নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নচারী পথিক।যখন যা ভালো লাগে তাই মনযোগ দিয়ে করার চেষ্টা করি।সত্যের সন্ধানী।

দেব জ্যোতি কুন্ডু

সাঁঝবাতি

দেব জ্যোতি কুন্ডু › বিস্তারিত পোস্টঃ

আত্মকথন৩

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:১৩

ছোটবেলায় দুটো পয়সা পাওয়ার জন্য পৌষ মাঘ মাসে ভোর রাত্রে নাড়া(খড়) কাটতাম বিঘা হিসাবে।গোবরের ঘসি(গোবর প্রাকৃতিক ভাবে শুকালে) টোকাতাম নৌকা করে অনেক দূরে যেতাম।বস্তা ভরে নৌকায় করে আনতাম এবং ভাগ করে নিতাম-কারন কয়জনে একসাথে যেতাম।কাঁচা গোবর টোকাতাম দিনের বেলা মাঠে গিয়ে,আবার ভোর রাত্রে বিভিন্ন আতালে গিয়ে,বিশেষ করে মতি মেম্বরের আতালে অনেকগুলো গরু ছিলো সেখানে গেলে অনেক গোবর পাওয়া যেত।দুই টাকা আয়ের জন্য বাড়িতে মা বিড়ি, তেল,কেরসিন ইত্যাদি বিক্রি করতো,আর দাদা বাদাম,বুট ইত্যাদি প্রাইমারি স্কুলের সামনে বিক্রি করতো।একদিন হুলারহাট দিয়ে কাঁচের শালশার বোতলে তেল আনার সময় পথে পড়ে গিয়ে ভেঙ্গ যায়,সে কি কান্নাকাটি আমার।বাকীতে মাসিক বাজার করতাম হুলারহাট দিয়ে,পরে মূলগ্রাম বাজার দিয়ে।মা আমাদের বাগানের গাছের পাতা কুড়াতো।এই সেদিনও মা পাতা কুড়াতো।প্রতি বছর রেইনট্রি গাছের ডাল কাটা লাগতো লাকড়ির জন্য।এখনতো কেনা লাকড়ি ও গ্যাস দিয়ে বাড়িতে চলে।বাসায় গ্যাস দিয়ে রান্না চলে।আমার স্ত্রী প্রথমে বাসায় কাঠের গুড়িদিয়ে এরপর কাষ্ঠ এখন গ্যাসে রান্না করে।মা প্রয়োজন হলেই চা খায় গ্যাসের চুলায় রান্না করে।
এখনকার ঘরেরে আগে আমাদের খড়ের ঘর ছিলো।প্রতিবছর খড় পাল্টানো লাগতো।কোলা(মাঠ) দিয়ে নাড়া শুকিয়ে এনে গইলান বানানো লাগতো,বাঁশের চটা,টুনি,নারকেলের চুমড়ি দিয়ে সোডা বানানো লাগতো।এরপর ঘরামীরা এসে চালা পরিস্কার করে নতুন বাঁশের চটা বাঁধতো।আমরা গৈলান উপরে ফিকা মারতাম,তারও একটা কৌশল ছিলো।ঘরামী সুন্দর করে নাড়া চালে বাঁধতো,নাড়া দিয়ে মটকা বাঁধতো।বাড়তি নাড়া কেটে সৈন্দর্য বাড়ানো হতো।সব শেষ হলে মা ঘর লেপা পোছা করতো।
নবান্নর আগে উঠনে মাটি দিয়ে উঠান জাগিয়ে লেপাপোছা করা হতো।এতেও একটা সৌন্দর্যের লড়াই হতো।কার উঠান কতো উঁচু হতো তানিয়ে লড়াই হতো।
ঘর ডোয়া লেপ দেয়া নিয়ে একটা সৌন্দর্যের দারুন লড়াই হতো,আমার মা এসব সৌন্দর্যের লড়াইয়ে অন্যতম একজন ছিলো।
বাবা দূরের স্কুলে চাকরি করতো।মা তাই ভোর রাত্রে উঠে প্রতিদিন রান্না করতো।সকাল সাতটার মধ্যে রান্না হয়ে যেতো।তিন বেলা গরম ভাত তরকারি রান্না হতো।
শিতের দিনে ধান উড়ানো সিদ্ধ করা ভানা ছিলো নিত্যদিনের কাজ।অনেক ধান শুকানো হলে কলে ধান ভানাতে যাওয়া লাগতো।সেই ভোরে গিয়ে সন্ধায় ফেরা লাগতো।
সাবান ছিলো ৫৭০।গায়ে ময়লা পড়লে তখন গরম জল করে ময়লা উঠানো হতো।চুলকানি ছিলো নৈমেত্তিক ব্যাপার।নিম পাতা সিদ্ধ করে স্মান করা হতো।গায়ে স্যান্ড গেঞ্জির দাগ পড়ে যেতো,রোদ ময়লায়।খালিপায় স্কুলে যাওয়া লাগতো,প্যান্ট অন্যরতা খাটিয়ে পড়া লাগতো,জামা বছরে একটা।মার শাড়ি সেলাই না করে পড়তোনা।লুঙ্গি,গেঞ্জি,গামছা সেলাই ছাড়া পড়া যেতোনা।আরো কতো কী?

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:২৬

আশফাক ওশান বলেছেন: আগেকার দিন গুলো আসলেই অন্যরকম ছিল।

২| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৪১

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: B:-) ক্ষণিকের জন্য হলেও ছোট বেলায় ফিরে গেছি। ধন্যবাদ, বাচ্ছামিতে ঘুরিয়ে আনার জন্য।
শুভ কামনা রইল।

৩| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:১৩

আখেনাটেন বলেছেন: পেছনের মধুর দিনগুলোর কথা মনে হলে সত্যিই অদ্ভুদ ভালোলাগাতে মন ভালো হয়ে যায়। আপনার এই স্মৃতিগুলো অসামন্য। পড়ে অনেক অনেক ভালো লেগেছে।

৪| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ ভোর ৫:১৭

জগতারন বলেছেন: দেব জ্যোতি কুন্ড, আপনার আজকের লিখাটি পড়ে ছোট্ট সময়ের কথা মনে পরে গেল। প্রবন্ধে যে সমস্ত গ্রাম্য শব্দ ও আচার (জীবন প্রনালী) উল্লেখ করলেন তার সবই আমাদের এলাকায় ছিল (বৃহত্তর ফরিদপুর)। আপনার প্রতি সুভকামনা রইল, আশা করি ওপার বাংলায় ভালো আছেন। ওখানের জীবন প্রনালীও এপাড়ের মত ? সাদৃস্য-বৈসাদৃস্য নিয়ে একটা প্রবন্ধ লিখলে ভালো লাগবে।

৫| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:০৬

রানা আমান বলেছেন: খুব ভালো হয়েছে লেখাটা ।

৬| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:৪৫

দেব জ্যোতি কুন্ডু বলেছেন: হ্যাঁ তাই,গ্রামে বাস নাকরলে জিবন অসম্পূর্ণ।

৭| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:৪৬

দেব জ্যোতি কুন্ডু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

৮| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:৪৭

দেব জ্যোতি কুন্ডু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।লেখার চেস্টা করবো।

৯| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:৪৮

দেব জ্যোতি কুন্ডু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.