নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নচারী পথিক।যখন যা ভালো লাগে তাই মনযোগ দিয়ে করার চেষ্টা করি।সত্যের সন্ধানী।

দেব জ্যোতি কুন্ডু

সাঁঝবাতি

দেব জ্যোতি কুন্ডু › বিস্তারিত পোস্টঃ

লক ডাউন ১

২৪ শে মে, ২০২০ রাত ১:১৭

লক ডাউন
২৬মার্চ ২০২০ থেকে কোর্ট বন্ধ। দীপনের আয় বন্ধ।সে পেশায় একজন উকিল সহকারি ।চার সদস্যের সংসার কীভাবে চালাবে সে দুশ্চিন্তায় প্রেশার বেড়ে যাচ্ছে। হার্টে তার ব্লক আছে ।তারপর বাবা-মা বেশ অসুস্থ ।বাবার পেনশনের টাকায় বাবা-মা এর ওষুধ খাওয়া মোটামুটি চলে যায় ।মা এর ফেব্রুয়ারীতে মারাত্মক অসুস্থতা গেছে ।ক্লিনিকে রেখে তাতে হাজার বত্রিশেক খরচ হয়েছে ।সে এখনো ভালো সুস্থ হয়নি ।০৮ মার্চ ২০২০ দেশে করোনা(কোভিড ১৯) রোগী ধরা পড়ে । ১৭মার্চ থেকে সরকার স্কুল,কলেজ বন্ধ করে দেয় ।মা-কে পরবর্তীতে ডাঃ দেখাতে পারে কীনা তাই খুলনা থেকে ডাঃ দেখিয়ে নিয়ে আসে ।তার পেশায় ডেইলি ইনকাম ।কীভাবে চলবে সংসার !কিছু টাকা ইতোমধ্যে ধার করা হয়ে গেছে ।ভাই বোনের সাহায্যে কোনমতে চালাচ্ছে ।বাড়িতে অন্যকোন আয় নেই ।এমন কোটি কোটি মানুষ আজ নোবেল করোনা ভাইরাস ১৯ মহামারীতে বিপদ্গ্রস্থ ।বেসরকারি কলকারখানার শ্রমিক কর্মচারী,দিন আনে দিন খায় এমন মানুষ,চায়ের দোকানদার,নাপিত,বিভিন্ন ব্যবসায়ী,খাবার হোটেল,পরিবহন শ্রমিক,রিক্সা চালোক-অটো চালোক-ভ্যান চালোক,নির্মান শ্রমিক-অবিভাসী শ্রমিক,বাসার কাজের লোক আরো কতরকমের পেশার মানুষ এর আয় বন্ধ ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নোবেল করোনা ভাইরাস১৯ কে বিশ্বমহামারী ঘোষণা করেছে ।তাদের ধারনা অনেক দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে ।দীপন এর আগে বিশ্বমহামারী দেখেনি।দুর্ভিক্ষ শুনেছে।বইয়ে পড়েছে।দুর্ভিক্ষের বিভিন্ন করুণ চিত্র বইয়ে বা বিভিন্ন গনমাধ্যমে দেখেছে।সোমালিয়া,কংগো,বুরুন্ডির দুর্ভিক্ষের অনেক করুণ কাহিণী তার জানা।এদেশেও অনেক দুর্ভিক্ষের কথা পড়েছে।জয়নুলের ছবিতে দেখেছে।মনের ভিতর নানা কথা জাগে।এমন সময়ে নাকি টাকা থাকলেও জিনিস পাওয়া যায় না।দাঙ্গা হয়।বেশি জিনিসপত্র সে কী দিয়ে কিনবে!টাকাতো লাগবে।সরকার যখন চাল দিতে শুরু করলো,বিভিন্ন ব্যক্তি বিভিন্ন রকম জিনিস দিতে শুরু করল তখন একটু একটু আশা জাগতে শুরু করলো।সাময়িক সাহায্যের সাথে সাথে বিভিন্ন মেয়াদের স্বল্প মূল্যের চাউলের কার্ডের জন্য তালিকা করতে শুরু করলো সরকার।সামনে ঈদুল ফিতর,নগদ টাকার ব্যবস্থা করলো সরকার।প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ লোককে বিনে খরচায় আড়াই হাজার টাকা দিলো হাসিনা সরকার।দীপনের মনে হচ্ছে তাহলে আর দুর্ভিক্ষ হবেনা এ বাংলাদেশে।
