নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অসংখ্য মানুষের ভালবাসা বা ভূয়সী প্রশংসা প্রত্যাশা করি না, প্রচুর গালি আর প্রচুর অসভ্যতা সহ্য করি।

আমি মানব অতএব আমার মধ্যে থাকবে মানবতা

ডানপিঠে নিশাচর

আমি কোন কবি নই, আমি কোন সাহিত্যিক-ও নই। তবুও মাঝে মাঝে এক একটি গভীর রাতের কিছুটা সময় আমার আঙুল প্রসব করে গল্প, ছোট গল্প, অনুগল্প, কবিতা নাম না জানা আমার আরোও অনেক সন্তান। এড়া ছড়িয়ে ছিটিয়ে চতুর্দিকে। যারা যে নামেই ডাকুক না কেন আমি বিরক্ত হই না। আমি সাহিত্য পড়ি না। জন্ম দেই। আমি জীবন থেকে নেই না্, বরং জীবন আমার থেকে নেয়। আমি মোটেও কেউকেটা নই, কীটস্ব-কীট আমি। আমার ধনবল নেই, শিক্ষা গৌরব নেই। আমি প্রকৃতি থেকে শিখি । বই পড়ে শিখি । অন্যের কথা শুনে শিখি । বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে শিখি । বিভিন্ন উৎসে বিচরন করি । জানার চেষ্টা করি । এভাবে লেখার রসদ সংগ্রহ করি । তারপর নিজের ভাবনা, বোধ, বিশ্বাস, অভিব্যক্তি দিয়ে মাঝেমধ্যে লেখার চেষ্টা করি । এক্ষেত্রে কিছু যোগ-বিয়োগ করি ।

ডানপিঠে নিশাচর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইন্টারনেট ব্যবহারে সচেতনতা এবং নগ্ন বিনোদন প্রসঙ্গে

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৩৩

হুমায়ূন আহমেদই সম্ভবত বলেছিলেন, বাঙালি মধ্যবিত্তের প্রথম যৌন অভিজ্ঞতা ভালবাসার মানুষের সাথে হয় না, বাসার কাজের মেয়ের সাথে ঘটে।



কথাটা হয়তো সত্য, যেমন অধিকাংশ বাঙালি মধ্যবিত্তেরা ইন্টারনেটকে সস্তা বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে এবং তাদের প্রথম ইন্টারনেট ব্যবহারের অভিজ্ঞতা ঘটে পর্ণ সাইটে পর্ণ ভিডিও দেখা বা ডাউনলোডের সাথে।



না, অনলাইনে সস্তা বিনোদনে আমার তেমন কোন আপত্তি নাই। অনলাইনে সস্তা বিনোদনে থাকবে, ব্লগে-ফেসবুকে মানুষ লুতুপুতু পোষ্ট পড়বে, লুতুপুতু পোষ্টদাতারা জনপ্রিয় সেলিব্রেটি(!) হবে।



বাসে ট্রেনে চড়ে যাবার পথে, দুপুরে খাবার পরে, রাতে ঘুমাতে যাবার আগে মানুষ এসব লুতুপুতু পোষ্ট পড়বে তাতে আপত্তির কি আছে? পৃথিবীর সব দেশেই বড় বড় লুলামি পোষ্টদাতা সেলিব্রেটিরা(!) ছিলেন আছেন থাকবেন। তাদের প্রতিটা পোষ্টে সর্বোচ্চ লাইক কমেন্ট হবে, ফ্রেন্ড ফলোয়াড় তাদের পোষ্টের উপরে হুমড়ি খেয়ে লাইক কমেন্ট করবে, সেটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। তাতে বিশেষ আপত্তি নাই।



তবে আপত্তি ওঠে তখনই যখন তারা ঐসমস্ত লুলামি পোষ্টদাতাদের সচেতন এবং প্রগতিশীল বইলা প্রচার করেন। একটু অবাক হইয়া জিজ্ঞেস করলেই তারা ইনাইয়া বিনাইয়া বলতে শুরু করেন যে, পোষ্টদাতার পোষ্টের মান যাই হোক না কেন, পোষ্টদাতাই পাবলিকরে ইন্টারনেটের ব্যবহার শিখাইছে, মধ্যবিত্ত বাঙালিরে ফেসবুক ব্লগ চিনাইছে, হাজার হাজার ছেলেমেয়েরে লতুপুতু স্টাইলে লিখতে শেখাইছে, তরুণ তরুণীর কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। এই কারণেই ঐ পোষ্টদাতা শ্রেষ্ঠত্বের দাবীদার।



ঠিক আছে। তাইলে ধইরা নিচ্ছি পোষ্ট বস্তুনিষ্ট না-ই হোক, বিবেচ্য বিষয় হইলো বাঙালি মধ্যবিত্তরে ইন্টারনেটমুখী করা। এই দিক দিয়া ঐসমম্ত লুলামি পোষ্টদাতা সেলিব্রেটিরাই শ্রেষ্ঠ!

