নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অসংখ্য মানুষের ভালবাসা বা ভূয়সী প্রশংসা প্রত্যাশা করি না, প্রচুর গালি আর প্রচুর অসভ্যতা সহ্য করি।

আমি মানব অতএব আমার মধ্যে থাকবে মানবতা

ডানপিঠে নিশাচর

আমি কোন কবি নই, আমি কোন সাহিত্যিক-ও নই। তবুও মাঝে মাঝে এক একটি গভীর রাতের কিছুটা সময় আমার আঙুল প্রসব করে গল্প, ছোট গল্প, অনুগল্প, কবিতা নাম না জানা আমার আরোও অনেক সন্তান। এড়া ছড়িয়ে ছিটিয়ে চতুর্দিকে। যারা যে নামেই ডাকুক না কেন আমি বিরক্ত হই না। আমি সাহিত্য পড়ি না। জন্ম দেই। আমি জীবন থেকে নেই না্, বরং জীবন আমার থেকে নেয়। আমি মোটেও কেউকেটা নই, কীটস্ব-কীট আমি। আমার ধনবল নেই, শিক্ষা গৌরব নেই। আমি প্রকৃতি থেকে শিখি । বই পড়ে শিখি । অন্যের কথা শুনে শিখি । বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে শিখি । বিভিন্ন উৎসে বিচরন করি । জানার চেষ্টা করি । এভাবে লেখার রসদ সংগ্রহ করি । তারপর নিজের ভাবনা, বোধ, বিশ্বাস, অভিব্যক্তি দিয়ে মাঝেমধ্যে লেখার চেষ্টা করি । এক্ষেত্রে কিছু যোগ-বিয়োগ করি ।

ডানপিঠে নিশাচর › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোন বিচার হবে না, এভাবেই চলতে থাকবে

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫২

আজকাল যে এলাকাগুলাতে হিন্দুদের ওপর আক্রমণ হচ্ছে সেখানে খোঁজ নিলে দেখা যাবে হামলার প্রধান হোতা যারা,

তারা হয় সে এলাকার ক্ষমতাধর সরকারদলীয় বা বিরোধীদলীয় ব্যাক্তিবর্গ বা তাদের আত্মীয়স্বজন,

এলাকার ধর্মীয় নেতা,

ধর্মীয় সংগঠনের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গ,

ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক,

থানায় নিয়মিত চাঁদা দানকারী।



ঘুষ/দুর্নীতি’র হারাম টাকা হালাল করার জন্য শেষ বয়সে তারা ধর্মের কাজে ব্যবহার করে এবং হজ্জ –ওমরাহ করে এসে এলাকায় বিপুল সম্মান-পরিচিতি অর্জন করে।

পরবর্তীতে কিছু "হিন্দু-মালাউন" খতম করে বেহেশতের ফ্ল্যাট বুকিং এর কিস্তি পরিশোধ করে, দুনিয়াতেও গনিমতের মাল হিসেবে হাসিল করে জায়গা জমি।



আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যখন সেইসব সাম্প্রদায়িক আক্রমণের হোতাদের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে,

স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন তদন্ত শুরু করতেই সেই তদন্ত শুরুতেই শেষ হয়ে যায়।



ধর্মীয় বুজুর্গ ব্যক্তিগণ পুলিশকে একটি কথাই বলে,

"আপনিও মুসলমান, আমিও মুসলমান।

এখন ভেবে দেখেন আপনি কি ঐ হেন্দু মালাউনদের পক্ষে থাকবেন নাকি আল্লার পথে।

নবীর পথে নাকি কাফেরদের পথে?"

এই কথা বলার পরে আমাদের ঈমানদার পুলিশ সাধারণত আর কিছু করে না।

কারণ তাদের চাকরির চাইতে পরকালের হুর-পরীর হাতছানি তাদের কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

দেশের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক তুচ্ছ "হিন্দু-মালাউন"দের কারণে তো আর দেশের প্রথম শ্রেণীর নাগরিক গণ্যমান্য ধর্মীয় বুজুর্গদের অপদস্থ করা যায় না!



