নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ডাচম্যানের খেরোখাতা

দি ফ্লাইং ডাচম্যান

© দি ফ্লাইং ডাচম্যান এই ব্লগের সব লেখার সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত। লেখকের অনুমতি ব্যাতিত কোন লেখার সম্পুর্ণ অথবা অংশ বিশেষ পরিবর্তন, পরিবর্ধন, পরিমার্জন অথবা সম্পাদনা করে কোথাও প্রকাশ করা যাবে না।ফেবুঃ দি ফ্লাইং ডাচম্যান

দি ফ্লাইং ডাচম্যান › বিস্তারিত পোস্টঃ

দ্য উইন্ডো (গল্প)

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৫









১.

রুমি নেহাতই সাধাসিধে একটা ছেলে। খুব ভালো ছাত্র নয় সে, মধ্যম গোছের কিংবা তার চেয়েও কিছু কম বলা যায়। লেখাপড়ায় রাজ্যের অনাগ্রহ। কলেজিয়েট স্কুলে ক্লাস ফাইভে পড়ে। পড়ালেখার প্রতি এই যে অনাগ্রহ, সেটা অবশ্য সবসময় ছিলো না। যখন রুমির মা বেঁচে ছিলেন, পড়ালেখায় ভালোই ছিলো রুমি। মা নিজে বসে ওকে পড়াতেন। ক্লাস থ্রিতে থাকতে একদিন হঠাৎ করেই মা মারা গেলেন, আর রুমিও খুব একা হয়ে গেলো। ওর কোন ভাই বোন নেই, আর বাবা মোটেও সংসারী মানুষ নন। উরণচন্ডী স্বভাবের এই মানুষটা কোনদিনও রুমির ভালোমন্দের খোঁজ খবর রাখেন নি। চাকরী-বাকরিতেও অনীহা বলে আর্থিক অবস্থাও রুমিদের বেশি ভালো না। মায়ের মৃত্যুর পর তাই রুমি বেশ নিঃসঙ্গ আর একা হয়ে পড়ে। অন্য ছেলেদের মত বিকেল বেলা আর খেলতে যেত না। সবকিছু থেকে নিজেকে অনেকটা গুটিয়ে নেয় সে।





এভাবেই চলছিল। ক্লাসে চুপটি করে পেছনের বেঞ্চে পড়ে থাকা আর স্কুল শেষে বাড়ি ফিরে দমবন্ধ গুমোট একাকীত্ব। হঠাৎ একটা ঘটনায় এই অলিখিত নিয়মে ছেদ পড়লো। ঘটনা টা কী?





ঘটনা হচ্ছে, রুমির হাতে একটা জানালা চলে এলো। সে এখন একটা জানালার মালিক।





তা জানালা আবার কারো আলাদা আলাদা থাকে নাকি? না, এ জানালা অন্যসব জানালার মত নয়। এ হচ্ছে অন্যরকম এক মজার জানালা! রুমির কাছে যে জানালাটা আছে, তাতে করে নাকি ভেসে যাওয়া যায় যেকোন দ্বীপে! ভেলা ভাসানো যায় অজানায়। ইচ্ছে করলেই চোখের নিমেষে পাড়ি জমানো যায় দেশ বিদেশ এমনকি হিমালয়ের চূড়োতেও! চাইলেই নাম না জানা হরেক ফুলের সুবাস নেয় যায়, এক পলকেই পৌছে যাওয়া যায় প্যারিস কিংবা স্পেনে।





এমনতরো নানা কথা চলতে থাকে রুমির ক্লাসমেটদের মধ্যে। ওর মধ্যে অবশ্য বিজুর গলাই বেশি জোড়ে শোনা যায়। রাফি অবশ্য দুই একবার আমি নিজের চোখে দেখেছি বলার চেষ্টা করে পরে চুপসে যায়। ক্যানো যেনো ওর কথায় কেউ ঠিক বিশ্বাস করতে চায় না। ওদের কথাগুলো আস্তে আস্তে ডালপালা গজায়। অবাস্তব আকারও ধারণ করতে শুরু করে। ক্লাসের মধ্যে কেউ কেউ এসব শুনে এক ফুৎকারে উড়িয়ে দেয়- শব্দ করে হাসে। আবার কেউবা কিতাবে লেখা কথার মত ভক্তিভরে বিশ্বাস করে। ব্যপারটা ওদের ক্লাসের দেউড়ি পেরিয়ে অন্যান্য ক্লাসে ছড়িয়ে পড়তে- একদিন সবাই মিলে পাকড়াও করে রুমি কে।





