নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পেশায় শিক্ষক হলেও নেশায় লেখক ও পর্যটক। \'\'ভালো আদর মন্দ আদর\'\'(২০১৩) তাঁর প্রকাশিত প্রথম বই

এইযেদুনিয়া

আমার চোখে তো সকলই শোভন/সকলই নবীন,সকলই বিমল/ সুনীল আকাশ,শ্যামল কানন/বিশদ জোছনা,কুসুম কোমল/সকলই আমার মত

এইযেদুনিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতীয় সিরিয়াল ও অন্যান্য

০৫ ই জুন, ২০১৪ রাত ৮:২৪

নেপোলিয়ান বোনাপার্ট বলেছিলেন, ‘’আমাকে ভালো মা দাও, আমি তোমাদের একটি ভালো জাতি দেবো।‘’ আর এখন সময়ের দাবিতে তাঁর উদ্ধৃতি পালটে দিয়ে নতুন ফেসবুক প্রজন্ম বলছে, ‘’আমাকে ভারতীয় সিরিয়ালমুক্ত মা দাও, আমি তোমাদের ঝগড়ামুক্ত সমাজ দেব।‘’

ভারতীয় হিন্দি বা বাংলা সিরিয়ালগুলোতে নিশ্চয়ই এমন কিছু আছে, যার কারণে আমাদের দেশের প্রায় প্রতিটি পরিবারের নারী এসব সিরিয়ালে একদম মজে রয়ে রয়েছেন।এই সিরিয়াল দেখা নিয়ে এমন কোন পরিবার হয়ত আজ পাওয়া যাবে না, যেখানে রিমোট দখলের যুদ্ধে পড়ে গিয়ে বেচারা রিমোট অকালে অক্কা পায় নি।ভারতীয় সিরিয়াল দেখা না দেখা নিয়ে কথা হলো বেশ কয়েকজনের সাথে।

গৃহিণী লাবনীর কাছে ভারতীয় সিরিয়ালগুলো দেখতে ভালো লাগে না। কারণ নাটকগুলোর কাহিনী তাকে টানে না। কুটিল সব চরিত্রে ভরপুর নাটক দেখতে তার বিরক্তই লাগে। তবুও এ নাটকগুলো দেখা হয়ে থাকে তার। কারণ, বাংলাদেশের কোন চ্যানেল দেখতে বসলে বিজ্ঞাপণের যন্ত্রণায় ধৈর্য ধরে রাখা তার জন্য কঠিন।দেশি চ্যানেলগুলোতে একবার বিজ্ঞাপন শুরু হলে, কখন অনুষ্ঠান আবার শুরু হবে তার কোন ঠিক ঠিকানা নেই। ভারতীয় সিরিয়ালগুলোর কাহিনী যেমন তেমন যা-ই হোক, অন্তত বিজ্ঞাপনের যন্ত্রণা নেই।নির্দিষ্ট সময়ের মাঝে বিজ্ঞাপন বিরতির পরে যথারীতি নাটক শুরু হয়ে যায়।আবার বিজ্ঞাপণ বিরতির আগেই নাটকের চুম্বক অংশগুলো দেখিয়ে দেওয়া হয়।

ভারতীয় সিরিয়ালের অহেতুক কাহিনী টেনে লম্বা করে পর্ব বাড়ানোতেও বিরক্তি লাগে মগবাজারের বাসিন্দা রায়হান চৌধুরীর কাছে। কাহিনী টেনে লম্বা করার জন্য এ পন্থা এ নাটকগুলোর নির্মাতারা অবলম্বন করেন সেটাও তার কাছে হাস্যকর ও অবাস্তব মনে হয়। উদাহরণ হিসেবে তিনি বললেন, ‘’নাটকগুলোতে একেকজন এতবার বিয়ে করে যা কখনোই সম্ভব নয়। আবার একই ব্যক্তির সাথেও বারবার বিয়ে হয় নাটকগুলোতে।নাটকের পর্ব বাড়ানোর জন্য হঠাৎ করে একটা আজগুবি কাণ্ড ঘটানো হয়। হঠাৎ একটা নতুন চরিত্র এসে দাবি করে বসে সে অমুকের আগের স্ত্রী ছিল। কিন্তু সে কোত্থেকে আসলো তার কোন আগামাথা থাকে না।আরেকটি বিষয় খুবই বিরক্ত লাগে। বাস্তবে কারো সাথে আমাদের সমস্যা হলে আমরা সরাসরি কথা বলে যত সহজে সম্ভব তা সমাধান করার চেষ্টা করি। আর এই নাটকগুলোতে দেখা যায়, নিজেরা সরাসরি সামান্য একটি সমস্যাও সমাধান করে না। সব সময় তারা তৃতীয় আরেকজনকে খোঁজে সমাধান করে দেবার জন্য। তৃতীয়পক্ষের উপর নির্ভর করতে গিয়ে সমস্যা আরো জটিল হয়ে, তখন খুঁজতে থাকে আবার আরেক তৃতীয়পক্ষ।এভাবে কাহিনী সরল থেকে জটিল, জটিল থেকে কুটি্ল, কুটিল থেকে কুটিলতরতে গিয়ে পৌঁছায়।এসবের কোন মানে নেই।‘’ যদিও রায়হানের স্ত্রী তিথী খুব মন দিয়েই নাটকগুলো দেখে থাকে।