তাই এই পর্যন্ত আমাদের দেশে কোন সাম্প্রদায়িক আক্রমণেরই তেমন কোন বিচার হয় নি।

কেউ ধরাও পরে নি।

যদিও আক্রমণের সময় হাজার হাজার লোক অংশ নিয়েছে,

কিন্তু সরজমিনে তদন্তের সময় পুলিশ কাউকে খুঁজে পায় না।

তবে আইনের হাত অনেক লম্বা হবার কারণে কিছু হিন্দু ঠিকই দেশছাড়া হয়।



যদিও কেউ ধরা পরে তখন ঐ আক্রমণ ও হত্যাকারী ধর্মান্ধ মৌলবাদীরা গোয়েন্দা পুলিশকে বলে,

"আপনারাও মুসলমান, আমরাও মুসলমান।

যেই কাজ আপনাদের করা উচিত ছিল, তা আমরা করছি।"

এই কথা শুনার পরে পুলিশ সদস্যদের মুসলমানিত্ব চাগার দেয়।

এরকম ঘটনায় সাধারণত তদন্ত সেখানেই শেষ হয়ে যায়।

অথবা দেখানোর জন্য কয়েকজন মাদ্রাসার ছাত্রকে ধরে আনা হয়, যারা আসলে দোষী নয়।

চার্জশীট এমনভাবে তৈরি করা হয় যা দিয়ে অপরাধীর একটা চুলও বাঁকা করা যাবে না।



তাই এভাবেই চলতে থাকবে,

আক্রমণ হতেই থাকবে এবং কারো কোন শাস্তি হবে না।

এবং শাস্তি না হওয়া আরো কয়েকটা আক্রমণের প্রেরণা তৈরি করবে।

আমাদের রাষ্ট্র নিজেই যেখানে মুসলমান,

আমাদের সরকার নিজেই যেখানে মুসলমান,

আমাদের সংবিধান নিজেই যেখানে মুসলমান,

আমাদের পুলিশ নিজেই যেখানে মুসলমান,

সেখানে সাম্প্রদায়িক আক্রমণের বিচার প্রার্থনা এক হাস্যকর বিষয়।



কোন বিচার হবে না,

যতদিন আমাদের রাষ্ট্র-সরকার-রাজনৈতিক দল মুসলমান নিজেদেরকে মুসলমান না ভেবে মানুষ ভাবতে পারবে,

এরকম হতেই থাকবে।



তবে দেশের নানা স্থানে সাম্প্রদায়িক আক্রমণের হোতাদের পুলিশ খুঁজে না পেলেও ব্লগে কে কি লিখেছে,

ফেসবুকে কে কোথায় লাইক দিয়েছে,

তা আমাদের চিন্তাপুলিশ ভালই খবর রাখে।



সাম্প্রদায়িক আক্রমণকারীরা ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিল,

উপাসনালয় গুড়িয়ে দিল তাতে তারা অপরাধী খুঁজে পায় না,

উপাসনালয় ধ্বংস করা সম্ভবত ধর্ম অবমাননার পর্যায়ে পরে না!

অথচ ব্লগ/ফেসবুক ব্যবহারকারীর লাইক আর স্ট্যাটাস নিয়ে তারা মহা চিন্তিত থাকে।



এখন আবার নতুন নিয়ম করা হলো,

নেতানেত্রীর নামে কুৎসা রটালেই এখন মামলা হবে।

মামলা কে করবে?

ক্ষমতাসীন দল।

অর্থাৎ ক্ষমতাসীন দলের নেতানেত্রীরা এখন থেকে যেকোন সমালোচনা থেকে অব্যাহতি পাচ্ছে।

কারণ কোনটা সমালোচনা আর কোনটা কুৎসা,

সে বিষয়ে কিছু বলা হয় নি।

সেটা নির্ধারণ করবে পুলিশ, সেটা নির্ধারণ করবে সরকার।

স্বাভাবিকভাবেই বিরোধী দলের নেতাদের কুৎসায় তাদের কিছু যাবে আসবে না।

যেমন যায় আসে না বিভিন্ন ইসলামী ওয়াজ মাহফিলের নামে হিন্দু ইহুদী খ্রিষ্টানদের কুৎসিত সমালোচনায়।



যেমন কোন মামলা হয় না ডাক্তার আইজূ, পিয়াল, রাসেল রহমান, সেলিনা মওলা অসংখ্যবার বেগম খালেদা জিয়ার পুত্র কোকো আসলে ফালুর পুত্র কিনা তা নিয়ে নিম্নমানের রসিকতা করলে।



ভয়ংকর বিষয় হচ্ছে,

সরকার ধর্মীয় নেতা এবং রাজনৈতিক নেতাদের এক ধরণের ইনডেমনিটি দিচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মাধ্যমে।

নেতারা যাই করুক না কেন তাদের নিয়ে কিছু বলা যাবে না।

তাদের সমালোচনাকে কুৎসা হিসেবে গণ্য করা হবে কিনা তা যেহেতু কেউ জানে না,

তাই সে সব করা থেকে সকলেই বিরত থাকবে মামলা খাবার ভয়ে।

এই অস্বস্তি দিনশেষে বাক-স্বাধীনতা হরণ তো করবেই,

ধর্মীয় ও রাজনৈতিক মৌলবাদকেও শক্তিশালী করবে।

রাজনৈতিক দলগুলো হয়তো সেটাই চায়।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩২