পাকড়াও করে অবশ্য বিশেষ কোন লাভ হয় না। ওর একটা জানালা আছে, এর বাইরে ওর কাছ থেকে একটা শব্দও বের করতে পারে না কেউ। ফুচকা-চটপটি, দশটাকার আইসক্রীম ললি কিংবা চকলেটের লোভ দেখিয়েও কোন লাভ হয়না। ক্যামনতরো সে জানালা, তার কোন হদিশ করতে পারে না কেউ। হতাশ হয়ে একটা সময় সবাই রুমিকে পটানোর আশা ছেড়ে দেয়। আস্তে আস্তে থিতিয়ে পড়ে রুমির জানালার কথা।





এরমধ্যে একদিন একটা সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতার নোটিশ আসে ক্লাসে। লেসলি ম্যাডাম- রুমিদের ক্লাস টিচার, তার ভারী কাঁচের চশমাটা নাকের উপরে বেশ খানিকটা সরিয়ে দিয়ে টেনে টেনে পড়েন- ৫ম শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ১০ জনের একটা দল পাঠাতে হবে প্রত্যেক স্কুল থেকে। প্রথমে জেলা পর্যায়ে, এরপর বিভাগ পর্যায়ে এবং সব শেষে পুরো দেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে প্রতিযোগিতাটি। প্রতি জেলা থেকে কেবল একটি স্কুলই চান্স পাবে বিভাগ পর্যায়ে অংশগ্রহণের জন্য।





নোটিশ পড়া শেষ হতে- দপ্তরি চলে গেলে লেসলি ম্যাডাম ঠোঁটে তাচ্ছিল্যের হাসি মেখে সমবেত ছাত্রদের কে দেখতে থাকেন। মাস ছয়েক হতে চলল এদের সাথে, ভালো ধারণা আছে সবার সম্পর্কে। তার ক্লাস থেকে অন্তত কেউ প্রতিযোগিতায় নাম লেখাতে চাইছে না- কারণ তাদের অতটা সাহসই নেই- কিংবা নিজেদের উপর ততটা ভরসাই নেই। ভাবতে ভাবতে জিজ্ঞেস করেই ফেলেন- কেউ আছো এই প্রতিযোগিতায় নাম লেখাতে চাও?





ম্যাডামের ঠোটে ঝুলে থাকা তাচ্ছিলের হাসি আর তার কথার পরে ক্লাসে এইমাত্র আবির্ভুত হওয়া সুনসান নীরবতাকে বুড়ো আঙ্গুল কিংবা কে জানে, হয়ত কড়ে আঙ্গুল দেখিয়ে পেছনের বেঞ্চ থেকে একটা হাত ওঠে। সকলের বিস্ফোরিত চোখের দৃষ্টি অনুসরণ করে তাকালে যা চোখে পড়ে তা আরো অনেকের সাথে সাথে ম্যাডামের কাছেও মিথ্যে বলে মনে হতে থাকলেও আচমকা সত্যি হয়ে ওঠে- রুমির শীর্ণ হাতটা দেখা যায়, চোখে ভয়মিশ্রিত শঙ্কা।





মৃদু একটা শোরগোল ওঠে ক্লাসে। কিংকর্তব্যবিমূঢ়তা কাটিয়ে ওঠার প্রয়াসে ম্যাডাম বলে ফেললেন- পারবে তুমি?





একটু চিন্তা করে প্রতিউত্তরে ছোট্ট করে "পারবো" বলে রুমি। ওর কন্ঠস্বরে ধ্বনিত হয় আত্নবিশ্বাস। ছুটির ঘন্টা বাজে কিছু পড়েই। টিচার্স রুমে ফিরে কী মনে করে যেন- হয়ত ওর আত্নবিশ্বাসী কন্ঠস্বর কিংবা অন্য কোন কিছু ভেবে ম্যাডাম ওর নাম সুপারিশ করে দেন। তারপর ক্লাসের বাকীদের সীমাহীন ঈর্ষার কারণ হয়ে ১০ জনের দলে জায়গা করে নেয় রুমি।





