নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পেশায় শিক্ষক হলেও নেশায় লেখক ও পর্যটক। \'\'ভালো আদর মন্দ আদর\'\'(২০১৩) তাঁর প্রকাশিত প্রথম বই

এইযেদুনিয়া

আমার চোখে তো সকলই শোভন/সকলই নবীন,সকলই বিমল/ সুনীল আকাশ,শ্যামল কানন/বিশদ জোছনা,কুসুম কোমল/সকলই আমার মত

এইযেদুনিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

চাইছি তোমার বন্ধুতা...

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪১

ঘটনা ১



স্নিগ্ধা ও রাফি দুজন খুব ভাল বন্ধু। বিশ্ববিদ্যালয়ে একই বিভাগে পড়তে এসে ওদের দুজনের পরিচয়। ক্লাসের পড়াগুলো নিয়ে আলোচনা করতে করতেই বেশ ভাল একটা বোঝাপড়া তৈরি যায় ওদের মধ্যে। অল্প দিনেই তুমি থেকে তুই-তোকারির সম্পর্কে পৌঁছে যায় ওরা।যেখানেই যায়, ওরা দুজন একসাথে যেতে পছন্দ করে, একসাথে থাকতে পছন্দ করে।যেন মানিক-জোড়। অন্য সহপাঠি ও পরিচিতজনেরা অবশ্য তাদের সম্পর্কটিকে শুধুই বন্ধুত্বের বলে বিশ্বাস করতে চায় না। কখনো ঠাট্টাছলে, কখনো টিটকারীর সুরে, কখনো বড়দের উপদেশের মত, কখনো স্রেফ কৌতুহল থেকে ওদের দুজনের সম্পর্কটি নিয়ে নানাজন নানা কথা বলে, মন্তব্য করে।বিষয়টি নিয়ে স্নিগ্ধা ও রাফিও অন্যদের সাথে কখনো ঠাট্টা করে, কখনো সিরিয়াসলিই অন্যদের বোঝাতে চেষ্টা করে যে, তাদের সম্পর্কটি শুধুই বন্ধুত্বের। এর মধ্যের প্রেমের ‘প’-ও নেই। তবুও অন্যরা ওদের কথা সহজে মানতে চায় না। বন্ধুত্বের সম্পর্কই নাকি পরে প্রেমে গিয়ে গড়ায়। মাঝে মাঝে অন্য বন্ধুদের নানা রকম মন্তব্যে স্নিগ্ধা ভীষণ বিব্রতবোধ করে। যদিও রাফি এসব একদম পাত্তা টাত্তা দেয় না। স্নিগ্ধা মনে মনে সিদ্ধান্ত নেয়, রাফির সাথে চলাফেরা কমিয়ে দিতে হবে। রাফির মনে যদি ঘুনাক্ষরেও বন্ধুত্বের চেয়ে বেশি কিছু প্রত্যাশা জন্ম নেয়, তবে সেটা দুজনের জন্যই খারাপ হবে, তাই।







ওদিকে রাফি বুঝতে পারে না, স্নিগ্ধা তাকে কেন এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করছে।স্কুলের প্রিয় বন্ধু সবুজের পরে স্নিগ্ধাই এখন তার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু। স্নিগ্ধাই তাকে সবচেয়ে ভাল বোঝে, যেকোন কিছু ওর সাথে শেয়ার করতেই বেশি ভাল লাগে। সবুজ অন্য স্কুলে ভর্তি হবার পরে আর কোনদিন তার সাথে রাফির যোগাযোগ হয় নি। প্রিয় বন্ধুকে হারিয়ে ফেলার কষ্টটা আবার পেতে চায় না রাফি।











ঘটনা ২



ইকবাল ও রুমা দুজন খুব ভাল বন্ধু। দুজনেই বিবাহিত। রুমার সাথে ইকবালের যোগাযোগ তার স্ত্রী কণা পছন্দ করে না। ইকবাল বুঝতে পারে, কণা রুমার ব্যাপারে বেশ ঈর্ষান্বিত।কথাটা রুমাকে ইকবাল শেয়ার করতে পারে না। তাহলে রুমা ইকবালের কথা ভেবে হয়ত আর কখনো যোগাযোগই রাখবে না। তাই কণার কাছে রুমার সাথে যোগাযোগের কথা গোপন রাখাই নিরাপদ মনে হয় ইকবালের। ওদিকে রুমার স্বামী যোবায়ের বেশ উদার। তিনি নিজেও ইকবালের বেশ ভাল বন্ধু। রুমা ও ইকবালের বন্ধুত্ব নিয়ে তিনি কখনোই তেমন মাথা ঘামান নি। কিন্তু সেদিন তার এক পরিচিত শুভাকাংখী রুমা ও ইকবালের সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে তাকে সাবধান করে দিয়ে যান। নারী ও পুরুষের মধ্যে আবার কখনো বন্ধুত্ব হতে পারে নাকি, শুভাকাংখীর এমন প্রশ্নের উত্তরটাই এখন যোবায়ের খুঁজছে।



ঘটনা ৩



বেশ ভাল বন্ধুত্ব রুবা ও আরাফাতের। কিছুদিন যেতেই আরাফাত টের পেল সে রুবার প্রতি দূর্বল হয়ে গেছে।কিন্তু মনের কথা রুবাকে বললে যদি এই সুন্দর বন্ধুত্বটাও নষ্ট হয়ে যায়? তাই আরাফাত তার ভালবাসার কথা রুবার কাছ থেকে গোপন রেখে দেয়।তবুও কি স্বস্তি পায় আরাফাত?







