নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অসংখ্য মানুষের ভালবাসা বা ভূয়সী প্রশংসা প্রত্যাশা করি না, প্রচুর গালি আর প্রচুর অসভ্যতা সহ্য করি।

আমি মানব অতএব আমার মধ্যে থাকবে মানবতা

ডানপিঠে নিশাচর

আমি কোন কবি নই, আমি কোন সাহিত্যিক-ও নই। তবুও মাঝে মাঝে এক একটি গভীর রাতের কিছুটা সময় আমার আঙুল প্রসব করে গল্প, ছোট গল্প, অনুগল্প, কবিতা নাম না জানা আমার আরোও অনেক সন্তান। এড়া ছড়িয়ে ছিটিয়ে চতুর্দিকে। যারা যে নামেই ডাকুক না কেন আমি বিরক্ত হই না। আমি সাহিত্য পড়ি না। জন্ম দেই। আমি জীবন থেকে নেই না্, বরং জীবন আমার থেকে নেয়। আমি মোটেও কেউকেটা নই, কীটস্ব-কীট আমি। আমার ধনবল নেই, শিক্ষা গৌরব নেই। আমি প্রকৃতি থেকে শিখি । বই পড়ে শিখি । অন্যের কথা শুনে শিখি । বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে শিখি । বিভিন্ন উৎসে বিচরন করি । জানার চেষ্টা করি । এভাবে লেখার রসদ সংগ্রহ করি । তারপর নিজের ভাবনা, বোধ, বিশ্বাস, অভিব্যক্তি দিয়ে মাঝেমধ্যে লেখার চেষ্টা করি । এক্ষেত্রে কিছু যোগ-বিয়োগ করি ।

ডানপিঠে নিশাচর › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাউকে হেয় প্রতিপন্ন বা অপদস্থ করতে গালাগাল হিসেবে নিরীহ পশুর নাম ব্যবহার।

১২ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১:২৬

যদি ধরেই নিই সৃষ্টিকর্তা তার অপার মহিমায় সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে মানুষ সৃষ্টি করেছেন, অন্যান্য প্রাণীর মতো তিনি মানুষের দেহের উপরিভাগে তথা ঘাড়ে মাথা দিয়েছেন, আর সৃষ্টির শ্রেষ্টত্ব বজায় রাখতে বা প্রমাণ করতে সেই মাথায় বেশ কিছু পরিমান মগজ (ব্রেইন) দিয়েছেন যার দ্বারা মানুষ চিন্তা-ভাবনা করতে পারে, পারে মননশীল বুদ্ধি বৃত্তির চর্চা করতে যা মানুষকে বুদ্ধিমান প্রানীর স্বীকৃতি পাইয়ে দিয়েছে।

মানুষ যে বুদ্ধিমান প্রাণী তা এরুপে বুঝা যায়- মানুষ তাদের মস্তিষ্কের চিন্তা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে কোনটা ভাল আর কোনটা খারাপ তা নির্ধারণ করতে পারে, নির্ধরিত সে নীতির উপর ভিত্তি করে একটা ন্যয়-বিচার ভিত্তিক সমাজ গঠন করতে পারে, পারে সমাজের সবার জন্য মঙ্গলময় হয় এমন সব রীতি নীতি ও আইন কানুন প্রণয়ন করতে। এবং একই সাথে পারে আধুনিক প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রাকৃতিক সম্পদকে তাদের ব্যবহার উপযোগী করতে ও জীবনকে সহজ,সরল এবং সুখময় করে তুলতে। এ সব ক্ষমতা মানুষদের আছে বলেই সে না 'মানুষ' বুদ্ধিমান।

