নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মরুর প্রান্তে

নিজেকে জানার চেসটা করছি, নতুন কিছু শেখার চেসটা করছি ।

ইমরান আশফাক

নিজেকে জানার ও খুজে পাওয়ার চেষ্টায় রত আমি, জানি না কবে নাগাদ সফল হবো কিংবা আদৌ হবো কিনা।

ইমরান আশফাক › বিস্তারিত পোস্টঃ

হৃদরোগীরাও কি কোরবানির মাংস খাবেন?

১০ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ২:২৬



হৃদরোগীদের গরু ও খাসির মাংস খাওয়া নিষেধ এটা কে না জানে। তবে কি জন্য নিষেধ তা হয়তো অনেকেই জানেন না। গরু ও খাসির মাংসে প্রচুর চর্বি থাকে। এ ধরনের চর্বি রক্তে কোলেস্টেরল নামক চর্বির মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকার ফলে রক্তনালিতে কোলেস্টেরল জমা হতে হতে রক্তনালির ভিতরে রক্ত প্রবাহের জায়গাকে সংকোচিত করে ফেলে, ফলে রক্ত সরবরাহে বাধার সৃষ্টি হয়, মানুষ এটাকে ব্লক বলে থাকে। এটা লক্ষণীয়, বেশি করে পোলাও-মাংস খাওয়ার পরে অনেকেরই হার্টঅ্যাটাক হয়েছে। এ ধরনের হার্টঅ্যাটাক হওয়া রোগীরা প্রায়ই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে থাকেন, এটা আমরা লক্ষ্য করেছি। তবে কি বেশি করে চর্বিজাতীয় খাদ্য গ্রহণের ফলে হৃদরোগীরা হার্টঅ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে থাকেন? ব্যাপারটা খুব সোজা নয়। বৈজ্ঞানিকভাবে এ রকম কিছু পাওয়া যায় না যে, আপনি বেশি করে চর্বিজাতীয় খাবার গ্রহণের ফলে খাদ্যে চর্বির প্রভাবে আপনার তাৎক্ষণিক হার্টঅ্যাটাক ঘটবে বরং আজকে চর্বি খেলে এটা কোলেস্টেরলের মাত্রা তাৎক্ষণিকভাবে বৃদ্ধি করবে এবং এ ধরনের উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল অনেকদিন যাবৎ বিদ্যমান থাকলে ধীরে ধীরে আপনার রক্তনালিতে কোলেস্টেরল জমতে জমতে একপর্যায়ে আপনার হার্টঅ্যাটাক হতে পারে। এতে বছরকে বছর সময় লাগে যেতে পারে। এখন প্রশ্ন তাৎক্ষণিক খাওয়ার ফলশ্রুতিতে হার্টঅ্যাটাক কেন হচ্ছে?

আমি এমন এক রোগীর কথা বলছি, ভদ্রলোকের বাড়ি রাজশাহীতে। বর্তমানে তিনি গাজীপুরে সেটেল্ড এবং বয়স পঞ্চাশের মতো হবে। জ্যৈষ্ঠ মাসে তিনি মুড়ি দিয়ে দুটি কাঁঠাল খেয়ে ফেলেছিলেন। তার ফলে তিনি হার্টঅ্যাটাক নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এবার দুটি ঘটনা মূল্যায়ন করা যাক। রাজশাহীতে কাঁঠাল কেমন পাওয়া যায় জানি না, আমার মনে হয় রাজশাহীতে সুস্বাদু কাঁঠাল তেমন একটা পাওয়া না যাওয়ায় তিনি গাজীপুরে এসে কাঁঠাল খেয়ে খুবই মজা পেয়েছেন এবং অন্যরাও যারা পোলাও-মাংস খেয়ে বেশ মজা পান তারাও পোলাও-মাংস খেয়ে হার্টঅ্যাটাকে আক্রান্ত হচ্ছেন- এর একটা মিল পাওয়া গেল। উভয় ক্ষেত্রেই একটা ব্যাপার মিলে যায়, তারা খাবার খেয়ে বেশি মজা পাওয়ার জন্য বেশি করেই খেয়েছেন। খুব বেশি পেট ভরে খাওয়ায় ফলে হজমের জন্য অনেক বেশি রক্ত পাকস্থলীতে বা পেটে সরবরাহের ফলে শরীরের অন্য অঙ্গে রক্ত সরবরাহ কমে যায়। বেশি পরিমাণে পেট ভরে খাওয়ার ফলে ফুসফুসের মাধ্যমে বাতাস গ্রহণ করার ক্ষমতা কমে যায়। বিশেষ করে মেদভূঁড়িসম্পন্ন মোটাসোঁটা লোকেদের বেলায়। এর ফলে রক্তে অক্সিজনের পরিমাণও কমে যায়। রক্তে অক্সিজনের কম মাত্রা ও কম পরিমাণ রক্ত সরবরাহের ফলে হৃদরোগীদের হৃৎপিণ্ডে রক্ত সরবরাহ ও অক্সিজন সরবরাহ মারাত্দক কমে যাওয়ায় তাৎক্ষণিক হার্টঅ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে থাকে। সুতরাং হৃদরোগীরা কোরবানির সময় অতিভোজন এড়িয়ে চলবেন। চর্বি খাওয়ায় তাৎক্ষণিক হার্টঅ্যাটাক হয় না বরং অতিভোজনের ফলে হয়।

এখন আপনারা কোরবানির মাংস খাবেন কিনা এটা অবশ্যই বিবেচনার বিষয়। কোরবানির মাংস মুসলমানরা আল্লাহর নিয়ামত মনে করে থাকেন, তাই সবাই কোরবানির মাংস খাবেন এতে কোনো প্রশ্ন নেই। যারা হৃদরোগে আক্রান্ত তারা কম চর্বিযুক্ত মাংস ৪-৫ বেলা খেতে পারবেন, আপনাকে এটাও মানতে হবে যে, বছরের অন্য সময় অবশ্যই গরু, খাসির মাংস খাবেন না। কেউ কেউ ভূঁড়ি খেতে পছন্দ করেন কিন্তু চর্বির ভয়ে খেতে পারছেন না। আপনি মনে চাইলেই এক বেলা সিনার মাংস ও কলিজা খেতে পারবেন, তবে বছরের বাকি সময় আর এগুলো খাবেন না। খেয়াল রাখবেন যাতে মাংসে চর্বির পরিমাণ খুবই কম থাকে অথবা একেবারে চর্বিমুক্ত করা যায়। হৃদরোগীদের জন্য মাংস খাওয়া তেমন ক্ষতিকর নয়, যতটুকু ক্ষতিকর চর্বি খাওয়া।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.