নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মরুর প্রান্তে

নিজেকে জানার চেসটা করছি, নতুন কিছু শেখার চেসটা করছি ।

ইমরান আশফাক

নিজেকে জানার ও খুজে পাওয়ার চেষ্টায় রত আমি, জানি না কবে নাগাদ সফল হবো কিংবা আদৌ হবো কিনা।

ইমরান আশফাক › বিস্তারিত পোস্টঃ

৭১ সালে মেজর মঞ্জুরের "ব্যাটল অফ শিরোমণি" নামক বিখ্যাত মুক্তিযুদ্ধ

০২ রা জুন, ২০১৫ রাত ৯:৫১

সমগ্র দেশ যখন বিজয়ানন্দে ভাসছে, ঠিক তখনই ১৭ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে পুরো খুলনা জুড়ে চলছিলো এক মরণপণ যুদ্ধ। সমুদ্র থেকে সাহায্য আসছে, অর্থাৎ আমেরিকার সপ্তম নৌ-বহর এগিয়ে আসছে পাকিস্তানের সাহায্যে এই ধারণায় সাগরের দিকে সরে যাচ্ছিলেন একরোখা পাকিস্তানী কমাণ্ডার ব্রিগেডিয়ার হায়াত। মরবেন, তবু পরাজয় মানবেন না এই ছিলো তার পণ। তার অধীনে আছে ছয় পাঞ্জাব, বারো পাঞ্জাব, একুশ পাঞ্জাব, পনের এফএফ, বারো এফএফের মত শক্তিশালী রেজিমেন্ট, আর আছে ভয়ঙ্কর এম-২৪ ট্যাঙ্ক এবং ১৫০ জন জামায়াতে ইসলামীর বেঈমান রাজাকারের দল।


আমাদের মিত্রবাহিনীর শক্তিবেশী থাকলেও এযুদ্ধে খুব একটা সুবিধে করতে পারছিলো না তারা, কারণ সামরিক রীতি অনুযায়ী জেতার জন্য আক্রমণকারীদের প্রয়োজন, ডিফেন্সের চেয়ে তিনগুণ বেশী সৈন্য। ট্যাঙ্ক,কামান হতে শুরু করে হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ানো তীব্র রক্তক্ষয়ী এই যুদ্ধে যখন ফলাফল অনিশ্চিত, বিজয় হতে পারে যেকোনো দলেরই ঠিক তখনই দুদলের মাঝে ব্যবধান হয়ে দাঁড়ালেন একটি মাত্র ব্যক্তি। তিনি হলেন আট নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমাণ্ডার মেজর মঞ্জুর।



দেশপ্রেমের কাছে যে শত ট্যাঙ্ক, কামানের গোলা তুচ্ছ তাই প্রমাণ করেছিলেন তিনি সেদিন। একাত্তরে যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় পাকিস্তানের প্যারাকমাণ্ডো বিভাগে কর্মরত এই চৌকস মেজর কর্মরত ছিলেন পাকিস্তানে। কী দেশপ্রেম ভাবুন একবার। সেখান থেকেই মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন তিনি। যেখানে যুদ্ধ দেখলে পালায় মানুষ, সেখানে পশ্চিম পাকিস্তানের নিরাপদ জীবন ফেলে তিনি, কর্নেল তাহের, জিয়াউদ্দিনরা পালিয়ে দেশে এসেছেল যুদ্ধ করতেই।


