নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অসংখ্য মানুষের ভালবাসা বা ভূয়সী প্রশংসা প্রত্যাশা করি না, প্রচুর গালি আর প্রচুর অসভ্যতা সহ্য করি।

আমি মানব অতএব আমার মধ্যে থাকবে মানবতা

ডানপিঠে নিশাচর

আমি কোন কবি নই, আমি কোন সাহিত্যিক-ও নই। তবুও মাঝে মাঝে এক একটি গভীর রাতের কিছুটা সময় আমার আঙুল প্রসব করে গল্প, ছোট গল্প, অনুগল্প, কবিতা নাম না জানা আমার আরোও অনেক সন্তান। এড়া ছড়িয়ে ছিটিয়ে চতুর্দিকে। যারা যে নামেই ডাকুক না কেন আমি বিরক্ত হই না। আমি সাহিত্য পড়ি না। জন্ম দেই। আমি জীবন থেকে নেই না্, বরং জীবন আমার থেকে নেয়। আমি মোটেও কেউকেটা নই, কীটস্ব-কীট আমি। আমার ধনবল নেই, শিক্ষা গৌরব নেই। আমি প্রকৃতি থেকে শিখি । বই পড়ে শিখি । অন্যের কথা শুনে শিখি । বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে শিখি । বিভিন্ন উৎসে বিচরন করি । জানার চেষ্টা করি । এভাবে লেখার রসদ সংগ্রহ করি । তারপর নিজের ভাবনা, বোধ, বিশ্বাস, অভিব্যক্তি দিয়ে মাঝেমধ্যে লেখার চেষ্টা করি । এক্ষেত্রে কিছু যোগ-বিয়োগ করি ।

ডানপিঠে নিশাচর › বিস্তারিত পোস্টঃ

নবী'র রওজা মুবারক ভাঙা বাংলাদেশের স্কুল জেলখানা

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪০

আগেও বলেছি, বাংলাদেশের জেলখানা সম্পর্কে (বহ্যিকভাবে) যতটুকু ধারণা তাতে করে, জেলখানা ব্যাপারটাই আমার পছন্দ না। আমার মনে হয় জেলখানাগুলো হতে পারতো সংশোধনী কেন্দ্র। এই যেমন-- যতদিন-না মাথা থেকে দুষ্ট কীটগুলো বেরিয়ে যাচ্ছে বা মরে যাচ্ছে, ততদিন অপরাধীরা থাকবে ওই কেন্দ্রে। কেউ একজন বলেছিলেন, “জেলখানার ঘরগুলো হতে পারে এক-একটা ক্লাসরুম, আর আস্ত জেলখানাই হতে পারে এক-একটা বিশ্ববিদ্যালয়”



কিন্তু আমাদের দেশের চিত্র তার ঠিক উল্টো। আমাদের দেশের স্কুলের ক্লাসরুম গুলো হচ্ছে হাজতের এক-একটা ঘর, আর পুরো স্কুলটা হচ্ছে একটা আস্ত জেলখানা যেখানে ছুটোছুটি করে খেলা-ধুলার জন্য কোন মাঠ থাকে না, সাতার কাটার জন্য পুকুর থাকে না। ফলে যে সময়টা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঠে ব্যায় করার কথা ছিল সেটা তারা ব্যায় করে কম্পিউটারে বসে ভিডিও গেমস খেলে, সাংস্কৃতিক চর্চার বদলে মোবাইল ফোনে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনে, পুকুরে সাতার কাটার বদলে ডুব মারে পর্ণ সাইটে। অপরপক্ষে স্কুলগুলোতে ছাত্র-ছাত্রীদের যতটা বাড়তি মানসিক চাপে রাখা হয় ততটা চাপে জেলখানায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত আসামীকেও রাখা হয় কিনা সন্দেহ আছে! রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরের অলিতে গলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে ওঠা স্কুলগুলোর চিত্র জেলখানার চেয়ে কোন অংশে কম দেখি না।



এইতো কিছুদিন আগেই আমরা বিভিন্ন গনমাধ্যমে জেনেছি, সুইডেনের বেশ কিছু জেলখানা বন্ধ করে দিতে হয়েছে কারন জেলে মোটেও অপরাধী নেই। অপরাধের সংখ্যা কম, তাই আসামির সংখ্যাও কম। সমাজটাকে যত বৈষম্যহীন করা যায়, মানুষে মানুষে যত সমতা আনা যায়, অপরাধ তত কমে যায়। যাইহোক সেটা সুইডেনের ব্যাপার, আমার বাংলাদেশ তো আর সুইডেনের মতো সভ্য হয়নি, আমার বাঙালি তো আর সুইডিশেদের মতো ভদ্র হয়নি, তাই জেলখানা বন্ধ করার চিন্তাও এখন করা সম্ভব নয়। সে স্বপ্ন না হয় আপাতত থাকুক।



