নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মুখ ফেরানো মুখ

দীপঙ্কর বেরা

আমি ভাষা বাংলা ভালোবাসি

দীপঙ্কর বেরা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভান করা

১৬ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৮:৩৯

না দেখার ভান করা
না শোনার ভান করা
না বলার ভান করা
না করার ভান করা

এসব অনেকেই করে। ফলে যে দেখে সে যেমন অবস্থানকে প্রশ্রয় দেয় তেমনি যে অবস্থানে থাকে সে ভাবে কেউ দেখে নি তাহলে আরও এগিয়ে যাই।
যে মদ খায়, যে গুণ্ডামি করে, যে ঘুষ খায়, যে অনৈতিক করে তারা সবাই বাড়ি ফেরে। তাদের বাড়ির লোক কেউ বিন্দুবির্সগ জানে না এটা কি হতে পারে?
নাকি ছেলে মদ খেয়ে এসে চুপিসারে শুয়ে পড়ল বাবা মাকে জিজ্ঞেস করল - কিগো, বীরু খাবে না?
মা দেখেও না দেখার ভান করে বলল - বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ছিল, খেয়ে এসেছে।
এই অল্প অল্প একদিন প্রকাশ্য এসে গেল। তখন আর বাধা দেওয়ার জায়গা থাকল না। তখন ভাবনা এরকম - ছেলেপিলেরা একটু আধটু স্ফূর্তি করবে না?
আবার মেয়ে প্রেমে মজেছে পড়াশুনায় মন নেই। টিউশনের পরে দেরি করে বাড়ি ফিরছে। মা জিজ্ঞেস - কি রে তোর এত দেরি হল?
মাঝে পৌঁছতে যাওয়ার সময়, নিতে যাওয়ার সময় বাবা দেখেছে নীলেশ বলে ছেলেটার সঙ্গে মেয়ে যেন একটু বেশি সপ্রভ। তাই মেয়ের হয়ে বাবা উত্তর দিল - রাস্তায় কত কি অসুবিধা।জ্যাম। সবে পড়ে এল। তোমার জেরা করা বন্ধ করবে?
এই বিষয় যখন সামনে এল তখন সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ে - তোর এত বড় সাহস। এই ছেলে?
এক মজার ঘটনা। আমি তখন হাসপাতালে। মা ভর্তি আছে। ছোট সরকারী হাসপাতাল। বছরখানিকের এক শিশু চিলচিৎকার করে কাঁদছে। তার মা কিছুতেই থামাতে পারছে না। পাশেই নার্সিং স্টাফদের বসার জায়গা। এমন কি এক নার্সিং স্টাফ পাশ দিয়ে বার কয় গেলেন।
শিশুটি যখন কাঁদতে কাঁদতে বমি করে ফেলছে তখন ওর মা ডাক্তারবাবুর কাছে গেলেন। সেখানে ওই নার্সিং স্টাফ নির্দ্ধিধায় বললেন - তুমি তো ভর্তি আছো। কোথায় ছিলে? কখন থেকে কাঁদছে? কই শুনি নি তো।
এই হল না শোনার ভান।
আবার এই মদ খাওয়া, গুণ্ডামি, ঘুষ খাওয়া, প্রেমে পড়া ও অন্যান্য নেশা ইত্যাদি অনৈতিক শুরু হয় টিন এজ থেকে। বাড়ির লোকের সঙ্গে তখন সেই সব টিন এজের সম্পর্ক থাকে তুঙ্গে। না বলা যেমন শুনতে চায় না তেমনি না বলাটাই করার আগ্রহ বেশি থাকে। করবেই। কেন না বোধ পরিণত না হলেও বাধা মানতে না চাওয়ার ভাবনাটি স্পষ্ট করে নেয়। চরম বেছে নেয় খুব সহজে।
ফলে পরিবার বাধ্য হয় সেই সব অন্যাহ্য মেনে নিতে। দেখেও না দেখার ভান করে। শুনেও না শোনার ভান করে। ভাবে, বাধা দিয়ে বললে যদি হিতে বিপরীত কিছু হয়ে যায় বা করে বসে। তারপর আস্তে আস্তে সেটাই আরো বড়র দিকে মোড় নেয়। তখন আর কিছু করার থাকে না।
আচ্ছা, পরিবারের মধ্যে যে হিংসা হয় তা পরিবারের সবাই জানে অথবা মদত দেয় বা না দেখার ভান করে।পরিবারের কেউ না কেউ সেই হিংসাকে যদি রোধ করার উপায় ভাবে তাহলে তা অন্য দিশা দেখাবে। ঠিক তখনই যদি সামনে গিয়ে তৃতীয় কেউ দাঁড়ায়, দরজায় কড়া নাড়ে, অন্য কাজের বাহানায় কিছু জিজ্ঞেস করে, রাগের সময়টাকে যদি আর একটু প্রলম্বিত করে তাহলে পারিবারিক হিংসা রোধ হবে
ঠিক একই রকমভাবে কোথাও কোন অপরাধ সংঘটিত হলে তার প্রস্তুতি অবশ্যই থাকে। হঠাৎ করে বোম ব্লাস্ট, খুন, জখম, রাহাজানি হয় না। এই প্রস্তুতি বা পরিকল্পনার জন্য সেই এলাকায় ঘাঁটি তৈরি হয়। সেই ঘাঁটি তৈরিতে সেই এলাকার কারও সহযোগিতা নিতে হয়। এবং এই সহযোগিতা চলাকালীন অনেকেই না দেখার না শোনার বা না বলার ভান করে। অথবা এই ভান করার জন্য টাকা দিয়ে দেওয়া হয়। যা ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পর সবাই বলে আমরা জানি না। আমরা দেখি নি। আমরা শুনি নি।
এখন প্রতিটি অঞ্চলে ভোটার কার্ডের জন্য, স্বাস্থ্য পরিষেবার ইমুউনাজেশনের জন্য, রেশন কার্ডের জন্য, একশ দিনের কাজের জন্য, জন গনণার জন্য, বিভিন্ন অনুদান ও প্রকল্প রূপায়নের জন্য বিভিন্ন কর্মচারী আছে। যারা বাড়ি চেনে, লোক চেনে, এলাকা চেনে, কে কি কাজ করে চেনে। এবং সর্বপরি বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি আছেন। যারা প্রতি মুহূর্তের প্রতিটি মানুষের গতিবিধি চেনে। কি খায় কি পরে কি পার্টি করে এবং কোথায় কি কথা বলে। তাও দেশ জুড়ে বোমা গুলি গোলা খুন জখম মারামারি বেড়ে যাচ্ছে। কিভাবে সংঘটিত হচ্ছে?
কেউ না কেউ না দেখা না বলা না শোনার ভান করে। তাই হচ্ছে খারাপ কিছু।
এর আবার উল্টোদিক আছে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৮:৫৮

