নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অসংখ্য মানুষের ভালবাসা বা ভূয়সী প্রশংসা প্রত্যাশা করি না, প্রচুর গালি আর প্রচুর অসভ্যতা সহ্য করি।

আমি মানব অতএব আমার মধ্যে থাকবে মানবতা

ডানপিঠে নিশাচর

আমি কোন কবি নই, আমি কোন সাহিত্যিক-ও নই। তবুও মাঝে মাঝে এক একটি গভীর রাতের কিছুটা সময় আমার আঙুল প্রসব করে গল্প, ছোট গল্প, অনুগল্প, কবিতা নাম না জানা আমার আরোও অনেক সন্তান। এড়া ছড়িয়ে ছিটিয়ে চতুর্দিকে। যারা যে নামেই ডাকুক না কেন আমি বিরক্ত হই না। আমি সাহিত্য পড়ি না। জন্ম দেই। আমি জীবন থেকে নেই না্, বরং জীবন আমার থেকে নেয়। আমি মোটেও কেউকেটা নই, কীটস্ব-কীট আমি। আমার ধনবল নেই, শিক্ষা গৌরব নেই। আমি প্রকৃতি থেকে শিখি । বই পড়ে শিখি । অন্যের কথা শুনে শিখি । বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে শিখি । বিভিন্ন উৎসে বিচরন করি । জানার চেষ্টা করি । এভাবে লেখার রসদ সংগ্রহ করি । তারপর নিজের ভাবনা, বোধ, বিশ্বাস, অভিব্যক্তি দিয়ে মাঝেমধ্যে লেখার চেষ্টা করি । এক্ষেত্রে কিছু যোগ-বিয়োগ করি ।

ডানপিঠে নিশাচর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভাল ফলাফল প্রকাশের উন্মাদনায় অসংখ্য শিক্ষার্থী পঙ্গুত্বের পথে

২০ শে মে, ২০১৪ রাত ৮:৩৩

বর্তমান সরকারের সাফ্যলের ধারাবাহিকতার দালিলিক প্রমাণ স্বরুপ এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় ‘বাম্পার রেজল্ট’ হয়েছে। ‘বাম্পার’ শব্দটা ব্যবহার করলাম কারন কৃষি ক্ষেত্রে ফলন ভালো হলে বলা হয় বাম্পার ফলন তাই এ রেজাল্টকে ‘বাম্পার রেজাল্ট’ বলাটা খুব বেশি ভুল হবে না বলেই ধরে নিচ্ছি। এরকম একটি ফলাফল শুধু সরকারের সফলতার দালিলিক প্রমান হিসেবে সীমাবদ্ধ থাকবে এমনটা ভাবলে ভাবনা হয়তো অপূর্নই থেকে যাবে।



এরকম রেজাল্ট শিক্ষার বাণিজ্যকরনকে ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করে এবং শিক্ষা বানিজ্যের ক্ষেত্রের ব্যাপক বিস্তর ঘটায়। আজকে যেসমস্ত শিক্ষার্থী ভাল ফলাফল করেছে তারা উচ্চ-মাধ্যমিকে ভর্তি হবার জন্য যার-যার নিকটস্ত কলেজের স্বরনাপন্ন হবে, কিন্তু মফস্বলের যে ডিগ্রি কলেজটি বিগত ৪/৫ বছর আগেও শুধুমাত্র পাসকৃত ছাত্র/ছাত্রী হলেই ভর্তি নিত তারাও এই ‘বাম্পার রেজাল্টে’ এর কল্যাণে ভর্তি যোগ্যতা জিপিএ-৫ দাবি করে বসবে। তখন যারা ঐ ভর্তিযোগ্যতার গ্যারাকলে আটকে যাবে, ভর্তি হতে পারবে না তাদের কি হবে?



