নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মুহাম্মদ এনামুল হক আপনাদেরই লোক

ঢাকার লোক

বাংলা ভালোবাসি

ঢাকার লোক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিবাহ বিচ্ছেদ- একটি সামাজিক বিপর্যয়

১১ ই জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৯

অধুনা সমাজে বিভিন্ন কারণে বিবাহ বিচ্ছেদের হার বেড়ে যাচ্ছে ! এর একটা কারণ নিয়ে এ লেখা। আমাদের সমাজে আদিকাল থেকে প্রচলিত প্রথা, ছেলে বিয়ে করে বাবা মা ভাই, অবিবাহিত বোনের সাথে স্ত্রী সহ একই বাসায় বাস করে এবং এটিই সমাজে পছন্দনীয় । বাবা মা ও আশা করে ছেলের বৌ তাদের সাথে থেকে তাদের সেবা যত্ন করবে। বাসায় ছোট ভাই বোন থাকলে তাদের দেখা শুনা করাও বড় ভাইয়ের বৌয়ের দায়িত্ব হিসাবে আশা করা হয় । এ সকল দায়িত্বে অবহেলা হলে, বা পালনে কিছু কমতি হলে পরিবারে অশান্তি শুরু হয়, শাশুড়ি বৌএ মনোমালিন্য, একে অপরের নামে অভিযোগ, ঝগড়া ইত্যাদি তখন নিত্য বিষয় হয়ে দাঁড়ায় । এ অবস্থার অবনতি ঘটতে ঘটতে এমন অবস্থায় পৌঁছায় যে একসময় পরিবার থেকে, বিশেষত মা বাবার পক্ষ থেকেও, অনেক সময় ছেলের উপর চাপ আসে অন্য পরিবার থেকে আসা বৌকে তালাক দিতে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে মাতাপিতার প্রতি বাধ্য থাকা এবং তাদের খুশি করার জন্য স্ত্রীর উপর অন্যায় তালাক চাপিয়ে দিয়ে তাকে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেয়া হয়। স্বামী স্ত্রীর সংসারেও বিপর্যয় নেমে আসে, সে সাথে স্ত্রীর আপনজনের মাঝেও নেমে আসে মহা বিপর্যয় !

অথচ ইসলাম স্ত্রীকে যে সকল অধিকার দিয়েছে তার অন্যতম প্রধান অধিকার তাকে তার সন্তান সহ সতন্ত্র বাসস্থানের ব্যাবস্থা করা । এটি স্বামীর উপর স্ত্রীর অধিকার । বিয়ের পর তাকে আলাদা বাসায় রাখা স্বামীর অন্যতম কর্তব্য, অর্থনৈতিক কারণে অপারগ হলে যথা শীঘ্র তাকে আলাদা বাসস্থান করে দিতে যথা সম্ভব চেষ্টা করতে হবে । স্বামীর বাবা মারও উচিত, সামর্থ থাকলে, ছেলেকে তার সতন্ত্র বাসার ব্যাবস্থা করতে সহায়তা করা । যাতে ছেলে - ছেলের বৌ এর প্রাইভেসি, সম্ভ্রম বজায় রাখতে কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হতে না হয় ।

স্বামীর বাবা ইসলামিক শরীয়া মতে মাহরাম, কিন্তু স্বামীর প্রাপ্তবয়স্ক আপন ভাইও (দেবর) গায়ের মাহরাম, যার সাথে সম্পূর্ণ বাইরের একজনের সাথে যেমন পর্দা করা জরুরি ঠিক তেমনি পর্দা করা আবশ্যক। একই বাসায় থেকে এ পর্দা মেনে চলা অসম্ভব না হলেও অত্যন্ত কঠিন। আমাদের সমাজে দেবর ভাবীর সম্পর্ক যেভাবে নিরাপদ মধুর হিসাবে ধরা হয় তা ইসলামী শিক্ষার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। রাসূলুল্লাহ (স) যে কোনো গায়ের মাহরাম পুরুষকে কোনো মহিলার ঘরে যেতে নিষেধ করেছেন, তিনি বলেন, " মহিলাদের ঘরে ঢুকতে সাবধান”, একজন সাহাবী বললেন, "ইয়া রাসুল্লাহ, দেবরের বেলায় কি হবে ?" তিনি বললেন, " দেবর মৃত্যুতুল্য ।"(Reported by al-Bukhaari 5232, Muslim 2172, Fath al-Baari, 9/330)।