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: নিয়ম অনিয়ম সবই স্বাধীনতা
অরক্ষিত স্বাধীনতাই ক্ষমতা

২| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:৫১

পাঠক১৯৭১ বলেছেন: ক্ষমতায় যাবার জন্য, অথবা ক্ষমতা রক্ষার জন্য হিন্দুরা মুল্য দিতেই হবে; এটা হলো বাংলার রাজনীতির ফিচার।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:১৯

ডানপিঠে নিশাচর বলেছেন: যে হারে সংখ্যালঘু নিধন চলছে তাতে করে আগামী ১২/১৩ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনীতির ফিচারের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য অন্য কোন দেশ থেকে সংখ্যালঘু আমদানি করতে হবে।

৩| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:১৪

HHH বলেছেন: যারা মনে করছেন একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল "সংখ্যালঘু" দের পক্ষে কাজ করে, তাদের জন্য বলি সেই বিশেষ দলটি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘুদের ব্যবহার করেছে। কারণ ধর্মীয় সংখ্যালঘু যারা তারা অন্ধ বিশ্বাসের দরুন একদল অসুস্থ মস্তিস্ক রাজনীতিবিদদের খেলার পুতুলে রুপান্তর হয়েছেন।

একটু চিন্তা করলেই বুঝা যায় কারা সংখ্যালঘু নির্যাতনে সবচেয়ে বেশি লাভবান হন।
সনাতনি সম্প্রদায়ের কাছে আমার অনুরোধ, দয়া করে চোখের উপর থেকে দলীয় চশমাটা খুলুন আর দেখুন আপনাদের উপরে হামলা হলে কারা সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়। একটি নির্দিষ্ট ইস্যু থেকে সারা দুনিয়ার দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে দিয়ে সবার কারুনা পাওয়া কাদের জন্য আজকের দিনে লাভবান হতে পারে?
আক্রান্তরা বলেছেন, ১০০০ লোক ৪/৫ ঘন্টা ব্যাপী তান্ডব চালালেও বারবার পুলিশকে ফোন করেও কোন রেসপন্স পাওয়া যায় নাই।

এটা ধর্মীয় কোন বিষয়ই না। এইসব যারা করছে তাদের কাছে নিজের ধর্ম আর নিজের সৃষ্টিকর্তার চেয়ে নিজের রাজনৈতিক দল আর নেতা অনেক বড়।

কাজেই দয়া করে ধর্মকে দোষারপ করবেন না।

যারা সত্যিকারের গণমানুষের রাজনীতি করেন তাদের আজকে দায়িত্ব নেওয়ার সময় এসেছে নিজ পাড়া-মহল্লা-জেলায় সংখ্যালঘুদের জান-মাল রক্ষার।

আর আমার মুসলিম ভাইদের বলবো, চলেন আমরা নিজ নিজ এলাকার সংখ্যালঘুদের রক্ষার দায়িত্ব নিই। কারণ তারা নির্যাতিত হলে আমাদের বদনাম হয় বেশি।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:১৬

ডানপিঠে নিশাচর বলেছেন: ১/"ধর্মীয় সংখ্যালঘু যারা তারা অন্ধ বিশ্বাসের দরুন একদল অসুস্থ মস্তিস্ক রাজনীতিবিদদের খেলার পুতুলে রুপান্তর হয়েছেন।"

২/"একটু চিন্তা করলেই বুঝা যায় কারা সংখ্যালঘু নির্যাতনে সবচেয়ে বেশি লাভবান হন।"

৩/"আক্রান্তরা বলেছেন, ১০০০ লোক ৪/৫ ঘন্টা ব্যাপী তান্ডব চালালেও বারবার পুলিশকে ফোন করেও কোন রেসপন্স পাওয়া যায় নাই।"
খেয়াল করলে দেখতে পারবেন উপরোক্ত বিষয়গুলো আমি পোষ্টে উপস্থাপন করেছি।
আর

আমি ধর্মকে দোষারোপ করছি না,
বাংলাদেশের মুসলমানরা যদি প্রকৃত অর্থে শান্তিপ্রিয় হয়ে থাকেন তাহলে এর নমুনা-
এমন এক স্বাধীন দেশে বাস করছি আমরা যে দেশে সংখ্যাগুরু শান্তিপ্রিয় মুসলমান এবং শতাংশে তারা ৯০ ভাগ।
সে দেশে ১০ শতাংশ সংখ্যালঘুদের জান-মাল-বসত-ভিটা কথায় কথায় আক্রান্ত হয় !!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.