নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ড. মশিউর রহমান

ড. মশিউর রহমান

ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়িয়ে বেড়াই!

ড. মশিউর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রবাসে বাংলাদেশীদের সংগঠন

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:২১



আমরা বাংলাদেশীরা একত্র কাজ করতে পারিনা কেন? কেন আমরা এত বেশী দল ও সংগঠন করি? কথায় বলে যে তিন জন বাংলাদেশীরা যদি একত্রে কিছু করতে শুরু করে, তবে কয়েকদিন পরে দেখা যায় যে তারা চারটি সংগঠন দাড় করিয়ে ফেলে। দুজন মিলে মিলে মিলে মোট তিনটি সংগঠন দাড় করে, এবং সবাই মিলে একটি বড় দল গঠন করে।



দেশে ও বিদেশে সব জায়গাতেই আমি এই দৈন্য দশা দেখেছি। জাপানিজদের খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল, তাদের সাথে একত্রে কাজ করতে যেয়ে দেখেছি বাংলাদেশীদের সাথে মারাত্মক পার্থক্যগুলি। দুটি জাতিকে কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতার আলোকেই আমার এই একান্ত অনুভূতিগুলি আপনার সাথে শেয়ার করবো।



বাংলাদেশ নামক যে সীমানার মধ্যে আমরা বাংলাদেশী পরিচয়ে বড় হচ্ছি, সেই জাতি সত্তার সাথে অনেক জাতির মিশ্রণ রয়েছে। উইকিপিডিয়াতে দেখা যাক কি বলে:



“এদের ভাষা বাংলা যা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর পূর্ব-ইন্দো-আর্য বিভাগের একটি ভাষা। নৃতাত্বিকভাবে এরা একদিকে যেমন ওড়িয়া, আসামী, বিহারী ও অন্যান্য পূর্বভারতীয় ভাষাভাষী গোষ্ঠীর নিকট আত্মীয়, তেমনই এদের মধ্যে কিয়দংশে মুণ্ডা, প্রোটো-আস্ট্রালয়েড, তিব্বতী-বর্মী, অস্ট্রো-এশীয়, এবং দ্রাবিড় গোষ্ঠীর বংশধারাও মিশে আছে। এর ফলে বাঙালি জাতি বৈচিত্র্যপূর্ণ ও স্থানভেদে ভিন্ন।“ [লিংক]



আমি মনে করি এই জাতিগত সংমিশ্রণের কারণে আমরা কিছুটি নিজের “পরিচয়” নিয়ে সমস্যায় পড়ি। আর তার কষ্টটা আরও বেড়ে যায় যখন সে তার পরিচয়টি স্পষ্ট করতে পারেনা। হাজার হাজার বছর আগে আমাদের পূর্ব বংশধরেরা কোন জাতি থেকে এসেছে তা এখন নিরূপণ করা খুব কঠিন। তবে এখন আমরা একটি একক জাতি সত্ত্বায় পরিচিত হচ্ছি, তা হল আমরা বাংলাদেশী। সমস্যা হল, আমাদেরকে বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, আমাদের এই পরিচয়কে কাজে লাগিয়ে। প্রথমে ব্রিটিশ সময়ে আমরা আমাদের পরিচয় দিয়েছে আমরা ভারতীয় হিসাবে। কিন্তু সমস্যা বেধে গেল ব্রিটিশরা চলে যাবার পরে। একবার আমাদের বলা হল তোমরা মুসলমান, তোমাদের জন্য একটি আলাদা দেশ প্রয়োজন। কিছুদিন পরে দেখালাম সেই পরিচয়টি ধোপে টিকছে না। আমাদের বলা হল তুমি বাঙালী, আমাদের স্লোগান হল জয় বাংলা। তারপরে আমরা স্বাধীন হয়ে নিজের দেশ গঠন করলাম। তারপরে আমাদের বলা হয় তুমি বাংলাদেশী। এখন মূলত তিনটি পরিচয়ে আমরা পরিচিত,



আমি বাংলাদেশি

আমি বাঙালি

আমি মুসলমান



কিন্তু এখানে সমস্যা হল, যারা হিন্দু বা খ্রিষ্টান তাদের ক্ষেত্রে তৃতীয় পরিচয়টি পরিবর্তন হচ্ছে। আমার বাংলাদেশে যাদের ভাষা বাংলা নয় তাদের ক্ষেত্রে এই পরিচয়টি পরিবর্তিত হচ্ছে।

