নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মুখ ফেরানো মুখ

দীপঙ্কর বেরা

আমি ভাষা বাংলা ভালোবাসি

দীপঙ্কর বেরা › বিস্তারিত পোস্টঃ

খাদ্যের কিছু নিজস্ব অভ্যাস

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:২৮

মানুষের জীবন লোভের ভাণ্ডার। যত পায় আরও চায়। সন্তুষ্টি তার জীবনে সাময়িক। তবু সুস্থ থাকার জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত। বিশেষ করে বয়স যখন চল্লিশ পেরিয়ে যায়।
১। সবসময় পরিমিত আহার করা উচিত। পেট ভরে খাওয়া চলবে না। অর্থাৎ পেটের কিছু অংশ খালি রেখে দেওয়া উচিত। কেন না আমরা বেশিরভাগ খাওয়ার খাই প্রয়োজনের অতিরিক্ত। সেই খাওয়ার হজম হলেও শরীরে তা শুধু জমা হয়। জমার পরিমাণ বাড়ছে কমছে খরচ। ফলে সুগার, পেশার, ওজন বেশি, ভুঁড়ি বাড়া হার্টের রোগ ইত্যাদি নানান রোগের বাসাও তৈরি হচ্ছে। অর্থাৎ যত জমা তত রোগের আমন্ত্রণ।
তাহলে কি খিদে থাকলেও খাব না। তা কিন্তু নয়। আমাদের খিদে মিটে গেলেও একটা লোভ থাকে। সেই লোভের বশে আমরা এটা ওটা একটু বেশি খেয়ে থাকি। পাকস্থলী এমন একটা ভাণ্ডার সেখানে অল্পতেই ভরে যায়। কিন্তু যদি আরো ভরাতে চান তাহলেও সে ভরে নেবে। কেন না এটা একটা মাংসল ব্লাডার।
২। নিয়মিত শরীরকে কাজে লাগানো দরকার। সকালের মর্নিং ওয়াক। সম্ভব না হলে নিজের কাজের প্রেক্ষিতে হাঁটাচলা করা। প্রতিদিন কিছু না কিছু হাঁটা খুব দরকার দরকার। হাঁটার চেয়ে বড় ব্যায়াম আর কিছু নেই। শারীরিক কসরত, যোগব্যায়াম, খেলাধূলা ইত্যাদি করতে পারলে তো ভালই। কিন্তু যদি এগুলো সম্ভব না হয় তাহলেও শুধু হাঁটা। সকালের শীতল ছায়ায় কিংবা বিকেলের মৃদু মন্দ হাওয়ায় শুধু হাঁটা। হাঁটলেই আপনার শরীরের সমস্ত অঙ্গ প্রতঙ্গের নড়াচড়া হয়। খুব জোরে হাঁটা বা দৌড়নো নয়। শুধু হাঁটা। এতেই আপনার শরীরের জমা খরচ হবেই। তার মানে আপনি যদি সুস্থ থাকতে চান তাহলে অবশ্যই হাঁটবেন। হাঁটতে ভয় পাবেন না। যতটা সম্ভব বেশি হাঁটা।
৩। যেখানেই যান না কেন সাথে জল এবং শুকনো খাবার (যেমন বিস্কুটের প্যাকেট) ক্যারি করবেন। জল আমাদের দেহের বাহক। অর্থাৎ আমরা যা কিছু খাবার ইনটেক করি তার অপ্রয়োনীয় বাইরে বের করতে এই জল কার্যকরী। জলে যদি ক্রমাগত অশুদ্ধি থাকে বা কম খাওয়া হয় তাহলে শরীর সচল রাখার জন্য দেহজ জমা রাখা ও খরচ করার সুনির্দিষ্ট কাজ ব্যহত হয়। অর্থাৎ রাস্তায় চায়ের দোকান বা অজানা সোর্স থেকে জল না খাওয়াই ভাল। ঘরের জল ক্যারি করাটাই সবচেয়ে বেটার। চিকিৎসা শাস্ত্র অনুসারে - অ্যালোপ্যাথি হোমওপ্যাথি, হাইড্রো(জল)প্যাথি ইজ দ্যা বেস্ট প্যাথি।
