নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দেলাওয়ার জাহান। সাধারন পাবলিকের একজন। ভাব বা ভেটকিবাজি পছন্দ করি না।

দেলাওয়ার জাহান

পড়ি। লিখতে চাই। মরতে চাই না।

দেলাওয়ার জাহান › বিস্তারিত পোস্টঃ

রবীন্দ্রনাথ, রোদ্দুর রায়, স্ল্যাং ও অন্যান্য

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৫২

‘শালা চাঁদ উঠেছিল গগনে’ গেয়ে রোদ্দুর ফের রবীন্দ্রভক্তদের কবলে পড়েছেন। কিন্তু রোদ্দুরের ‘খ্যাতাপুড়ি’ ভাব। গাঁজা খাচ্ছেন, সিগারেট জ্বালাচ্ছেন, হেঁড়ে গলায় গাইছেন। নিজেকে বলছেন 'বিশ্যো কবি'। রবীন্দ্রনাথ বা বিশ্বকবি টার্মটার উপর রাগ ঝাড়ছেন। ...বিশ্বকবি কিছু বলেছেন মানে সেটা প্রবাদ প্রতিম এরকম একটা ভাব থাকে অনেকের। এসব বলার পর রোদ্দুর গালাগাল দিয়ে বোঝাতে চাইছেন, বিশ্বকবি যা বলেছেন, যা করেছেন তাকে ধ্রুব ভাবার কিছু নেই।

এটা রোদ্দুরের কথাগুলোর মূল সারমর্ম।

ব্যাণ্ড সংগীত শিল্পী মাকসুদ বছর কয়েক আগে রবীন্দ্রনাথের ‘না চাহিলে যারে পাওয়া যায়’ নিজস্ব ঢং এ ফিউশন বানিয়ে গেয়েছিলেন। তখন দেশের রবীন্দ্রভক্তরা রাস্তায় নেমেছিলেন।

আবার নচিকেতা যখন গাইলেন যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে/তবে নাকি একলা চলতে হয়, কলকাতার সমাজ মেরে আসে কি তেড়ে আসে। বিকৃতির অভিযোগ।

তো রবীন্দ্রনাথের গান কেন ভেঙ্গে গাওয়া যাবে না? যারা রোদ্দুরের গায়কীতে জাত গেল জাত গেল করছেন তারাও সাংস্কৃতিক মোল্লা কম নন। নিজেকে সংস্কৃতি বোদ্ধা ভাবেন এরা অথচ রোদ্দুরের মত না পারে নিজেকে গালি দিতে, না পারে ব্যঙ্গ করতে। রাজনীতি নিয়ে তো বালাই ষাট। কিন্তু রোদ্দুরের মক্সা আলাপের প্রধান লক্ষ্যবস্তু রাজনীতি, শাসকদল, রাজনীতিবিদ, সংসদ। রোদ্দুর পাগল নন। রোদ্দুরের মতো রবীন্দ্রমোল্লাদের জীবনও ছ্যারাব্যারা কিন্তু প্রাচীন। হয়তো রোদ্দুরের গানটায় আমজনতা বিকৃতির কথা মনেই আনেনি বরং মজা করে গাচ্ছে। কিন্তু আপার ক্লাস বোর্ড বাঁধাইয়ের বাইরে আসতে পারছে না।

“আমাদের জীবনের শিক্ষিত শোভন সংস্করণে স্ল্যাংয়ের কোনও পাঠ না থাকলেও আমরা জানি এর চোরাগোপ্তা স্রোত আছে। কোনও কোনও দাম্পত্যের নিরীহ শোভন সংস্করণে স্ল্যাং তো একটি নিত্য-ব্যবহার্য আসবাব। আমাদের জীবনে যুগপৎ যৌনতা আছে এবং একটা ধরি-মাছ-না-ছুঁই-পানি গোছের ন্যাকান্যাকা ভাবও আছে।’’ ‘মেয়েদের চোরাগোপ্তা স্ল্যাং’ বইয়ে তৃপ্তি সান্ত্রা যথার্থই বলেছেন।

সাহিত্যে স্ল্যাং অবদমিত মানুষের মুখে জোর করে বসিয়ে দেয়া হয়নি, নাগরিক জীবনে খেয়াল করে দেখুন শব্দগুলো আপনাআপনি চলে আসে! কেন আসে? কারণ মানুষের ভাষার সীমাবদ্ধতা। মানুষকে তার বৈচিত্র্যময় অনুভূতির প্রকাশ ঘটাতে বিভিন্ন প্রকার রূপকের আশ্রয় নিতে হয়। গালি হচ্ছে ভাষার মেটাফরিক উপস্থাপন। আবার যখন বলার কথাটা বলতে পারছেন না, তখনও রূপকের আশ্রয় নিতে হয়। আধুনিক সাহিত্য অনেক টুলস ব্যবহার করে। সাহিত্য সরাসরি বলে না। জীবনে যা ঘটে তাই সাহিত্য নয়। জীবনের মা যেভাবে কাঁদে সাহিত্যের মা সেভাবে কাঁদলে আর যাই হোক শিল্প হয় না।

