নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পজিটিভ ইলেকট্রন

পজিটিভ ইলেকট্রন

খুব অলস একটা মানুষ । প্রযুক্তিকে অনেক ভালবাসি । আবিষ্কার এর নেশা তাড়া করে সবসময় কিন্তু কিছুই আবিষ্কার করতে পারিনি । পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে অনেক ভালবাসি । ঘুরেবেড়াতে অনেক ভাললাগে । ক্রিকেট খেলা অনেক পছন্দের । বাংলাদেশের খেলা থাকলে টিভি সেট এর সামনে থেকে উঠিনা । অহংকারী মানুষ দের অনেক ঘৃণা করি । সপ্ন দেখতে অনেক ভালবাসি কিন্তু হতাশায় নিমজ্জিত

পজিটিভ ইলেকট্রন › বিস্তারিত পোস্টঃ

MAGLEV Train (Magnetic Levitation- ম্যাগলেভ ট্রেন) একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন

৩১ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১১:৪৬

ম্যাগলেভ ট্রেন কে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে গতিসম্পন্ন ট্রেন যা কিনা এখন বিশ্বে শুধু চীন আর জাপানে আছে । জার্মানী তে ও থাকতে পারে, তবে আরো কয়েক বছর পর এই ট্রেন দেখা যাবে বিশ্বের অনেক শহরেই।
গতি সর্বোচ্চ প্রায় ৬০০ কিলোমিটার, অর্থাৎ টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া যেতে মাত্র ১/১.৫ ঘন্টা হলেই হবে :) :)




এই ট্রেনটা আসলে কিভাবে কাজ করে ??
ম্যাগলেভ বা ম্যাগনেটিক লেভিটেশন হল চুম্বকের চুম্বকত্ত ধর্ম কাজে লাগিয়ে ট্রেনকে ভাসিয়ে নিয়ে এক জায়গা থেকে আর জায়গায় নিয়ে যাওয়া ।
আমরা সবাই জানি পৃথিবীর সব বস্তুই মাধ্যকর্ষণ শক্তি বা অভিকর্ষ বলের কারনে ভূমির সাথে লেগে থাকে।
আবার এটাও জানি যে চুম্বকের দুটি ধর্ম – আকর্ষণ আর বির্কষণ ।
তো এই চুম্বকের দুটি ধর্ম অর্থাৎ আকর্ষণ(Attraction) ও বির্কষণ(Repulsion) কে কাজে লাগিয়েই এই ট্রেনটিকে চালনা করা হয় ।
তো কেন এই ট্রেন এর এত স্পীড, এর কারন হল কোনো কিছুর এফিসিয়েন্সি বা কর্মদক্ষতা নষ্ট করার জন্য যে র্ঘষণ(Friction) লস আছে তা এই ট্রেনে একেবারেই নেই বললেই চলে । যদিও এই ফ্রিকশন এর অনেক সুবিধাও আছে, যার কারনেই আমরা হাঁটা চলাফেরা করতে পারি।

বুঝলাম ট্রেন চুম্বকের কারণে ভেসে থাকে, তা চলাচল করে থাকে কিভাবে ??
এটাও আমরা বুঝতে পারবো একেবারে হাইস্কুল এর বইয়ের চুম্বকের ধর্ম পড়া থাকলে ।
আমরা সবাই জানি যে প্রত্যেকটা চুম্বকের দুটি পোল বা মেরু থাকে ।
১- উত্তর মেরু বা North Pole
২- দক্ষিণ মেরু বা South Pole
এবং মজার ব্যাপার হল এই দুটি মেরু আবার একে অপরকে আকর্ষণ করে আর নিজেদের মেরুদের মধ্য বিকর্ষণ করে ।
যেমনটা এরকম
N-N= বিকর্ষণ
S-S= বিকর্ষণ
N-S= আকর্ষণ
S-N= আকর্ষণ
এবং এই চুম্বকের এই দুটি ধর্মকে কাজে লাগিয়ে যেমন বিশ্বের লাখ লাখ মোটর আজ চলমান,
তেমনি ম্যাগলেভ ট্রেন এর মত গতিশীল ট্রেন আজ স্বপ্ন নয়, একেবারে বাস্তব ।

কিভাবে ট্রেনটি কাজ করে অর্থাৎ গতিশীল হয় ??