এখন প্রশ্ন জাগতে পারে, সাধারন সব বিষয়গুলো জানা বা বোঝার জন্য মানুষের সাধারন বুদ্ধি আর বিবেক-ই কি যথেষ্ট নয়! আর তা যদি নাই বুঝতে পারবে তাহলে সৃষ্টিকর্তা মানুষকে শুধুশুধু কেন বুদ্ধিমান প্রানী বানাতে গেলেন? অপরদিকে এটাও নজরে আসে, আমরা আমাদের বুদ্ধির ক্ষমতাকে কিভাবে কাজে লাগাই?
খেয়াল করলে দেখা যাবে যে, অামরা কোন বিষয়ে একটু জেনেই এমন তাত্ত্বিকতা জাহির করতে মরিয়া হই যেন আমাদের জন্যই ঐ “অল্প বিদ্যা ভয়ংকর” তত্ত্বটার প্রবর্তন! (আমি নিজেও হয়তো এর বাইরে নই!)

আমরা জানি যে ব্লেড খুব ধারালো এবং ব্লেড দিয়ে খুব সহজে কচু গাছের মতো ছোট-খাট তৃণ বা গাছ কাটা যায়। কিন্তু কেউ যদি ব্লেড দিয়ে কচু গাছ কেটে ভাবে যে সেই একই ব্লেড দিয়ে সেগুন-মেহগুনির মতো বনজ গাছ কাটা সম্ভব তাহলে তার ভাবনার ভিত্তিটা কতটা মজবুত(!) সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

মানুষের মননশীল বুদ্ধিবৃত্তির চর্চার বাস্তব উদাহরন আমরা আশে পাশে খেয়াল করলে দেখবো যে অনেকেই একে অপরকে হেয় প্রতিপন্ন করতে অপদস্থ করতে গালাগাল হিসেবে গরু(বলদ), ছাগল(ছাগু), গাধা(গর্ধব) কুকুর(কুত্তা) ইত্যাদি বিভিন্ন পশুর নাম ব্যবহার করে বা পশুর সাথে তুলনা করে তাদের কথিত প্রগতিশীল বুদ্ধি বৃত্তির চর্চা থাকেন। কিন্তু আসলেই কাউকে এইরকম পশুর সাথে তুলনা করাটা কতটা যুক্তিসঙ্গত সেটা আজও আমার দুর্বল মস্তিষ্ক অনুধাবন করতে পারলো না?

এবারে উপরে উল্লেখিত এসমস্ত পশু সম্পর্কে একটু বলে নিই।
>গরু: এ উপমহাদেশে প্রচলিত আছে যে, গাভী আমাদিগকে দূগ্ধদান করে, সুতরাং সে মাতৃ-সমতুল্য এবং বলদ কৃষিকাজের সহায়ক হয়ে আমাদিগকে প্রতিপালন করে, তাই সে পিতৃ-সমতুল্য, কাজেই গরু একটি আপাদমস্তক উপকারী বোবা প্রাণী এবং আমার নিকট সন্মানের ও পাত্র।
>ছাগল : ছাগী-ও আমাদিগকে দূগ্ধদান করে, এবং ছাগ মাংস প্রায় সকল মাংসাশী মানুষের প্রিয় খাদ্য। ছাগল সম্পর্কে একটি গ্রাম্য প্রবাদ প্রচলিত আছে আর সেটা খুব সম্ভবতো এমন “মুরগে উনা, হাঁসে দুনা আর ছাগলে পিন্দায় কানে সোনা” ছাগলের মতো একটি বোবা প্রাণী উপকারী বিধায় বাংলাদেশে বিগত চার-দলীয় জোট সরকার ‘ছাগল পালন কর্মসূচী’ হাতে নিয়েছিল।
>গাধা: গাধা সম্পর্কে সকলেরই জানা। গাধা হচ্ছে পরিশ্রমের প্রতীক। এবং আমাদের দেশে দুই প্রধান দলের দলীয় প্রতীক যেমন নৌকা ও ধানের শীষ, তেমনি যুক্তরাষ্ট্রের দুই প্রধান দলের প্রতীক গাধা ও হাতি। এগুলো শতাব্দী প্রাচীন।
>কুকুর: কুকুর একটি বিশ্বস্থ প্রাণী। কুকুরের প্রভুভক্তির প্রসংশা আমি সেই শৈশব থেকেই শুনে আসছি। এবং প্রত্যক্ষভাবে সেটা পেয়েছি-ও। কুকুর সম্পর্কে আর বেশী কিছু বলার প্রয়োজনবোধ করছি না।