কিন্তু আমি এই কথার বিরোধিতা করি। লুলামি পোষ্টদাতা সেলিব্রেটির(!) চাইতে এই কাজ অনেক সুচারু রূপে পালন করছেন আরেকজন।



তার নাম সানি লিওন।

পোষ্টের বস্তুনিষ্টতা যেহেতু বিবেচ্য নয়, ফলোয়াড়ের প্রতি দায়বদ্ধতা যেহেতু বিবেচ্য না, অনলাইনমুখী করা, ইন্টারনেট ব্যবহারে আগ্রহী করা, হাজার হাজার ফ্রেন্ড ফলোয়াড় তৈরি করা, অসম্ভব জনপ্রিয়তাই যদি বিবেচ্য হয় তাইলে সানি লিওন খুব সহজে একই কাজে আরো বেশি পারদর্শিতা দেখাইছেন।



শুধু মধ্যবিত্তই না, নিম্নবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত সকল শ্রেণীর মধ্যেই তার ভক্ত অগণিত। লুলামি পোষ্টদাতা সেলিব্রেটির(!) মতই সানি লিওনের ভক্তরাও সেই সব অশ্লীল বিনোদন ভিন্ন আর কিছুতে বিনোদন খুজতে পারে না, তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। তবে বাঙালি মধ্যবিত্ত ভদ্র সমাজ তার নাম উচ্চারণ করতে চায় না, তারা লজ্জা বোধ করেন। যদিও তাদের বেশিরভাগের ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রথম হাতেখড়ি সানি লিওন বা ঐ রকম কারোও নগ্ন ভিডিও ডাউনলোডের মধ্য দিয়াই হইছে।



ঐসমস্ত সেলিব্রটির(!) ভক্ত-ফলোয়াড়রা হয়তো এখনই তেলে বেগুনে জ্বলে উঠবেন। তারা দাবী করবেন সানি লিওনের নগ্ন ভিডিও আর ফেসবুকের লুলামি পোষ্টদাতা সেলিব্রেটিদের বিনোদন মান কী এক হইলো? না, হয়তো এক না। কিন্তু শুরুতেই তো বিনোদনমান, ভক্তদের প্রতি দায়বদ্ধতা বিবেচনার বাইরে রাখলাম! আর দায়বদ্ধতা বা বস্তুনিষ্টতাই যদি বিবেচ্য হয়, তাইলে ঐসমস্ত সেলিব্রটিরে(!) কিভাবে গোনায় ধরি? লুলামি ষ্টাইলে লেখা আর অশ্রাব্য কিছু গালাগালি লেখায় জুড়ে দিয়ে পোষ্ট করা এবং জনপ্রিয়তা অর্জনের জন্য ভক্ত, ফ্রেন্ড-ফলোয়াড়দের মন যোগানোকে আসলে কি বলা যায়?





লুলামি পোষ্টদাতা সেলিব্রেটির(!) ফ্রেন্ড-ফলোয়াড়রা ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে কখনই প্রাপ্তবয়স্ক হন না, নগ্ন বিনোদন পাবার উচ্ছ্বাস তাদের কাটে না। পোষ্টদাতা বনসাইয়ের মত ফ্রেন্ড-ফলোয়াড়ের মনন পরিচর্যা করেন, বড় হওয়া ডালপালা ছেঁটে দিয়ে বিকলাঙ্গ করে রাখেন। তারা সব পোষ্টেই নগ্ন বিনোদনের ছায়া খোঁজেন, নগ্ন বিনোদন ছাড়া তাদের আশ মেটে না। সেলিব্রেটি(!) তার অপ্রাপ্তবয়স্ক ভক্তদের মনে একটা স্কেল তৈরি করে দেন, যেই স্কেলের নাম লুতুপুতু স্কেল। সেই স্কেলে তার ফ্রেন্ড-ফলোয়াড়রা অন্যান্য পোষ্ট মাপজোক করেন।

একজন প্রগতিশীল লেখক-সচেতন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী সেলিব্রেটির দায়িত্ব হইলো ফ্রেন্ড-ফলোয়াড়ের মননশীলতার বিকাশ ঘটানো, তার পরিচর্যা করা। ফ্রেন্ড-ফলোয়াড় ভক্ত যেই অঞ্চলে যাইতে অস্বস্তিবোধ করে, তাদের সেই সব অঞ্চলে নিয়া যাওয়া এবং অস্বস্তি দূর করা। ভক্তের স্বস্তির সীমার মধ্যে যদি পোষ্টদাতা তাদের ঘুরপাক খাওয়ায়, তাইলে ভক্তের দৃষ্টির সীমা ঐটুকুই থাকে। এবং এই স্বস্তির সীমার মধ্যে তারে সার্কাসের মত নানান চমক দেখাইয়া মুগ্ধ করা তারে ঐ সীমার মধ্যে আরো পাকাপোক্ত ভাবে থাকার প্রেরণা যোগায়।