৪। প্রতিদিন কোন না কোন ফল খাবেন তবে তা কোনকিছু খাবার খাওয়ার পর। একেবারে পরিমিত। একটা কি দুটো। চেষ্টা করবেন দুপুরের আগে খাওয়ার। ফলের কার্যকারিতার মাপকাঠি এভাবে করা যেতে পারে - সকালে ফল খেলে সোনার মত উপকারিতা, দুপুরে খেলে রূপোর মত, আর রাতে খেলে লোহার মত উপকারিতা পাবেন।
৫। বহুল প্রচারিত খাওয়ার দু ঘণ্টার মধ্যে ঘুমোবেন না। ঠিক। তবে ঘুমোবেন রাত এগারোটার মধ্যে। কোনভাবে রাত জাগার কোন প্রয়োজন নেই। যারা রাত জেগে ডিউটি করেন তাদের কথা আলাদা। না হলে রাত জাগার কোন মানেই হয় না। যে কোন কাজ আপনি রুটিন পরিবর্তন করে দিনে করার চেষ্টা করতেই পারেন। আর একটা কথা সময় থাক বা না থাক দিনে বিছানা পেতে আয়েশ করে কখনই ঘুম নয়।
বেশির মানুষ বলে নানান চিন্তা কি করে ঘুম আসবে? এটা কথাটাই ঠিক না। তিনটে জিনিস কাওকে জোর করতে হয় না বা জোর করবেন না। প্রত্যেকে নিজের তাগিদে এবং ভাল থাকার প্রয়াসে সেই তিনটে কাজ করে অথবা করতে পারে। খাওয়া, ঘুমানো, আর মলত্যাগ। খাও খাও, ঘুমাও ঘুমাও, যাও যাও। বলার কোন দরকার নেই। এগুলো কেউ আটকে রাখতে পারবে না। প্রথমেই বলেছি মানুষ প্রয়োজনের অতিরিক্ত খায়। ফলে জোর করা মানেই বিড়ম্বনা। শরীরকে খাটাবেন তবেই ঘুম আসবে। শরীরকে বিশ্রাম আর আয়েশের মধ্যে রাখলে ঘুম আসবে না। অনেকেই দুপুরে একটু গড়িয়ে নেন। আর রাতে জেগে থাকেন। একটা নির্দিষ্ট রিদমে শুধু রাতে নির্দিষ্ট সময়ে রোজ ঘুমোতে গেলে ঘুম আসবেই। ফলে জোর করার দরকার নেই। আর ঠিক একই রকম ভাবে সকালের প্রাতকৃত্য পাক না পাক রোজ করবেন। রিদমে তা ফলপ্রসূ।
৬। সবার সব কিছুই খাওয়া যায়। খাওয়াতে খুব একটা বারণ নেই। কিন্তু অবশ্যই পরিমিত। চল্লিশ পেরিয়ে গেলে আপনি গ্রহণীয় খাবার হজম হয়তো করতে পারবেন কিন্তু খরচ করতে পারবেন না। এই খরচ করার মত প্রয়োজনীয় সার্মথ্য কিন্তু আপনার কমতে থাকবে। তাই গ্রহণও কমিয়ে দেওয়া উচিত। এবং কিছু বিচার বিশ্লেষণ করে খাওয়া উচিত। যেমন ফার্স্ট ফুড, কোল্ড ড্রিংস পুরোটাই জমার খাতায়। সব বয়সের ক্ষেত্রে যতটা খাবেন পুরোটাই জমা। খরচ নাই। কম বয়সে যদিও বা কিছু খরচ করা যায় পরে আর তা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
৭। সবাই প্রায় নেশা করে। এই নেশা পরিমিত হোক বা অপরিমিত সবটাই কিন্তু বিড়ম্বনার। চল্লিশের পরে এই ইনটেক নেশা সবটাই বিড়ম্বনার মধ্যে পড়ে যায়। এই বিড়ম্বনার আবার দুটো দিক। এক আপনার শারীরিক বিড়ম্বনা আর দুই আপনার পারিবারিক বিড়ম্বনা। অনেক সময় এর ফলে আপনি দিব্যি হাসপাতালে বেডে শুয়ে থাকলে আর দৌড়াদৌড়ি করে বাড়ির লোক। সঙ্গে গুচ্ছের টাকা খরচ। হয়তো সবক্ষেত্রে নয় কিন্তু কিছুটা তো এর জন্য দায়ী। তার মানে আপনার কার্যকারিতা অন্যের ঘাড়ে গিয়ে পড়ছে। নেশা থেকে বেরিয়ে আসার দুটো রাস্তা। এক না ঢোকা। দুই নিজেকে ভাবা ও পরিবারকে ভাবা। 'বেশ করেছি নিজের পয়সায় নেশা করেছি' এ রকম বলার দিন শেষ। কিন্তু কষ্ট এবং পয়সা আর নিজের থাকছে না। সাথে পরিবার থাকছে।