সাইকোলজিস্ট সানজিদা আফরোজ ব্যস্ততার কারণে টিভি দেখার অতটা সময় পান না।তবু টিভি দেখার জন্য সামান্য যেটুকু সময় বের করে নেন, তাতেও তার চোখে ধরা পড়েছে ভারতীয় নাটকগুলোর নেতিবাচক দিকগুলো। শুধু শহরাঞ্চলেই নয়, এখন স্যাটেলাইট চ্যানেলের সহজপ্রাপ্যতায় এসব সিরিয়ালের দর্শক দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও বৃদ্ধি পাচ্ছে অনেক বেশি।আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষ যেহেতু স্বল্পশিক্ষিত, তাই এসব নাটক থেকে তারা অনেক সময় না বুঝেই প্রভাবিত হয়ে পড়ে। নাটকগুলো অবাস্তব কাহিনীতে ভরা থাকলেও তারা মনে করে এসব কাহিনী তাদের জীবন থেকেই নেওয়া। তিনি আরো বললেন, ইদানিং আমাদের দেশের চ্যানেলগুলোতেও ভারতীয় সিরিয়ালের অনুকরণে নাটক তৈরি হচ্ছে। পজিটিভ নাটক বা অনুষ্ঠান তৈরি হলেও, কুটিল কাহিনী বা নেতিবাচক চরিত্রের নাটকগুলোর জনপ্রিয়তা বেশি বলে এগুলোই তৈরি হচ্ছে বেশি। আবার নির্মাতাও তাদের ব্যবসায়িক লাভের কথা মাথায় রেখে অনুষ্ঠান তৈরি করেন বলে মানের দিকে অতটা মনোযোগী নন বলে সানজিদা তার হতাশার কথাই প্রকাশ করলেন।



কথা হল তরুণ টিভি ও চলচচিত্র নির্মাতা তানীম রহমানের সাথে।তিনি মনে করেন, দর্শকদের রুচি তৈরি করার দায়িত্বটি গণমাধ্যমের উপরেই বর্তায়।বাংলাদেশের বেশিরভাগ চ্যানেলেই বৈচিত্রহীন অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।চ্যানেলগুলোর লোগো ঢেকে রাখলে দর্শকের বোঝার উপায় নেই আসলে তিনি কোন চ্যানেল দেখছেন।কারণ সব চ্যানেলে একই সময়ে টকশো বা খবর কিংবা বিজ্ঞাপণ প্রচারিত হতে থাকে।আবার এখন এত বেশি চ্যানেল যে দর্শক জানেনই না কখন কোন চ্যানেলে তার পছন্দের অনুষ্ঠানটি হচ্ছে।এতে আমরা দর্শক হারাচ্ছি। চ্যানেলগুলোতেও বৈচিত্রময় নাটকের চেয়ে গতানুগতিক কাহিনীর নাটক প্রচারের প্রতি বেশি আগ্রহ থাকে।নির্মাতারাও ঝুঁকি নিয়ে ভিন্ন কাহিনীর বা কোন সচেতনতামূলক, সৃজনশীল, শিক্ষণীয় নাটক তৈরির জন্য উৎসাহবোধ করে না। মানসম্মত অনুষ্ঠানও তৈরি হচ্ছে না সেভাবে।ভারতীয় সিরিয়ালের অনুকরণে নাটক তৈরি করলেও দর্শক কিন্তু একই কাহিনী দেখতে দেখতে একঘেঁয়েমিতে বিরক্ত হচ্ছে।মিডিয়ার এক্ষেত্রে দায়িত্বশীল হতে হবে। তারা যদি স্পন্সরকে বোঝাতে পারে দর্শক মানসম্মত বৈচিত্রময় অনুষ্ঠান দেখতে চায়, একটু ঝুঁকি নিয়ে ভিন্ন ধরনের নাটক প্রচারের উদ্যোগ নেয়, তাহলে পরিস্থিতি পালটে যেতে পারে।