দুর্ভাগ্যবসত আমাদের দেশে অনেক বাড়িতেই, সবার জন্য রান্না করা, শাশুড়িকে দেখা শুনা করা, মায় কাপড় ধোয়া পর্যন্ত, বাড়ির সবার কাজ কর্ম ছেলের বৌ করবে এমনটা আশা করা হয়। অনেক সময় ছেলেকে বিয়েই করানো হয় অসুস্থ শাশুড়িকে দেখা শুনা করার জন্য! অথচ ইসলাম বিবাহিত নারীর দায়িত্ব স্বামী ও সন্তানের দেখ ভাল করার মাঝেই সীমাবদ্ধ রেখেছে । এমনকি বিয়ে হয়ে গেলে তার নিজের বাবা মার্ প্রতিও তার দায়িত্ব আর তেমন থাকেনা । তেমনি শশুর শাশুড়ির প্রতিও অন্য একজন অনাত্মীয় মুসলমানের প্রতি যে সাধারণ সহানুভূতিশীল ও মার্জিত আচরণ করা, বাসায় আসলে উপযুক্ত মেহমানদারী করা, তার অতিরিক্ত কোনো দায়ভার নেই। তবে বৌ যদি এর বাইরে তার শশুর শাশুড়ির দেখা শুনা বা সেবাযত্ন করে, সে তার অনুগ্রহ; তাতে তার স্বামী খুশি হবে এবং তার জন্য সে পরকালে পুরস্কার পাবে ।

একজন স্ত্রীর জন্য স্বামী ব্যাতিত শশুর শাশুড়ি বা শশুর বাড়ির অন্য কারো কথা, ছোট বা বড় যে কোনো বিষয়েই হোকনা কেন, মানতেই হবে ইসলাম তা বলে না, যদিনা তারা এমন বিষয়ে বলেন যা ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী অবশ্য পালনীয় ( যেমন নামাজ রোজা করতে বলা বা পর্দা করতে বলা ইত্যাদি ) অথবা এমন বিষয়ে নিষেধ করেন যা ইসলামে হারাম । পক্ষান্তরে, স্বামীর কথা মানা অবশ্য কর্তব্য যদিনা তা ইসলাম বিরোধী হয়।
বৌ কিভাবে রান্না করবে, কিভাবে কাপড় পরবে, কি কাজ করবে ইত্যাদি উপদেশ হিসাবে শশুর শাশুড়ির দিতে অসুবিধা নেই কিন্তু তাকে তা করতে বাধ্য করা যাবে না। বাপের বাড়ি যেতে হলে শাশুড়ির অনুমতি লাগবে না, স্বামীর অনুমতিই যথেষ্ট। স্বামী স্ত্রীর নিজস্ব একান্ত বিষয়ে কোনো অনুসন্ধান বা খবরদারি করার কোনো অধিকার শশুর শাশুড়ির নেই ।

স্বামী তার পিতা মাতা বা ভাই বোনদের প্রতি সদয় আচরণ করবেন, তাদের খোঁজ খবর নিবেন, প্রয়োজনে দেখতে যাবেন, সামর্থমত সাহায্য সহযোগিতা করবেন তাতে স্ত্রীর বাধা দেয়া উচিত নয় । পিতা মাতার প্রতি সদয় আচরণ, তাদের মনে কষ্ট না দেয়ার ব্যাপারে আল্লাহ পাক কোরানে বিভিন্ন আয়াতে নির্দেশ দিয়েছেন । তাই বলে মাতাপিতার প্রতি বাধ্য থাকা এবং তাদের খুশি করার জন্য স্ত্রীর উপর অন্যায় অত্যাচার করাও ইসলাম বিরোধী । যে কোনো অন্যায় পরিহার করা ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা ইসলামের দাবী। সূরা নিসায় ১৩৫ নং আয়াতে আল্লাহ পরিষ্কার ভাষায় নির্দেশ দিচ্ছেন,

