নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দ আর নৈশব্দ্য...

s

মেহেদী আনডিফাইন্ড

শব্দ আর নৈঃশব্দ্য দুটোই পছন্দের....

মেহেদী আনডিফাইন্ড › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশ ক্রিকেটের ২০১২; জেগে উঠার খেরোখাতা

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:০৮

চলে যাচ্ছে ২০১২, তবে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে দিয়ে গেলো অনেক কিছুই, দিয়ে গেলো নিজেকে তুলে ধরার দিনগুলো, দিয়ে গেলো দম্ভকে গুড়িয়ে দেবার মারনাস্ত্র এবং অবশ্যই প্রতিবাদের অনুপ্রেরনা। বছর শেষে হিসাব করছি কি পেলাম, কি হারালাম । আপনি আমন্ত্রিত...







বছরের শুরুতেই বাকি বিশ্বের মতো বাংলাদেশও নিজেদের রাঙিয়ে নিলো টি-টোয়েন্টির বর্নচ্ছটায়। টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের ঝালিয়ে নিতে বাংলাদেশের ক্রিকেট পেলো নতুন ক্ষেত্র। ১০ ফেব্রুয়ারী মাঠে গড়ায় বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি সংস্করণ “বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ”। জাতীয় দলের পাশাপাশি আঞ্চলিক খেলোয়াড়েরাও যেন পেলেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির মতো স্বাদ। তারপর ব্যাট বলের লড়াই। ক্রিস গেইলের ধংসাত্নক রূপ। বিশ্বনন্দিত ক্রিকেটারদের পদভারে উন্মোচিত নতুন অধ্যায়। যার প্রথম চ্যাম্পিয়ন ঢাকা গ্লাডিয়েটরস।





বিপিএলের প্রথম আসরের ম্যান অফ দ্যা টুর্নামেন্ট হলেন বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ফাইনালে ঢাকার সাথে অপরাজিত ৮৬ রানের যুদ্ধ, ১১ ম্যাচ খেলে ২৮০ রান আর ১৫ টা উইকেট।





এরপর আরেক মহাকাব্যের গল্প। এশিয়া কাপ। বাংলাদেশ দলের কাছে যেখানে স্বাভাবিক চাওয়াটা ছিল সন্মানজনক খেলার, সেখানে তারা কাপিয়ে দিলো গোটা বিশ্বকেই। প্রথম ম্যাচে একটুর জন্য হেরে যাওয়া (পাকিস্তানের সাথে ২১ রানে)।

এরপর শুধু রূপকথা। প্রতাপশালী ভারতকে দৌর্দন্ড প্রতাপে হারিয়ে দেয়া।



যে ম্যাচে ক্রিকেট লিজেন্ড লিটল মাষ্টার শচীন হাঁকালেন নিজের শততম সেঞ্চুরি। ভারত বাংলাদেশের সামনে তুলে দিলো ২৮৯ রানের দেয়াল। তবে এই ম্যাচে ভারতকে উল্লাসের উপলক্ষ্য দেয়নি টাইগারেরা।



জহুরুল, তামিমের দায়িত্তপূর্ন শুরু। সাকিবের বিধ্বংসী ব্যাটিং, অতঃপর ভুল সিদ্ধান্তে সাকিবের রোষানল থেকে ভারতের বেঁচে যাওয়া। নাসিরের সময়োচিত ইনিংস এবং শেষদিকে ডেপুটি মাহমুদুল্লাহকে নিয়ে অধিনায়কের মুশফিকের মূহুর্মুহ আক্রমন। ফলাফল, ভারতের বিস্ময়াবিভুত আত্নসমর্পন। জয়ধ্বনিতে কেঁপে উঠা বাংলাদেশ। ৫ উইকেটের জয়।



এরপরের ম্যাচেও তামিমের ৫৯, সাকিবের অলরাউন্ড নৈপুন্যে(৫৬ রান, ২ উইকেট) আরেক পরাক্রমশালী শ্রীলঙ্কার হার। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ এমন একটি মর্যাদাপূর্ন আসরের ফাইনালে।



ফাইনালে মাত্র ২ রানের হার। কি যেন পেতে পেতেও হারিয়ে গেলো। সাকিব, তামিম, মুশফিকদের আবেগের সেই অশ্রু ভাসিয়ে দিয়ে গেলো বাংলাদেশের প্রতিটা মানুষকেই।



শিরোপা জিততে না পারলেও হৃদয়টা ঠিকই জিতে নিলো বাংলাদেশ। এই কান্নাই যেন ডেকে দিলো আগামী দিনের বার্তা। এটাই হয়তো হয়ে থাকবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের পালাবদলের টুর্নামেন্ট। ক্রিকেটবিশ্বে সাড়া পড়লো।

