নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার চিন্তা ভাবনার খোলা খাতা আপনাদের সবার ভালো লাগলে ভালো না লাগলে দুঃখিত

মুর্খদের সাথে তর্ক করতে ভাল্লাগেনা,মুর্খ দের এভয়েড করতে ভাল্লাগে

ধ্রুব অন্যকোথাও

আমাকে অমানুষ ডাকুন

ধ্রুব অন্যকোথাও › বিস্তারিত পোস্টঃ

জিয়াউল ইসলাম মাসুদ ও বর্তমান বাংলাদেশ ক্রিকেট

৩০ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ১০:৫২

জিয়াউল ইসলাম মাসুদ বা মার্শাল মাসুদ মারা গেলেন।পাবনা শহরে এলাম।আমি প্রায় ৩ বছর পর এই শহরে ফিরে আসলাম।আমার বাবা-চাচারা সবাই এখানেই বড় হয়েছেন।

আমার বাবা বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক,চাচা আমেরিকা তে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।কিন্তু পাবনাতে এখনো আব্বা এবং চাচার পরিচয়

পাবনা শহরের ভদ্র-নম্র ছেলে যারা কিনা খেলাধুলাতেও সমান পারদর্শী।

আমার বাবা-চাচা দুইজনেই পাবনা জেলা লীগের এককালের নিয়মিত খেলোয়ার।আমার বাবার খালাতো ভাইরাও সব পাবনা লীগের খেলোয়ার।একজন চাচা আছেন এই পাবনার কিংবদন্তী জিয়াউল ইসলাম মাসুদের রাইজ দেখেছেন।আর বাবা-চাচারা দেখেছেন ক্যারিয়ারের মধ্যগগন আর অস্তাচল।

জিয়াউল ইসলাম কোচ কার্টারের সেই স্টুডেন্ট এথলেট।রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ছাত্র।তখন কার সময় অল-পাকিস্তান ন্যাশনাল রেকর্ড হোল্ডার ছিলেন বেশ কিছু ইভেন্টসে।

ক্রিকেটার হিসেবে আত্মপ্রকাশ এইসব সময়ের দিকেই।আমাদের দেশের পেপার গুলোতে উনার সম্পর্কে একটা কথা খুব লিখেছে সেটা হল "lethal pacer".

এই কথা দিয়েই আসলে আব্বা উনার প্রসংগ টা শুরু করেছিলেন।উনার ক্যারিয়ারের শেষের দিকে আব্বারা/চাচারা মাত্র শুরু করছেন খেলা।ডিপ স্কয়ার লেগে উইকেট কিপার থেকে বল ছুটে গিয়ে লাগল পায়ে তাতেই অবস্থা খারাপ।চোখের উপর বল লেগে গেল চোখ ফুলে।এই ধরনের ভয়ানক পেস ছিল উনার বলে।সুইং অত বেশি না হলেও গতি দিয়েই তটস্থ করে রাখতেন।

উনাকে বাংলাদেশী ফাস্ট বোলিং এর গুরু বলা হয়।

উনি সেই সব প্লেয়ারদের একজন যারা কিনা রাজনীতির মারপ্যাচে পড়ে পাকিস্তান ন্যাশনাল টিমে সুযোগ পাননি যোগ্যতা থাকা স্বত্তেও।

এতকিছু কিন্তু উনি সহজে পাননি।একে ছিলেন অল-পাকিস্তান কম্পিটিশনে।এখনকার মতন ট্রায়াল এন্ড এরর স্টাইলে দলে আসা যাওয়ার সুযোগ ছিল না।নির্বাচক দের নজর কাড়াটাই ছিল অসম্ভব কঠিন একটা ব্যাপার।

এরপর যোগ হল ১৯৭১ ফ্যাক্টর।মাসুদ সাহেব ছিলেন ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী।তবে খেলাধুলা ও পড়াশুনাতেই ছিলেন অনেক বেশি যুক্ত।উনার বাবা ছিলেন মুসলিম লীগ এর শক্ত সমর্থক ও নেতা।১৯৭১ এ মিলিটারি আসার ঠিক আগের এলাকার মুক্তিযুদ্ধের সমর্থন কারী সাধারন জনতা উনাদের বাসা ভেঙ্গে ঢুকে পড়ার সময় মাসুদ সাহেবের বাবা নিজের জীবন ও মেয়েদের সম্ভ্রম রক্ষার্থে গুলি ছুড়েন এবং একজন তাতে মারা যান।এরপরের দিন মিলিটারি আসে।মাসুদ সাহেবের বাবা নিজে থেকে গিয়ে পিস কমিটির চেয়ারম্যান হন। ১৯৭১ সালে উত্তর বংগের বিভিন্ন জায়গায় ও দেশের অন্যান্য জায়গায় পিস কমিটির চেয়ারম্যান প্রার্থীরা স্রেফ নিজস্ব এলাকার সুরক্ষার্থে এই পদ গ্রহন করতেন সেই সাথে রেশনের একটা ব্যাপার জড়িত ছিল।

