নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জিতু

ফেইসবুকে আছিঃ https://www.facebook.com/shamimahmedjitu রকমারিতেঃ http://www.rokomari.com/book/77323 কবিতার পেইজঃ https://www.facebook.com/PriyoPromotyo

জিতু › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবনে নানারকম মধুর যন্ত্রণাসমূহ

১১ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৩

জীবনে নানারকম মধুর যন্ত্রণা। সকালে ঘুম থেকে ওঠা হচ্ছে প্রথম যন্ত্রণা। আগে এলার্ম দিয়ে উঠতে হতো, তারপর বউ ওঠাতো, এখন মা-মেয়ের স্কুলে যাবার প্রস্তুতি থেকে উঠি। মেয়ে ঘুম থেকে ওঠেনা, মা বকা ঝকা দেয়, ধাক্কা-ধাক্কি করে। মাঝ দিয়ে আমি উঠে যাই, ওঠার আগে মেয়েকে কাতুকুতু দেই, মেয়ে কনুই দিয়ে আমার মুখে গুতো মারে, আমরা উঠে যাই।



তারপর যন্ত্রণা - স্যান্ডেল কই? নাই-নাই! অবশেষে বিছানা থেকে নামার স্যান্ডেল পরে বাথরুমে যাই, বাথরুমের সামনে যেয়ে বাথরুমের স্যান্ডেল আর পাইনা, খুঁজতে থাকি, অবশেষে পাই। ঘরের স্যান্ডেল খুলে বাথরুমের স্যান্ডেল পরে ঢুকি। বাথরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে গোসল করার আগ মুহুর্তে মনে হয় টাওয়েল নিয়ে ঢোকা হয়নি, আবার বেরোও, টাওয়েল নাও। আরও খারাপ অবস্থা যেদিন গোসল করার পর মনে হয় টাওয়েল নিয়ে ঢুকিনি!



সকাল সকাল বের হই, কারণ বউ-বাচ্চাকে নিয়ে বের হয়ে হয়। গাড়িতে ওঠার আগে মনে হয়, বাসার চাবি নেয়া হয়নি। আবার উঠি, বাসার চাবি নেই, মশার ওষুধ স্প্রে করি, আব্বা মেয়েকে নিয়ে ফিরবে যখন, তখন যাতে মশা না থাকে। যেদিন শুরুতেই মনে পড়েনা যে চাবি আনিনি সেদিন আরেক ঝক্কি, আব্বা মেয়েকে নিতে আসার সময় অফিসে চাবি দিয়ে যায়, যেমন আজ। চাবি পাওয়ার পর ডেস্ক খুলে ল্যাপ্টপ বের করে কাজ শুরু করি। চাবি নিতে সেদিনই ভুলে যায়, যেদিন অফিসে ল্যাপ্টপ রেখে যাই!



আরও মধুর যন্ত্রণা আছে। যেদিন স্যান্ডেল পরে অফিসে আসি, সেদিন দেখা যায় একটা high profile মিটিং আছে, অন্যদিন মিটিং নাই! মাঝে মাঝে মোবাইল, মোবাইলে এডাপ্টার, ল্যাপ্টপের চার্জার বাসায় ফেলে আসার কথা আর নাই বা বললাম!



আজকে অফিসে এসে এখন পর্যন্ত ৪৭ টা ই-মেইলের উত্তর দিয়েছি। কালকে বাসায় ল্যাপ্টপ নেইনি বলে এই অবস্থা, সাধারণত ৩০টার মতো মেইলের উত্তর দেই। এখনও ৮টা ই-মেইলের উত্তর দিব। তার মাঝেও আরও অনেক কাজ করেছি, কলিগদের সাথে ছোট ছোট বিষয়ে মিটিং করেছি ৭০,০০০, ফোনে রেসপন্স করেছি কমপক্ষে ১০টা পার্টনার এন।জি।ও'কে!



In the mean time facebooking করিনাই তা না, করেছি। বউয়ের ঝাড়ি দেয়া এস।এম।এস পেয়েছি,



"সুন্দরী মেয়েদের ছবিতে তো লাইক দাও, wife কে তো সারাদিন একটা এস।এম।এস'ও দাও নাই!"



দ্রুত বাসায় ফোন দিলাম। মেয়ে ধরলো,



"বাবা মা তো এখানে নাই, অন্যরুমে।"



কিছুক্ষণ পর,



বউয়ের এস।এম।এস



"আমি বলার পর কল দিয়ে তো লাভ নাই। সুন্দরী মেয়েদের তো লাইক বলার পর দাওনা।"



বউকে কেমনে বলি আসলেই কিছু সুন্দরী মেয়ে inbox এ বলে



"প্লিজ আমার ছবিতে লাইক দাও, কমেন্ট করো!"



