নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবে প্রেম করে যেজন, সেজন সেবিছে ঈশ্বর

দীপান্বিতা

দীপান্বিতা › বিস্তারিত পোস্টঃ

কথাচ্ছলে মহাভারত - ১৩৯

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৫২

[পূর্বকথা - যুধিষ্ঠির কৃষ্ণের অনুমতি নিয়ে রাজসূয় যজ্ঞের আয়োজন করেন ....... মুনিরা হোম যজ্ঞের আয়োজন শুরু করেন......দেবগণকে নিমন্ত্রণ করতে অর্জ্জুন যাত্রা করেন ...বাসুকি নাগকে নিমন্ত্রণে পাতালে পার্থ যাত্রা করেন......দ্রুপদ ও অন্যান্য গণ্যমান্য রাজারা আসতে লাগলেন... কৃষ্ণদর্শনে লঙ্কার রাজা বিভীষণ উপস্থিত হলেন....কৃষ্ণের শত অনুরোধেও রাজাজ্ঞা বিনা দক্ষিণ ও পূর্ব দ্বার দিয়ে তাকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হল না... ]



শ্রীকৃষ্ণ কর্তৃক চারিজন রাজার প্রাণদানঃ

বিভীষণকে নিয়ে গদাধর কৃষ্ণ যখন যাচ্ছিলেন তখন পথে দেখেন ভীমের কিছু অনুচর চারজন রাজাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে।

মাধব কৃষ্ণ তাদের ডেকে বলেন –তোমরা কারা! এই চারজনকে এভাবে বেঁধে কোথায় নিয়ে যাচ্ছ! এরা কি অপরাধ করেছে!

দূতরা বলে –আমরা ভীমের কিঙ্কর। এই চারজন দুষ্ট কর্ম করে অপরাধী। এই দুজন শ্বেত ও লোহিত মণ্ডলের রাজা। এদের দেশ সমুদ্রের তীরে। পার্থ এদের জয় করে সঙ্গে আনেন। এখন এরা কাউকে কিছু না জানিয়ে দেশে পালাচ্ছিল। অর্ধপথ থেকে এদের ধরে আনা হয়েছে। আর এই দুজন দুই দরিদ্র ব্রাহ্মণকে উপহাস করে অত্যাচার করছিল। তাই চারজনকে বেঁধে নিয়ে চলেছি। ভীম এদের শূলে দিতে বলেছেন।

কৃষ্ণ বলেন –ঠিক আছে এদের পরে নিয়ে যেও, এখন এরা আমার সাথে থাকুন। ভীমসেন কোথায়! তার কাছে আমায় নিয়ে চল।

দূতরা কৃষ্ণকে বৃকোদরের কাছে পথ দেখিয়ে নিয়ে চলল। কিছুদুরে ভীমকে দেখা গেল এক লক্ষ রথীদের নিয়ে চারদিক ঘুরে তদারকি করছেন।

ভীমের সামনে এসে কৃষ্ণ বলেন –হে ভীম, এই চারজন রাজাকে মুক্তি দাও। যজ্ঞের জন্য নিমন্ত্রণ করে এনে এখন শূলে দেওয়া ঠিক হবে না। হে বীর, এত বড় যজ্ঞস্থলে ভাল মন্দ দু ধরনের মানুষই আসবে। এই সামান্য ঘটনাগুলি ক্ষমা না করলে কাজে বড়ই বিঘ্ন ঘটবে।

বৃকোদর বলেন –হে দেবকীনন্দন, দোষ অনুসারে দুর্জনকে শাস্তি না দিলে অন্যেরাও তাদের পথ অনুসরণ করবে। আর এদের ক্ষমা করে কি সুবিধা হবে শুনি! দুষ্টজনকে ক্ষমা করতে পারব না। এরা কখনই পাপ কাজ থেকে বিরত হতে পারবে না। এসব দুষ্ট পাপীদের নিজের তেজ না দেখালে এরাও অবজ্ঞা করতে শুরু করবে, তাতেই বিপদ বাড়বে। এদেরতো চিনতামও না, এরাই তেজ দেখিয়ে অশান্তি শুরু করেছে। এদের ক্ষমা নেই।

কৃষ্ণ কমললোচন অনুরোধ করে বলেন –শুন শুন ভীমসেন! তোমাদের জন্যই তিনলোক আজ এক হয়েছে। এখন একটু শান্ত হয়ে ভাব। এই যজ্ঞের জন্য এক লক্ষেরও বেশি রাজারা আজ এখানে উপস্থিত। এর মধ্যে কে ভাল, কে মন্দ জানা সম্ভব নয়। এখন সবাই যদি এই ঘটনা নিয়ে দ্বন্ধ শুরু করে তখন কি করবে! তখন তো আরো সাঙ্ঘাতিক অবস্থা হবে! নৃপরা রেগে যজ্ঞ পণ্ড করতে পারে। পৃথিবীর সবাই তোমার বিরুদ্ধে যাবে। কত জনকে তুমি শাস্তি দেবে! পার্থও এখন পাতালে থেকে গেল। তোমাকেই তো এখন সবদিক দেখতে হবে!