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ كُونُواْ قَوَّامِينَ بِالْقِسْطِ شُهَدَاء لِلّهِ وَلَوْ عَلَى أَنفُسِكُمْ أَوِ الْوَالِدَيْنِ وَالأَقْرَبِينَ إِن يَكُنْ غَنِيًّا أَوْ فَقَيرًا فَاللّهُ أَوْلَى بِهِمَا فَلاَ تَتَّبِعُواْ الْهَوَى أَن تَعْدِلُواْ وَإِن تَلْوُواْ أَوْ تُعْرِضُواْ فَإِنَّ اللّهَ كَانَ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرًا

"হে ঈমানদারগণ, তোমরা ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত থাক; আল্লাহর ওয়াস্তে ন্যায়সঙ্গত সাক্ষ্যদান কর, তাতে তোমাদের নিজের বা পিতা-মাতার অথবা নিকটবর্তী আত্নীয়-স্বজনের যদি ক্ষতি হয় তবুও। কেউ যদি ধনী কিংবা দরিদ্র হয়, তবে আল্লাহ তাদের শুভাকাঙ্খী তোমাদের চাইতে বেশী। অতএব, তোমরা বিচার করতে গিয়ে রিপুর কামনা-বাসনার অনুসরণ করো না। আর যদি তোমরা ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে কথা বল কিংবা পাশ কাটিয়ে যাও, তবে আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় কাজ কর্ম সম্পর্কেই অবগত।"

আমরা সবাই যদি আমাদের অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখি এবং সীমা অতিক্রম না করে তা মেনে চলতে যত্নবান হই তবে পারিবারিক কলহ থেকে বেঁচে থাকতে পারি এবং অনভিপ্রেত বিপর্যয় এড়াতে পারি ।
রেফারেন্স :
https://islamqa.info/en/answers/6388/to-what-extent-can-the-husbands-relatives-interfere-in-his-wifes-life

মন্তব্য ১৭ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: বিবাহ বিচ্ছেদ প্রচন্ড মাত্রায় বেড়েছে। কারন স্বামীর প্রতি স্ত্রী আর স্ত্রীর প্রতি স্বামীর বিশ্বাস নেই।

১১ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১১:০৭

ঢাকার লোক বলেছেন: তা ঠিক, স্বামী কাজ করেন, স্ত্রীও কাজ করেন, কখনো দূরে বা বিদেশে, এভাবে পরস্পরের ভিতর দূরত্ব বেড়ে যাচ্ছে, ফলে বিশ্বাসে ফাটল ধরছে। প্রয়োজন কাছাকাছি থাকা, পরস্পরকে বেশি সময় দেয়া, কিছুটা অর্থনৈতিক ক্ষতি স্বীকার করে হলেও, হয়তোবা এতে সংসার টিকে যাবে !
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য !

২| ১১ ই জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩৭

পথ হতে পথে বলেছেন: প্রয়োজনীয় বিষয়ে সুন্দর আলোকপাত করেছেন।

১১ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১১:০৮

ঢাকার লোক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার ইতিবাচক মন্তব্যের জন্য !

৩| ১১ ই জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫০

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: এই শহরে প্রতি ৫০ মিনিটে ১ টি করে সংসার ভাঙ্গে।

১১ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১১:১০

ঢাকার লোক বলেছেন: কেন ভাঙছে তার কারণগুলি বোঝা দরকার, তেমন পরিস্থিতির উদ্ভব যাতে না হয় আগে ভাগেই সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার । ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য !

