নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দ আর নৈশব্দ্য...

s

মেহেদী আনডিফাইন্ড

শব্দ আর নৈঃশব্দ্য দুটোই পছন্দের....

মেহেদী আনডিফাইন্ড › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনন্য সাহিত্যপত্র "তীরন্দাজ"

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২৭



লিটল ম্যাগাজিনের সবচেয়ে উৎকৃষ্ট উদাহরণটি আমার হাতের কাছেই আছে। বুদ্ধদেব বসুর কবিতা। একা হাতে কি অসাধারণ ভাবেই না দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে পত্রিকাটি তিনি সম্পাদনা করে গিয়েছিলেন। আর আধুনিক বাংলা কবিতার প্রধান প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছিল বুদ্ধদেবের ত্রৈমাসিক “কবিতা” এটি বলার অপেক্ষা রাখেনা। এমনকি প্রুফ রিডিংগত দিক থেকেও এমন নিখুঁত সাহিত্যপত্র বাংলাদেশ আর দেখেনি।



আর এরপর আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয় যে নামটি আসে, সেটি হল সিকান্দার আবু জাফরের “সমকাল”, সে সময়ের সাহিত্য আন্দোলনের পুরোধা হয়ে উঠেছিল পত্রিকাটি।



উপরের কোন ব্যপারেরই আমি প্রত্যক্ষদর্শী নই। আমার সময় একবিংশ শতাব্দীতে। আজ দু একটা না, চারপাশে অজস্র লিটল ম্যাগ আর সাহিত্যপত্রের ভিড়। মজার ব্যপার, এত কিছু থেকেও যেন ঠিক অনুভব করা যায়না যে কিছু একটা অন্তত আছে। এই যে একটা করে লিটল ম্যাগ বা সাহিত্যপত্র আসে, আর হারিয়ে যায় এর কারণ কি?

পত্রিকা সংশ্লিষ্টদের অর্থজনিত সমস্যা? আন্তরিকতার অভাব? নাকি পরিশ্রম বিমুখতা? হিসেব করে দেখেছি, ওই তিনটি বাধার পাহাড়ের সমন্বয়েই আজকের সাহিত্যপত্র জগৎটি যাচ্ছে একটি দুরাবস্থার ভিতর দিয়ে। তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা যেটি, আমার মনে হয় সেটা কর্মস্পৃহার অভাব।



একদল তরুণ খুব উৎসাহ নিয়ে, গাঁটের টাকা খরচ করে একটা পত্রিকা বের করে ফেলল। দেখা গেল পত্রিকাটি আসলে তেমন একটা কাটতি পায়নি। তো থেমে গেল ওটার হৃদস্পন্দন। আবার দেখা গেল, কাটতি ভাল-মন্দ ব্যপার না। একটা সংখ্যা প্রকাশের জন্যে যে ঝক্কি সামলাতে হয়, সেটির ভয়ে কর্মিবাহিনি পত্রিকাটি থেকে দূরে সরে যায়। ওখানেই সম্ভাবনার মৃত্যু!



তবে সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয়টি নিয়ে বলার আছে। আমাদের দেশের লিটলম্যাগ চর্চা ঠিক এই কারণেই মূলত থমকে আছে। দশ-বারোজন মিলে নিয়মিতই একটি পত্রিকা বের করা হয়। দেখা যায়, সেটি পরিচিতজনাদের গন্ডি ছাড়াতে পারেনা। নইলে ঘুরে ফিরে গত এক বছরে এ দেশে প্রকাশিত হওয়া লিটল ম্যাগগুলো যাচাই করে আমাকে হতাশ কেন হতে হবে? কিছু মুষ্ঠিবদ্ধ লেখকেরাই ঘুরে ফিরে সকল লিটল ম্যাগ গুলিতে আছেন। তৈরী হয়ে গেছে লিটল ম্যাগের লেখক টাইপ একটা ধারা। এমন হওয়াটা মনে হয়না কাম্য! তাহলে কি এটা দাঁড়াচ্ছে না যে, আসলে আমাদের দেশে নতুন লেখক তৈরী হচ্ছেনা? ব্যপার মোটেই সেরকম না। লেখক তৈরী হচ্ছে। অনলাইন প্লাটফর্মগুলিতে খুজলেও অনেক ভালমানের লেখক ও লেখার সন্ধান পাওয়া যাবে। কিন্তু তারা হারিয়ে যাচ্ছেন কেন? লিটল ম্যাগগুলির কি দ্বায়িত্ব না, স্বজনপ্রিতি বাদ দিয়ে সৃষ্টিশীলতাকে প্রাধান্য দেওয়া?