৮। আমাদের শরীর হল ব্যাধির মন্দির। অর্থাৎ শরীর থাকলে রোগ থাকবেই। কোন রোগ হলে আমরা ডাক্তারের কাছে যাই। ডাক্তারের পরামর্শ মত চলি। আমাদের সবার ভাবা উচিত রোগ যেমন সারানোর চেষ্টা করব তেমনি রোগ যাতে না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখা উচিত। অর্থাৎ রোগ যে রাস্তা দিয়ে আসতে পারে সেই রাস্তা বন্ধ করা উচিত কিংবা বন্ধ করা উচিত।
সবাই মনে করে অল্পেতে কিছু হবে না। মাঝে মধ্যে দু একটা সিগারেট খেলে কিছু হবে না। দু একটা মিষ্টি খেলে সুগার খুব একটা বাড়ে না। দু এক পেগ সবারই নাকি খাওয়া উচিত। যতই প্রেশার থাকে একটু আধটু লবন খাওয়া যেতেই পারে। যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে গলা ভিজিয়ে নিতে চায়ের জুড়ি নেই। অথচ এই একটু একটু করে অনেক হয়ে যায়।
৯। দাঁত হল সবার প্রিয় ও প্রয়োজনীয়। অথচ আমরা দাঁতের চেয়ে চুলের যত্ন নিই বেশি। রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে ও রাতে শোয়ার সময় সবার ব্রাশ করা উচিত। রাতে ব্রাশ করার পর জল ছাড়া আর কিছু খাওয়া উচিত নয়। আর প্রতিবার কোন কিছু খাওয়ার পর ( একটা বিস্কুট খাওয়ার পরও) অবশ্যই খুব ভাল করে কুলকুচি করা উচিত। তাহলে দাঁতের রোগ যেমন কম হবে তেমনি বার বার দাঁতের ডাক্তারের কাছে যাওয়ার দরকার পড়বে না। শুধু দাঁতের ডাক্তার নয় অন্য রোগও কম হবে।
কেন না আমাদের দেহে যা কিছু ইনটেক হয় তার বেশির ভাগ হয় এই মুখ দিয়ে। মুখ যদি পরিস্কার রাখা যায় তাহলে খাওয়ার জমে পচে লালাগ্রন্থির ক্ষতি করতে পারবে না।
১০। যে কোন খাবারের এক গ্রাস মোটামুটি ৩০ সেকেণ্ড চিবানো উচিত। ছোট ছোট গ্রাসে চিবিয়ে খেলে খাবার লালার সঙ্গে মিশে খাওয়ারের পরিপূর্ণ তৃপ্তি আপনি উপভোগ করতে পারবেন। কেন না কোন খাবার পেট চলে গেলে তার তৃপ্তি আপনি পাবেন না। তাই যত বেশি চিবোবেন তত তার তৃপ্তি উপভোগ করবেন তেমনি সেই সেই খাবার লালার সাথে মিশে কিছুটা পরিপাক হয়ে যাবে এবং প্রতি গ্রাসে এই পরিপূর্ণ তৃপ্তির ফলে আপনার তৃপ্তির জন্য, লোভের জন্য অতিরিক্ত খাওয়ার ইচ্ছেও চলে যাবে। যতটুকু দরকার ঠিক ততটুকুই খাবেন। আমরা অনেকেই ভাল খাবার গপাগপ করে খেয়ে ফেলি ফলে অতিরিক্তই খাওয়া হয়ে যায়। যা শুধু দেহে জমা হয়। কাজে লাগে না।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৮

