদ্র ইচ্ছে করলেই ট্যাবলেটগুলো ড্রয়ারের কোন এক কোণায় লুকিয়ে রাখতে পারত। তা সে করেনি। তার ছড়ানো ছিটানো টেবিল কেউ গোছাতে গিয়ে দেখে ফেলতে পারত, এই ভয় কেন জানি করেনি তার। হালকা নীল রঙের অসুধগুলোর ক্ষমতা অসীম। সে ক্ষমতার কথা প্যাকেটের গায়ে লাল কালিতে বার বার উল্লেখ করা। ভয় পাওয়ার একটা ব্যাপার আছে। কিন্তু রুদ্র'র ভয় করছে না। দুটো খেলেই যেখানে না ফেরার দেশ থেকে কেউ ফেরে না সেখানে রুদ্র পুরো ছয়টি খাবে।

রুদ্র কোন মেয়েকে ভালবাসে না যে তাকে না পেয়ে আত্নহত্যা করবে। তার আর্থিক অবস্থাও বেশ ভাল, কোন চাওয়া অপূর্ণ নেই তার। পড়াশোনায় হায়ার স্টাডি প্রায় শেষের পথে, সুন্দর একটা ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে তার জন্যে। এসব কিছুই ভাবছে না সে। নির্বিকার ভঙ্গিতে হালকা নীল ওষুধগুলো খাবে রুদ্র। তারপর যথারীতি ল্যাপ্টপ বন্ধ করে, বইগুলো গুছিয়ে ঘুমুতে যাবে।

কোন সুইসাইড নোট না, আমার মৃত্যুর জন্যে সে দায়ী টাইপ লেখা না, কোন ইমোশনাল ফেইসবুক স্ট্যাটাস না, আমি চলে যাচ্ছি আর ফিরবো না এই রকম। বা প্রিয় বন্ধুদের সাথে শেষবার মোবাইলে কথা বলা, একটা এসএমএস দেয়া। হয়ত অমর হয়ে থাকার শেষ চেষ্টার মত এই সব কিছু রুদ্র করতেই পারত, কিন্তু সে এসব ন্যাকামোর কিছুই করবে না। খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিতে ওষুধগুলো খাবে সে। যেমন স্বাভাবিক ছিল ওষুধগুলো কেনার সময়।

রুদ্র বেঁচে থাকতে ক্লান্ত, একই একঘেঁয়ে জীবন আরও ২০-৩০ বছর বয়ে বেড়ানোর ইচ্ছা তার নেই। কোন আশা,উচ্চাশা,পিছুটান কিছুই নেই তার জীবনে। ওষুধগুলো হাতে নিয়ে তাকিয়ে রইল রুদ্র। সবকিছুর ইতি হতে পারে এখনই, আবার হয়ত নতুন কোন কিছুর শুরুরও।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.