লিটল ম্যাগাজিনের উদ্দেশ্যই আসলে ছিল প্রথাবিরোধি হওয়া, তারকাদের বদলে অখ্যাত অথচ উজ্জ্বলদের সামনে তুলে ধরা। সে উদ্দেশ্য পূরণে আমাদের সাহিত্পত্র জগৎ কতটা অগ্রসর হয়েছে ভেবে দেখার বিপুল অবকাশ আছে!



এখন মূল প্রসঙ্গে আসি। তীরন্দাজ নামে একটি সাহিত্যপত্রের কাজ আমরা হাতে নিয়েছি। জানা নেই, সেটি একটি লিটলম্যাগাজিনের মূল উদ্দেশ্য কতটা পুরণ করতে পারবে। তবে স্বপ্ন দেখতে কখনও ভয় লাগেনা, পিছপা হয়ে যাওয়াটাও ধাতে নেই। এটাই যা ভরসা। আমরা সৃষ্টিশীলতা নিয়েই কাজ করতে আগ্রহী। নবিন-প্রবীন কোন রকমের ভেদটা এখানে থাকবেনা। কারণ একটি লেখা যখন সাহিত্যের বুকে স্থান করে নেয়, বলার কোন অবকাশ থাকেনা সেটি কোন তরুণ লেখকের লেখা নাকি প্রবীনের।



তীরন্দাজকে আমরা এগিয়ে নিতে চাই একে অপরের হাত ধরাধরি করে। সবাইকে সাথে নিয়েই আমরা পথ চলতে চাই। সে কারণেই সকলের এগিয়ে আসাটা জরুরি। একটি পত্রিকার জন্মলগ্নে লোকবলের প্রয়োজন, অর্থযোযনার প্রয়োজন, প্রয়োজন পর্যাপ্ত মেধা আর জীবনিশক্তির। আর দরকার সকলের ভালবাসা এবং শুভকামনার। আন্তরিক পরিচর্যার।



তাই এগিয়ে আসুন তীরন্দাজকে এগিয়ে নেবার জন্য। আমরা বলছিনা, তীরন্দাজ সবকিছুকে বদলে দিতে আসছে। বলছিনা- ভেঙ্গে দিতে আসছে যত পুরানোকে। আমরা বলছি, তীরন্দাজ নতুনের। সে যাই করুক না কেন, ভাল কিবা মন্দ, সেটি হবে আনকোরা, নতুন, এটিই প্রত্যাশা, এটিই আমাদের লক্ষ্য।



নিজের সেরা লেখাটি যতদ্রুত সম্ভব পাঠিয়ে দিন আমাদের ঠিকানাতে। লেখা ছাপা হবার একটাই মানদন্ড আমাদের কাছে। সেটি হল মানসম্মতা।

সকলের সুবিধার্থে তীরন্দাজের ইমেইল এড্রেস দেওয়া গেল এখানে। লেখা পাঠান এই ঠিকানাতেই- [email protected]

এর মাঝেই অবশ্য আরা বেশ কিছু লেখা পেয়ে গেছি আমরা। পরিতাপের বিষয়, অনেক লেখাই সরাসরি মেইলে পেস্ট করা। এটা সম্পাদনা পরিষদের জন্য বিরক্তিকর এবং কষ্টকর। অবশ্যই লেখা পাঠাবেন ওয়ার্ড ফাইলে। সুতন্নি এমজে ফন্টে।