৪| ১১ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৮:৩০

করুণাধারা বলেছেন: ++++++++++++++++++++++

যে সমাজে একজন পুরুষ তার স্ত্রীকে নিজস্ব সম্পত্তি বলে ভাবেন, ভাবেন স্ত্রীর প্রধান কর্তব্য স্বামী এবং তার মা- বাবা- ভাই- বোনদের খুশি রাখা, সেই সমাজের একজন পুরুষ হয়ে আপনি এমন পোস্ট দিয়েছেন, সে জন্য এতগুলো প্লাস আপনার!!

অথচ ইসলাম স্ত্রীকে যে সকল অধিকার দিয়েছে তার অন্যতম প্রধান অধিকার তাকে তার সন্তান সহ সতন্ত্র বাসস্থানের ব্যাবস্থা করা । এটি স্বামীর উপর স্ত্রীর অধিকার । বিয়ের পর তাকে আলাদা বাসায় রাখা স্বামীর অন্যতম কর্তব্য, অর্থনৈতিক কারণে অপারগ হলে যথা শীঘ্র তাকে আলাদা বাসস্থান করে দিতে যথা সম্ভব চেষ্টা করতে হবে । আমি মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানকালে দেখেছি, সে দেশে পুরুষরা বিয়ে করে স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা সংসার করে। হতে পারে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা আমাদের দেশের চাইতে ভালো, তাই তারা এটা করতে পারে। মিশরীয় পুরুষেরা নিজেদের থাকার ব্যবস্থা না করে বিয়ে করতে পারে না, সেটা যদি একটা ঝুপড়ি হয়, তবুও। পবিত্র কোরআনে স্বামীর প্রতি স্ত্রীর আচরণ কেমন হওয়া উচিত তা বলা হয়েছে, কোথাও শ্বশুর শাশুড়ির সেবা করার কথা বলা হয়নি, অথচ আমাদের দেশে অনেক মেয়ের বিয়েই হয় কেবল অসুস্থ শ্বশুর- শাশুড়ির দেখাশোনা করার জন্য।

বিবাহ বিচ্ছেদ অনেক কারণে হয়, সবচাইতে বেশি যে কারণে হয়, সেটা "বউ শ্বশুর বাড়ির সাথে মিলে চলতে পারে না" এই কারণ দেখিয়ে হয়। আমি দেখেছি অনেক স্বামী, কন্যা সন্তান সহ স্ত্রীকে তালাক দেন কেবলমাত্র তার বাড়ির লোকের স্ত্রীকে পছন্দ করে না দেখে... এই কন্যাটির জীবন এতে কতটা দুর্বিষহ হয় সেটা বাবা হয়েও ভাবে না...

এ ব‍্যাপারে সকলে যেন সচেতন হন, আন্তরিক প্রার্থনা।

১১ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১১:০৯

ঢাকার লোক বলেছেন: ধন্যবাদ আপা আপনার অনেকগুলো প্লাসের জন্য ! একটি তরুণ দম্পতি যে সময় তাদের নতুন সংসার শুরু করে তাদের একটা আলাদা বাসস্থান কতটা বাঞ্চনীয় তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। বাসস্থান বলতে দোতালা বাড়ি হতে হবে সে তো নয়, হোক সে ছোট, শুধু চাই নিজস্ব স্বাধীনতা, প্রাইভেসী। যাদের সামর্থ আছে, তাদেরকে অন্তত সামাজিক প্রথার যাঁতাকলে ফেলে এ থেকে বঞ্চিত করা কোন অবস্থায়ই কাম্য হতে পারে না । আমিও আপনারই সাথে প্রার্থনা করি সবাই এ বিষয়ে সচেতন হোন ।

৫| ১১ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৯:৩২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহর লাল সালুর প্রারম্ভিকার কথাই যে বেশী সত্য
আগাছার চেয়ে টুপি বেশি..
ধর্মের চেয়ে নিজেদের আরোপিত বোধের গুরুত্ব বেশি.. তাইতো ধর্মের মৌলিক বিষয়কে অবহেলে
বানানো আরোপিত সামাজিক ধারনায় বেশী জোর দেয়া হয়।

