নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মুখ ফেরানো মুখ

দীপঙ্কর বেরা

আমি ভাষা বাংলা ভালোবাসি

দীপঙ্কর বেরা › বিস্তারিত পোস্টঃ

সময় শিরোনাম

২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:৫৮

খারাপ সময়টা কাটিয়ে আমি ঠিক ফিরে আসবোই
এই বলে মন্দিরের সিঁড়ি থেকে নেমে এল জগবন্ধু। হাল্কা বৃষ্টি পড়ছে। তাও বসে আছে দুটো পা নেই এক বয়স্কা। এক টাকা হাতে দিয়ে জিজ্ঞেস করল জগবন্ধু - রাত বাড়ল। বাড়ি যাবেন না?
নির্বাক দৃষ্টিতে তাকাল বয়স্কা। তারপর মন্দির দেখিয়ে হাসল - আমি তো এখানেই থাকি। তুমি ফিরবে না বাছা।
- হ্যাঁ ফিরব। ফিরতে তো হবে?
দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে জগবন্ধু।
বছর দুই তিন আগে কল্পতরু উৎসব। এই মন্দির থেকে ফেরার পথে হাত ছিটকে গিয়েছিল তিন বছরের সায়ন্ত। বর্ণালী ছিল পেছনে। কিছুতেই খুঁজে পাওয়া গেল না। থানা পুলিশ থেকে আত্মীয়। সব বৃথা।
সপ্তাহ খানিক মূহ্যমান থাকল বর্ণালী। তারপর ধরল রুদ্র মূর্তি।
- তোমার জন্য এ সব হল?
- আমার জন্য
- হ্যাঁ, তোমার জন্য। তুমি সায়ন্তকে মেনে নিতে পারো নি। সমস্ত দায় চাপিয়ে দিয়েছিলে আমার উপর। সায়ন্তের সমস্তের জন্য আমি দায়ী?
- তা কি তুমি অস্বীকার করতে পারো।
- এটা তোমার মনোভাব আমি জানতাম। তাছাড়া এখন এই না নিয়ে আমি থাকতে পারব না। তুমি নিজেকে শুধরাও?
জগবন্ধু ভেবেছিল কি শুধরাবে? বর্ণালীর আধুনিক বিলাস মেনে নিতে হবে? যৌবনের রঙে ফুল ফোটে। তাকে সামলে রাখা মানুষের কর্তব্য। বেপরোয়া বেল্লাপনা নয়। তার ফল সায়ন্ত। বিকৃত। তারপর দেবত্বে দোহাই দিয়ে আবার বিশ্বাসে ফিরে আসা?
কিন্তু কিভাবে? কোনো ভুল সংকেতে তার যাতায়াত ছিল না। সে সব ভুলে বর্ণালীর অবস্থানেই তো মন্দিরে যাওয়া। অঞ্জলির থালা সাজিয়ে বর্ণালী চলেছিল এগিয়ে।
সাথে এসেছিল জগবন্ধুও। আর সাথে থাকার এই সাজা?
ছেড়ে যাওয়া বর্ণালী কিন্তু দাঁড়িয়ে থাকল না। আবার সেই উশৃঙ্খল বেপরোয়াতে মজে গেল। খুঁজে নিল অন্য হাত। স্বপ্ননীল। সামাজিক বৃত্তে দেখা। আরো আধুনিক। এইটুকু তো জীবন। চলুক উপভোগ বৃতান্ত। তাতে খারাপ লাগে না জগবন্ধুর। সুখ তো শান্তির বার্তা বাহক। তবে তাই হোক।
ফোনে একদিন - তুমি কি আর ফিরতে চাইছ না?
সময় নেয় কিন্তু সময় পার করতে পারে না। বর্ণালী জবাব দেয় - তোমার সময় থেকে তুমি বেরিয়ে এসেছো? তুমি কি ফিরেছো?
সেই সব অতীত এইটুকু জীবনের ঝুলিতে ভরে রেখে কি হবে?
সাত্ত্বিক লেখ্য জীবন সে তো পার করতে পারবে না। তাহলে?
জগবন্ধু পায়ে জুতো গলিয়ে মন্দির ছেড়ে বেরিয়ে একবার পেছন ফিরে তাকায়। দেখে সেই বয়স্কা একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে। ঠিক সায়ন্ত আর বর্ণালীর মত। একই মুখে অনেক রূপ। মন্দিরের বিগ্রহের মত।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.