প্রতিযোগিতার শর্ত হচ্ছে- কী বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে তা আগে থেকে জানানো হবে না। এ কারণে মফস্বলের এ স্কুলে প্রতিযোগিতার জন্যে ছাত্রদের প্রস্তুত করতে গিয়ে বিশেষ কোন খাটুনি করেন না দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা। অংশগ্রহণই তাদের কাছে বড় বলে প্রতিভাত হয়।





পরের ঘটনা অতি সামান্য। জেলা পর্যায়ে সবাইকে পাশ কাটিয়ে রুমি নামের একট রোগাটে পলকা ছেলে প্রথম স্থান অধিকার করে। পুরস্কার নিতে গিয়ে আবেগাপ্লুত রুমি বলে- এ প্রাপ্তির গৌরব আমার একার না, আমার জানালারও প্রাপ্য! উপস্থিত জনেরা কিশোর প্রাণের বালখিল্যতা মনে করে হাসেন। আর ওর স্কুলের বাকি প্রতিযোগীরা অবাক হয়। এক কান দুকান করতে করতে সারা স্কুলে ছড়িয়ে পড়ে রুমির জয়ের কথা- তার চেয়ে বেশি ছড়ায় সেই জানালা- কয়েকদিনের মাঝেই আবার সবার মুখে মুখে সরে একটাই কথা।





সবাই মোটামুটি নিশ্চিত ওটা কোন জাদুমন্ত্র বলে প্রাপ্ত জানালা, যেটায় করে ইচ্ছা করলেই যেখানে সেখানে যেতে পারা যায়। ঐযে তোমরা পড়েছ না, আলাদীনের ম্যাজিক কার্পেটের কথা? ওইরকম আরকি। স্কুল শেষের জটলায় বা টিফিনে খেলাধুলা ফেলে সবাই আলোচনা করতে থাকে রুমির সেই অদ্ভুত আশ্চর্য্য জানালার কথা। কারো কারো কাছে রুমি হয়ে ওঠে দরবেশ গোছের কেউ। রোগাটে পলকা বলে যারা যারা ওকে অকারণে মারধর করত, নিজেদের শক্তিমত্তার পরিচয় দেখাত, তারা অনেকেই রুমিকে এড়িয়ে চলতে থাকে। অনেকে আবার এসে ক্ষমাও চেয়ে যায়। ওদের চোখে ভয়মিশ্রিত সমীহের দৃষ্টি দেখে রুমির অবশ্য মন্দ লাগে না! কেউ কেউ টিফিনের ডিমটা, পরোটা ভাজিটা যেচে পড়ে রুমিকে খাবার জন্যে সাধে- রুমির যে টিফিন আনা হয়ে ওঠে না এ তো জানা কথাই। এই সমীহ, তাকে ঘিরে এই উদ্দীপনা সবই রুমির কাছে অদ্ভুত লাগে। এসবই সুদূর আরাধ্য কিংবা স্বপ্নেরো বাইরের ব্যপার ছিলো একসময়- আজ সেটাই জলজ্যান্ত বাস্তব রুপ ধারণ করে। অতি উৎসাহীদের কেউ কেউ রুমিদের টিনশেড ঘরের জানালা দিয়ে উঁকিঝুকি মারার চেষ্টাও করে। কিন্তু কিছুতেই কোন কিনারা করতে পারে না।





২.

রুমির আজকাল বেশ অসহায় লাগে। সবার এই উটকো নির্যাতন ওর সহ্য হয় না। কি করবে ভেবে না পেয়ে শেষে খুব কাছের চার বন্ধুকে একদিন ওদের বাড়ি নিয়ে আসে রুমি। রাফি, সুমন, বিজু আর নাফিজ এক ঝটকায় রাজী হয়ে যায়। রুমি যদিও বলেনি ক্যানো, তবুও ওরা ধরেই নেয় এবার জানালা রহস্য ভেদ হচ্ছে। উৎসাহে তাই কমতি পড়ে না ওদের। দিনক্ষণ মত এসে হাজির হয়। চোখেমুখে কৌতুহল নিয়ে ওরা রুমিকে ঘিরে বসে।