২৩মার্চ দেশে ১ম করোনা রোগী মারা যায়।মাদারিপুরের শিবচর ১ম লকডাউন ঘোষণা করা হয়।১৬এপ্রিল সমগ্র দেশ করোনা মহামারীর ঝুঁকিপুর্ন ঝোষণা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।এ রোগের ভেক্সিন না থাকায়,কার্যকরী অষুধ না থাকায় চিকিৎসা দিতে বেশ অসুবিধা হচ্ছে।ডাক্তার,নার্স,সেবা কর্মীর অভাবে রোগীদের বেশ ভোগান্তিতে থাকতে হয়।পিপিই,অক্সিজেন,আইসিইউ,ভেন্টিলেটর,মাক্সের অভাবে রোগীদের-ডাক্তারদের খুব অসুবিধায় পড়তে হয়।পর্যাপ্ত টেস্টের অভাবে রোগী শনাক্ত করা,হোম কোয়ারিন্টিন,প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারিন্টিনে রাখা,আইসোলেশনে রাখা ও যথাযথ লকডাউন পালনের অভাবে রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকানো বেশ কষ্টদায়ক হচ্ছিলো।মনে হচ্ছিলো দুমাসে এ বিষয়ে তেমন কিছু ভাবেনি কেউ।কেমন যেনো অগোছালো।এ বিষয়ে যদিও আমাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই।তার মনে হচ্ছে, স্বাস্থ্যখাতে টেকসই উন্নয়ন হয়নি।
প্রথমদিকে রোগীদের হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে বেশ অসুবিধা হচ্ছিলো।করোনা সন্দেহ হলেতো কথাই নেই।ফোন করে করোনা টেস্ট করাতে রোগীদের খুব বিড়াম্বনার শিকার হতে হয়।প্রাইভেট ডাক্তারদের বেশিরভাগ চেম্বার করা বন্ধ করে দিলে বেশ অসুবিধায় পড়তে হয় নানা রোগের মানুষদের।প্রাইভেট রোগীরা ডাক্তারদের দেখাতে পারছেনা,ফোনে সমস্যা জানাবে তাও পারছেনা-কারণ ডাক্তারেরা রোগীদের পার্সনাল নাম্বার দেয়না, আবার তারা অনলাইন সেবাও দেয়না।সাধারন ডাক্তাররা এসব রোগীদের চিকিৎসা দিতেও পারেনা।দীপনের “মা”ও এমন একজন রোগী।তাই এ বিষয়ে তার চিন্তার শেষ নেই।মানসিক কিছু সমস্যা তার মাকে ভোগাচ্ছে।
নোবেল করোনা ভাইরাস ১৯ কীভাবে ছড়ায়-এ নিয়ে সে ভেবে দেখেছে,অনেক মানুষ বোঝেনা হাঁচি,কাশি,সর্দির মাধ্যমে যে ড্রপলেট বের হয় তা কারুর হাতে লাগলে এবং ঐ হাত দিয়ে যদি সে নিজের নাক,মুখ,চোখ,কান ধরে তবে সে সংক্রমিত হতে পারে।সংক্রমনের হাত থেকে বাঁচতে হলে মাস্ক পরতে হবে,ঘন্টায় ঘন্টায় সাবান দিয়ে অন্তত বিশ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে,অন্তত তিন ফুট দূরে দাঁড়িয়ে কাজ/কথা বলতে হবে।হাত সাবান দিয়ে না ধুয়ে মাস্ক খোলা যাবেনা।তার মনে হয় বাজারে সংকীর্ণ জায়গা বা জীবন বাচাঁবার তাগিদে মানুষের হুস নেই কী হবে!কেউ মাস্ক থুতুনিতে ঝুলিয়ে রেখেছে,কেউ মাথায় কাপড়,মুখে মাস্ক,হাতে গ্লবস্ পড়েছে ঠিক কিন্তু দুরত্ব বজায় রাখছে না, আবার কেহ রেইনকোর্ট পরেছে এ গরমের মধ্যে-জীবন যায় যায় অবস্থা!
২০১৯এর ডিসেম্বরে চীনের উহানের হুবেই এ ১ম করোনা রোগী শনাক্ত হয় এমনটা ধারনা বিশ্ববাসীর।২০২০এর জানুয়ারিতে তা প্রকাশ পায়।কোন বন্য প্রাণি ,যেমন-বনরুই এর মাধ্যমে এ রোগ ছড়িয়েছে এমনটা ধারনা বিশেষজ্ঞদের।যেসব দেশ,যেমন-হংকং,ভিয়েতনাম,দক্ষিণ করিয়া,সিঙ্গাপুর প্রথম থেকে সতর্ক পদক্ষেপ নিয়েছে তারা এখন বিশ্বে ভালো অবস্থানে আছে।আর যারা সচেতন হয়নি তারা আমাদের মতো পস্তাচ্ছে।