যার ফলে সবসময় আমাদের মধ্যে একটি পরিচয়ের সংকটে পড়তে হয়। এবং আমরা এই পরিচয়টি নিয়ে খুবই টেনশনে থাকি। আবার স্থানীয় পরিচয় আমাদের মধ্যে রয়েছে। যারা খুলনায় বড় হয়েছি, তারা খুলনার লোকজনের সাথে উঠা বসা করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। এই বার দেখা যাক এই স্থানীয় পরিচয় কিভাবে আমাদের জীবনে ভূমিকা রাখে।



আমাদের বাংলাদেশ এখন সব কিছুই ঢাকা কেন্দ্রিক। ঢাকার যানজটের সমস্যার কারণে পুরো বাংলাদেশে ব্যাংকের সময়, স্কুলের সময় পরিবর্তন করা হয়। এই ঢাকা থেকে বের হয়ে আসা আমাদের সম্ভব হয়ে উঠেনা। জীবন ও জীবিকার জন্য ঢাকাতে মানুষকে আসতে হয়। এখনকার ঢাকার লোকজন বেশীরভাগই অন্যান্য অঞ্চল থেকে মাইগ্রেন্ট করে এসেছে। মূল ঢাকার লোকজন এখন খুবই কম পাওয়া যাবে। ঢাকাতে পরিবার নিয়ে চাকুরীর জন্য চলে একটি পরিবারের মধ্যে আমার পরিবারটি রয়েছে। ১৯৭৪ সনের দিকে আমার বাবা চাকুরী নিয়ে ঢাকাতে আসেন। আমি ছেলে বেলা থেকেই বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মাইগ্রেন্ট করে ঢাকাতে আসা এই লোকজনকে কাছ থেকে দেখেছি। ঢাকাতে এসেই তার যেটি করে তা হল, নিজের এলাকার লোকজনকে খুঁজে। একজন দিনাজপুরের মানুষ ঢাকাতে এসে দিনাজপুরের লোকজনকে খুঁজে। তাদের সাথে “দেশী” ভাই নামক একটি সখ্যতা গড়ে তোলে। তাই আপনারা দেখবেন ঢাকাতে বিভিন্ন অঞ্চল ভিত্তিক সংগঠন গড়ে উঠেছে। রাজশাহী সোসাইটি, কুমিল্লা সোসাইটি ইত্যাদি ইত্যাদি। আবার দেখবেন অফিস আদালতে আমরা কোন কাজ নিয়ে কোথাও গেলে প্রথমেই খুঁজে বের করি সেখানে আমার অঞ্চলের কোন লোক আছে কিনা। সেই অঞ্চলের লোকজনের সাথে সহজেই পরিচিত হয়ে কাজটি করিয়ে নেবার প্রবণতা আমাদের মধ্যে দেখা যায়।



বিদেশে এসেও আমরা এই কাজটি করি। প্রথমে আমরা খুঁজে বের করি বাংলাদেশীরা কেউ আছে কিনা। কোন একটি স্থানে আমরা বেড়াতে গেলেও প্রথমে কাজ করি সেখানে বাংলাদেশী কেউ আছে কিনা। মনে করা যায় ক্যালিফোর্নিয়ায় বেড়াতে গিয়েছি, তা ব্যক্তিগত হোক আর অফিসের কাজই হোক, আমরা যাবার আগে ঠিকই খুঁজবো থাকবো সেখানে বাংলাদেশী কেউ আছে কিনা। আমাদের সংগঠনের ফেসবুক ও ইমেইল লিস্টে এমন অনুরোধ আপনারা প্রায়শই দেখবেন। নিজের দেশী লোকজনের সাথে পরিচিত হবার এই “পিরিত” আমাদের প্রচণ্ড রকমের।

বিদেশে কোন একটি স্থানে কিছু বাংলাদেশি একত্রিত হলে আমরা প্রথম যে কাজটি করবো তা হলে সেই স্থানে একটি বাংলাদেশী সোসাইটি গড়ে তুলবো। তারপরে কিছুদিন পরে আমাদের পরস্পরের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হবে, কে প্রেসিডেন্ট হবে কে নেতা হবে, কে সেক্রেটারি হবে তা নিয়ে। খেলাধুলার কোন আয়োজন না থাকলোও রয়েছে স্পোর্টস সেক্রেটারি, আরও হরেক রকম সেক্রেটারি। তারপরে কিছুদিন পরে আমাদের মধ্যে যখন দলাদলি শুরু হবে, তখন আমরা সেখান থেকে ভেঙ্গে আরেকটি সংগঠন করবো। ইঞ্জিনিয়াররা তৈরি করবে ইঞ্জিনিয়ার সোসাইটি ইত্যাদি ইত্যাদি।