রুমিদের বাড়ির দোতলায় এক প্রৌঢ় ভদ্রলোক থাকতেন। ৫০-৫২ হবে বয়স, চাকরী থেকে অবসর নিয়েছেন আগেভাগেই। বিয়ে থা করেননি, একাই থাকতেন। দেখাশোনা আর রান্নাবান্না করার জন্যে একজন লোক ছিলো কেবল। সারাদিন তাঁর ঘরের দরজা ভেজানো থাকতো, বাইরে বের হতেনই না বলতে গেলে। মা মারা যাবার পর একাকীত্ব কাটাতে কিংবা হয়ত কৌতুহলের বশেই একদিন রুমি ওপরতলায় উঠল, তারপর সাহস করে দরজা ঠেকে উঁকি দিলো। ভেতরে তাকিয়ে খুবই অবাক হয়েছিলো রুমি। স্যান্ডো গেঞ্জি আর লুঙ্গি পড়ে ছোট্ট একটা টেবিলে বসে ভদ্রলোক তখন নাকমুখ গুঁজে একটা বই পড়ছিলেন। ঘরের সমস্ত আলো নেভানো, কেবল একটা রিডিং লাইট জ্বলছে। দরজা খোলাতে উনি চশমাটা নাকের উপর ঠেলে চোখ কুঁচকে তাকালেন। রুমি ভাবলো উনি হয়ত এখুনি প্রচন্ড ধমক দিয়ে উঠবেন, কিন্তু তার বদলে হাতের ইশারায় ওকে কাছে ডাকলেন তিনি। কাছে এলে রুমিকে বসতে দিয়ে বললেন- তুমি রুমি তাই না? রুমি হ্যা সূচক মাথা নাড়ল। উনি একগাল হাসলেন। ভারি অদ্ভুত সে হাসি। হাসতে গিয়ে চোখ সরু করে ফেলছেন এবং নাকটা অল্প অল্প কাঁপছে। বললেন- আমার নাম জানো? রুমি না সূচক মাথা নাড়ল। উনি আরেকগাল হেসে বললেন- জানার কথাও নয়। মনে হয় কেউই জানে না- তারপর একটু চিন্তা করে বললেন- না বাড়িওয়ালাকে মনে হয় বলেছিলাম! যাকগে! আমি হচ্ছি শফিক কাকু। রুমি একটু হেসে ফেলল এই কাকু বলাতে। তারপর বললো- আপনার নামেই কাকু আছে? শফিকও হেসে ফেললেন। না তা নেই। ভাবলাম তুমি হয়ত কাকুই বলতে চাইবে। রুমি বলল- আমি তো ভাইয়া কিংবা দাদুও বলতে চাইতে পারি। এবারে হাহা করে হেসে ফেললেন শফিক। হুম! তা চাইতে পারো। ভাইয়া! আচ্ছা! কিন্তু দাদু বলার মত বুড়ো কী হয়েছি? হা হা! রুমিকে স্বীকার করতেই হলো সামনে বসে থাকা কাঁচাপাকা চুল আর খোঁচা খোঁচা দাড়ির এই লোকটিকে দাদু বলা যায় না মোটেও।





তোমাকে আমার পছন্দ হয়েছে ইয়াং ম্যান! আমার বন্ধু হবে? শফিকের এই প্রশ্নের জবাবে রুমি আবারো হ্যা সূচক মাথা নাড়ল। বেশ! তো এই হলো আমার স্টাডি। রুমি চারপাশে তাকিয়ে আবারো অবাক হয়ে গেলো। আসবাবপত্র তেমন নেই, ঘরের পুরোটা জুড়ে শুধু বই রাখার তাক আর বই। মেঝেতেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অনেক বই। পুরোপুরি বইপাগল একজনের পাল্লায় পড়েছে ঠিক বুঝতে পারলো রুমি।





সেই থেকে শুরু। বিকেলের পর বিকেল রুমি কাটিয়েছে শফিকের সাথে সেই স্টাডি তে বসে । রুমিকে অনেক মজার মজার কথা বলতেন তিনি। জ্ঞানের কথা বলতেন। আর চাইলেই তার ভান্ডার থেকে বই নিয়ে পড়তে পারত রুমি। মাঝে মাঝেই বই নিয়ে যেত পড়ার জন্যে। হেন রকম বই নেই যা তার সংগ্রহে ছিলো না। উনি বলতেন, জানো রুমি, আর্নেস্ট হেমিংওয়ে বলেছেন, বই হচ্ছে একটা মানুষের সবচেয়ে বড় বন্ধু। বই হচ্ছে তোমার যেমন ইচ্ছে তেমন কল্পনা করার চোখ, যেখানে ইচ্ছে সেখানে যাবার উড়োজাহাজ, নিজেকে দেখার আয়না। অন্যরা তোমাকে ছেড়ে যাবে, কিন্তু বই কখনো তোমাকে ছাড়বে না। তুমি শার্ল বোদলেয়ার এর নাম শুনেছো রুমি? উনি বলতেন- A book is a garden, an orchard, a storehouse, a party, a company by the way, a counselor, a multitude of counselors. আমি জানি তুমি হয়ত আমার কথার অনেকটাই বুঝতে পারছো না। পারার কথাও না। ওগুলো তুমি নিজের মত করে বুঝে নিও।