প্রথম দিকে করোনা রোগীদের হাসপাতালে যেতে বা স্বাস্থ্য সেবা পেতে মারাত্মক দুর্ভোগের শিকার হতে হয়।কয়েকজন সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে মারা যায়।করোনা রোগী বা করোনা উপসর্গ নিয়ে কেহ মারা গেলে দুর্ভোগের শেষ ছিলোনা।লাশ ফেলে কেনো আত্মীয় স্বজন পালিয়ে গেছে,লাশ সিঁড়িতে পড়ে আছে-কোন আত্মিয়স্বজন আসেনি,কোন লোক না পেয়ে সরকারি লোকজন লাশ দাফন করেছে।দেখা গেছে এক ধর্মের লোকের লাশ অন্য ধর্মের লোক দাফন করেছে।এর মধ্যে একদল স্বেচ্ছাসেবক তৈরী হলো, তারা খবর পেলেই লাশ দাফনে এগিয়ে এল।প্রস্তুতি না থাকায় করোনা লক্ষণ এর রোগী আসলে ডাক্তার নার্স পালিয়ে গেছে। আবার করোনা রোগীর চিকিৎসা করার জন্য ডাক্তার দরখাস্ত করে বদলি হয়ে এসেছে।দীপন পরিসংখ্যান ঘেটে দেখে যে এ রোগে অনেক লোক আক্রান্ত হলেও মারা যায় খুব কম লোক।আস্তে আস্তে তার মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে । সে বাচাঁর স্বপ্ন দেখতে শুরু করে।শৃঙ্খলা,পরিবেশ পরিচ্ছন্নতা,নিয়ম মেনে চলা,আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো এগুলোতে আমরা কত পিছিয়ে তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে দেশ।
সরকারি ছুটির প্রথম দিকে কেনাকাটার হিড়িক পড়ে।সুযোগ পেয়ে কিছু ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মুনাফা লুটে নেয়।নিয়ন্ত্রনে আনতে প্রশাসনকে শক্ত হতে হয়।মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জেল জরিমানা দিয়ে নিয়ন্ত্রনে আনতে হয় সরকারকে।দীপন ভাবে সে কীভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস বেশি করে কিনে রাখবে!তারতো বাড়তি টাকা হাতে নেই।
তুলসিপাতা,থানকুনিপাতা-কতনা গুজব রটলো দেশে এসময়ে। কত সচেতন থাকতে হয় মানুষকে!সত্যটা ঠিকভাবে প্রকাশ না করলে গুজবের ডালপালা ছড়ায়।
লকডাউন মেনে চলতে প্রথমে দুএক জায়গায় প্রশাসন টুকটাক বল প্রয়োগ করলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে।এরপর আইন প্রয়োগ করে নিয়মকানুন মানতে শেখায়।লকডাউন মানার জন্য প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য আর্মিও নামানো হয়।আমাদের দেশে ঘরে বসে জিনিসপত্র কিনতে না পারায় শাক-সবজি,নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনসপত্র কিনতে বাজারে যেতে হয়।সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলতে পারায় প্রশাসন বাজার বিকেন্দ্রীকরণ করে।কাঁচাবাজার ভ্যানে ভ্যানে পাড়ায় মহল্লায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়।কিন্তু কে কার কথা শোনে।এ নিয়ে দীপনের চিন্তা।
এপ্রিলে গার্মেন্টস মালিকরা একবার গার্মেন্টস খোলার জন্য তাদের কর্মচারীদের ঢাকায় যেতে বলে।হুড়মুড় করে শ্রমিকরা রওনা দেয়।পথে পুলিশ আটকে দেয়।শ্রমিকদের সে কী দুর্ভোগ!একটা মেয়েকে দেখাগেলো আর হাঁটতে না পেরে ভাইয়ের ঘাড়ে লম্বাভাবে বসে পথ চলছে।আবার তাদের বাড়ি চলে যেতে হয়।গনপরিবহন বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের খুব কস্ট পোহাতে হয়।এতে তার মনে হয় কেমন একটা সমন্বয়হীনতা কাজ করছে।