ব্যাপার টা এমন যে, ট্রেনের ভেতরে কিছু তড়িৎচুম্বক দিয়ে উত্তর মেরু আর দক্ষিণ মেরু বা N & S Pole সৃষ্টি করা আছে । এবং রেল ট্র্যাক টা এমন ভাবে ডিজাইন করা যেন সেখানে হাজার হাজার নর্থ আর সাউথ পোল সৃষ্টি করা আছে । এবং অল্টারনেটিং কারেন্ট ফ্লো করার মাধ্যমে সেই নর্থ আর সাউথ পোল গুলো চলমান থাকে । এখন ডিজাইন টা এমন ভাবে করা যেন ট্রেনের নর্থ পোল একদিকে সাউথ পোল কে আকর্ষণ করবে, অপরদিকে আরএক নর্থ পোল ট্রেনের ভেতরের নর্থ পোল কে বিকর্ষণ করবে ।
অর্থাৎ একই পোল বা মেরু দুদিক থেকে চাপ অনুভব করছে, আকর্ষণ আর বিকর্ষণ ।

ঠিক একই রকম ঘটবে সাউথ পোল এর ক্ষেত্রে অর্থাৎ আকর্ষণ আর বিকর্ষণ ।
এই আকর্ষণ বা বিকর্ষণ কে বলা হয় ম্যাগনেটিক অ্যাট্রাকশন(চুম্বকীয় আকর্ষণ) ও ম্যাগনেটিক রিপালশন(চুম্বকীয় বিকর্ষণ)।
এবং ট্রেনগুলোর গতি নির্ভর করে কত দ্রুত এই পোল গুলো পরিবর্তন করা যায় তার ওপর ।
ট্রেনকে ভাসিয়ে রাখার পদ্ধতি কতগুলো ??

হ্যাঁ, এই ম্যাগলেভ ট্রেনগুলো আবার ২ টি পদ্ধতিতে ভাসিয়ে রেখে ঘর্ষণক্ষয়( ফ্রিকশন লস) কমিয়ে সর্বোচ্চ গতিশীল করা হয়।
১) EMS( Electromagnetic Suspension-ইলেকট্রোম্যাগনেটিক সাসপেনশন)
২) EDS( Electrodynamic Suspension- ইলেকট্রোডাইনামিক সাসপেনশন)

EMS: ইএমএস যেটা কিনা চীনের সাংহাই রেলস্টেশনে করা আছে, যেটা মূলত রেলট্র্যাক আর ট্রেনের ভেতরে দু যায়গা তেই ইলেকট্রোম্যাগনেট বা তড়িৎ চুম্বক সৃষ্টি করে ট্রেন কে ট্র্যাক থেকে প্রায় ১০ সেন্টিমিটার ওপরে ভাসিয়ে রাখা হয় ।

EDS: ইডিএস বা ইলেকট্রোডাইনামিক সাসপেনশন হল এমন একটা পদ্ধতি যেটা জাপানে অবস্থিত ম্যাগলেভ ট্রেন এ ব্যবহার করা হয়েছে । এই পদ্ধতিটির ক্ষেত্রে ট্রেন ট্র্যাক আর ট্রেনের ভেতরে চুম্বক না রেখে শুধু মাত্র একটাতে চুম্বক ব্যবহার করে অন্য একটাতে সুপার কন্ডাকটর বা অতি পরিবাহী কোনো পদার্থ ব্যবহার করে ট্রেন চালানো হয় । সুপার কন্ডাক্টর বা অতিপরিবাহী হল এমন একটি পদার্থ যার মধ্যে দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করলে কোন বাধা বা রোধ থাকেনা, যেটা একেবারে শূন্যের কাছাকাছি। এখানে মূল কৌশল হলো সুপারকন্ডাকটিভিটি (কোনো কোনো উপাদানের কম তাপমাত্রায় বৈদ্যুতিক রোধ শূন্য হয়ে যাওয়া) বিদ্যুতের স্থায়ী প্রবাহের ফলে বিশাল চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি হয়। এটি সম্ভব হয়েছে, তরল হিলিয়াম ব্যবহার করে সুপারকন্ডাকটিভ উপাদানকে মাইনাস ২৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নামিয়ে ফেলা যায় । এতে চৌম্বকীয় বল এত শক্তিশালী হয়ে ওঠে, যা একটি ভারী ট্রেনকেও বাতাসে ভাসিয়ে রাখতে পারে এবং বিপুল গতিতে সামনে চালিত করতে পারে।

১৯১১ সালে ডাচ বিজ্ঞানী ক্যামেরলিন ওন্স এই সুপার কন্ডাকটার আবিষ্কার করেন। তিনি দেখেছিলেন খুব কম তাপমাত্রায় (৪.২ থেকে ৫ ডিগ্রি কেলভিন) সিসা, টিন, ইন্ডিয়াম ও নায়োবিয়ামের মতো পদার্থগুলি হয়ে ওঠে সুপার কন্ডাক্টর। পরে ১৯৩৩ সালে জার্মান বিজ্ঞানী ওয়ালথার মেইসনার ও রবার্ট ওশেনফেল্ড দেখিয়েছিলেন, কোনও চুম্বককে সেই সুপার কন্ডাক্টরের কাছে আনলে তা একে অন্যকে ঠেলে দূরে সরিয়ে দেয়। মানে, দু’টি চুম্বকের সম মেরু যা করে। এটাকে সুপার কন্ডাক্টরের ‘মেইসনার-ওশেনফেল্ড এফেক্ট’ বলা হয়। এবং ঠিক এই কাজ টাই করা হয়ে থাকে জাপানের ম্যাগলেভ ট্রেনে।

