নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মুখ ফেরানো মুখ

দীপঙ্কর বেরা

আমি ভাষা বাংলা ভালোবাসি

দীপঙ্কর বেরা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইচ্ছে পূরণ

০২ রা নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:০৩

ইচ্ছেপূরণ আসলে রূপকমাত্র। ইচ্ছের কোন লিমিট নেই। আগে বলা হত স্কাই ইজ দি লিমিট। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাও ছাড়িয়ে গেছে। শেষ নেই।
একটুমুঠো খাবারের জন্য কি আকুল প্রার্থনা। যেই খাবারটুকু পেল। অমনি শোয়ার ধান্ধা। শোয়ার জন্য কি আর লাগে। একটা বিছানা। সেই জায়গাটুকু পেয়েই ইচ্ছেতে এসে গেল বিলাস ভাবনা। তারপর তাতে এল নানা ইচ্ছের বলয়। জমানোর ইচ্ছে। এই বলয়ের শুরু নেই শেষ নেই। জমানো পরিমাণের শেষ নেই শুরু নেই। ফলে ইচ্ছের দফারফা। তার পূরণ দিগন্ত ছাড়িয়ে অপরিণামদর্শী হয়ে পড়ছে।
ইচ্ছেপূরণ করতে চাইলে ইচ্ছের বাঁধন দেওয়া দরকার। প্রশ্ন যদি আসে কি চাই, কি ইচ্ছে?
কতজন ঠিক মত উত্তর দিতে পারবেন? যা চাইবে পরক্ষণে মনে হবে - এমা! আর একটু কেন বেশি চাইলাম না। প্রত্যেকে জানে তার যোগ্যতা কতটুকু। তবুও ইচ্ছেকে ছাপিয়ে যাওয়ার বড় ইচ্ছে জাগে। ফলে কোন লিমিট নাই।
আপনার কি চাই? এখন সব ব্যবস্থা আছে। যা চাইবেন সেভাবে নিজেকে গড়ে তুলুন। ব্যাস।
একটা ব্যাপারে সবাই প্রায় একমত। সবাই হতে চায় কোটিপতি। কোন বনেগা ক্রোড়পতি? এর উত্তরে, কোন ইচ্ছেতেই না নেই। আবার হ্যাঁ-র কোন লিমিট নেই। তো কিভাবে সামাল দেবেন? ফলে লম্বা রেসের ঘোড়া ছুটছে। ইচ্ছে আছে পূরণ নেই। অতৃপ্তি যেন বাসা বেঁধে বসে আছে।
ক্রোড়পতির আবার নানান দিক। ইচ্ছেপূরণের ঘুঁটি সাজিয়ে বসে আছে। বিন্দাস। যা হতে চাইছে এক লহমায় হয়ে যাচ্ছে। এই তো রাস্তার ধারে ছিল; এখন মাঝ রাস্তায় রাস্তা হয়ে বসে আছে। সব কিছু হওয়া যায়। অবশেষে তারও দেখি ইচ্ছে পূরণ হচ্ছে না। সেও বলছে প্রাচুর্যের পাশে আমি শুধু নুড়ি কুড়িয়ে পেলাম।
ইচ্ছেতে আর একটু অন্য ভাবনা আছে তা হল জ্ঞান অর্জন, পারদর্শী ভাবনা। ভাল কাজের মধ্যে ইচ্ছের উড়ালপুল ডিঙিয়ে যায় দিগন্ত থেকে দিগন্ত। এ আলোচনা তাদের জন্য নয়।
আসলে সমস্ত ইচ্ছে থাকে মনে। সেই মনের বাঁধনে অনেকেই অনেকটাই পিছিয়ে। চাই চাই স্বভাবের বিস্তার আকাশ ছোঁয়া। পেরিয়ে যাচ্ছে আকাশগঙ্গা। সিদ্ধ ছাড়া মনের বাঁধন কখনই সম্ভব নয়। যেমন একেবারে ছা-পোষা জীবন লোভী মানুষেরা সেই অবস্থানে অনেকটাই এগিয়ে। তাদের ইচ্ছে পূরণ হয়ে থাকে। যা পায় তাতে এত প্রশান্তি ও সন্তুষ্টি এনে দেয় তা শুধু ইচ্ছে জানে আর পূরণ বোঝে।
এই কদিন আগে একটা ছেলে এসেছিল। বয়স কত হবে? এই বড় জোর তেরো চৌদ্দ। সুন্দর করে চুল ছাটা। চারিদিক ছোট ছোট। মাঝখানে ইয়া বড় ঝুঁটি। আমার পাশে এক প্রাজ্ঞ ব্যক্তি ছিলেন। জিজ্ঞেস করে বসলেন - বাহ, দারুণ তো। খুব সুন্দর চুলের ছাঁট দিয়েছিস তো? কোন ক্লাসে পড়িস?