আমাদের বর্তমান লুলামি পোষ্টদাতা সেলিব্রেটিরা খুব বুদ্ধিমান । তারা প্রথম কয়েকটা পোষ্ট লেখার পরেই বুঝে নেয় তাদের ফ্রেন্ড-ফলোয়াড়দের চাহিদা বা রুচির মান। তারা এটাও ধরতে পারে যে তাদের ফ্রেন্ড-ফলোয়াড়রা তাদের পোষ্টে শুধুমাত্র অশ্লীল আর বিকৃত শব্দ ব্যবহার পড়ার জন্যে হুমড়ি খেয়ে লাইক কমেন্টে মাতে, বস্তুনিষ্ট পোষ্টে আগ্রহ দেখায় না । একটি মেয়ে আইডি(নিক) থেকে যেকোন রকম একটা কিছু লিখলেই হলো আর তাতে অশ্লীল শব্দ আর দুয়েকটা গালি ব্যবহার করতে পারলে তো আর কথাই নেই। মুহুর্তেই সহস্র লাইক আর শত তোষামেদি কমেন্ট।



এই মানের ফ্রেন্ড-ফলোয়াড়দের জন্য বেহুদা কষ্ট কইরা বস্তুনিষ্ট পোষ্ট করার দরকার নাই। একটু প্রাপ্তবয়ষ্ক কথাবার্তা , কিছু গালাগালি আর একটু হাস্যরস(!) দিলেই হয়।

ফ্রেন্ড-ফলোয়াড়দের খুশি থাকবে। অনলাইনে দাপট বহাল থাকবে।সেলিব্রেটি(!) হওয়া যাবে,অগনিত ফ্রেন্ড-ফলোয়াড়,ভক্তের আবির্ভাব হবে। সবাইরে খুশি রাখাই যদি মোক্ষ হয় তাইলে লুতুপুতু পোষ্ট অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। সমস্যা হইলো সবাইরে খুশি করা সেলিব্রেটির লক্ষণ না, প্রগতিশীলতার লক্ষণ না, সেইটা রঙ ঢঙ করা, রঙ বেরঙের সাজসজ্জা করা, লাল নীল পোশাক পরা ভিন্ন শ্রেণীর মানুষের লক্ষণ।



তবে ঐ সমস্ত লুলামি পোষ্টদাতা সেলিব্রেটিদের সমালোচনা একই সাথে তাদের যোগ্যতার মাপকাঠিও। সে সর্বোচ্চ লাইক কমেন্ট পেতে সফল বইলাই তার সমালোচনা হবে। তারে বাতিল করা সম্ভব না বইলাই তারে গোনায় ধরতে হবে। তার কয়েকটা পোষ্ট যে বস্তুনিষ্ট এবং সচেতনতামূলক হয় না এই কথা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। সমাজের কিছু পিছাইয়া পরা ইন্টারনেট বিমূখ সম্প্রদায় নিয়া তাদের কাজ গুরুত্বপূর্ণ, মাঝে-মধ্যে তাদের অনলাইনে পোষ্ট বিনোদনও গুরুত্বপূর্ণ।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৪১

সুমন কর বলেছেন: খুব সুন্দর বলেছেন। সহমত। লুলু পোস্টদাতা কিন্তু অন্যদের পোস্টে যান না। তারা নিজেদের খুব বড় ভাবে। তাদের সময় নাই। কিন্তু ফেসবুকে গিয়ে দেখবেন, তারা অনলাইন চ্যাটিং নিয়ে মহা ব্যস্ত। স্ট্যাটাস, লাইক আর ফলোয়ার নিয়ে ব্যস্ত।

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:১১

ডানপিঠে নিশাচর বলেছেন: পোষ্টদাতা যাদের সাথে চ্যাটিং এ ব্যাস্ত থাকেন তারাও লুলু পাবলিক।

আমি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী এই দুই পক্ষকে উদ্দেশ্য করে লিখেছি।

২| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ ভোর ৫:৪৯

কামরুল ইসলাম রুবেল বলেছেন: সারাদিন গাধার খাটনি খেটে কাজের ফাকে ফাকে শুধুমাত্র প্রয়োজনেই ফেবুতে বসি। লুলামি করার সময়ই পাইনা। খুব ইচ্চা করে এট্টু লুলামি করি.......


হুমায়ূন আহমেদই সম্ভবত বলেছিলেন, বাঙালি মধ্যবিত্তের প্রথম যৌন অভিজ্ঞতা ভালবাসার মানুষের সাথে হয় না, বাসার কাজের মেয়ের সাথে ঘটে।
হুমায়ুন আহমেদ কি ঢালাওভাবে এমন একটা ফালতু কথা বলেছিলেন?

অলওভার এনটিনার উপ্রেদিয়া

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.