মূল প্রসঙ্গে ফেরার আগে আরেকটা দু’পেয়ে প্রাণী সম্পর্কে দু’য়েকটা কথা না বললেই নয়। এই দু’পেয়ে প্রানীর সংখ্যা পৃথিবীতে প্রায় সাড়ে সাতশো কোটি। এবার দেখি দু’পেয়ে এই সাড়ে সাতশো কোটি (দ্বিপদী)প্রাণীর একাংশের কিছু বৈশিষ্ট্য।
এরা একে অন্যের সাথে মারামারি করে, একে অন্যের আবাস ধ্বংস করে, একে অন্যের খাবার কেড়ে নেয়, বিশ্বাসঘাতকতা করে। এরা এদের দৈহিক গড়নের অন্যটিকে গলা কেটে জবাই করে,হাত-পা কেটে ফেলে, রগ কেটে দেয়, চোখ উপড়ে ফেলে। এরা একে অন্যকে বন্দী করে বিক্রিও করে। হিংস্রতায় যেকোন পশু এদের কাছে হার মানবে। . . . . . . . .কিন্তু নির্মম হলেও সত্য যে, এদেরকে আবার মানুষ নামে ডাকা হয়!

যে কথা বলতে চেয়েছি, আমার কাছে সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে মানুষের তুলনায় গরু, ছাগল, গাধা, কুকুর ইত্যাদি এই প্রানীগুলো এত্তো উপকারী কিন্তু আমরা কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করতে, অপদস্থ করতে গালাগাল হিসেবে এই বোবা প্রানীগুলোর উপমা দিয়ে পক্ষান্তরে কিন্তু নিজের অজ্ঞতার পরিচয়ই দিয়ে থাকি।

অনেককে আবার প্রায়ই বলতে শুনি ‘পাগলে কি-না বলে আর ছাগলে কি-না খায়’ । আচ্ছা কোথাও কি কোন পাগলকে বলতে শুনা গেছে যে- বিরোধী দল পিলার নাড়াচাড়া করে ১০ তলা বিল্ডিং ধ্বসিয়ে দিয়েছে কিংবা কোন পাগল কি বলেছে যে গৃহস্থালিতে রান্নার জন্য গ্যাসের চুলার ব্যবহার বন্ধ করতে হবে আর কোথায় কি কোন ছাগলের খাবারের জন্য কোন প্রকার জটিলতা তৈরী হয়েছে?
যদি এরকমটা না হয়ে থাকে তবে ‘পাগলে কি-না বলে আর ছাগলে কি-না খায়’ এটা বলে কাউকে হেয় করার মানসিকতা আমার কাছে স্বাভাবিক বোধ হয় না। জটিলতা যদি তৈরী করে থাকে তবে কতিপয় মানুষেরাই তৈরী করে।

যাইহোক, কেন যেন আজকাল মানুষ শব্দটাকে গালাগাল মনে হয়! কেউ যখন আমাকে মানুষ বলে সম্বোধন করে তখন মনে হয় আমাকে একটা আক্রমনাত্নক গালি দিলো বুঝি!

তাইতো এখন নিরুপায় হয়ে প্রার্থনা করি
ও মালিক, মানুষ যেন করো না আমায় মেঘ করে দাও….



[বি:দ্র: এই অতি-প্রগতিশীলদের রাজধানীতে আমি এক নগন্য প্রাণ, কথিত অতি-প্রগতিশীল হতে পারলাম না বলে ক্ষমাপ্রার্থী]

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.