রেকর্ডের বরপুত্র ব্রায়ান লারা যেন বাংলাদেশের হয়েই ঘোষনা দিলেন,

“অপেক্ষায় থাকো বিশ্ব, বাংলাদেশ আসছে নতুন হূমকি হয়ে”।







এক, দুই তিন, চার(৬৪, ৭০, ৫৯, ৬০)...গুনে গুনে উঠে এলো চার আঙ্গুল। চার অর্ধশতকের প্রতিনিধি হয়ে উপেক্ষার জবাব দিলেন বছর আলোচিত উদযাপনে। দল থেকে বাদ পড়ার পর আবারও ফেরা, ফিরেই টানা চার অর্ধশতক। জবাবটাই যেন বলে দিচ্ছিলো কতটা আত্নতৃপ্তি ভর করেছিলো তামিমের মনে।



এশিয়া কাপেও যথারীতি সিরিজসেরার পুরষ্কার উঠলো এই মর্ত্যের সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের গলায়। ৪ ম্যাচে (৬৪+৪৯+৫৬+৬৮) = ২৩৭ রান এবং ৬ উইকেট।



জুনের ১২ তারিখে জিম্বাবুয়ে, সাউথ আফ্রিকার সাথে ট্রাই নেশন সিরিজের অম্লমধুর স্মৃতি।



জুলাই ১৮ তারিখে আয়ারল্যান্ডকে বাংলাওয়াশ। নেদারল্যান্ডকে হারানো, অবশ্য স্কটল্যান্ডের মতো পচা শামুকেও পা কেটেছে বাংলাদেশের।



সেপ্টেম্বরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তানের কাছে হার।



নভেম্বরে আসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ২ টেস্টেই বাংলাদেশের জিততে জিততে হেরে যাওয়া।

ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে ড্যারেন সামির দম্ভোক্তি “আমরা ৫-০ তে সিরিজ জিততে চাই”।

সহ্য করেনি বাংলাদেশ। প্রথম ২ ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নাকানি চুবানি খাইয়ে জেতা। এরপর সাময়িক ছন্দপতন। অতঃপর পঞ্চম ম্যাচে জাত চিনিয়ে দিলো বাংলাদেশ। ড্যারেন স্যামির স্বপের ৫-০ কে ৩-২ এ রূপান্তর করে উল্লাস করলো বাংলাদেশ।



এই সিরিজ থেকে বাংলাদেশ অনেক প্রাপ্তি।

>অভিষেক টেস্টেই সোহাগ গাজীর ৯ উইকেট

>১০ নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেকে আবুল হাসানের সেঞ্চুরি



>মাহমুদুল্লাহর জেগে উঠা

>সাকিবের ১০০ তম টেস্ট উইকেট

>নাইমের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি

>আবুল হাসানের সাথে মাহমুদুল্লাহর রেকর্ড পার্টনারশীপে ভেঙ্গে গেলো শত বছরের ইতিহাস

>একজন মমিনুল হকের আবির্ভাব

>তামিমের যোগ্য সঙ্গী হিসেবে আনামুল হকের আগমন এবং অকুতোভয় সেঞ্চুরি।

প্রাপ্তির খাতায় আর কি লাগে?



ক্রিকেটীয় প্রাপ্তির খাতায় যখন এতকিছু তখনই যেন শঙ্কা নেমে এলো ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে। আনন্দের উৎস, ভালোলাগা-ভালোবাসার উৎসগুলোকে নাকি পাঠানো হবে মৃত্যুপুরীতে।



আমরা অকৃতজ্ঞ নই, সেটাই যেন প্রমান হলো ক্রিকেটপ্রেমীদের এই সফরের বিরুদ্ধে একের পর এক প্রতিবাদে। ফেসবুকে প্রতিবাদী কমিউনিটি, ভালোবাসা ফিরিয়ে দেয়ার তাগিদে উচ্চস্বর। সর্বস্তরের মানুষ, ব্লগ, অনলাইনভিত্তিক বিক্ষোভ, মানব বন্ধনে অবশেষে আমরা দেখেছি আলোর মুখ। আজ এলো সেই কাঙ্ক্ষিত ঘোষনা, মৃত্যুপুরী পাকিস্তানে যাচ্ছে না বাংলাদেশ। বছরের একেবারে শেষে চূড়ান্ত আনন্দের উপলক্ষ্য।



২০১২ ক্রিকেটকে দিলো অনেক কিছুই, দিলো ক্রিকেট পরাক্রমশালী হবার স্পষ্ট আভাস। সেই পথ হোক আরও বিস্তৃত, শুভকামনা বাংলাদেশ ক্রিকেট দল...





মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.