প্রেম, যৌনতা, বিবাহ নিয়ে ইসলামের যে দারুন খোলামেলা বাস্তবসম্মত নীতি তা বুঝতে চায় ক জনে!
ইসলামীরা গবেষনাই করে না। খেয়াল খুশি আর চলতি বিশ্বাসে মগ্ন! অবিশ্বাসীরা এর নেগেটিভ উপস্থাপনায় সিদ্ধ হস্ত!
ফলে না ঘরকা না ঘাটকা টাইপ চলতি ধার্মিক সমাজ।
স্বামী শারিরিক অক্ষম হলে নারীর তালাক দেবার অধিকার আছে সাধারন এ টুকুই ক জন জানে বা মানে!
উল্টো দৈহিক এ স্বাভাবিক চাহিদাকে নিয়ে কটাক্ষ করা হয়! অথচ হাদীসে বহু উদাহরন আছে এ সব বিষয়ে বিয়ের আগেই স্বচ্ছ ধারনা নিয়ে সম্পর্ক স্থাপনে বা বিবাহের পর অবহিত হলে বিবাহ বিচ্ছেদের।

আমাদের উপমহাদেশের চলমান অংস্কৃতিকে অবহেলা করতে বলছি না। কিন্তু তা যেন সাংঘর্ষিক না হয়।
কেউ যদি ভালবেসে সেবা করে সে ভীন্ন, কিন্তু সেবার জন্যই বিয়ে তা ভাবা ভুল। নারীর মতের মূল্যায়ন করতেই হবে এবং তা একজন স্বাধীন স্বত্ত্বার যে টুকু পূর্ণ অধীকার সেই অনুপাতেই।

পোষ্টে +++


১২ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৮:৫০

ঢাকার লোক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার প্লাসের জন্য ;
দরকার ধর্মীয় জ্ঞানের বিস্তার । সামাজিক প্রথার যাঁতাকলে পড়ে আমরা যতটা বাঙালি হয়েছি ধর্মীয় জ্ঞানে সংকীর্ণতার কারণে আমরা ততটা মুসলমান হতে পারিনি। ফলে সামাজিক প্ৰথাই ধর্মীয় অনুশাসনের উপর প্রাধান্য পাচ্ছে। যার নেতিবাচক প্রতিফল আমাদের জীবনেও বিপর্যয় ডেকে আনছে । সময় এসেছে সচেতন হওয়ার !