স্কুল শিক্ষক সোহেল রেজার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল তিনি ভারতীয় সিরিয়ালগুলো দেখেন কি না। তিনি বলেন, ‘’আমার স্ত্রী এসব সিরিয়ালের নিয়মিত দর্শক। আমি প্রথমে স্ত্রী- সন্তানদের এই ধরনের নাটক দেখার বিরোধিতা করতাম। আমি চ্যানেল বদলে দিয়ে খবর বা অন্যান্য অনুষ্ঠান দেখতে শুরু করতাম। কিন্তু প্রতিদিনই এমন একটি সময়ে এই সিরিয়ালগুলো শুরু হত, যখন ঘরের নারীরা কাজের অবসরে বিনোদন খোঁজে। তারপর স্ত্রীর সাথে আমিও সিরিয়ালগুলো দেখতে শুরু করলাম। আর নাটকগুলো এমন একটি রহস্যময় জায়গায় শেষ হয় যে, একসময় আমারও কৌতুহল ও আগ্রহ তৈরি হতে লাগলো, এরপরে কী হবে জানার।এখন আমিও স্ত্রীর সাথে সিরিয়াল দেখি। যদিও এগুলো থেকে তেমন ভালো কিছু শেখার নেই।‘’

সোহেল রেজার সাথে একমত হলেন না তার সহকর্মী রূপনায়ারন সরকার। তিনি মনে করেন, এসব সিরিয়াল দেখে অনেক কিছু শেখার আছে।এই যেমন, নতুন নতুন ফ্যাশন সম্পর্কে আগাম ধারণা পাওয়া যায়, আবার নতুন একটি ভাষাও শেখা হয়। যদিও এই ভাষা শিক্ষা ক্যারিয়ার তৈরিতে কোন ভূমিকাই রাখে না।

সোহেল রেজারই আরেক সহকর্মী সাইদুর রহমান বেশ মজা করে তুলে ধরলেন এসব সিরিয়াল থেকে শিক্ষণীয় আরেকটি দিকের কথা। তিনি বললেন, ‘’ভারতীয় সিরিয়াল থেকে আপনি শিখতে পারবেন, ঘরে স্ত্রী থাকার পরেও অন্য মেয়ের সাথে কী করে প্রেম করা যায় সেসব গোপন কলা কৌশল।বিবাহিত পুরুষদের অন্য নারীর প্রতি কেমন আকর্ষণ থাকে, এই গোপন তথ্যগুলো এসব নাটকের মাধ্যমে সবাই খোলাখুলি জেনে ফেলছে, এটা আমাদের পুরুষদের জন্য অস্বস্তিকর।‘’ সিরিয়ালগুলোতে কুসংস্কারের আধিক্য ও নারীর অবমূল্যায়নের দিকটি সাইদুর রহমানের একেবারেই ভাল লাগে না।যেমন--স্বামীর খাওয়া না হলে কিছুতেই স্ত্রীকে খেতে দেওয়া হচ্ছে না কিংবা স্বামী যতই অন্যায় অপরাধ করুক, স্ত্রী অমন স্বামীকে ত্যাগ না করে বরং তার পদসেবা করে যাচ্ছে। এসব সিরিয়ালের নারীরা পরনির্ভরশীল হয়ে থাকে বেশির ভাগ সময়ে।আবার নারীদের স্বল্প পোশাকে পণ্য হিসেবেও উপস্থাপন করা হচ্ছে।

সিরিয়ালগুলোর কাহিনী নারীদের কেন্দ্র করেই বলে হয়ত নারীরা এসব নাটক দেখতে বেশি পছন্দ করেন। আবার নাটকগুলো প্রচারের সময়টাও থাকে নারীদের অবসর সময়টাতে।এমনই মত সোহেল রেজার।প্রসংগত তিনি তার অষ্টম শ্রেণিতে পড়া সন্তানের একটি প্রশ্নের কথা বললেন। তার সন্তান একদিন জানতে চেয়েছিল, ‘’বাবা, এই নাটকগুলোতে শ্বশুর বা শাশুড়ি সারাক্ষণ বউকে সন্দেহ করছে।গোয়েন্দাগিরি করছে ঘরের মানুষের উপরে। এর পেছনে যদি অর্থনৈতিক কোন প্রাপ্তির উদ্দেশ্য থাকত, তাহলেও নাহয় এমন নেতিবাচক আচরণের একটা গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা থাকত। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, তারা অহেতুক, কোন নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই একে অপরকে সন্দেহ করছে, গোয়েন্দাগিরি করছে, একে অপরের সাথে বিদ্বেষমূলক আচরণ করছে।এথেকেই বোঝা যায়, নাটকের চরিত্রগুলো কোন সুস্থ স্বাভাবিক চরিত্র নয়।‘’