তারচেয়ে বরং বাংলাদেশের আভ্যন্তরীন বিষয়ে ক্যাচাল পাড়ি। মূলত জেলখানা’র উদ্দেশ্য কি? কোন ব্যক্তি যদি কোন অপরাধ করে থাকে তাহলে বিচারিক প্রক্রিয়ায় প্রমাণিত অপরাধের ভিত্তিতে ঐ ব্যক্তিকে জেলে প্রেরণ করা হয় যেন নিজেকে সংশোধন করতে পারে, এই তো?

কিন্তু আমাদের দেশের জেলখানাগুলো মোটেও সংশোধনবান্ধব কোন পরিবেশ আছে বলে মনে হয় না।

অন্ধকার জগতে নিমজ্জিত একজন মানুষের নিজেকে সংশোধন করার জন্য কিসের প্রয়োজন? আলোর?

সে আলো কি কথিত ১০হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ থেকে সরবরাহ করা বৈদ্যুতিক বাল্বের আলো?

নাকি সে আলো, জ্ঞানের আলো। যদি জ্ঞানের আলোই হয় তাহলে সে জ্ঞানের আলোর জন্য প্রয়োজন বই, লাইব্রেরী।



নাহ! আমি সুইডেনের মতো করে এক্ষুনি জেলখানা বন্ধের দাবী করছি না। দাবী করছি না সশ্রম কারাদন্ডকে বিনাশ্রম করারও। আমার দাবী, আসামীকে সশ্রম কারাদন্ডই দেয়া হোক আর অপরাধের ধরণ অনুযায়ী সেই শ্রম সে ব্যায় করবে আরজ আলী মাতুব্বর, আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরী, রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লা’র কবিতা, হুমায়ুন আজাদ এবং তসলিমা নাসরিনের বই পড়ে পড়ে। সেই সশ্রমে যুক্ত হতে পারে কয়েদীদের সপ্তাহিক পাঠচক্র, আলোচনা সভা ইত্যাদি।



প্রচলিত আছে “পাপকে ঘৃণা কর পাপী’কে না” তাই আমি অপরাধীদের ভালবাসতে চাই। কেননা কোন মানুষই এই পৃথিবীতে পাপী হয়ে জন্মায় না। মানুষের জন্মে কোন পাপ নেই। তাছাড়া কেউ জন্মগতভাবে অপরাধী নয়। বরং আমাদের ত্রুটিপূর্ন সমাজব্যবস্থা একজন মানুষকে ক্রমাগত অপরাধী করে তুলে। পাপের পথে ঠেলে দেয়। আমার বক্তব্য তাদের (সেই সব অপরাধীদের) অপরাধ প্রবণতা কমানোর পক্ষে। নিরপরাধ জীবনযাপন করার নিশ্চয়তা পাওয়া একজন মানুষের (বিশেষ করে একজন অপরাধীর) ধর্মীয় এবং রাষ্ট্রীয় অধিকার আর আমি তাদের সেই অধিকার রক্ষা করতে চাই। সরকারেরও উচিত সেটা লক্ষ্য রাখা। এই দায়িত্ব সরকারেরই নিতে হবে।



আমরা ট্যাক্স দেই এমনি এমনি না। আমাদের ট্যাক্সের টাকায় সরকার যদি স্কুল ভাঙতে পারে আর জেলখানায় বই সরবরাহ করতে না পারে, লাইব্রেরী স্থাপনে অপারগ হয় তাইলে আমরা সরকাররে ট্যাক্স দিমু ক্যান? আমার বাঙালি মুসলমান যদি বছরে একবারও মসজিদে না যায় কিন্তু কেউ মসজিদের একটা ইট খসাইলেও তাদের সুরসুরি লাগে, অনুভূতিতে মারাত্নকভাবে আহত হয়, মুসলমানিত্ব চেগার দিয়া উঠে, শিশ্নে চান-তারা ঝান্ডা বেঁধে নারায়ে তাকবীর বলে তার কল্লা নামাইতে দুইবার ভাবে না। কিন্তু যেই স্কুলে আমাদের মতো গরীবরা, তাদের সন্তানরা পড়ে বা পড়বে সেই স্কুল ভাঙলে তাদের অনুভূতিতে লাগে না। অথচ লোকে বলে “মন ভাঙা আর মসজিদ ভাঙা নাকি সমান” আমার তো সন্দেহ হয়। একটা স্কুল ভাঙলে সেই স্কুলের হাজার শিক্ষার্থীর মন ভাঙাটা-ই স্বাভাবিক। তাইলে হাজার শিক্ষার্থীর হাজার মন সমান কত মসজিদ হইলোরে মদন?