তাদের তখন ঝড়ে পড়া অথবা প্রাইভেট কলেজেগুলোতে জবাই হতে যাওয়া ছাড়া আর কোন পছন্দ থাকবেনা। আর এ সুযোগের সন্ধানেই থাকে অলিতে-গলিতে ৪/৫ কক্ষ বিশিষ্ট ছোট্ট বিল্ডিয়ে স্থাপিত নিম্ন মানের কথিত প্রাইভেট কলেজের মালিক তথা শিক্ষা ব্যবসায়ীরা। এসব শিক্ষামানে প্রশ্নবিদ্ধ নতুন কলেজ সম্পর্কে শিক্ষাবোর্ডের সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে জানতে চাইলে তারা বলবে সরকারি কলেজেগুলোতে আসন সংকুলান হচ্ছেনা বিধায় তারা নতুন কলেজ অনুমোদন দিতে বাধ্য হচ্ছে।



এদিকে সদ্য তারুণ্যে পা দেওয়া শিক্ষার্থীরা শিক্ষার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে প্রাইভেট কলেজে হয়তো ভর্তি হবে ঠিকই কিন্তু সেখানে খেলাধুলার জন্য মাঠ পাবে না, সাংস্কৃতিক চর্চার সুযোগ পাবে না।

যে সময়টা তাদের মাঠে ব্যায় করার কথা ছিল তা ব্যায় করবে কম্পিউটারে বসে ভিডিও গেমস খেলে,

সাংস্কৃতিক চর্চার বদলে মোবাইল ফোনে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনে অথবা পর্ণ সাইটে বিচরন করে।

আর এদিকে এই প্রাইভেট কলেজগুলোই ২ বছর যাবৎ শিক্ষার্থীদের গলায় ছুরি চালিয়ে টাকা আদায় করে যাবে।

২ বছর পর এই শিক্ষার্থীরাই আবার উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহন করবে,

সরকারের সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে পরীক্ষার আগেই শিক্ষার্থীর হাতে ইন্টারনেটের বদৌলতে পৌছে যাবে প্রশ্নপত্র, আবার একটা ‘বাম্পার রেজাল্ট’ হবে। তারপর আসবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পালা।



পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ১টা সিটের বিপরীতে ৫০০ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেবে।

১ জন চান্স পাবে আর চান্স না পাওয়া বাকী ৪৯৯ জনের ভরসা হবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন আসন সংকট আর সুদীর্ঘ্য সেশনজট তখন ঝড়ে পড়া অথবা ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা প্রইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে জবাই হওয়ার জন্য গলা বাড়িয়ে দেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকবেনা। তখন এই 'ব্যাম্পার রেজাল্ট' এর ফসল উঠবে শিক্ষাব্যবসায়ীদের ঘরে। আরেকদফা অনুমোদন পাবে আরোকিছু তথাকথিত বিশ্ববিদ্যালয়(!)

অভিভাবকরা তাদের উওরাধীকারিকে উচ্চ-শিক্ষিত করার দু:স্বপ্ন বাস্তবায়নে সর্বশেষ সহায়-সম্বলটুকুও বাজি রেখে হলেও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করাবেন। ভর্তির সময় হাতিয়ে নেয়া হবে মোটা অঙ্কের টাকা, ক্রেডিট বাড়ানোর নামে জুড়ে দেওয়া হবে বাধ্যতামূলক কিছু সাপ্লিমেন্ট কোর্স, চলবে আজকে অমুক প্রোগ্রাম তো কালকে তমুক প্রোগাম এসবের অজুহাতে অফিসিয়াল চাঁদাবাজি।



এভাবে যারা পর্যায়ক্রমে অনার্স লেভেলটা অতিক্রম করবে তারা তখন চাকরীর জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্টানে ধরনা দেবে। এদের মধ্যে যাদের গায়ে আঘাতের চিহ্ন অথবা মামা/দুলাভাইয়ের সুপারিশ থাকবে তারা হয়তো ভালো একটা চাকরি কপালে জুটালেও জুটাতে পারে আর যাদের গায়ে শিক্ষাজীবনে মরামারি করে আঘাতের চিহ্ন থাকবেনা বা যাদের মামা-দুলাভাই উচ্চপদে বহাল নেই তাদের সার্টিফিকেটের ওপর ধুলো জমবে তখন তাদের শুধু দীর্ঘশ্বাস ফেলা অথবা চাহিদার যোগান দিতে ভূল পথে পা বাড়ানো ছাড়া আর কিছু করার থাকবেনা।



পরিস্থিতি বিবচেনায় বলতে হয়-

আমাদের এই দেশে সংখ্যাগরিষ্ট শিক্ষার্থীদের প্রাপ্য হচ্ছে,

মরে গেলে মেধাবী সম্মাননা আর বেঁচে থাকলে বেকারত্বের অভিশাপ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.