কিন্তু কেন? আমার মনে হয় যেহেতু হাজার বছরে আমাদের রক্তে মিশে আছে বিভিন্ন জাতির মিশ্রণ তাই আমরা একত্রিত হবার মানসিকতা আমাদের মধ্যে গড়ে উঠেনি। যারা ইউরোপের দেশগুলি থেকে মাইগ্রেন্ট করে এই বাংলা –তে এসেছে তারা যে সমস্যার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে সেই সমস্যাগুলি এখনও আছে। হাজার হাজার বছর আগে তারাও নিজ নিজ “দেশী” লোকজনকে নিয়ে নিরাপদ বলয় তৈরি করতে চেয়েছে। যে অঞ্চলে সে এসেছে সেই অঞ্চলের স্থানীয় লোকজনদেরকে তারা বিদেশী হিসাবেই দেখেছে। একই ভাবে এখন ঢাকাতে যে লোকজন বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মাইগ্রেন্ট করে এসেছে তারাও নিজেদের অঞ্চলের লোকজনদের নিয়ে একটি নিরাপদ বলয় তৈরি করছে এবং আশেপাশের সবাইকে বিদেশী হিসাবেই সে গণ্য করছে। এই ধরনের মানসিকতা আমাদের গড়ে উঠেছে হাজার হাজার বছর ধরে। আর এই অভ্যাস থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারছিনা। তাই বিদেশে এসেও একই মানসিকতায় চলছি আমরা। একটি সংগঠনের মধ্যে থেকেও ভিতরে ভিতরে একে অপরকে বিদেশি মনে করছি, নিজের লোক বলে মনে করছিনা। এবং নিজের এই দলের পরিচয় ও তার সংগঠনের সত্ত্বাকে বেশী করে উঁচুতে তুলে ধরার মানসিকতা তৈরি হচ্ছে।



এবার দেখা যাক জাপানে। সেখানেও অনেক সংগঠনের সাথে কাজ করার সুযোগ হয়েছিল। কিন্তু জাপানিজদের মধ্যে এই পরিচয় নিয়ে সমস্যায় তাদের ভুগতে দেখিনি। তার কারণও খুব স্পষ্ট। সেখানকার মানুষ একটি জাতি সত্ত্বার। তাদের সবার পরিচয় একই, তারা সবাই জাপানিজ। সেখানেও চিন বা অন্যান্য দেশ থেকে মাইগ্রেন্ট করে আসা লোকজন রয়েছে, কিন্তু তারা সবাই মূল ধারার জাপানি সত্তার সাথে মিশে গিয়েছে।



আলাদাভাবে নিজেদের আঞ্চলিক পরিচয়কে তেমন একটি গুরুত্ব দেয়নি। আমি জাপানের যে শহরে বড় হয়েছি, সেখানেও চীন ও কোরীয় বংশোদ্ভূত লোকজনের কিছু সংগঠন রয়েছিল, কিন্তু তার কর্মকাণ্ড খুবই সীমিত ব্যক্তিগত পর্যায়ে নিজেরা নিজেরা পরিচিত হবার মধ্যে। তারা নিজেরা কোন সংগঠন গড়ে তোলার প্রয়োজন বোধ করেনি। কখনও ডিনার বা পিকনিক হয়েছে কিন্তু আমি দেখিনি সেখানে প্রেসিডেন্ট কে হবে সেক্রেটারি কে হবে না নিয়ে হৈ চৈ করতে। পিকনিকের সময় একজনকে দেখেছি দায়িত্ব নিতে, তা সবার কাছে চাঁদা সংগ্রহ ও অনুষ্ঠানের অন্যান্য কাজগুলি করতে। তাই সেখানে দেখেছি বয়স্ক লোকজনের থেকে তাদের স্কুল কলেজের ছেলেমেয়েরা এই কাজগুলি করতে। যেমন একটি জাপানে বসবাসরত চীনা বংশোদ্ভূত সংগঠনের পিকনিকে একবার যাবার সুযোগ হয়েছিল। সেখানে মাত্র স্কুলে পড়ে একটি কিশোর ছেলে আয়োজক হয়েছিল। আর তাকে সাহায্য করছিল তার স্কুলের সহপাঠীরা। পরবর্তী বংশধরদের কাছে তাদের জাতিসত্তার পরিচয়টি পৌঁছে দেবার অনুভূতিই কাজ করতো।