শামচুল হক বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৩৫

দীপঙ্কর বেরা বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ
ভালো থাকবেন

২| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪৮

রাজীব নুর বলেছেন: জানলাম।

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৩৬

দীপঙ্কর বেরা বলেছেন: জানলেই হল।
ধন্যবাদ
ভালো থাকবেন

৩| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০১

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: পোস্টের বক্তব্যের সাথে একমত। ধন্যবাদ ভাই দীপঙ্কর বেরা।

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৩৬

দীপঙ্কর বেরা বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ
ভালো থাকবেন

৪| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:০৬

দৃষ্টিসীমানা বলেছেন: উপকারি পোস্ট , ধন্যবাদ ।

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৩৭

দীপঙ্কর বেরা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ
ভালো থাকবেন

৫| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৪৮

গরল বলেছেন: খুবই ভাল একটা পোষ্ট, সবাই যদি মেনে চলে। আশা করি সবারই উপকারে আশবে। একটা জিনিষ নিয়েই আমার খটকা লেগেছে যে ফল খাওয়ার টাইম বেধে দিলেন, দুপুরের আগে, এটার পেছনের ব্যাখ্যাটা কি আসলে বুঝলাম না। আমি খুবই কম জানি এসব বিষয়ে, যদিও আমি বিকেএসপি থেকে স্পোর্টস সাইন্স (বায়োমেকানিক্স, ফিটনেস ও নিউট্রিশন) এ পোস্টগ্রজুয়েট ডিপ্লমা করেছিলাম। আমাদের পড়াশুনা ছিল মোটামুটি হাই পারফরমেন্স অ্যাক্টিভিটি ও নিউট্রিশন ফোর হাইপারফরমার নিয়ে। কোথাও আসলে এরকম কোন গাইডেন্স পাইনি যে খাবারের জন্য কোন নির্দিষ্ট টাইম বেধে দেওয়া। তাই জাস্ট কিউরিয়াসিটি থেকেই জানতে চাচ্ছি যে এর পেছনে কোন স্পেসিফিক কোন কারণ আছে কিনা।

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:১০

দীপঙ্কর বেরা বলেছেন: পোস্টটি মন দিয়ে পড়েছেন সেজন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন। ফল নিয়ে আমি যতটুকু জানি বলার করছি। উপরের যতটুকু বলেছি সবটাই আমার নিজস্ব উপলব্ধি ও অভিজ্ঞতার কথা। কোন বই বা ভিত্তিতে নাও মিলতে পারে। লেখাতেই আছে আমরা বেশি খাওয়া হজম করে জমা করি। ফলের মধ্যে যে মিনারেলস ভিটামিন ও শর্করা কার্বোহাইড্রড আছে তা সহজপাচ্য। বিকেলে বা রাতে খেলে তা হজম হল কিন্তু খরচ হল না। কেন না শরীরের জমা খরচ হলে শরীর সুস্থ। সকালের ক্ষেত্রে যা বেশি খরচ সাপেক্ষ। আবারও ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.