আর তাই একজন সিনিয়র অধিনায়ক হয়েও যেখানে তিনি চাইলেই পারতেন রণাঙ্গনের যুদ্ধে সরাসরি যোগ না দিতে সেখানে তিনি এই ব্যাটল অফ শিরোমণিতে মাথায় কাপড় বেঁধে রাতের আঁধারে এক গেরিলা দল নিয়ে কমাণ্ডো স্টাইলে বেরিয়ে পড়েন শত্রুর সন্ধানে। আর এর পরেরটুকু শুধুই ইতিহাস। মেজর মঞ্জুর ও তার দলের তীব্র আক্রমণে ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে যায় পাকিস্তানী ডিফেন্স লাইন, ধ্বংস হয়ে পারে তাদের ট্যাঙ্ক, চূর্ণ-বিচুর্ণ হয়ে যায় তাদের দম্ভ। এই যুদ্ধ প্রত্যক্ষ করা মুসা সাদিক এই 'ব্যাটল অফ শিরোমণির' ব্যাপারে লিখেছেন মঞ্জুর এই যুদ্ধে দু'হাতে এসএলআর নিয়ে লাফিয়ে ঢুকে পড়েন ভেতরে, ঠিক যেন হলিউডি সিনেমার আদলে। আর এই তীব্র আক্রমণের ফলেই আত্মসমর্পণে বাধ্য হয় পাকিস্তানীবাহিনী, মুক্ত হয় খুলনা,আমাদের চূড়ান্ত বিজয়ের ঠিক একদিন পরে। রচিত হয় বাঙালি জাতির এক বীরত্বগাঁথা, আর এই ব্যাটল অফ শিরোমনি বলে খ্যাত যুদ্ধের কথা পড়ানো হয় ভারতসহ বিভিন্নদেশের সামরিক কলেজগুলোর পাঠ্যসূচীতে।



মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য নৈপুণ্য প্রদর্শনের জন্য মেজর মঞ্জুরকে বাংলাদেশ সরকার "বীর উত্তম" উপাধিতে ভূষিত করে। পরবর্তীতে মেজর মঞ্জুর বাংলাদেশের সবচেয়ে কম বয়সী ডিভিশন কমান্ডার(মেজর জেনারেল) হিসেবে চট্টগ্রামের জিওসি নিযুক্ত হন। এরপর আমরা এই বীর সেনানীর বীরত্বের প্রতিদান দিয়েছি মাথার পেছনে গুলী করেই বিনা বিচারে তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল এরশাদের সরাসরি নির্দেশে তাকেঁ হত্যা করা হয়েছিল।তাঁর পৈত্রিক নিবাস নোয়াখালী জেলার চাটখিল থানার কামালপুর গ্রামে। । আফসোস, জিয়া হত্যার যদি বিচার হতো হয়তো মঞ্জুরকে মানুষ আজ চিনতো অন্যভাবে! কিন্তু আফসোস তা হয়নি। তা যাই হোক, আজকে ব্যাটেল অফ শিরোমণির এই দিনে শ্রদ্ধা রইলো এই বীরের প্রতি ।




মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জুন, ২০১৫ ভোর ৪:৫৯

ফাহাদ ইবনে মুরতাযা বলেছেন: কিছুই নাই এই লেখাতে, কিছুটা হতাশ, কেউ জানলে লিঙ্ক দিবেন।

০৩ রা জুন, ২০১৫ সকাল ৯:৩৯

ইমরান আশফাক বলেছেন: ঠিক কি খুজছেন আপনি? আমার বাড়ী খুলনায় হওয়া সত্ত্বেও আমি মেজর মন্জুরের এই বিখ্যাত যুদ্ধ সন্মন্ধে জানতাম না। আর এই যুদ্ধের কলাকৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে কোন সমরবিদের সংগে যোগাযোগ করুন অথবা তাদের পাঠ্যবই অধ্যায়ন করুন।

২| ২৫ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৪:০৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


সেই এরশাদ এখন ক্ষমতায়।

শেখ হাসিনার উচিত এরশাদকে বের করে দেয়া।

২৬ শে জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০১

ইমরান আশফাক বলেছেন: দোষটা বেগম খালেদা জিয়ার (শুনতে খারাপ লাগলেও), তিনি যদি স্বামী হত্যার বিচারটা শুরু করে যেতেন তাহলে অনেক অজানা তথ্যই আমরা জানতে পারতাম। তিনি বা তার ছেলেরা ঠিক কি কারনে এ ব্যাপারে আগ্রহ দেখান নাই সেটা বুঝা মুশকিল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.