শফিক বলেছিলেন, ওর জন্যে খুব সুন্দর একটা উপহার আছে তাঁর কাছে। রুমি খুব খুশি হয়েছিলো। শফিক বলেছিলেন ওর আগামী জন্মদিনে ওকে দেবেন সেটা। ওর জন্মদিনের চার সপ্তাহ আগে একদিন মারা গেলেন তিনি। হার্টের অসুখে ভুগছিলেন, ফুসফুসেও পানি জমেছিলো। ঠিকমত চিকিৎসা করাননি কখনোই। ওনার মৃত্যুর পর কারা যেনো এসে ওনার বইগুলো সব নিয়ে গেলো। পরে ওনার কাজের লোকটার কাছে শুনেছে রুমি, সব বই তিনি নিজের গ্রামে একটা স্কুলের লাইব্রেরিতে দান করে গিয়েছিলেন অনেক আগেই। ওরাই নিয়ে গেছে।





রুমির জন্মদিনের ঠিক আগেরদিন ওর নামে একটা পার্শেল আসে। রুমির বাবা রিসিভ করেন। দুপুরে স্কুল থেকে রুমি ফিরলে ওকে ধরিয়ে দেন। রুমি বেশ অবাক হয়ে পার্শেলটা খোলে। ভেতরে ছিলো একটা চিরকুট আর-



"আর তোর জানালা?" রাফি ফস করে বলে বসে।



"হ্যাঁ।" অনেকটা ম্রিয়মাণ দেখায় যেনো রুমির চেহারা। হয়ত ওর শফিক কাকুর কথা বলে পড়ছে।



বিজু বলে- এত কিছু যখন বললিই, আমাদের একবার দেখাবি ভাই- দেখাবি তোর জানালাটা?





রুমি ওদেরকে ওর পড়ার টেবিলের কাছে নিয়ে যায়। ড্রয়ার খুলে বেশ মোটাসোটা একটা বই বের করে। বিজুই বইটা মেলে ধরে। ভেতরের পাতায় গোটা গোটা সুন্দর অক্ষরে লেখা- "প্রিয় রুমি, তোমাকে দিয়ে গেলাম অবারিত খোলা আকাশ আর যেমন ইচ্ছে তেমন করে পৃথিবীটা দেখবার জানালা। ভালো থেকো -শফিক"





বিজু, রাফি, সুমন, নাফিজের আপাত বিস্মিত চোখের দিকে তাকিয়ে রুমি অস্ফুট কন্ঠে বলে ওঠে- এটাই আমার জানালা!











উৎসর্গঃ উৎসর্গ কিনা জানিনা। যাকে ঘিরে গল্পটা লেখা তিনি শ্রদ্ধেয় ইমন ভাই। এমন অজস্র জানালা উনি আমার হাতে প্রায় জোর করে গুঁজে দিয়ে গেছেন। আমি জানিনা সেগুলো দিয়ে আমি কী করবো! আমি সত্যিই জানিনা!





ক্রিটিক চাই। লেখালিখি ভুলে গেছি।

মন্তব্য ৪০ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৪০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:২৫

শিব্বির আহমেদ বলেছেন: ১ম প্লাস দেয়ার লোভ সামলাতে পারলাম না । সজাসুজি প্রিয়তে । ক্রিটিসিজমে যাওয়ার যোগ্যতা নাই , শুধু বলবো - গল্প ভাল লেগেছে ।
নিয়মিত লেখা চাই ।
নিয়মিত গল্প না পেলে প্লাস ফেরত চাই ।

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৪৪

দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: নিয়মিত! এই শব্দটাই আমার সাথে যায় না যে! আচ্ছা চেষ্টা করে দেখি!