কিন্তু অপরদিক বাংলাদেশী এই সংগঠনগুলিতে আমি পরবর্তী প্রজন্মের কাউকে দেখিনি এই সমস্ত কাজে এগিয়ে আসতে। সংগঠনগুলির সব পদ বড়দের দখলে এবং বছরের পরে বছর ধরে একই নেতার সেখানে মাতবরি করার প্রবণতা বেশি কাজ করতে দেখেছি।



জাপানের কোবেতে আমরা স্থানীয় বাংলাদেশীরা ১৯৯৯ সনের দিকে এইরকম সংগঠন গড়ে উঠছিল এবং খুব কাছ থেকে তার গড়ে উঠা থেকে ধ্বংস হয়ে যাওয়া আমি দেখেছি। তখন ছাত্রীবস্থায় কাছে থেকে বাংলাদেশী কমিউনিটির কার্যকলাপ খুব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে এই বাংলাদেশী জাতিসত্তাটি বোঝার চেষ্টা করেছি। সেই সংগঠনটি ভেঙ্গে গেল শুধু মাত্র কে নেতা হবে এই নিয়ে গণ্ডগোলের কারণে। প্রথমে ভেবেছিলাম এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, কিন্তু যখন যে স্থানে গিয়েছি এই জিনিসের পুনরাবৃত্তি দেখেছি। সেখান থেকে ওসাকা, নারা, টকিও, নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন, ঢাকা, রাজশাহী, সিঙ্গাপুর সব জায়গাতেই একই জিনিসের পুনরাবৃত্তি দেখেছি। এই শহরগুলিতে আমি ছিলাম, বাংলাদেশি সংগঠনগুলিকে খুব কাছ থেকে দেখেছি।



তবে কিছু অঞ্চলে বাংলাদেশীদের মধ্যে তেমন দলাদলি দেখিনি। সেই অঞ্চলগুলি হল আমেরিকাতে ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া ও নাগোয়া। কারণ কি বলে মনে হয় আপনাদের? কারণ হল বাংলাদেশীরা এইখানে কোন সংগঠন গড়ে তোলেনি। সবাই ব্যক্তিগতভাবে মিলিত হয়ে কিছু করার চেষ্টা করে, যেমন আমি জাপানে চিন বংশোদ্ভূতদের দেখেছি। অনেকে বলে সংগঠন না থাকলে কোন ছাতার নিচে না আসলে কিছু করা যায়না। এটি একটি ভুল কথা, জাপানের নাগোয়াতে কোন সংগঠন ছাড়াই স্থানীয় বাংলাদেশীরা বৈশাখী, একুশে ফেব্রুয়ারি, বিজয় দিবস ইত্যাদি পালন করছে। কোন নেতা ছাড়া।



সিঙ্গাপুর, ২১ শে ফেব্রুয়ারি ২০১৩







মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৩৪

তোমোদাচি বলেছেন: আপনার পোষ্টের মূল বক্তব্যের সাথে একমত।
তবে প্রবাসে দেশী মানুষ খোজা বা একসাথে থাকতে চাওয়ার এই টান কে আমি শ্রদ্ধা করি!
অবশ্য নেতা হওয়া নিয়ে কামড়াকামড়ি অবশ্যই বিরক্তিকর!
ওসাকাবাসি, কান্সাইবাসি এখন (ছোট খাট সমস্যা গুলো এভোয়েড করলে) ... ভালই আছি!! ;)

২| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৩৮

তোমোদাচি বলেছেন: অফটপিকঃ
আপনি কি টোকিওর কোন সুপারভাইজারের কাছে পি এইচ ডি করেছেন, যিনি এখন কোরিয়া তে আছেন? প্রফেসরের নামটা ঠিক মনে পড়ছে না।

উনি গতবছর মালয়েশিয়া ইউ টি এম এ একটা কনফারেন্সে একটা পেপার প্রেজেন্ট করেছিলেন, যার কো-অথর ছিল আপনার নামের একজন বাংলাদেশী !

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২৮

ড. মশিউর রহমান বলেছেন: নাহ, তেমন কাউকে জানা নেই। আমি নাগোয়াতে পিএইচডি করেছি ২০০৫ এ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.