নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বচ্ছ বিনোদনের প্রতিশ্রুতি!

হীরক পাখি

মেহেদী হাসান আকিব

হীরক পাখি › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাথী

০১ লা জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:২৩

- কতবার কল দিয়েছি?
- ইয়ে মানে... ২৭ বার
- ওহ... ২৭ বার। কম হয়ে গেছে তাই না?
- নাহ... মানে... আসলে...
- থাক থাক... আসল নকল মানে জানাতে হবে না। কোথায় ছিলে তাই বল...
- বাথরুমে
- কিহ??? এতক্ষণ তুমি বাথরুমে ছিলে?
- হ্যা... কেন?
- এত ইজি মনে ব্যাপারটা?
- কি তা?
- বাথরুমে কি টিভি আছে নাকি কোন রূপসীর গোসল করা দেখছিলে? সত্যি করে বল।
- ছি ছি ছি... তুমি আমাকে এই কথা বলতে পারলে?
- বলা তো যায় না... আমি যখনই কল দিই তুমি বাথরুমে থাক। বিষয়টা ঠিক লাগছে না।
- প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়া কি বেঠিক কাজ? তুমি সাড়া দাও না?
- আচ্ছা ফাজিল তো তুমি... প্রতিটা মানুষই সাড়া দেয়। এমনকি সব প্রাণীরাও। কিন্তু তোমার মত সারাক্ষণ সাড়া দেয় না।
- শুধু ডাকে... তো আমি কি করবো?
- তোমাকে প্রকৃতি একটু বেশি ডাকাডাকি করে।
- হ্যা... এতক্ষণ পর মহারাণী বুঝতে পেরেছে। I Love U...
- হু লাগবে না
- নাও না...
- I Love U too..
- আসতে হবে কখন?
- তিনটায় পার্কের ওই যায়গাতে আসবে। দেরি হলে কান ধরতে হবে। মনে রাখবে...
- আচ্ছা...

মাথায় রুপমের খুব চিন্তা। ঠিক তিনটায় সেখানে যেভাবেই হোক উপস্থিত থাকতে হবে। আগেও দেরি হয়েছে। তাই আস্থা নেই নিজের উপর তো সাথীর কি করে থাকবে? তাই এই কান ধরা শাস্তি। রুপম ঠিক জানে যে দেরি হয়ে গেলে কান ধরা থেকে বাঁচা যাবে না।

দুপুর ২ টা থেকেই রুপম প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেরি হওয়া চলবেই না... বের হইয়েছিল ঠিকঠাক সময়ে কিন্তু “সময় কারো মামা খালু না যে অপেক্ষা করবে” তাই দেরি হয়ে গেছে। এখন যত পার্কের কাছে যাচ্ছে তত টেনশনে ঘামাছে। ইশ! যদি আজ কান ধরতে হয় তাহলে ইজ্জতের ১২ টা বেজে যাবে।

- কয়টা বাজে এখন?
- ইয়ে মানে... হয়েছে কি...
- হুম... আমি আমার বউয়ের সাথে ছিলাম। তাই তো?
- তুমি তো এখানে... তাহলে বউ কোথায় পাই?
- কেন... ওই যে তোমার বাথ রুম!
- কিহ! ও কি আমার বউ নাকি?
- বউ না হলে সারাদিন ওর মধ্যে কাটাও?
- সাথী খুব সরি সোনামণি, জাদুমণি, টিয়াপা...
- হইছে হইছে... আর আদিখ্যেতা করতে হবে না।
- সত্যিই... আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি!
- সে জানি...
- তোমাকে ছাড়া আমি কিচ্ছু দেখি না।
- কেন আমি কি তোমার টর্স লাইট?
- না মানে... তোমার মধ্যে আমি আমার পৃথিবী দেখতে পাই।
- আমি আয়না না। আয়না না থাকলে কিনে নিও...
- দুইটা ডেইরি মিল্ক এনাছিলাম। খেয়ে ফেলি?
- কার জন্যে এনেছ?
- একটা তোমার একটা আমার জন্যে
- আমাকেই দাও... তোমার খেতে হবে না।
- আচ্ছা নাও...
- একি??? একটার মধ্যে আছে আর একটা শুধু প্যাকেট কেন?
- আমি ত জানতাম... তোমাকে চকোলেটের কথা বললে আমার কপালে আর হবে না। তাই আগেই একটা খেয়ে ফেলেছি।
- শয়তান কোথাকার... দাড়াও তুমি... আমি ডাইনী নাকি? বলতে পারতিস না?? ওই দৌড়ে কতদূর যাবা তুই... তোর খবর আছে। আমার সাথে... উফ...

জীবন বাঁচানো ফরয তাই এই দৌড় দেওয়া। অবশ্য দুই মিনিট পর রুপম এসে ক্ষমা চেয়ে সব ঠিক করে ফেলেছে। কিন্তু সাথী সত্যিই রুপমকে অনেক ভালবাসে। যা রুপম বুঝেও না বুঝে থাকে এই দুষ্টামি করার জন্যে। সাথী একটু রগচটা মেয়ে বটে কিন্তু রাগটা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। এভাবেই চলছে দীর্ঘ ১১ মাস। রুপম যেমন সাথীকে হারাতে নারাজ তেমন সাথীও।