কৃষ্ণের কথা শুনে ভীম বলেন –হে দেব দামোদর, এতো আপনার যোগ্য কথা নয়! আপনি যে এক লক্ষ নৃপের কথা বলছেন তাদের তো দেখে এলাম। বাঘের চোখে অজাযূথের(ছাগলের দল) যেমন লাগে, আমারও তাদের তেমন লাগল। এরা যদি এক যোটও হয় মুহূর্তে আমি এদের পরাজিত করতে পারি। মানুষ কেন তিনলোক এক হয়ে গেলেও আমি একেশ্বর হয়ে তাদের সাথে লড়তে পারি। আর হে দেব আপনি যাদের পক্ষে তাদের ত্রিভুবনে কে পরাজিত করতে পারে!

গোবিন্দ বলেন –হে ভীম, তোমার পক্ষে সব সম্ভব আমি জানি। তোমার বিরোধ কেইবা করছে! এদের না হয় আমার অনুরোধেই এখন ছেড়ে দাও। এরপর কেউ অন্যায় করলে অবশ্যই দন্ড দেওয়া হবে।
এই বলে তিনি নিজেই চারজনকে মুক্ত করলেন।

মহাভারতের কথা অমৃত লহরী, কাশীরাম কহেন ইহা শুনলে সহজে উদ্ধার হয় সংসার তরী।

......................................
উৎসর্গ: সকল ব্লগার বন্ধুকে
.....................................
আগের পর্ব:

কথাচ্ছলে মহাভারত - ১৩৮ Click This Link

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৭

রাতুল_শাহ বলেছেন: লেখার পরিমাণ কিন্তু কমে যাচ্ছে।

১২ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:৫১

দীপান্বিতা বলেছেন: ;)

২| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২১

রাতুল_শাহ বলেছেন: বিভীষণের কি হইলো

১২ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:৫২

দীপান্বিতা বলেছেন: পরের পর্ব এসেছে --- সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ :)

দোলের শুভেচ্ছা নেবেন :)

৩| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:১৪

আহমেদ জী এস বলেছেন: দীপান্বিতা ,



আগের পর্বে জানতে চেয়েছিলুম, যাজ্ঞসেনী বা দ্রৌপদী , দ্রুপদ রাজার কন্যা কিনা যে যজ্ঞের আগুন থেকে উঠে এসেছে ।
বলেছেন , হ্যা ঠিক ।
অথচ এই রাজসূয় যজ্ঞের আয়োজনে দ্রুপদ রাজা ও দ্রৌপদীর উপস্থিতি দেখতে পাচ্ছি ।
তাহলে প্রশ্ন, যে যজ্ঞ থেকে দ্রৌপদীর জন্ম , সে যজ্ঞটি কোনটি ? মহা ভারতের কোন পর্বে এই যজ্ঞের কথা উল্লেখ আছে ?

মহা ভারতের কাহিনী আর চরিত্রগুলো গুলিয়ে ফেলি বলে এই প্রশ্ন ।

ভালো থাকুন । এই পর্বটির পাশাপাশি তো আরও কোনও কিছু লিখতে পারেন ।

১২ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:৫০

দীপান্বিতা বলেছেন: ধন্যবাদ, আহমেদ জী এস!

ধৃষ্টদ্যুম্ন ও দ্রৌপদীর উৎপত্তি কথনঃ
Click This Link

সংসার নিয়ে খুব ব্যস্ত ---ছেলে হাটতে শিখছে ----এই ঘুমাচ্ছিল, উঠে কাঁদছে :)

দোলের শুভেচ্ছা নেবেন :)

৪| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৭ সকাল ১০:২৯

সঞ্জয় নিপু বলেছেন: এখনো চলছে দিদি ?
কেমন আছেন ? অনেক দিন পর আসলাম।

১২ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:৪৫

দীপান্বিতা বলেছেন: এখনো চলছে ---- চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি :)

আমরা ভাল আছি ---আপনি ভাল তো! ---দোলের শুভেচ্ছা নেবেন :)

৫| ১২ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১:২৩

জুন বলেছেন: আপনার মহাভারত পোষ্টের অপেক্ষায় থাকি দীপান্বিতা। খুব ভালোলাগে ।

২৬ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:০২

দীপান্বিতা বলেছেন: ধন্যবাদ, জুন! :)

৬| ১২ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ২:১৮

আহমেদ জী এস বলেছেন: দীপান্বিতা ,




ধৃষ্টদ্যুম্ন ও দ্রৌপদীর উৎপত্তি কথনঃ দেখেছি । ধন্যবাদ । চুলের মতো ঘটনাপ্রবাহ এতো কোকড়ানো যে খেই হারিয়ে যায় প্রায়ই ।

দোলের শুভেচ্ছা রইলো আপনাকেও । সংসার সুখের হোক , মঙ্গলালোকে ভরে থাকুক ।

২৬ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:০১

দীপান্বিতা বলেছেন: ধন্যবাদ, আহমেদ জী এস! আপনাকেও অনেক শুভেচ্ছা :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.