নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জিতু

ফেইসবুকে আছিঃ https://www.facebook.com/shamimahmedjitu রকমারিতেঃ http://www.rokomari.com/book/77323 কবিতার পেইজঃ https://www.facebook.com/PriyoPromotyo

জিতু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বেঁচে থাকা মানুষেরা

২১ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১১:১২

আমি যখন বিয়ে করি, তখন আমার শ্বশুর বাকশক্তিহীন। আমার বিয়ের আগেই একদিন হঠাৎ করে আমার শ্বশুর ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন। আমি ইউনিভার্সিটিতে ছিলাম। বউকে নিয়ে তাড়াতাড়ি হসপিটালে গেলাম। মনোয়ারাতে ছিলেন। আমরা তাড়াহুড়ো করে হলি ফ্যামিলিতে নিলাম। সেদিনই প্রথম আমার শ্বাশুড়ি, শ্যালিকার সাথে আমার দেখা হয়, কথা হয়। ওই স্ট্রোকের পরই আমার শ্বশুর বাকশক্তিহীন হয়ে পড়েন।



আমার শ্বশুর তাঁর পরিবারের প্রথম ব্যক্তি যিনি কিনা অনেক কষ্ট করে ঢাকা শহরের মতো একটা কঠিন জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি শরীরের খুব যত্ন নেননি। প্রচন্ড খাটাখাটনি করতেন। তিনি তাঁর ছোট্ট সংসারে ২ মেয়েকে খুব ভালভাবে মানুষ করেন। আমার স্ত্রী এবং তাঁর ছোট বোন ২ জনই ক্লাস ১২ পর্যন্ত ভিকারুন্নিসায় পড়ে। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন অর্থনীতি আরেকজন জনপ্রশাসনে। ২ জনই এখন ভাল জায়গায় কাজ করছে। ২জনই নম্রভাষী এবং অত্যন্ত বিনীত। বিয়ে করা আমার কাছে সবসময় একটা ভুল সিদ্ধান্ত মনে হয়। কিন্তু সেই ভুল কাজের সঙ্গী হিসেবে আমার স্ত্রীর চাইতে ভাল অপসান আমার জন্য কখনোই হয়ত কেউ হতে পারতনা। আমার শ্বাশুড়িও একজন অদ্ভুত ভাল মানুষ। লোকচক্ষুর আড়ালে মাটির কাছাকাছি তার বসবাস। মৃদুভাষী ভদ্রমহিলা কখনও একটির বেশী দুইটি কথা বলেন না এবং বাংলাদেশের বেশিরভাগ সংসারে অশান্তির মূল কারণ যেখানে মেয়ের সংসারে মায়ের অযাচিত হস্তক্ষেপ, সেখানে আমার শ্বাশুড়ি একেবারেই অনুপস্থিত।



আমার বউ প্রায়ই দুঃখ করে বলে যে তাদের বাবা তাদের স্কুলে রেডি করা থেকে ঝুটি করা থেকে খাইয়ে দেয়া থেকে গোসল করা থেকে শপিং করা থেকে সবকিছু করতেন। আমি সে তুলনায় কিছুই করিনা। আমার পারিবারিক অসামাজিকতা প্রকট হয়ে ফুটে ওঠে যখন আমি তার কাছে আমার শ্বশুরের গল্প শুনি।



আজ ২১ এপ্রিল আমার শ্বশুরের মৃত্যুবার্ষিকী। সম্পর্কের অন্যান্যক্ষেত্রগুলোর মতো মেয়ের জামাই হিসেবেও আমি মোটামুটি অপদার্থ। তবে আমি তাকে প্রতিদিন স্মরণ করি। প্রতিদিন সকালে যখন বউ-বাচ্চাকে স্কুলে নামিয়ে আমি অফিসে আসি তখন বনানী কবরস্থানের পাশ দিয়ে আসতে হয়। কবরস্থানের পাশ দিয়ে আসার সময় আমি রেডিওর সাউন্ডটা বন্ধ করে দিয়ে নীরবে খানিকের জন্য তাকে স্মরণ করি এবং দোয়া করি যাতে তিনি বেহেশতে নসীব হন।



আমিন।



শামীম আহমেদ

বনানী, ঢাকা

২১ এপ্রিল ২০১৪।



https://www.facebook.com/shamimahmedjitu

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১১:২৭

যেনী বলেছেন: আমিন!!!! আল্লাহ যেন আপনার শ্বশুরকে জান্নাতবাসী করেন।।।। আপনাদের সবাই খুব ভালো শুনে অনেক ভালো লাগলো।

২| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১১:৫৯

আমি স্বর্নলতা বলেছেন: আপনার শ্বশুরের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।

৩| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:৫৯

মূর্খ রুমেল বলেছেন: আপনার শ্বশুরের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.