যাইহোক এরই মধ্যে ড্রাইভারের ফোন,



"স্যার, বনানী মোড়ে সার্জেন্ট ধরছে। ফিটনেস এর কাগজ নাই, জরিমানা করবে।"



আমার মেজাজ খারাপ হয়। টাকা অলরেডি জমা দিয়েছি, রাজুর আজ সকালে কাগজ দেয়ার কথা, এখনও দেয়নাই। ফোন দেই।



"রাজু সাহেব কই?"



"স্যার আমি মিরপুর ১৪।"



"তাড়াতাড়ি আসেন, গাড়ি বনানীতে, আপনার ফিটনেস এর কাগজ নিয়ে ছাড়াতে হবে।"



"স্যার আমি CNG নিয়ে আসি।"



"কি নিয়ে আসবেন, আপনি জানেন, তবে তাড়াতাড়ি আসেন!"



ওদিকে ড্রাইভার আবার ফোন দিসে।



"স্যার সার্জেন্ট কথা বলবে।"



আমি ফোন ধরি।



"স্লামালেকুম।"



"ওয়ালাইকুম সালাম। ভাই আমার নাম শামীম আহমেদ। একটা Internationa NGO তে কাজ করি Programme Manager হিসেবে।"



"জ্বি ভাই বলেন। আপনার গাড়ির তো কাগজ নাই।"



"ভাই আপনি টাকা দেয়ার রশিদ দেখেছেন?"



"জ্বি দেখেছি, কিন্তু ওটা তো আপনার আর বি।আর।টি।সি'র ব্যাপার। আমার দায়িত্ব ৪টা কাগজ চেক করা, ৩ টা আছে, ১ টা নাই, আমি জরিমানা করব।"



"আপনি একদম ঠিক কথা বলেছেন ভাই। ফিটনেস এর রিসিট ওখানে আছে, কিন্তু কাগজ আমার কাছে আছে। আপনি চাইলে আধা ঘন্টা পরে আসলেই পাবেন। আমি কাগজ পাব বলেই ড্রাইভারকে আসতে বলেছি নাহলে বলতাম না। আপনি যদি এখন আমার কথা বিশ্বাস করেন তবে দেখে যেতে পারেন।"



"কাগজ আপনার কাছে আছে?"



"জ্বি।"



"ঠিক আছে, আপনার গাড়ি ছেড়ে দিচ্ছি।"



এদিকে আরেক ফোন।



"স্যার আমি রাজু, আপনার কাগজ নিয়ে আসছি, অফিসের নীচে দাড়াইছি।"



এতটুকু পর্যন্ত লিখেছি, একটু মোবাইলটা চেক করলাম। এস।এম।এস, মিসড কল জমে আছে। এক বন্ধু ফোন করে বললো,



"You don't even have the time to call back, i am such a fool, i thought you would!"



আমি কিছু বলিনা। বলে কোন লাভ নাই। কেউ কিছু বিশ্বাস করেনা, করলে মানতে চায়না, মানলে আর ভালবাসেনা।



এদিকে অনেকক্ষণ ধরে মাহফুজ ভাই টাইম চাচ্ছেন। একটু ওনার সাথেও বসা দরকার। যাই এককাপ চা বানিয়ে মাহফজ ভাইর সাথে বসি। ব্যাকগ্রাউন্ড এ কৈলাস খের এর গান বাজতে থাকে। অফিস টাইম এর পর জোরে গান শুনলে কমপ্লেইন করার মতো workaholic কোন কলিগ থাকেনা এটাই স্বান্তনা...



শামীম আহমেদ

বনানী, ঢাকা

১১ মার্চ, ২০১৪।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩১

দালাল০০৭০০৭ বলেছেন: আপনার কষ্টে

২| ১১ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৫

মিথিলা মাহমুদ বলেছেন: "সুন্দরী মেয়েদের ছবিতে তো লাইক দাও, wife কে তো সারাদিন একটা এস।এম।এস'ও দাও নাই!" =p~ =p~ =p~

১২ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:৫৬

জিতু বলেছেন: মিথিলা, বউও সুন্দরী, তাকে তো বাস্তবেই লাইক দেই :)

৩| ১১ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫

স্বপ্নসমুদ্র বলেছেন: কর্পোরেট ব্যস্ততা। এত হুড়াহুড়ির মধ্যেও ব্লগিং করতে পারেন। অনেক গুছানো লেখা।

১২ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:৫৭

জিতু বলেছেন: স্বপ্নসমুদ্র ভাই, টুকটাক চেষ্টা করি আর কি! ধন্যবাদ উৎসাহের জন্য :)

৪| ১১ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫০

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: কত কস্টরে..........

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.