আমি স্বপ্ন দেখি একদিন বাংলাদেশেও চলবে এই স্বপ্নের ম্যাগলেভ ট্রেন !!!
কবে বাস্তবায়ন হবে তা জানি না, তবে স্বপ্ন যেহেতু দেখবই , তো বড় স্বপ্ন দেখাটাই আমার কাছে ভাল লাগে।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:০৫

আখেনাটেন বলেছেন: ম্যাগলেভ ট্রেন নিয়ে ভালো লিখেছেন। তবে বাংলাদেশের জন্য এই ট্রেন বাড়াবাড়ি হয়ে যায়। এক দশক আগে মনে হয় এ দেশের কোনো রাজনীতিবিদ এই ধরণের কথা বলে হাস্যরসের খোরাক যুগিয়েছিলেন। কারণ এর নির্মাণব্যায় অত্যধিক। আমাদের মতো দেশের জন্য যা আগামী ৫০ বছরেও কল্পনা করাও বিলাসিতা।

এর চেয়ে হাইস্পিড রেলের যে প্রচলন শুরু হয়েছে তা বরং কিছুটা কার্যকরী হবে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে। ২৫০ কিমি পার আওয়ারে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে লাগবে একঘন্টা। এ জিনিস ভায়াবল এ রুটে। এটি হতেও আরো মনে হয় বিশ বছর অপেক্ষা করতে হবে।

আর ম্যাগলেভ ট্রেন খুব একটা জনপ্রিয়তা পায় নি এর টেকনিক্যাল দিক ও খরচের বিশাল ফারাকের কারণে। আর এখন 'হাইপারলুপ' ট্রেনের ধারণা চলে আসায় (ঘন্টায় ১২০০ কিমি) এই জিনিস আরো পিছনে পড়ে গেল মনে হয়।

৩১ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:২৫

পজিটিভ ইলেকট্রন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই আখেনাটেন, হাইপারলুপ সর্ম্পকে জানতাম না । জানতে হবে ।
আর বড় পরিসরে না হোক, ক্ষুদ্র পরিসরে ২০/২৫ বছর পর তো এই ট্রেন কল্পনা করতেই পারি ।
দেখা যাক কি হয়, স্বপ্ন দেখলেই না একদিন বাস্তবে রুপ নিবে ।

২| ৩১ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:০৫

কালীদাস বলেছেন: ইউরোপে এখনও চালু হয়নি যতটুকু জানি। ফ্রেঞ্চ, স্প্যানিশ, ইটালিয়ান, জার্মানরা চালায় হাইস্পিড রেল ওয়েস্টার্ণ ইউরোপে। হায়েস্ট রেকর্ড ফ্রান্সের, ৫৭৪ কিমি/ঘন্টা পর্যন্ত উঠিয়েছিল হাইস্পিড লাইনে। সবচেয়ে স্লো জার্মানরা চালায় এই চার দেশের মধ্যে।

আমারও মনে হয় সামনে হাইস্পিড ট্রেন আরও জনপ্রিয়তা পাবে। রেল জার্নি আরামদায়ক এবং এয়ারপোর্টের সিকিউরিটির প্যারা নেই। তবে ভাড়া এখনও অনেক। অনেক ডেস্টিনেশনেই দেখেছি বাজেট এয়ারলাইনের সস্তা ফ্লাইট আছে।

৩১ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:২৭

পজিটিভ ইলেকট্রন বলেছেন: ভাই কালীদাস,
ভারত সহ ইতোমধ্যে অনেক দেশেই এটার প্ল্যান অনেক দুর এগিয়েছে । জাস্ট একটা স্বপ্নের কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।
ভাল থাকবেন।

৩| ৩১ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:০৯

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: জাপানিদের ম্যাক্সিমাম রেকর্ড ৬০৩ কি মি!!!! ভাবা যায়???

আচ্ছা এটাকে ম্যাগনেট ট্রেন না বলে, ম্যাগলেভ ট্রেন বলা হয় কেন???

৩১ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৩১

পজিটিভ ইলেকট্রন বলেছেন: ম্যাগলেভ ট্রেন বলা হয় তার কারণ,
ম্যাগলেভ শব্দটি দুটি ইংলিশ শব্দের সংক্ষিপ্ত রুপ।
MAGLEV মানে হচ্ছে Magnetic Lavitation।
লেভিটেশন অর্থ হচ্ছে ভাসিয়ে রাখা ।
আর ম্যাগনেটিক লেভিটেশন মানে চুম্বকের চুম্বকত্ব ধর্মকে কাজে লাগিয়ে যাকে ভাসিয়ে রাখা হয়।

তাই ম্যাগনেট ট্রেন না বলে ম্যাগলেভ ট্রেন বলা হয়।
আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

৪| ৩১ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:০৭

রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের হচ্ছে মেট্রোরেল।

৩১ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৩৪

পজিটিভ ইলেকট্রন বলেছেন: জ্বি ! স্বপ্নের মেট্রোরেল !!

৫| ৩১ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৩৩

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.