যোগ দিতে পারেন তীরন্দাজের ফেসবুক ফ্যান পেইজেও- Click This Link

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২৯

বোকামন বলেছেন:
শুভকামনা রইলো আপনাদের জন্য ।

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৪০

মেহেদী আনডিফাইন্ড বলেছেন: ধন্যবাদ :)

২| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:০০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: একটা লিটল ম্যাগ গড়ে ওঠা, হারিয়ে যাওয়া -- এই বিষয়টা খুব সুন্দর করে লেখা হয়েছে। প্রথমত যে কোনও কাজ শুরু করে মসৃন ভাবে চলার রাস্তাটা তৈরি করা এতোটা সহজ কারো পক্ষেই একবারে সম্ভব হয় না। আর লোকবল, অর্থবল এটা একটা ইস্যু -- দুই একটা সংখ্যার ম্যাগ বের করার পরেই যে কারণে পথ চলা থেমে যায়। তাছাড়া সম্পাদনার একটা ঝামেলা থেকেই যায়।

তীরন্দাজের পথ চলার জন্য রইলো শুভকামনা।

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২৪

মেহেদী আনডিফাইন্ড বলেছেন: ধন্যবাদ আপু
তীরন্দাজের এই পথচলায় আপনাদের পাশে চাইবো

৩| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:০৮

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
শুভ কামনা।

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২৫

মেহেদী আনডিফাইন্ড বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৩২

পরপ্রেমী বলেছেন: আপনাদের এই উদ্যোগের সফলতা কামনা করি। তবে একটা অনুরধ গতানুগতিক আধুনিক হয়ে উঠবেন না অনুগ্রহ করে। আমি ছোট বেলায় একটু আধটু লিখতাম। বেশ কিছু লেখা ছাপানো হয়েছিল একটা স্থানীয় লিটল ম্যাগ এ। ধিরে ধিরে ঐ পত্রিকার সাথে আমি জড়িয়ে পড়ি এবং দেখতে পাই স্বজনপ্রীতি, অর্থ আর রাজনীতির ভিড়। এতো ভিড়ে অনেক ভালমানের লেখা আমাকেই ময়লার বাক্সে ফেলতে হয়েছে কেননা আমি ছিলাম ছোট। তাই পারলে লেখক না চিনে আগে লেখা দেখবেন, তার পর লেখক। তবেই হয়ত সেই আগের যুগের পুনরাবৃত্তি ঘটবে।

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২৭

মেহেদী আনডিফাইন্ড বলেছেন: তবে একটা অনুরধ গতানুগতিক আধুনিক হয়ে উঠবেন না অনুগ্রহ করে।

আমরা আসলে প্রথা ভাঙতেই এসেছি। লেখকের থেকে লেখার মানটাই বড় করে দেখার চেষ্টা করে যাবো। নামেজ ওজন আমরা অনেক বেশি চাইবো তীরন্দাজের মানের ওজন বাড়ুক। সেক্ষেত্রে আপনাদের এমন আত্নিক সহযোগিতা/পরামর্শ কাম্য, ভালো থাকুন

৫| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৫৪

পরপ্রেমী বলেছেন: ওহ, আপনাদের এখানে লেখা পাঠানোর কি কোন নির্দিষ্ট বিষয় আছে নাকি যেকোনো বিষয়ের লেখা পাঠানো যাবে?