৬| ১২ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ২:৩৫

কানিজ রিনা বলেছেন: আসলে যখন থেকে পরিবার পরিকল্পনায়
বলা হোল দুটি সন্তানই যথেষ্ট তখন থেকেই
সবাই দুটি সন্তানের বেশী সন্তান হওয়াটা
বার্তী ঝামেলা বলেই মনে করা হয়।
প্রায় তিন যুগেরও বেশী এমন নিয়মে
দুটি সন্তানের বেশী কেউ আগ্রহ দেখায়
না। আর এই দুটি সন্তান যদি এক ছেলে
এক মেয়ে হয় সেখানে যৌথ ফ্যামিলির
প্রশ্নও আসেনা। মেয়েটি বিয়ে দিয়ে বাবা
মা যদি ছেলেকে বিয়ে দিয়ে বৌয়ের উপর
নির্ভরশীল হয় তাহলে অন্যায় কোথায়?
একটি ছেলে জীবনের যথাসর্বশ্ব দিয়ে
শিক্ষিত বানিয়ে যদি বাবা মা হাদীস
অনুসারে ছেলেকে আলাদা করে সুখের
পথে ঠেলে দেয় সেখানে বাবা মা কতটা
অসহায় ভেবে দেখেছেন? হাদীস মানুষের
জন্য, হাদীসের জন্য মানুষ না। তাই
আজকাল এই হাসীসের ওজুহাতে মানুষ
যেন নিজের বাবা মাকে বৃদ্ধ আশ্রমে না
পাঠায়।
যদিও মেয়েরা শশুরবাড়ির মানুষ দ্বারা
নির্যাতীত হয়। তবুও বলব আমাদের
দেশের ৭০% বাবা মা,ই অসহায় শেষ
বয়সে এসে। তাদের ছেলে মেয়েরা যেন
নিজ নিজ সুখের জন্য হাদীসের দোহায়
না দেয়।
আজকাল শিক্ষিত মেয়েরা বিয়ের পর
আলাদা থাকা একটি স্টাট্যাস ভেবে
নিয়ে স্বার্থ উদ্ধারে ব্যস্ত।
অথচ ভাবেনা স্বামীর বাবা মায়ের কর্তব্য
আছে। যদি বাবা মায়ের ধন সম্পদ কিছু
থাকে তাহলে অন্য কথা। তথাপি বাবা
মা শেষ বয়সে ছেলে বা ছেলের বউ
দেখা শুনা করা অতিব জরুরী।
আমাদের দেশের মানুষ যত শিক্ষিত
হচ্ছে এসব দায়দায়ীত্ব বোধ থেকে
পিছপা হচ্ছে, বলেই বৃদ্ধাশ্রম ভরে
যাচ্ছে। অথচ তিন দশক আগেও
বৃদ্ধাআশ্রম ছিল বলে মনে পরেনা।
তাই পরিশেষে ধর্মের হাদীস মানতে
গিয়ে কেউই যেন নিজের বাবা মায়ের
অবহেলা না করে।
আমাদের দেশে একটা হাদীসের দোহায়
দিয়ে পুরুষেরা বহুবিবাহ করে অথচ
সমাজের যতসব বখাটে বদমাইশ এই
হাদীস অনুসরন করে আসলে আর কোনও
হাদীস মানে কিনা তার কোনও ইওত্যা
নাই। আপনার লেখার প্রসংশা করতেই
হয়। তবুও আমি বলব আমার স্বামী
আমাকে নিয়ে বসবাস করত বাধ্য হয়ে
শহরে একা সংশার পাততে হয়। আমার
স্বামী প্রতাপশালী মাতাল লম্পট ছিল
আমার মনে হয় বাবা মা সংশারে অন্যান্য
সদশ্য থাকলে হয়ত এতটা মাতলামী
লম্পটগীরি করতে পারতনা। শেষমেষ
আমার সংশার ভেঙেছে তার মাতলামী
লম্পটের দাপটে। তাই সংশারে বাবা মা
ভাই বোন থাকলে একটা ছেলে এত
অন্যায় করার সাহস পায় না। ধন্যবাদ।

১২ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৮:৩৭

ঢাকার লোক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে প্রাসঙ্গিক আরেকটি সমস্যা তুলে ধারার জন্য । প্রায় একই প্রসঙ্গ এসেছে নিচে নীল আকাশের মন্তব্যে। তাই নীল আকাশের মন্তব্যের উত্তরে এর যথা সম্ভব সংক্ষিপ্ত একটা উত্তর দিয়েছি, দয়া করে দেখবেন । ভালো থাকুন নিরন্তর !!

৭| ১২ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ৮:২৯

নীল আকাশ বলেছেন: ইসলামিক মুল্যবোধ নিয়ে একটা ভাল পোস্ট দিয়েছেন। সেজন্য আপনাকে ধন্যবাদ। +

আমি আপনার সাথে এই বিষয় নিয়ে তর্ক করবা না তবে একটা কাল্পনিক ঘটনা বলি-
এক ভদ্রলোকের ২ ছেলে। পড়াশুনা শেষ করার পর একে একে ২ ছেলেরই বিয়ে দিয়ে বাবা হিসেব উনার দায়িত্ব প্রায় শেষ করে ফেললেন। বড়ছেলে ডাক্তার, যথারীতি বৌও ডাক্তার। দুইজনই চাকরী করেন, খুব বিজি লাইফ। ছোট ছেলে ব্যাংকে চাকরী করে, এর বৌও ব্যাংকে চাকরী করে। বিয়ের পরই ২ ছেলেই আলাদা বাসা নিয়ে চলে গেল। কারন কোন ছেলের বৌ বৃদ্ধ বাবা মায়ের দায়িত্ব নিতে রাজি নন কারন তারা চাকরী করেন, আলাদা করে এদের কারও সময় নেই স্বামীদের বাবা মাকে দেখাশুনা করার! ইসলাম তো বলেছে এটা তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। সুতরাং তারাও কিছু করতে নারাজ। স্বামীরাও নিরুপায় কারন আগেতো সংসার বাঁচাতে হবে? তাইনা। এই কারনে তো আর স্ত্রীকে ডির্ভোস দেয়া ইসলাম পারমিশন দেয় না।