সাথীর বাবা নেই... শুধু মা আছে। তার সাথেই থাকে। আর রুপমের কেউই নেই শুধু সাথী আছে। তাই রুপমকে সব সময় খুশী রাখতে চায়। কিন্তু রুপমের কার্জ কলাপে সাথী নিজের রাগ সামাল দিতে পারে না। তাই রাগারাগি করে। কিন্তু রুপম এই রাগটাকে বড্ড ভালবাসে। একদিন রাগ না করলে রুপমের মন খারাপ থাকে। ও ভেবে নেয়... হয়তো সাথী আর থাকবে না। এই চেহারা দেখলেই সাথী রেগে যায়। আবার রুপম আগের মত স্বাভাবিক হয়ে যায়। বলা যায় সাথীর রাগটাই রুপমের ভাল থাকার চাবি।
এক বছর তিন মাস হয়ে যাবার পর... সাথী আর অপেক্ষা করতে চায় না। বিয়েটা করেই নেয়। সুখের দিনগুলি খুব সুখেই কাটছে ওদের। আর তার সাথে দুষ্টামি তো আছেই।

একদিন দুপুরে... রুপমের অফিস নেই। তাই খাটের উপর শুয়ে পেপার পড়ছিল। আর সাথী ৫৬ মিনিট আগে গোসলে গেছে। অতঃপর... রুপম খোঁচা মেরে বলল...
- কি গো... আজ মনে হয় ট্যাংকির পানি সব একাই শেষ করবে। ভিতরে কি বর আছে? বের হবে না?
- চুপ থাক... মেয়ে হইলে বুঝতে। মেয়েদের গোসল করতে দেরি হয়।
- হুম... ঢিলামি সব সময়।
- বেশি কথা বলবে না। কিচেনে গিয়ে রাইস কুকারের সুইচ অফ করে দাও।
- দিচ্ছি... কিন্তু আগে বের হও বাথরুম থেকে।
- আমি আজ সারাদিন থাকবো এখানে। দেখি... তুমি কি করতে পার।
- আচ্ছা... ঠিক আছে আমি তাহলে একাই যাচ্ছি...
- এই... শোন... কোথাও যাবে গো বাবু???
- মার্কেটে...
- এই দাড়াও দাড়াও... আমি ২ মিনিটের মধ্যেই আসছি।
- এখন দুই মিনিট... তাই না??? বের হও...

রুপম দরজার পাশেই চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইল। কারণ, সাথী দরজা খুললেই রুপম আড়ালে ঢেকে যাবে। ভাবনা অনুযায়ী কাজ... সাথি দরজা খুলে দেখে রুমে কেউই নেই। মনে মনে খুব রাগ হয় আর বলতে থাকে “ফাজিলটা কেন আমাকে বোঝে না? আমাকে না নিয়েই চলে গেল... আসুক আজকে। ওর একদিন কি আমার একদিন! ফাজিল... বিলাই...”
রুপম ছেলেটাও দুষ্টু কম নয়। পিছন থেকে এসে বউকে জড়িয়ে ধরে কানে কানে বলল “বরকে গালি দিতে নেই গো”
সাথী ত অবাক... “এই... তুমি যাও নাই? হাও ফানি... আমি তো জানি আমার বাবুটা আমাকে ছেড়ে যেতেই পারে না” রুমপ ও বলল “তাহলে কেন গালাগালি করছিলে” সাথী একটু লজ্জিত হয়ে বলল “তোমাকে না দেখে আমার মাথা গরম হয়ে গেছিল” রুপম সাথীর সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলল “তাহলে এখন তুমি চিন্তা কর তো... তোমাকে এই দেড় ঘণ্টা আমি না দেখে আছি। তাহলে আমার অবস্থা কেমন?” সাথী খুব শক্ত করে হাতে খামচি দিয়ে বলল “তাহলে একা একা রুমে থাকার কি দরকার ছিল শুনি?” রুপম ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নয়। সেও পাল্টা উত্তর দিতে লাগল “ওহ! আগে বলবে তো... তাহলে তো তোমার সা...” সাথী রুপমের মুখ চেপে ধরে থামিয়ে দিল
- হইছে হইছে... আর বলতে হবে না। বাবা... কথা পেলে আর ছাড়া ছাড়ির কোন নাম থাকে না। চল তাহলে যাই...
- কোথায়?
- কেন... বললা যে বাইরে যাবে।
- আরে ধুর পাগলী... তুমি বের হচ্ছিলে না তাই আর কি চাঁপা মেরেছি। ভাল হয়েছে না বল?
- খুউউউউউউব ভাল হয়েছে... দাড়াও তুমি।
- দাঁড়িয়েই তো আছি...
- চোখ বন্ধ করে দাঁড়াও।
- হুম...

- উফফফফফ রে... এত জোরে কেউ কামড় দেয়?
- ভাল হয়েছে না?
- হুম খুউউউউউব ভাল হয়েছে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জুন, ২০১৬ দুপুর ২:১৫

সুমন কর বলেছেন: পরপর ২টি পোস্ট একই ব্লগারের দেখতে ভালো লাগে না !!!

২| ০১ লা জুন, ২০১৬ দুপুর ২:৫৬

হীরক পাখি বলেছেন: ধন্যবাদ। কিন্তু জমে ছিল, তাই একসাথেই দিয়েছি। ভুল করেই।

৩| ০১ লা জুন, ২০১৬ দুপুর ২:৫৭

সিলা বলেছেন: কি সুইট সুইট ভালবাসার ঝগড়া :)

৪| ০১ লা জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:৫০

হীরক পাখি বলেছেন: আমি বাদে, আশা করি সবার জীবনটা যেন এমন হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.