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২৮

মেহেদী আনডিফাইন্ড বলেছেন: আমরা সাহিত্যের স্মভাব্য সব শাখাতেই হাটতে আগ্রহী, আপনি যেকোন ব্যাপারেই লেখা পাঠাতে পারেন

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২৯

মেহেদী আনডিফাইন্ড বলেছেন: *সম্ভাব্য

৬| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:০৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ‘তীরন্দাজ’-এর সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করছি।

লিটল ম্যাগাজিনের উদ্দেশ্যই আসলে ছিল প্রথাবিরোধী হওয়া, তারকাদের বদলে অখ্যাত অথচ উজ্জ্বলদের সামনে তুলে ধরা। সে উদ্দেশ্য পূরণে আমাদের সাহিত্যপত্র জগৎ কতটা অগ্রসর হয়েছে ভেবে দেখার বিপুল অবকাশ আছে!

প্রতিটা লিটল ম্যাগেরই একেকটা লক্ষ্য থাকে। তবে সামগ্রিকভাবে লিটল ম্যাগের লক্ষ্য প্রথাবিরোধী হওয়া- এ কথাটা সর্বাংশে ঠিক নয় বলে মনে করি। আধুনিক কালে এদেশে বড় দৈনিকের সংখ্যা প্রচুর- ধরে নিই ৫০টা। এতে প্রতি সপ্তাহে যে সাহিত্য প্রকাশিত হয় তাতে দেখা যায় যে গড়ে ৫-৭ জন লেখক-কবির গল্পকবিতা ছাপা হচ্ছে, এবং তাঁরা সচরাচর দেশের প্রথম সারির সাহিত্যিক। তাহলে উঠতিদের জায়গা কোথায়? এই উঠতিদের জন্যই মূলত লিটল ম্যাগ আন্দোলন চলে আসছে বহুকাল ধরে। কিন্তু বাস্তবক্ষেত্রে দেখা যায় যে, লিটল ম্যাগেরও একটা বড় অংশ চলে গেছে বড়দের দখলে। কারণ, প্রত্যেক সম্পাদকই চান তাঁর লিটল ম্যাগে কোনো তারকা-লেখক লিখুন, যাতে তাঁর ম্যাগের স্টেটাস সম্পর্কে সবাইকে জানানো যায়। আর লেখকমাত্রই প্রথাবিরোধী, প্রত্যেক লেখকই তাঁর সর্বশেষ লেখাটায় এমনকি তাঁর আগের লেখাটা থেকেও বেরিয়ে আসতে চান- কিন্তু সাহিত্যের প্রথা এমনই সুদৃঢ় যে প্রথাবিরোধী মুখে বলা যতটা সহজ, নিজের লেখায় প্রথা ভাঙার প্রমাণ দেয়া তার চেয়ে বহুগুণ কঠিন। এজন্য আমরা ঘুরেফিরে রবীন্দ্র-নজরুল-বুদ্ধদেব-জীবনানন্দে আটকা পড়ে যাই।

আমি প্রায় দশ বছর ধরে একটা ক্ষুদ্র লিটল ম্যাগ প্রকাশ করে আসছি। ম্যাগ প্রকাশে অনগ্রসরতার ব্যাপারে আপনার সাথে আমি একমত। তবে ইদানীং বাংলা ব্লগের প্রসার ঘটায় ভবিষ্যতে লিটল ম্যাগ আরো হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে আমি আশঙ্কা করছি।

শুভ কামনা।

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৩৪

মেহেদী আনডিফাইন্ড বলেছেন: আপনার মতামতগুলোকে শ্রদ্ধার সাথে গ্রহন করছি। জানি চলার পথটা সহজ হবে না, এখনকার সময়ের বড় নামগুলোকে সাথে নিয়ে হাটতে চাওয়াটাই হয়তো নিয়ম, তবু আমরা এমন একটা কিছু করে দেখাতে চাই প্রকৃতই সেটা নিজস্ব ঢং আলাদা করে পরিচিতি পেতে পারে। যদি এমন হয় যে, আমরা সবার মতো আচরণ ছাড়া অন্যকিছু করে দেখাতে পারছি না, তাহলে হয়তো প্রচেষ্টাই বন্ধ করে দেবো, তবুও হারার আগে হার নয়

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, আপনার লিটলম্যাগের নাম জানা হলো না :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.