বলল - আমি পড়ি না। কাজ করি।
প্রাজ্ঞ বললেন - দেখতে সুন্দর তুই। সুন্দর ছাঁট দিয়েছিস। পড়াশুনা না জানলে চলবে?
আমি পাশে ছিলাম। বললাম - ঢের চলবে? ওর পৈত্রিক বাড়ি আছে। দু চাকা মোটরবাইক আছে। কিছুদিন পরে চার চাকা কিনবে। যে কোন সুন্দরী দেখে মেয়ে বিয়ে করতে পারবে। যে কোন অনুষ্ঠান ওই অরগানইজ করবে। পার্টি দেবে। আর কি চাই? এবং যদি সুযোগ আসে জমানো/ধার করা/লোন নেওয়া পয়সায় এখানে ওখানে কিছু খাবার বস্ত্র ইত্যাদি বিতরণ/চাঁদ দিয়ে সমাজের সামনে চলে আসবে। এবং বিখ্যাতও হয়ে যেতে পারে। আর কি চাই?
প্রাজ্ঞ তর্ক শুরু করল। এ সব কি এতই সহজলভ্য? আমি বলল - হ্যাঁ। তাই তো হচ্ছে আশেপাশে। ছেলেটিকে জিজ্ঞেস করলাম - এখন কত আয় করিস?
দীপ্ত মুখে সে বলল - তা প্রায় দশ বারো তো হবে? এখন লেবারে আছি। এরপরে মিস্ত্রী তারপর কণ্ডাক্টর।
প্রাজ্ঞ আর আমার মধ্যে মুখোমুখি। পড়াশুনা করতে করতে কিংবা পড়াশুনা শেষ করে কোথায় গিয়ে এতটা আসবে? ফোন আসুক বা না আসুক ওর কাছে এখন বড় স্মার্টফোন। আপনি বা আপনার ছেলে কবে এসব পেয়েছে? এই বয়সে ও যা ইচ্ছে খুশি নিজের পূরণ নিজে করছে। খিস্তি খেউড় মদ মাংস এবং সবকিছু ওর হাতের মুঠোয়। চাইলেই হাজির। তিন চারটে মেয়ের সাথে প্রেম প্রেম খেলা খেলে। নিজে আয় করে ইচ্ছেকে প্রাণ ভরে পূরণ করে।
পড়তে পড়তে প্রাজ্ঞ হয়ে কোনো সময়ই আপনি এই ইচ্ছের ধারে কাছে যেতে পারবেন না। অথচ এসব আদিম চাহিদা মানুষের মনে ঘোরে ফেরে। আমরা সভ্যতা সংস্কৃতির দোহাই দিয়ে তাকে দাবিয়ে রাখি।
সেটা অবশ্যই ভাল। এও যে খুব খারাপ করে ফেলছে তা তো নয়। সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে বুঝে শুনে শ্রম দিয়ে জীবন চালায়। ইচ্ছে পূরণ করে।
আমার আপনার পড়াশোনা করার মূল মোটিভটা কি? সুস্থ সমাজে সুস্থভাবে দুমুঠো খেয়ে পরে বাঁচা।
এই বাঁচার অবস্থানে ইচ্ছে পূরণ পুরোপুরি পাল্টে গেছে। আর এসে গেছে ফোকটবাজি। কম শ্রমে ইচ্ছের পূরণ করে যাচ্ছে অনেকেই।
দু চার ছত্র লিখে কবি, পাঁচ সাতটা বই বের করে সাহিত্যিক, দু চার কলি গেয়েই গায়ক, ডিগ্রী হাসিল করে অফিসার, বুদ্ধির চাতুরীতে রাজনীতি, কিছু সোর্সে দপ্তরী এবং অন্যান্য তো আছে। ভুয়ো ধরতে আর এক ভুয়ো। পদাধিকার খেলছে জুয়ো। শিক্ষা গ্রহণ করে বেকার শুধু তুলছে ধুয়ো।
তাহলে আপনার ইচ্ছে কি?

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:০১

প্রামানিক বলেছেন: চমৎকার লেখা।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৭:৫৫

দীপঙ্কর বেরা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ
ভালো থাকবেন

২| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:২৬

সুদীপ কুমার বলেছেন: ঠিক বলেছেন।

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:০৫

দীপঙ্কর বেরা বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.