এখন আমাকে বলুন, এই রিটায়ার করা ষাটোর্ধ ২জন বুড়োবুড়ি কিভাবে একা একা থাকবে? এটা কার দায়িত্ব এদের দেখার? নিশ্চয় এদের সন্তানদের মানে ২ ছেলেদের। এখন এদের ছেলেদের কি করা উচিৎ?

আপনার সুচিন্তিত মতামতের আশা করছি।
ধন্যবাদ।

১২ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৮:৩১

ঢাকার লোক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য, উপরে বোন কানিজ রিনাও প্রায় একই প্রশ্ন তুলেছেন,
যদিও আমার এ লেখার মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল স্বামীর পরিবারের সাথে থাকায় স্ত্রীর কাছ থেকে স্বামীর পরিবার কর্তৃক মাত্রাতিরিক্ত সেবা আশা করা এবং পরিণামে স্বামীর পরিবার থেকে অন্যায় চাপে পরে নিরপরাধ স্ত্রীকে তালাক দিয়ে বিপদের মুখে ফেলে দেয়ার যে সামাজিক প্রচলন দেখা যায় তার বিরুদ্ধে ইসলামের অবস্থান তুলে ধরা। যে পরিবারে শশুর শাশুড়ির কোনো অন্যায় ইন্টারফিয়ারেন্স নেই, একজন বৌ কোনো অবাঞ্চিত চাপের শিকার না হয়ে নিজস্ব ইজ্জত সম্ভ্রম বজায় রেখে সম্পূর্ণ খুশিমনে বাস করেন তার বেলায় শশুর শাশুড়ি নিয়ে এক সাথে থাকায় কোনো বাধাতো নেই !
বাবা মার্ প্রতি সন্তানের দায়িত্ব প্রসঙ্গে বলা যায়, ইসলাম আল্লাহর ইবাদাতের পর পরই মাতাপিতার প্রতি সদয় আচরণের নির্দেশ দিয়েছে, আল্লাহ পাক এরশাদ করেন,


وَقَضَى رَبُّكَ أَلاَّ تَعْبُدُواْ إِلاَّ إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلاَهُمَا فَلاَ تَقُل لَّهُمَآ أُفٍّ وَلاَ تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلاً كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (১৭:২৩)
এর অর্থ এই মনে করে ভুল করা যাবে না যে একজন স্বামী তার স্ত্রী সন্তানের প্রতি যে দায়িত্ব রয়েছে তা পালন করবে না, বা অবহেলা করবে । একজন মুসলমান তার স্ত্রী সন্তানের প্রতি যে দায়িত্ব রয়েছে তার সাথে মাতা পিতা ও অন্যান্য রক্তসম্পর্কীয় আত্মীয়দের প্রতি যে দায়িত্ব রয়েছে তার মাঝে সামঞ্জস্য বজায় রেখে উভয়ের প্রতি দায়িত্ব পালন করবে ।
স্ত্রী তার নিজের ও সন্তানদের জন্য আলাদা সম্পূন স্বাধীন বাসস্থানের হকদার, সমস্ত উলামাদের ঐক্যমতে এটি তার অধিকার, স্বামীর আর্থিক সামর্থ থাকলে এবং স্ত্রী চাইলে, এ থেকে বঞ্চিত করার অধিকার স্বামীর নেই । শশুর বাড়ি থাকতে যদি স্ত্রী সাচ্ছন্দবোধ নাই করেন, বাবা মার্ দেখা শুনা করার সুবিধার্থে তাদের জন্য পাশাপাশি ফ্ল্যাটে বা বাবার বাড়ির সন্নিকটে ব্যাবস্থা করতে পারেন, যাতে যে কোনো প্রয়োজনে তাদের কাছে হাজির হতে অসুবিধা না হয় । এতে বাবা মা বা স্ত্রী কারো আপত্তি করা ঠিক না ।
একজন মুসলিম স্ত্রীরও উচিতনা যে নিজেকে স্বামীর পরিবারের সদস্যদের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে দাঁড় করাবে, বরং স্বামীকে তার বাবা মা এবং তার পরিবারের অন্যদের সাথে সদ্ভাব বজায় রাখতে সযোগিতা করবে ।

