নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি কোন কবি নই, আমি কোন সাহিত্যিক-ও নই। তবুও মাঝে মাঝে এক একটি গভীর রাতের কিছুটা সময় আমার আঙুল প্রসব করে গল্প, ছোট গল্প, অনুগল্প, কবিতা নাম না জানা আমার আরোও অনেক সন্তান। এড়া ছড়িয়ে ছিটিয়ে চতুর্দিকে। যারা যে নামেই ডাকুক না কেন আমি বিরক্ত হই না। আমি সাহিত্য পড়ি না। জন্ম দেই। আমি জীবন থেকে নেই না্, বরং জীবন আমার থেকে নেয়। আমি মোটেও কেউকেটা নই, কীটস্ব-কীট আমি। আমার ধনবল নেই, শিক্ষা গৌরব নেই। আমি প্রকৃতি থেকে শিখি । বই পড়ে শিখি । অন্যের কথা শুনে শিখি । বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে শিখি । বিভিন্ন উৎসে বিচরন করি । জানার চেষ্টা করি । এভাবে লেখার রসদ সংগ্রহ করি । তারপর নিজের ভাবনা, বোধ, বিশ্বাস, অভিব্যক্তি দিয়ে মাঝেমধ্যে লেখার চেষ্টা করি । এক্ষেত্রে কিছু যোগ-বিয়োগ করি ।
৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০লক্ষ তাজা প্রাণ আর ২লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের দামে কেনা স্বাধীনতায় দেশের মানুষ যতটা স্বাধীন হলে একটা সুস্থ-সবল মানুষকে জীবিকার তাগিদে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে এম্ব্যুলেন্সের সাহায্য নিতে হয়,
বাবার সাথে শহর দেখতে আসা ছোট্ট শিশুটিকে লাশ হয়ে মায়ের কোলে ফিরতে হয়,
ধর্ম নিরপেক্ষতার কারনে হুমায়ুন আজাদ স্যারেকে অকালে প্রাণ দিতে হয়,
প্রগতিশীল লেখা-লেখির কারনে আসিফ মহিউদ্দীন -কে ঘাড়ে চাপাতির কোপ বয়ে বেড়াতে হয়,
মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে কলম ধরার খেসারতে তসলিমা নাসরীনের মতো নির্বাসিত হতে হয়,
যেকোন ইস্যুতে শুধুমাত্র ধর্মীয় সংখ্যালঘু হওয়ার কারনে জ্বলে-পুড়ে চৌদ্দ পুরুষের বসতভিটা হারিয়ে হয়ে মরতে হয়—
আমরা ঠিক ততটাই স্বাধীন।
আমাদের সরকার সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষার নামে শতকোটি টাকা খরচ করে সিলেকশন= যেটাকে বাংলাদেশে আম্লীগের অভিধানে তর্জমা করলে নির্বাচন বলে সেটা করতে পারে।
কিন্তু এদেশে জন্ম-জন্মান্তরের মাটি কামড়ে যে কিছু বিলুপ্তপ্রায় ধর্মীয় সংখ্যালঘু রয়ে গেছে তাদের নিরাপত্তা দিতে পারে না।
সরকার শুধু সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষাই নয়,
সংখ্যালঘু নির্যাতনের ধারাবাহিকতাও রক্ষা করে আসছে।
যার প্রমান সাথিয়া সহ অন্যান্য যে জায়গাগুলোতে হামলা হয়েছে তাতে পাওয়া গেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-চেতনা চিৎকার করা চেতনা ব্যবসায়ীদের স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে পাল্লা দিয়ে শহীদ মিনার ভাঙার খবরও আমরা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে দেখেছি এবং পড়েছি।
খবরে দেখলাম আজকেও দিনাজপুর এবং যশোরে হাজার হামলাকারী কয়েক ঘন্টাব্যাপী হামলা করে হিন্দুদের বাড়িঘর লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছে
‘আমরা তো পশাশনরে মুবাইলে ফুন কইরা জানাইছি,নেতাগোও ফুণ করছি কিন্তু কেউওই আহে নাই’।
পুলিশ হাসি-হাসি মুখে বিবৃতি দিয়েছে।
বলেছে
‘তদন্ত শুরু করেছি, আক্রমনকারী যত শক্তিশালীই হোক বিচারের আওতায় আনা হবে’।
তদন্ত যে কতদুর আগাবে তা আমরা বহুকাল ধরেই দেখে আসছি।
হামলায় হাজার মানুষ অংশ নিলেও মাঠে তদন্তে নেমে পুলিশ কাউকেই খুজে পাবে না।
তদন্তকারী পুলিশ যেহেতু তার বাপ-দাদার এলাকায় চাকরি করে না তাই ঘটনায় জড়িতদের ধরতে সে এলাকার ময়-মুরুব্বী,মাতুব্বরদের কাছে তথ্য/সাহায্য নিতে যাবে ।
পুলিশ এদের কাছে তথ্য জিজ্ঞাস করলে বলবে
‘স্যার যে কাজ আফনেগো করবার কথা আছিল তা ওরা করছে, বিধর্মীরা সব কাফের আর কাফের খতম কইরা হেরা ঈমানি দায়িত্ব পালন করছে’।