কিন্তু রোদ্দুর সেটাই করছেন। সরাসরিই বলছেন তবে সচেতন পাগলামি মিশিয়ে একটা ভান ধরতে হয়েছে তাকে। পাগলামিটা গা বাঁচানোর তাগিদে। সাহিত্যের তাগিদ আছে বলে মনে হয় না। যদিও কলকাতার লিটল ম্যাগ পরিবারে তার বেশ পরিচিতি। বেশ কয়েকটা বইও আছে তার।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৩৭

বাকপ্রবাস বলেছেন: রবীন্দ্রনাথকে ভাঙ্গা অবশ্যই যাবে, মাকসুদ, নচিকেতাকে সম্পূর্ণ সমর্থন করা চলে, তবে রোদ্দুর এর গালাগাল মার্কা কথা আর ভাবভঙ্গি এসব জাষ্ট রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে শয়তানি

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:২৯

দেলাওয়ার জাহান বলেছেন: রোদ্দুর এর গানের বাইরের যে মক্সা আলাপ এর জন্য তাকে প্রতিবাদী ভাবতে বরং খারাপ লাগে না।

২| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: স্ল্যাং আমি পছন্দ করি না। না বাস্তব জীবনে, না গল্প উপন্যাসে। তবে বাস্তব জীবনে আড্ডায় বা পরিচিত অপরিচিতদের মুখে স্ল্যাং আছেই।

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৩

দেলাওয়ার জাহান বলেছেন: গালিগালাজ মানুষের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে বটে তবে ক্ষেত্রবিশেষ এর প্রয়োজনীয়তাকে অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। মানুষ যেদিন থেকে ভাষার ব্যবহার শিখেছে সেদিন থেকেই শুরু হয়েছে গালির ব্যবহার।

৩| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:১৩

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: অসহ্য একটা শিল্পী
হেরে দেখলেই রাগে গা জ্বলে যায়
শয়তান বেডা

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৫

দেলাওয়ার জাহান বলেছেন: গালি শুনলেই যারা কানে আঙ্গুল দিয়ে বসে অথবা প্রবল অস্বস্তিতে ভুগতে থাকে এরা মুলত আধাচোদা মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়, যারা গ্রামবাংলার সাধারণ মানুষ থেকে সবসময় নিজেদেরকে আলাদা বা বড়কিছু ভাবতে ভালবাসে। সুশীল ও বিদ্ব্যৎসমাজের যতই এলার্জি থাকুক, নিম্নবর্গের মানুষ এখনও প্রাত্যাহিক জীবনে খুব স্বাভাবিক স্বতঃস্ফূর্তভাবে গালি ব্যবহার করে ৷

৪| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:১৮

নেক্সাস বলেছেন: ভাই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অসাধারণ এক লেখা। মুগ্ধতায় পড়ে গেলাম। রোদ্দুর কে আমার কাছে সিস্টেমের বিরুদ্ধে এক ক্ষেপাটে দ্রোহী বলেই মনে হয়

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৭

দেলাওয়ার জাহান বলেছেন: শুনে ভালো লাগছে। ভালো থাকুন!

৫| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৪৩

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: ম্যাকহক (মাকসুদ ) কিংবা নচিকেতা রবীন্দ্রনাথ কে নিয়ে কোন নোংরামি করেনি। আমাদের আগে নোংরামি আর ভেঙে গাওয়ার মধ্যে পার্থক্য জানতে হবে।
রোদ্দুর রায় নামের লোকটা , এই পার্থক্য জানে না।

রবীন্দ্নাথ বাঙালির পরম শ্রদ্ধার নাম। কারো কারো কাছে ধর্ম।
আপনি রোদ্দুর রায় এর ব্যাপারে মাকসুদ আর নচিকেতা কে উদাহরণ টেনে ঠিক করেননি। মাকুসদ বাংলা ব্যান্ড জগতে লিজেন্ট আর নচিকেতার কথা আলাদা ভাবে বলার কিছু নেই।
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে , তবে নাকি একলা চলতে হয় ?

যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলে রে ! --- উপরের লাইনটা এই লাইনের উপলব্ধি মাত্র। নিজের কাছেই প্রশ্ন। একলা চলার শক্তি।

ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।
(একজন রবীন্দ্রনাথ , নচিকেতা , মাকসুদের ভক্ত )

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৯

দেলাওয়ার জাহান বলেছেন: যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলে রে ! --- উপরের লাইনটা এই লাইনের উপলব্ধি মাত্র। নিজের কাছেই প্রশ্ন। একলা চলার শক্তি। সুন্দর ব্যাখ্যার জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.