অনেক ধন্যবাদ!

২| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১৪

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: প্রিয়তে.....এবং নিয়মিত গল্প চাই!!!!!!!!

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:০৭

দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ!

৩| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫০

মামুন রশিদ বলেছেন: গল্পের মোরাল আর উৎসর্গের ঋষিতুল্য মানুষটির নাম দেখে আর ক্রিটিক করার ভাষা খুঁজে পেলাম না ।


শুধু অনেক অনেক ভাললাগা ।

++++++++++++++++

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:১১

দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ!

৪| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০৩

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ভালো লেগেছে অনেক।

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:১১

দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ প্রোফেসর :)

৫| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১৬

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: খুব ভাল লেগেছে ৪র্থ প্লাস।

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:১২

দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ! আপনার প্রোফাইল ফটোর ব্যাক্তিটি আমার বড়ই ভালোলাগার।

৬| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৫২

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
আজকে অনেকগুলো ইউনিক থিমের গল্প পড়লাম! সামুতে সুন্দর গল্পের হাড় বাড়ছে দেখে ভাল লাগছে। :)

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:১২

দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: সামুর আগের দিনগুলো দেখলে তো তাহলে ঈর্ষা করতেন! :)

৭| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:২১

শান্তির দেবদূত বলেছেন: প্রিয় ডাচম্যান, তুমি বরাবরই ভাল লেখতে, এখনো লেখ।

পুরা গল্পে টান টান উত্তেজনা ছিল, শেষে এসে জানাল রহস্য উম্মোচন হল, এমনটা আশা করিনি। আমি ভেবেছিলাম সাইকোলজিক্যাল কোন ব্যাপার স্যাপার থাকবে, কিন্তু অতিপ্রাকৃতিক কিছু না থাকাতে বরং গল্পটা আরও বাস্তব ও জীবনমুখি মনে হয়েছে।

বাক্য গঠনে কিছুটা দূর্বলতা চোখে পড়ল, তবে সেটা কিছু না, সব মিলিয়ে চমৎকার একটা কিশোর সাহিত্য বলা যায় এটাকে।

শুভেচ্ছা রইল।

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:৫৮

দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: রহস্য উন্মোচন হয়েছে ডিরেক্টরের ঠেলায়! :/ দোয়া রাখবেন এটা সামনে শর্টফিল্ম হবার কথা!

কিশোর সাহিত্য ভেবেই লেখা :) অনেক ধন্যবাদ দেবদূত ভাইয়াকে। বহুদিন পর নিয়মিত হচ্ছেন দেখে দারুণ খুশি!

৮| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:২৬

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: ভালো লাগলো ভাইয়া। আশা করি লেখাটা চালিয়ে যাবেন।

অনেক শুভকামনা রইল।

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:৫৯

দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: চেষ্টা করবো। অনেক ধন্যবাদ :)

৯| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৫৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ভালো লেগেছে পড়তে। রুমির একটা নিজের পৃথিবী গড়ে ওঠার গল্প, আত্মবিশ্বাসের গল্প। আমি অনুমান করতে পেরেছিলাম রুমির জানালা টা কী হতে পারে! তবুও ভালো লেগেছে। শিশু কিশোরদের নিয়ে লেখালেখি কমই হয়। আপনি ব্লগে নিয়মিত হলে ভালো লাগবে, আপনার লেখা পড়ার আগ্রহ প্রকাশ করলাম।

শুভকামনা রইলো।

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:০১

দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: শিশু কিশোরদের নিয়ে লেখালিখি কম হয় কথাটা ঠিক। মনে হয় শিশু সাহিত্য লেখা মোটেও সোজা কিছু না সেটাও একটা কারণ! আগ্রহী পাঠক বরাবরই উৎসাহী করে তোলে :) অনেক ধন্যবাদ!

১০| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:২৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: খুব ভালো লাগলো ইমরান। এতদিন পরে লেখলা তার কোন ছাপ নাই। ঝরঝরে লেখা। অঞ্জন দত্তের একটা গান মনে পড়লো "আমার জানলা দিয়ে আমার পৃথিবী"। শুভকামনা।

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:০১

দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: ছাপ নাই?? আচ্ছা। না থাকলেই ভালো :)
অনেক ধন্যবাদ হামা ভাই!