পুলিশের চোখের সামনে তখন পরকালের শরাবের নদী আর সানি লিওনের চেয়েও আকর্ষনীয় হুরপরীর হাতছানি ভেসে উঠবে। তদন্তও এই পর্যন্তই থেমে যাবে।
স্বধীনতা পরবর্তী ৪২ বছর ধরে দেশ শাসন (আমাদের শোষন) করে আসছে ২টি দলের জোট-মহাজোট ।
সংখ্যালঘু আক্রমনে এদের কেউই কারোর থেকে কম যায় না। সংখ্যালঘু নিধনে সরকার-বিরোধীদল ভেদাভেদ ভুলে একাকার হয়ে যায়।
কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লেংটি এটে নেমে পড়ে সংখ্যালঘু নিধনে।
দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট তেল-গ্যাস-সুন্দরবন-টিফাফা বিভিন্ন ইস্যুতে এদের দেশপ্রেম কোমায় থাকলেও মালাউন নিধনের ডাক আসলে মুসলমানিত্ব চেগার দিয়া উঠে।
আল্লাহুয়াকবর বলে দা-কুড়াল-পেট্রোল-গান পাউডাড় হাতে আক্রমনে নেমে পড়ে পরকালে শরাবের নদী আর সানি লিওনের চেয়েও আকর্ষনীয় হুর-পরী পাইবার আশায়।
বিভিন্ন জমায়েতে তাদেরই একাংশ আবার জোর গলায় বলে, ইসলাম শান্তির ধর্ম, বাংলাদেশের মুসলমানরা শান্তিপ্রিয় এবং এই দেশ ৯০ভাগ শান্তিপ্রিয় মুসলমানদের দেশ।
শুধু ইসলাম নয়, পৃথিবীর কোন ধর্মই সরাসরি অশান্তির শিক্ষা দেয় বলে আমি বিশ্বাস করতে চাই না।
কিন্তু বারবার কেন জানি ওরা সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমনের মাধ্যমে আমার বিশ্বাস ভেঙে দেয়।
যদি তাদের কথায় ধরে-ও নিই বাংলাদেশের মুসলমানরা শান্তিপ্রিয় তাহলে কথাটি দাড়ায়-
এমন এক স্বাধীন দেশে বাস করছি আমরা যে দেশে সংখ্যাগুরু শান্তিপ্রিয় মুসলমান এবং শতাংশে তারা ৯০ ভাগ।
সে দেশে ১০ শতাংশ সংখ্যালঘুদের জান-মাল-বসত-ভিটা কথায় কথায় আক্রান্ত হয় ।
ঐ ৯০শতাংশ শান্তিপ্রিয় সংখ্যাগুরুরা ১০ শতাংশ সংখ্যলঘুদের নিরাপত্তা দিতে অপারগ ।
সংখ্যালঘুরা নিয়মিত নিপিড়ীত-নিযার্তিত হয় কতিপয় উগ্রবাদী মুসলমান (!) লেবাসধারী হায়ানাদের দ্বারা ।
জানিনা সংখ্যালঘুদের নিপিড়ন,নিযার্তন করে ঐ উগ্র-মৌলবাদীরা এপর্যন্ত
বেহেশতের কয়টি টিকিট হাসিল করেছে,
বেহেশতে কয়তলা ফ্ল্যাট বাড়ির বুকিং দিয়েছে
আর এ পৃথিবীতেই বা ইসলামের মযার্দা কতটুকু উন্নীত করেছে ।
যারা নিজেকে প্রকৃত শান্তিপ্রিয় মুসলমান দাবী করে বলে
‘ইসলাম মূলত শান্তির ধর্ম,আমরা শান্তিপ্রিয় প্রকৃত মুসলমান, আমরা এসব করিনা’
তাদের কাছে জানতে ইচ্ছে করে,
একজন প্রকৃত মুসলমানের সম্মূখে অসহায় ভিন্ন ধর্মাবলম্বী অত্যাচারের শিকার হয় আর সে প্রতিবাদ বা প্রতিরোধ না করে দশর্কের ভূমিকা পালন করলে মুসলমান হিসেবে তার আত্মমযার্দাই বা কতটুকু বাড়ে !
এ প্রজন্মের অনেক মুসলমান বলে থাকেন
‘হিন্দুগো দেশ হিন্দুস্থান, আমাদের জন্য এই দেশে হেরা কোন কামে লাগে না, হিন্দুরা বাংলাদেশে না থাইক্লেও চইলবো’।
তাদেরকে বলি, হিন্দুরা কোন কাজে আসছিলো কি না তা দেখে আসেন এই লিংকে Click This Link
এ যেন একাত্তরের পুনরোত্থান ।
যেন এ প্রজন্মকে সুযোগ করে দেয় ১৯৭১ এ সংখ্যালঘু হিন্দুদের প্রতি কি হয়েছিল তার বাস্তব অভিজ্ঞতা অজর্ন করার ।
এটাও ঠিক, যে দেশে প্রাতিষ্টানিক শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষেরা ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করে বা তা সমর্থন করে তাদের কাছে অসাম্প্রদায়ীকতা আশা করাটাও নিরাশার পযার্য়ে পড়ে।
জানি উপরের কথাগুলা অধিকাংশেরই ভাল লাগবে না ।
সত্যিটা হচ্ছে এই,
আমার লেপটপের কি-বোর্ডের কি-গুলো মিষ্টি-মন্ডা-মিঠাই-ফাস্টফুড কিংবা ফুল নয়,
ওগুলো নিমপাতা-গাইতি-শাবল-বল্লম আর হাতুড়ি।
তাই আমার পোষ্ট কারো কাছে সু-মধুর লাগার মতো না হওয়া স্বভাবিক।
আর এজন্য পোষ্ট লেখার বদৌলতে অসংখ্য মানুষের ভালবাসা বা ভূয়সী প্রসংশা প্রত্যাশা করি না।
বরং আশা করি লেখাগুলা যেন কাউকে না কাউকে ঘাঁ দিয়ে যায়,
ঘুম ভাঙিয়ে দিয়ে যায়,
নিউরনের জ্যাম ছাড়িয়ে দিয়ে যায়।
এ জন্য প্রচুর গালি আর অসভ্যতা সহ্য করি।
©somewhere in net ltd.