এখানেও ব্যাপারটা ছিল এমন।

কিন্তু মাসুদ সাহেব করলেন বাবার উলটো টা।উনি হয়ে গেলেন নকশাল পন্থী।মার্চ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত পাবনা স্বাধীন রাখার ক্রেডিট ছিল উনাদের।কিন্ত এরপর চীনের মতে নকশাল রা সব সরে আসে।৭১ এর সময় মাসুদ সাহেবের ইতিহাস নিয়ে একটু ধোয়াশা আছে তার কারন আমার বাবা-চাচারা নিজেরাই ওখান থেকে সরে এসে ছিলেন।উনারা সিরাজগঞ্জের গ্রাম থেকে গ্রামে মুভ করছিলেন।যতটুকু শোনা যায় মাসুদ সাহেব সবকিছু থেকে সরে যান।যাইহোক যুদ্ধের পর মাসুদ সাহেবকে খুন করার জন্য এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা খুজছিলেন।উনার বাবাকে বিনা বিচারে অত্যাচার করে মারা হয়েছিল।মাসুদ সাহেবের ভাইকেও সারাদিন অত্যাচার করে সারা পাবনা শহর ঘুরিয়ে খুন করা হয়েছিল।উনার বোনকেও মুক্তিযোদ্ধারা তুলে নিয়ে গিয়েছিল।মাসুদ সাহেব ঢাকায় গিয়ে আজাদ বয়েস ক্লাবে শেল্টার নেন।সেই সাথে তার আরেক ভাই ও ছিলেন।সেই ভাই ও ছিলেন খেলোয়ার।ইস্ট এন্ডের হয়ে খেলতেন।আজাদ বয়েস ক্লাবে উনি পৌছান হাতকড়া ভেঙ্গে নদী পথে পালিয়ে এসে।আজাদ বয়েস ক্লাব এর ম্যানেজেরিয়াল পদে ছিলেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা।তারা আর মাসুদ সাহেবের মতন হাই প্রোফাইল খেলোয়ার কে ফেরাতে পারেন নি,কোনভাবেই আর ছাড়তে চায় নি,ধরিয়েও দিতে চায়নি।

এরপর উনি আজাদ বয়েস,ওয়ান্ডারার্স এ খেলে সবশেষে মোহামেডানে খেলে ক্যারিয়ার শেষ করেন।প্রথম আইসিসি ট্রফিতেও তিনি খেলেছিলেন।তারপর পাবনায় লোকাল লীগ খেলতেন।আমার চাচার সাথে খেলতেন।আমার চাচা ক্যাডেট কলেজে পড়তেন দেখে দুষ্টুমি করে তাকে রাস্তায় দেখলে লম্বা সালাম দিতেন "আসসালামু আলাইকুম ক্যাপ্টেন"

আমার চাচার কথা অনুযায়ী অবসরের পরেও ভয়াবহ গতি ছিল উনার বলে।উনার বল চোখে দেখাটাই ছিল কঠিন ব্যাপার।

আমার চাচা নিজেও পেসার ছিলেন।

----আমার লেখার উদ্দেশ্য একটাই,এখনকার ক্রিকেটার রা এত সহজ পাইছে ক্রিকেট টাকে।হাসতে হাসতে বলে দেয় দেশের হয়ে খেলবোনা।রকিবুল,সাকিব,আইসিএল এর ক্রিকেটার রা।

আমরা সবাই সাকিবের পক্ষের লোক কিন্তু কি সহজেই বলে দেয় দেশের হয়ে খেলবোনা।রকিবুল তো অবসর নিয়েই ফেল্লো।

আর আইসি এল এর প্লেয়ার রা তো নিজেদের আর প্রুভ করতেই পারলোনা।আশরাফুল তো টাকাই খেয়ে গেল। আফতাব নিজেকে ডুবাইলো।

আসলে টেম্পারমেন্ট অনেক বড় ব্যাপার।বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক মানের প্লেয়ার আসলে এ পর্যন্ত হইছে তিন জন

-রফিক(বাংলাদেশের একমাত্র লেজেন্ড)

-সাকিব

-হাবিবুল বাশার

ভালো খেলে কিন্তু লেজেন্ড হতে পারবেনা

-মুশফিকুর রহিম

পরিচর্যা দরকার আছে/ছিল

---শান্ত

--শফিউল

--তাসকীন

--নাজমুল

--রকিবুল

--হান্নান সরকার(অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টানা দুই হাফ সেঞ্চুরী।এখঙ্কার বাল ছাল না অস্ট্রেলিয়া না।স্টিভ ওয়াহ এর অস্ট্রেলিয়া)

---শাহাদাৎ

আর মাশরাফীর সেই স্পিরিট আছে ছিল কিন্তু সে এখন বাতিল প্রায়।নিউজিল্যান্ড সফরে এতটুকুন ছেলেকে দিয়ে টানা স্পেল করায় যেই ক্ষতিটা হয়েছিল তা অপূরণীয়।আমি মাশ্রাফীর প্রথমদিকের খেলা দেখেছি সেই তুলনায় মাশ্রাফী একটা ছায়া ছাড়া কিছুনা।

ক্রিকেটার দের এবং আমদের ফ্যানদের উচিত মাসুদ সাহেবের মতন স্পিরিটেড প্লেয়ার আশা করা,স্পিরিটেড খেলা উপহার দেওয়া।দেখলে যাতে মনে হয় খেলা হচ্ছে,জান দিয়ে টিমে আসছি,জান দিয়ে তারপর মাঠ ছাড়ব।

এইবারের টি-২০ ওয়ার্ল্ড কাপ,এশিয়া কাপ,ভারত সিরিজের মতন আবাল টাইপ খেলা যাতে না হয়/////

ঈদ মোবারক —

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.