৮| ১৯ শে জুলাই, ২০১৯ সকাল ৯:৪৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: "দেবর মৃত্যুতুল্য" - এই কথাটি দিয়ে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কী বুঝিয়েছেন, তা বুঝতে পারলাম না।
তবে একটি সামাজিক সমস্যার প্রতি আলোকপাত করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। সেই সাথে চমৎকার মন্তব্যের জন্য করুণাধারা, বিদ্রোহী ভৃগু এবং নীল আকাশকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
পোস্টে প্লাস + +

১৯ শে জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৮

ঢাকার লোক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই, সুন্দর মন্তব্যের জন্য ।
"মৃত্যুতুল্য" বলতে আলেমগণ বিভিন্ন অর্থ হতে পারে বলে উল্লেখ করেছেন, যদিও এর সবগুলোই একজনের জন্য সমান ভয়ঙ্কর ও ধংসাত্বক ! নিচে সৌদি আরবের শেইখ মুনাজিদ পরিচালিত ISLAMQA র একটা প্রশ্নোত্তরের অংশবিশেষ কপি করে দিলাম যাতে এ সকল অর্থগুলো বর্ণনা করা হয়েছে। ইংরেজিটাই তুলে দিলাম, জানি আপনার অসুবিধা হবে না। আবারো ধন্যবাদ !

"Some homes are not free of the presence of relatives of the husband who are not mahrams of his wife. They may be living with him for a number of reasons, such as brothers who are students or bachelors. These men enter the house without there being any sense of something strange, because they are known to the neighbours as relatives of the head of the household. The neighbours know that this is a brother, or nephew or uncle. This casual approach leads to many immoral deeds that earn the wrath of Allaah because the limits that He has prescribed are not being adhered to. The basic principle in this matter should be the hadeeth of the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him): "Beware of entering upon women." A man of the Ansaar asked, "O Messenger of Allaah, what do you think about the brother-in-law?" He said, "The brother-in-law is death." (Reported by al-Bukhaari, Fath al-Baari, 9/330)

Al-Nawawi, may Allaah have mercy on him, said: This hadeeth refers to all the relatives of the husband apart from his father and sons, who are mahrams for the wife and she is allowed to be alone with them; they are not described as "death." It refers to the brother, nephew, uncle, cousin and other relatives of the husband whom she would be permitted to marry if she were not already married. Because people customarily treat this matter so lightly, and a man may sit alone with his brother's wife, the brother-in-law is likened to death, and he is the foremost among non-mahram men who should be prevented from doing so.

The expression "the brother-in-law is death" may have a number of meanings, such as the following:

•That being alone with a brother-in-law may lead to religious doom if it results in sin.
•That it may lead to actual death if an immoral deed is committed that dictates the punishment of stoning.
•That it may spell disaster for the woman if her husband's jealousy leads to divorce.
•That you should fear being alone with a non-mahram woman as much as you fear death.
•That being alone with a non-mahram woman is as terrible as death.

All of this stems from the fact that Islam wants to preserve families and households, and prevent anything that could lead to their destruction. "
রেফারেন্স :https://islamqa.info/en/answers/217/mixing-or-travelling-with-the-husbands-brother

৯| ১৯ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ৮:০৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: বুঝতে পারলাম। বিষয়টি স্পষ্টিকরণের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.