নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার চিন্তা ভাবনার খোলা খাতা আপনাদের সবার ভালো লাগলে ভালো না লাগলে দুঃখিত

মুর্খদের সাথে তর্ক করতে ভাল্লাগেনা,মুর্খ দের এভয়েড করতে ভাল্লাগে

ধ্রুব অন্যকোথাও

আমাকে অমানুষ ডাকুন

ধ্রুব অন্যকোথাও › বিস্তারিত পোস্টঃ

পর্দা (পর্ব-১)[ডার্ক কমেডি]

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৫৪

[SOMETHING NEW--ডার্ক কমেডি লেখার ট্রাই করছিলাম স্যাম্পল-- জংশন ম্যাগাজিনে হয়তোবা দিবো]
পর্দা নেমে গেল।ব্যান্ড আর্টসেল স্টেজ থেকে নেমে আসছে চারিদিকে সবাই চিতকার করতেছে ওয়ান মোর ওয়ান মোর বলে বলে।কেউ আবার বলছে “এথ খম ঘান খরে ছলে যাচ্ছে যে”।জী আমি চিটাগাং এ আছি আপাততঃ এখানে আর্টসেল কন্সার্ট করতে এসেছে।আর পর্দার কথাটা আমি বলতে চাই নি।বেকুব-পেট মোটা নীল গেঞ্জি পড়া লেখক ধ্রুইব্বা এটা লিখছে।মেটাল কন্সার্ট এ বাল পর্দা দেয় কবে থেকে।দিস শিট ইজ নট ফর ভার্জিন ইয়ারস।হালায় কি গাঞ্জা লিখতেছে কিনা কে জানে।আমার কাহিনী লিখতেছে গাঞ্জা খাইয়া কত বড় সাহস।চাপা দিয়ে শালা নাড়িভুড়ি বাইর কইরা ফেলবো।
আমি কে ভাবছেন?আমি তেমন কেউ না আপনাদের এই পাগল-ছাগল লেখকের তৈরি একটা চরিত্র ছাড়া কেউ না।অনেক বেশী কথা বলতেছি আপনাদের সাথে গল্পটা আগাতেই পারতেছে না।এইবার আমি চুপ মারি।এখন উত্তম পুরুষে নিজের চিন্তার প্রকাশ শুরু করি। উত্তম পুরুষ বুঝেন তো?নাকি গোল্ডেন এ+ পেয়ে জীবন ধন্য?ইংরেজীতে এটা হল “first person”, দুঃখিত হিন্দীতে কি বলে আমার ঠিক জানা নেই।
আর্টসেলের সবাই চলে আসছে।ওয়ারফেজ রেডি হচ্ছে।আমি এই গ্যাপে স্টেজে উঠবো।আমি কেউ না।একজন ছা-পোষা স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান।রিয়ালেটি টিভি শো তে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করা কমেডিয়ান।জী না আমাকে শাড়ির উপর ব্লাউজ পড়তে হয় নাই,আমাকে কোমরের মাংস দেখিয়েও পাশ করতে হয় নি।আমার বাপ-মা রাস্তায় ভিক্ষা করে আমাকে কমেডিয়ান বানাইছে এই টাইপের ফাওল ইমোশনাল সেন্টিমেন্ট আমাকে বিক্রি করতে হয় নাই।নাহ অডিয়েন্স আমারে চোখের পানি মুছতে মুছতে ভোট করে নাই।হাসতে হাসতে অথবা শালায় আমার মনের কথাটা কইছে ভোট দে হালারে কইয়া ভোট দিছে।জাজরা বেকুব হয়ে গিয়ে ভোট দিছে।এরকম কেমনে হয়??তবে হ্যা,আমারে ফার্স্ট তারা বানায় নাই।ভালো হইছে একদিক দিয়া।ডিরকস্টার নামে একমাত্র ডিসেন্ট রিয়েলিটি শো তে যেই ব্যান্ড টা ফার্স্ট হইছিলো তাদের কি অবস্থা হইছে পরবর্তী তে সেটা আমরা সবাই জানি।গল্পের বইয়ের আর বাংলা নাটকের গ্রামের মা টাইপ অবস্থা।বিবাহের ১০ মাসের মধ্যে পুত্রসন্তানের জন্মদান করাতে না পারলে নারীত্ব নিয়ে টানাটানি।
আমি স্টেজে উঠি এখন।চারিদিকে কিছু মাইক।আমার উপর লাইট এসে পড়ল।আমি প্রথমে অডিয়েন্সের দিকে তাকালাম।টিপিক্যাল ক্রাউড।নারী অংশে সেই আমার ছোটবেলার এক্সপেরিয়েন্স টা মনে হয়ে গেল।কনসার্টের একসাইডে ২-৩ জন মেয়ে থাকবেই।ওরা ইংলিশ মিডীয়ামে পড়বে।ইংলিশে আর বাংলায় মিশায় কথা বলবে।একটা দুটো পুচকা ব্যান্ডের মেম্বার দের ঘাড়ে চড়ে ঘুরবে।নো অফেন্স পুচকা ব্যান্ড গুলারে ভালোই লাগে।এবসেইল নামের একটা পুচকা ব্যান্ড ছিল অনেক ভালো।আজকের ক্রাউড অবশ্য একটু অন্যরকম।সালওয়ার কামিজ,পালাজো পড়া মেয়েরাও আছে।একটা দুইটা হিজাবি কেও দেখা যাচ্ছে।নাহ ভালোই।ছেলে দের ক্রাউডে মিক্স টা বেশি।নন মেটাল অডিয়েন্স অনেক বড়।ব্যাপারটা খারাপ না।