আশ্চর্য হই বৃহৎ(!) রাজনৈতিকদল কোন কর্মসূচী বা হুশিয়ারি দেয় না অথচ হেফাজতের সহিংসতার সাথে গলা-গাল-তাল মিলিয়ে তারা সরকার পতনের আল্টিমেটাম দেয়। কেন ম্যাডাম? আপনে এবং আপনার দুই ছেলে অন্তত হাই-স্কুলের বারান্দা পর্যন্ত তো গেছেন? একবার তো ঐ শিশুদের দু:খটা বুঝবার চেষ্টা করতে পারতেন..



কিন্তু আমাদের বাংলাদেশ থেকে হাজার মাইল দূরে সৌদী আরব। ঈদানিং সেখানে নবী'র রওজা মুবারক ভেঙে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিযেছে সৌদী সরকার। তাদের দেশ, তাদের জায়গা, আফ্টারঅল সৌদী আরব ইসলামের সোল এজেন্ট বা মুসলিম উম্মা'র মাথা তাহলে তারা নবী'র রওজা মুবারক সরিয়ে নিতে তাদের আপত্তি না থাকলে, রওজা মুবারকের কাছে থেকেও তাদের অনুভূতি তেলে পিছলাইয়া আছাড় খাইয়া আঘাত না লাগলেও আমার বাঙালির অনুভুতি কেন শুকনাতে আছাড় খাইয়া আহত হইয়া রাস্তায় গড়াগড়ি করে? বাঙালির জন্য বেইলী রোড কাছে নাকি সৌদী আরব কাছে? সৌদীর অভ্যন্তরীন ইস্যূতে বাঙালি কেন ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মতো লাফায়? হায়রে অনুভূতি! তুমি শুধু ধর্মের জন্য, মানুষের জন্য না। মানুষের বুঝি কোন অনুভূতি থাকতে নেই! অথচ লোক মুখে শুনি "জ্ঞানার্জনের জন্য সুদূর চীন দেশে যাও"



আমাদের মদীনা সনদের সরকার, জনগণের সুবিধার দিকে তাকাইয়া নানান সেবাদান করে। জেলখানায় বসে আসামী’র বিয়ে করার খবরও আমরা পেয়ে থাকি। বিয়ে করা ফরজ তাই সেই ফরজ আদায় করার সেইসব সুবিধা সরকার দেয়। বিদ্যুৎ, পানি, শিক্ষা ইত্যাদি'র নাগরিক সুবিধা দেয়াও সরকারের দায়িত্ব। সেটা জেলখানার ভিতরে হোক আর বাইরে হোক, বেইলী রোডের সামাজিক শিক্ষাকেন্দ্র স্কুলের গরীব শিক্ষার্থীদের হোক আর অভিজাত পাড়ার কোন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলেরই হোক না কেন.....



সাধারণ মানুষকে যদি মুক্তভাবে শিক্ষার্জনের সুযোগ না দিতে পারে তাহলে অন্তত জেলখানার ভেতরের কয়েদীদের সংশোধনের সেই চেষ্টাটা করতে পারেন। আর সৌদী আরবে গরুর গলায় ছুরি লাগিয়ে জবাই করবে নাকি লেঞ্জায় ছুরি লাগিয়ে জবাই করবে সেইটা তাদের মাথাব্যাথা....

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ২:৪৭

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আমরা ট্যাক্স দেই এমনি এমনি না। আমাদের ট্যাক্সের টাকায় সরকার যদি স্কুল ভাঙতে পারে আর জেলখানায় বই সরবরাহ করতে না পারে, লাইব্রেরী স্থাপনে অপারগ হয় তাইলে আমরা সরকাররে ট্যাক্স দিমু ক্যান? খুব বড় একটা প্রশ্ন। কিন্তু বাধকতা বলে বিনাপ্রশ্নে দিতে হবে =p~ =p~

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.