নারী ও পুরুষের মাঝে বন্ধুত্ব কি হতে পারে? নাকি এর মাঝে কোথাও না কোথাও প্রেম লুকিয়ে থাকে? এ বড় পুরোনো ও বিতর্কিত প্রশ্ন।



বন্ধু! বুকের ভেতরের খুব আপন একটি শব্দ।বন্ধু তো যে কেউই হতে পারে। বন্ধুকে কোন বয়সের সীমায় কেউ কোনদিন আটকে দিতে পারে নি, পারে নি ধর্ম বর্ণ, লিংগ, পেশা, বিত্ত, দেশ, সংস্কৃতির ভিন্নতায় আলাদা করে দিতে। বন্ধুর কোন সংজ্ঞা হয় না। বন্ধু তো বন্ধুই, সে নারীই হোক বা পুরুষ।নারী-পুরুষের মাঝে শুধুই বন্ধুত্ব হতে পারে কি পারে না, তা নির্ভর করে বিপরীত লিংগের প্রতি ব্যক্তির মানসিকতা, মূল্যবোধ, বিশ্বাস, দৃষ্টিভংগি ইত্যাদির উপর। কেউ যদি মনের ভেতরে এমন ধারণা পোষন করে থাকেন যে, নারী-পুরুষের মধ্যে কখনো বন্ধুত্ব হতে পারে না, তবে তার পক্ষে বিপরীত লিংগের সাথে শুধুমাত্র বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলার সম্ভাবনা কমই বলা যায়।আর এমন ব্যক্তি বিপরীত লিংগের সাথে বন্ধুত্ব রক্ষা করতে গিয়ে হয়ত শুধু যৌন অবদমনই করে যাবেন অবিরত। এভাবে নিজেকে কষ্ট না দিয়ে এমন ব্যক্তিদের আসলে বিপরীত লিংগের কারো সাথে বন্ধুত্ব না করাই ভাল।বিপরীত লিংগের বন্ধুর সাথে অনেকেই ফ্লার্টিং করে থাকেন।এতে যদি অপরপক্ষ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ না করেন, বিব্রতবোধ করেন, অস্বস্তিবোধ করেন, তবে এমনটা করা কোন ভদ্রতার পরিচয় দেবে না।এতে সম্পর্কের অবনতিও ঘটতে পারে।



নারী-পুরুষের বন্ধুত্বে যদি যুক্ত হয় লিবিডো তবে সেখানেই নাকি ঘটে যায় বন্ধুত্বের সমাপ্তি। শুরু হয় আরেক অধ্যায়- প্রেম।কিন্তু সব নারী-পুরুষের বন্ধুত্বে সব সময়ই কি শারীরিক আকর্ষণ কাজ করে?নারী-পুরুষের পরস্পরের প্রতি যে আকর্ষণ, তা যতই স্বাভাবিক হোক না কেন, এটি তো আর পৃথিবীর সকল বিপরীত লিংগের প্রতি সমানভাবে কাজ করে না! পরিবেশ পরিস্থিতির প্রভাবে, জৈবিক কারণে বিপরীত লিংগের কারো সাথে বন্ধুত্ব থেকে আকর্ষণ সৃষ্টি হতে পারে, বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক অন্য দিকে গড়াতে পারে। কিন্তু তাই বলে আমরা এমন কোন ধ্রুব সত্যে বা উপসংহারে পৌঁছুতে পারি না যে, নারী-পুরুষের মাঝে শুধু বন্ধুত্ব কখনোই হতে পারে না।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:০৪

স্বপনচারিণী বলেছেন: 'কিন্তু তাই বলে আমরা এমন কোন ধ্রুব সত্যে বা উপসংহারে পৌঁছুতে পারি না যে, নারী-পুরুষের মাঝে শুধু বন্ধুত্ব কখনোই হতে পারে না।' - ঠিককথা। তবে এই সম্পর্কটা সত্যিই ভীষণ বিতর্কিত।

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:১১

এইযেদুনিয়া বলেছেন: বিতর্কিত করার কিছু নেই। যেটা বন্ধুত্ব, তাকে বন্ধুত্বই বলা উচিত। আর যেটা প্রেম বা অন্য কিছু তাকে বন্ধুত্ব বলে না চালানোই উচিত।

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:১২

এইযেদুনিয়া বলেছেন: পরিস্থিতির কারণে উচিত অনুচিত মেনে চলতে পারে না মানুষ সব সময়,

২| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪৭

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
নারী-পুরূষে বন্ধুত্ব হতে পারেনা, এই ধারণা মানা যায় না।
হয়তো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটা বন্ধুত্ব থেকে প্রেম বা শারীরিক সম্পর্কে চলে যায়, কিন্তু সব ক্ষেত্রে নয়।
বন্ধু হিসেবে কাম, লিংগগত বৈষম্যের উর্ধ্বেও মানুষের পথচলা থাকতে পারে। এবং এটা মিরাকল কিছু নয়।

৩| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৪৭

এইযেদুনিয়া বলেছেন: Dujoy, tomar sundor montobber jonno dhonnobad. Shudhu apotti korbo tomar OI "beshir vag khetre"r beparti niye. Amra bolte pari onek khetre ba kichu kichu khetre prem ba physical atraction toiri hote pare. beshir vag khetre kintu frnd frnd-i thake. Manusher life style, mentality sob kichu change hocche.

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.