“হ্যালো হ্যালো হ্যালো...এই যে আমার দিকে একটু তাকান।চিনতে পারছেন আমাকে?এই দিকে আমি ভাই ওইদিকে নেই।
এক পোলা দেখি এক মেয়ের কোমর আর বুকের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।গেঞ্জিতে আবার চে গুয়েভারার ছবি।আমার মাথায় রক্ত চড়ে গেল।ছেলেটারে একটু জাজ করবার ইচ্ছা হলো।
“এই যে বিপ্লবি ব্রাদার,এই দিকে তাকান।চে এর গেঞ্জি পড়ে আছেন যিনি।” ছেলেটা এদিক ওদিক তাকাইতেছে আর যাচাই করে নিচ্ছে তাকেই ডাকা হচ্ছে কিনা সেটা।
“জী ভাই,আপনারেই বলতেছি।ভাই,মাথা তো খুলে পরে যাবে আপনার।এভাবে করে যে মেয়ে যাইতেছে সামনে তার দিকে তাকায়া থাকলে মুন্ডুর স্ক্রু খুইলা যাবে এক্কেরে।সেই মুন্ডু দিয়া ফুটবল ও খেলা যাইবো।মাথা তো এক্কেরে গোল”।
ছেলেটা বলে উঠল “দেখালে তো দেখবোই।পুরুষ মানুষ না আমি।বুঝেন না?”চোখ টিপ দিয়া দিল এক্কেরে।
আমি না হেসে পারলাম না “তাই নাকি?এত ভালো যখন লাগে হাত দিয়া ফেলেন”।চুপ হয়ে গেল সবাই।লোকটার মুখ শুকাই গেল।মেয়েটা এতক্ষন কিছু বলে নাই।এখন বলে উঠল “পার্ভার্ট দিয়ে দেশ ভরে গেছে”।কথাগুলো আমাকে তাক করেই বললো।আমি আবারো হেসে বললাম “হাহা,আমি তো পার্ভার্ট।চে এর গেঞ্জি পড়া ব্যাক্তির মনের কথা কইয়া দিয়া আমি আজ পার্ভার্ট।আপনি নিশ্চয় ওখানে উনাকে নিজের দেহের উন্মুক্ত প্রদর্শনীর সুযোগ দিতে দাড়াননি নাকি?এই যে আমি লোকটাকে সার্কাজমের মাধ্যমে অপমান করে আপনার পক্ষ নিলাম সেটা আপনার ব্রেন বুঝেনাই।অবশ্য আপনি তো ফেসবুক-টুইটার-সেলফির দাম ভালো বুঝেন।সার্ক্যাজম বুঝার টাইম নাই।নাকি আমার কালো গায়ের রঙ আর পাঞ্জাবীতে আমি আপনার দিকে তাকানোর যোগ্যতাও রাখি না?কিন্তু চে এর গেঞ্জি পড়া “ভদ্রলোক” আপনাকে ফ্যান্টাসী করলেও সুখ।গ্রীক পুরানের মতন দেবতার সন্তান ধারনেও শান্তি/তাদের সাথে ফষ্টি নষ্টি করার সুখ টাও অন্যরকম।
আবারো সব নীরব।
কমেডি থেকে বের হয়ে আসবো নাকি সোশ্যাল সিনিসিজম চালায় যাবো।বিশাল এক প্রশ্ন নিজের কাছে।সোশ্যল সিনিসিজম উইথ কমেডি চলুক নাহয়।
“থাক অনেক কথা তো হল।আপনারা কেউ কি নর্থ সাউথে পড়েন?বলে ফেলেন লজ্জার কিছু নাই”।
ছেলেটা বলে উঠলো “আমি পড়ি”।
“বাহ চমতকার।তাহলে আর কি চিন্তা।ভাই আপনি আপনার মন মতন ওই আপুর সাথে যা ইচ্ছা করেন।আমি দুঃখিত এই কথা বলার জন্য।আপনারা জাস্ট মেইন স্টেইজ থেকে দূরে গিয়ে কন্সার্ট করেন।ওয়াফেইজ আসবে তো।ডিস্টার্বেন্স ক্রিয়েট হবে।বিশ্ববিদ্যালয়ের সীল দেওয়া কনডম টা আছে তো?আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের এই কনডম বিতরণ এর ব্যাপারটা অস্থির একটা কন্সেপ্ট ছিল”।
এতক্ষনে কেউ কেউ মুখ টিপে হাসলো।
অডিয়েন্স আমার দখলে ভেবে আমিও হাসলাম।
“ঐ ভাই যে চে গুয়েভারার গেঞ্জি পড়েছেন তাকে আমরা সবাই চিনি কি?উনি একজন বিপ্লবী।সাম্যবাদী-সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবী।আমাদের দেশের একটা বড় সমস্যা শুনবেন? আমাদের দেশে মানুষ আমার বাবার ছবি সম্বলিত গেঞ্জি গায়ে দিয়ে ইভ টিজিং করে”।
সবাই বিচলিত হল।“আমার বাবাকে চিনলেন না??আরে,জাতির পিতা বংবন্ধু শেখ মুজিবের কথা কই আরকি”।
আরেক দফা হাসি।
“যা বলছিলাম,আমাদের দেশের অনেক মানুষ চে এর গেঞ্জি পইড়া ২পয়সা দান না কইরা মালয়েশিয়ায় যায় ছুটি কাটাইতে।দ্যাটস একচুয়ালি গুড।উনারা বৈশ্বিক দিকে আগুয়ান।মালয়েশিয়ান দের সাম্য ঘোষনা করছেন।আর অনেক মানুষ হয়েছে যারা কিনা মুখে ধর্মের কথা বলেও ধর্ম বিক্রি করে দিতে সময় নেয় না”।
[চলমান]

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.