১১| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২০

অ্যানোনিমাস বলেছেন: ইমন ভাইকে মিস করি আমিও। সত্যই ক্রিটিক চাও নাকি ;)

লেখা তো ভালোই লাগলো :/

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:৪৯

দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: ভাইয়া সত্যিই চাই!

শেষের টা কী ক্রিটিক? :/

১২| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৩৮

অ্যানোনিমাস বলেছেন: হ B-))

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:০৭

দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: মাইচ্ছে :/

১৩| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৫৯

মাহমুদা সোনিয়া বলেছেন: অনেক ভালো লিখেছো। পড়ে অনেক ভালো লাগলো।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:১৬

দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপু! লেখালেখি একদম হচ্ছে না!

১৪| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:০২

শায়মা বলেছেন: আসলেই ইমনভাইয়া ছিলো সেই জানালা!


আর তোমার গল্পটা অনেক অনেক ভালোলাগার মত!:)

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২০

দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ শায়মাপু। :)

পোস্ট করার তারিখটা দেখে একটু চমকালাম। আগে খেয়াল করিনি। ৬ সেপ্টেম্বর!

এই নামে ব্ল্যাকের একটা গান আছে, উৎসবের পর অ্যালবাম এ।


যদি বলি তুমিই সব
তবে মিথ্যে বলা হয়
তোমাকে আমি ক্যানো চিনতে পারিনি
দুচোখের আলোয়
কখনো ভাসিনি
তবুও তোমার টানে জড়াই এখানে

আমি এখন মগ্ন আলোকিত আধারে
তোমার স্বরূপ বুঝে শিহরিত...

ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করেছিলাম এটার নাম ৬ সেপ্টেম্বর ক্যানো। রহস্য করে বলেছিলেন- আছে তো একটা কিছু কাহিনী! দেখা হলে বলবো।

দেখা হলো না!

১৫| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৩০

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


ভালো লেগেছে অনেক।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০০

দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে! :)

১৬| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:১০

শায়মা বলেছেন: ইমনভাইয়া তো এমনই ছিলো!


অনেক চাপা!!!


বাচ্চাদেরকে অনেক ভালোবাসতেন আর শুধু সে বিষয়েই একটু কথা বের হত উচ্ছলতায়। আর সবকিছুতেই ভীষন হেল্পফুল কিন্তু এমন চাপা স্বভাবের যে না বললে জানা হবেনা কখনও।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০২

দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: :(

১৭| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৫৮

প্লিওসিন অথবা গ্লসিয়ার বলেছেন: দূর্দান্ত। আমার জানালা আমার পৃথিবী :#)

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:৫২

দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: :) থ্যাঙ্কস!

১৮| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:৪৬

শাহরিয়ার রিয়াদ বলেছেন:
খুব ভাল লেগেছে ডাচম্যান।

বইয়ের দোকানে ঢুকলে ইচ্ছে করে দোকানটা সুদ্ধ বাসায় তুলে নিয়ে আসি।

শুভ রাত্রি।

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৪৫

দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ!

আপনারা সবাই দেখি লেখা কমিয়ে দিয়েছেন :/ তাহলে কার লেখা পড়বো? :(

শুভ রাত্রি!

১৯| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৫

সমুদ্র কন্যা বলেছেন: ছোটদের নিয়ে কিছু লেখাটা খুব কঠিন। একবার বড় হয়ে গেলে ছোটদের মনোজগৎটা ছুঁয়ে দেখা আর সম্ভব হয় না বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই। তুমি সেই কঠিন কাজটাই খুব সহজভাবে করে ফেলেছো। আর পড়ে মোটেও মনে হচ্ছে না যে বহুদিন পর লিখছো। সাবলীল সহজ সুন্দর...

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৪৬

দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: আসলে কী আপু, আমার মধ্যে একটা ১৬ বছরের বাচ্চা বাস করে :)

ওর উপর ভর করে লিখে ফেলেছি :)

অনেক ধন্যবাদ!

২০| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২২

সায়েম মুন বলেছেন: গল্প খুব ভাল লেগেছে। যে লোকটা এত সব জানালা করে দিয়ে গেছেন তা ভোলার নয়। তাই উৎসর্গ পত্রটা ভাল লেগেছে।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১৬

দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: ধন্যবাদ মুন ভাইয়া :)

ইমন ভাইকে খুব মিস করি!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.