১০মে থেকে লকডাউনে শিথীলতা আনে সরকার।গার্মেন্টস খুলে দেয়।নিয়ম করে কিছু দোকানপাঠ খুলে দেয়।এসময় টেস্ট হয় দশ হাজারের বেশি,রোগীও শনাক্ত হয় পনেরশ বা তার বেশি।রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়তে থকে।ঈদের আগে ২০মে থেকে আবার দোকানপাঠ বন্ধ করে দেয়।ঢাকা থেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে মানুষ বাড়ি যেতে পারবে।গনপরিবহন বন্ধ।স্বাস্থ্যমন্ত্রনালয় বলছে এ পনেরোদিন বেশি ঝুঁকিপুর্ণ।কেমন যেন লেজেগোবোরে অবস্থা।এ অবস্থায় কী হবে ভেবে সে পাচ্ছেনা।
মহামারী মোকাবেলায় নার্স ডাক্তার নিয়োগ দিচ্ছে।আরো দরকার স্বাস্থ্যকর্মী।দরকার স্বেচ্ছাসেবক।
ত্রাণ দেয়ার সময় একদল চেয়ারম্যান মেম্বর কমিশনার ত্রাণ লুট করতে উঠেপড়েলাগে।সরকার শতাধিক বরখাস্থ করলে কিছুটা থামে।আবার কিছু ডাক্তার দায়িত্বে অবহেলা করলে তাদের সামায়িক বরখাস্থ করা হয়।
সংবাদ মাধ্যম এসময় জনগনের পাশে এসে দাঁড়ায়।ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়া না হলে জবাবদিহিতা থাকতোনা।সরকারও মানুষকে ঠিকমত সাহায্য করতে পারতনা।এক্ষেত্রে অনলাইন ব্যবস্থা সহজলভ্য ও প্রান্তিক পর্যায়ে পৌছালে মানুষ তার অধিকার বিষয়ে সচেতন হবে।এবং সরকারের সেবা জনগন বুঝে পাবে বলে তার ধারনা।
আগে দীপন তার সন্তান দুটোকে পড়ালেখায় বেশ সময় দিতে পারতনা।এখন ওদের নিয়েই সময় কেটে যায়।স্ত্রীকেও বেশ সময় দিতে পারে অবসরের জন্য।স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের বেশ অসুবিধা হচ্ছে।এইচ.এস.সি পরীক্ষা ঝুলে আছে।অনলাইন ব্যবস্থা গ্রাম পর্যায়ে বেশ ভালোভাবে নেই,মূল্যও অনেক।এগুলো সহজলভ্য হলে পড়ালেখা মোটামুটি চালিয়ে যেতে পারতো শিক্ষার্থীরা।স্কুল কলেজগুলোতে ভালো অনলাইন ব্যবস্থা থাকাও দরকার।
মন্দির,মসজিদ দীর্ঘদিন বন্ধ যাচ্ছে।দেশে ধর্মীও অনুষ্ঠান নিয়ে বেশ আলোচনা হয়েছে।কোন কোন মিডিয়া তা উস্কেও দিয়েছে।লাশ দাফন,খাদ্যসামগ্রী,অর্থ সাহায্য দিয়েছে বিভিন্ন ব্যক্তি,সংস্থা,প্রতিষ্ঠান।পথের লোকদের,বেওয়ারিশ পশুদের খাবার দিয়েছে অনেকে বা সংস্থা।আবার বোরো ধান কেটে দিয়েছে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন।সরকারও বেশ ভুমিকা নিয়েছে।অন্যদিকে কাঁচা ধানকাটার ভিডিও ছড়িয়েছে।ধান কাটা উদ্বোধন করতে গিয়ে ছবিতোলার ফলে ধানক্ষেতের অবস্থা করুণ।এমন দৃশ্যে তার মন কেঁদে ওঠে।
জীবন বাঁচাতে অনেক প্রবাসী দেশে চলে আসে।আবার অনেকে থেকে যায়।এভাবে চলতে থাকলে তাদের অনেককে দেশ থেকে টাকা পাঠাতে হবে।এ অবস্থায় বেশিরভাগ মানুষের কোনরকম শাকসবজি,ডালভাত খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে।আবার যাদের টাকা পয়সা আছে তারা ঈদের কেনাকাটা করতে মার্কেটে ভীড় করছে।এ যেন পাঁচবার খাওয়ার পর মাল্টিভিটামিন খাওয়া।যার আছে সে যদি অন্তত তার দুস্থ আত্মীয়দের দেখে রাখে তবে দুর্ভীক্ষ নেমে আসবেনা।