সোহাগ তানভীর সাকিব বলেছেন: আমাদের সমাজের এক বিশেষ রোগ আপনার লেখনির মাধ্যমে ফুটে ওঠেছে। বিন্দু বিন্দু জল থেকে-ই যেমন সাগর মহাসগর সৃষ্টি হয় ঠিক তেমনি ভাবে অল্প অল্প অপরাধ-ই এক সময় বড় বড় অপরাধের জন্ম দেয়। একটা সর্ব প্রথম কিন্তু নিজের ঘর বা পরিবারের প্রস্রয়ে নিজের ঘর বা বাড়ি থেকে চুরি করা শেখে।
সন্তান কোথায় যায় কি করে আর কেউ না জানলেও মা বাবা একটু হলে বুঝতে পারে বা জানে। তারপরও যদি না জানা বা না দেখার ভান করে তাহলে তো সেই সন্তান উৎসাহ পাবেই।
শুধু পরিবার-ই নয় আমার সমাজ বা রাষ্ট্রীয় অনেক বিষয় আছে অনেক অসংগতি, দুর্দশা, অন্যায়, অপরাধ হচ্ছে সেটা যথাযথ কর্তৃপক্ষ দেখে বা শোনেও না দেখার বা না শোনার ভান করে। এই ভান করার করণে অনেকেরই মান যায় তবুও জ্ঞান ফেরে না।

যাই হোক, আপনি যে বিষয়টি তুলে ধরেছেন সেটা বেশ ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ।

১৭ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:১৯

দীপঙ্কর বেরা বলেছেন: সঠিক বলেছেন
অনেক ধন্যবাদ
ভাল থাকবেন।

২| ১৬ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:৫৭

শায়মা বলেছেন: হুম ! নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করে প্রায়শই!

১৭ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:২০

দীপঙ্কর বেরা বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ

৩| ১৬ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:১৯

শাহিন বিন রফিক বলেছেন: সোহাগ তানভীর সাকিব ভাই যথার্থ বলেছেন, ছোট থাকতেই সব অপরাধ নমুনা ছেটে ফেলতে হয় নাহলে পরে বড় ধরণের খেসারত দিতে হয়।

১৭ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:২০

দীপঙ্কর বেরা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.