সকালে ঘুম থেকে উঠে ব্যায়াম,হাঁটাহাটি,দুপিচ রুটি-চা,ছেলেমেয়দের পড়ালেখার কাছে বসা,ওদের গানে তালিমে সহযোগিতা করা,গোসল করানো,ঘরের টুকটাক কাজে সাহায্য করা,খাওয়ার পর বিশ্রামের ফাঁকে খবরে চোখ বুলানো,বিকেলে ছেলেমেয়েদের নিয়ে বসা,প্রার্থনা করা,আবার ওদের পড়ালেখায় খেয়াল করা,রাতের খাবারের ফাঁকে খবরের দিকে চোখ বুলানো এই করে সময় ঠিক কেটে যাচ্ছে।অফিস খোলাকালীন ঘরে থাকলে তার খাবার হজম হত না।এখন তা পাল্টে গেছে।করোনা তা পালটে দিয়েছে।এভাবেই চলছিলো দীপনের দিন।কিন্তু প্রবল ঘুর্নিঝড় আম্পান ধেয়ে আসছে শুনে তার মনে কালো মেঘ জমতে শুরু করে।মোমবাতি,চিড়ামুড়ি,শবজি এনে রাখে।সারা রাত দুশ্চিন্তায় রাত কাটে।রাতে প্রচুর পানি ওঠে।রান্নাঘর ছুঁই ছুঁই।চুলায় জল ভরে যায়।গ্রামের সবারই ঐ একই দশা।চুলা জ্বালাতে বেশ কস্ট হয়।ঈশ্বর রক্ষা করেছে,পিরোজপুরে ততো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।খুলনা,সাতক্ষীরা,যশোর,ঝিনইদাহ,রাজশাহী যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং পার্শ্ববর্তী দেশের পশ্চিম বাংলায় যে পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাতে মনটা ভালো যাচ্ছে না।এ যেন মরার উপর খারার ঘা।
দেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে স্থানীয় রাজাকার বাহিনী তাদের গ্রামের সব ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়,জিনিসপত্র,গরুছাগল লুটে নেয়।এর আগে হানাদার বাহিনী স্থানীয়দের সহায়তায় লখাকাঠি,ওদনকাঠি,তেজদাসকাঠী,টোনার জনত্রিশেক লোককে ধরে এনে তেজদাসকাঠী প্রাইমারী স্কুলের কাছে খালের পাড়ে গুলি করে মারে।তখন তার দু-আড়াই বছর বয়স।সে বাবা-মা,দাদা-দাদী দের সাথে পালিয়ে ভারতের আশ্রয় শিবিরে আশ্রয় নেয়।সেখানেই তার দাদু(দাদা)কে হারায়।যখন শুনলো দেশ স্বাধীন হয়েগেছে,জয়বাংলা বলতে বলতে পোড়াভিটায় এসে বসাবস শুরু করে।যে প্রত্যয় নিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিলো তা আর পুরণ হতে পারেনি সৈরশাসক বা লুটেরাদের জন্য।তবুও ডালভাত খেয়ে কেটে যাচ্ছিলো।কত আনন্দ মনে বাসা বেঁধেছিলো তার মনে।এবার স্বাধীনতার ডাক দেয়া বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালন করবে জা্তি।দীপনও তা উপভোগ করবে।করোনা তা করতে দিলনা।আমরা যদি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল,নিয়মানুবর্তী হই,স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি,পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকি,পরিমিতিবোধসম্পন্ন ও মানবিক হই,তবে আবার আমরা আশার আলো দেখতে পারবো।করোনা যুদ্ধে জয়ী হবে বাংলাদেশ।
২৩.০৫.২০২০

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে মে, ২০২০ রাত ৩:০৮

রাজীব নুর বলেছেন: প্রতিটা মানুষ লকডাউন শব্দটার উপর বিরক্ত।

০৬ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:০০

দেব জ্যোতি কুন্ডু বলেছেন: হ্যাঁ

২| ২৪ শে মে, ২০২০ ভোর ৫:৪৬

নেওয়াজ আলি বলেছেন: মানুষ বিপদে আজ দিশাহারা

০৬ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:০০

দেব জ্যোতি কুন্ডু বলেছেন: যে এই বিপদে পরেছে সে ছাড়া বুঝবেনা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.