নাটকের এমন চরিত্র আর কাহিনী দিনের পর দিন যারা দেখেন, তারা কী এতে প্রভাবিত হয়ে পড়েন কিনা সে সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক ডঃ শাহীন ইসলামের কাছে। তিনি বললেন, ‘’টেলিভিশনের একটি প্রভাব তো দর্শকের মনে সব সময়ই তৈরি হয়।বিশেষ করে যারা শিশু।ভারতীয় সিরিয়ালগুলোতে যেসব অবাস্তব ঘটনা বা নেতিবাচক চরিত্র দেখানো হয়, এতে সবার উপরে এক রকমভাবে প্রভাব পড়ে না। সেসব দর্শকের কোন কারণে আত্নবিশ্বাসের জায়গাটি তৈরি হয় নি, যারা দূর্বল মানসিকতার, এমন দর্শকদের বেলায় দেখা যায় তারা নেতিবাচক দিকটি তুলনামূলকভাবে বেশি গ্রহণ করে ফেলে।তখন সমস্যা হতে পারে। এজন্য মিডিয়াকেও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।বিনোদনের মাধ্যমে দর্শকদের কাছে সুস্থ বার্তা পৌঁছে দিতে পারে মিডিয়াই।‘



ভারতীয় সিরিয়ালের আরেকটি বিরক্তিকর দিকের কথা বললেন অনেকেই।যেমন--অতি নাটুকেপনা, অতি অভিনয়, ব্যাক গ্রাউন্ড মিউজিকের সাথে সাথে দীর্ঘ সময় ধরে দেখানো মুখের অদ্ভুত সব অভিব্যক্তি।যারা এসব নাটক দেখছেন তারা নিজেরাও বলছেন, নাটকগুলো থেকে শেখার তেমন কিছু নেই।



মাছরাংগা টেলিভিষণের সিনিয়র প্রোডিওসার স্বীকৃতি প্রসাদ বড়ুয়ার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, দর্শকদের দেশি চ্যানেলমুখী করার জন্য মেধাবী নির্মাতারা কিভাবে কাজ করছেন।তিনি বলেন,''এই উত্তরটা খুব কঠিন বলা। কারণ আমাদের এই তৃতীয় বিশ্ব চলছে আমেরিকা, জাপান, ভারত, চীন, এই দেশগুলোর অনুকরণে। সরকার যেমন তাদের সরকারী নীতিনির্ধারণী ঠিক করেন প্রভাবশালী এই দেশগুলোর রাষ্ট্রও অর্থনীতির অনুকরণে। আর আমাদের দেশের স্যাটেলাইট প্রাইভেট চ্যানেলগুলো চলে বহুজাতিক কোম্পানীর অ্যাডের ওপর। এখানে টেলিভিশন কর্তৃপক্ষের মতামতে টেলিভিশন নীতিমালা ও সম্প্রচার নীতিমালা পরিচালিত হয় না। অর্থ কড়ি ও বিজ্ঞাপন দেনে ওয়ালারা যেই ধরণের অনুষ্ঠান প্রচার করতে বলে মানে উনাদের ব্যবসা সম্প্রসারণে যে যে অনুষ্ঠানগুলো আর উনাদের পণ্যের বিজ্ঞাপন যে যে অনুষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মনে হয় সেগুলোতেই উনারা স্পন্সর করেন। সুতরাং ভালো প্রযোজকদের ভালো ভালো থিমের ও কনটেন্ট এর অনুষ্ঠানও এখানে প্রচারিত হয় না। কারণ অন্যান্য ব্যবসার মতো টেলিভিশন ও একটা ব্যবসায় দাঁড়িয়ে গেছে যদিও এটাকে গণমাধ্যম বলা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের যা উপকারে আসে তা এই মাধ্যমে কদাচিৎ তুলে ধরতে দেখা যায়। শুধুমাত্র ভোক্তাশ্রেণী গঠনের জন্য এই টিভি ব্যবসা এখন সম্প্রসারিত ও সম্প্রচারিত হয় বলা যায়।''



(লেখাটি সাপ্তাহিক ২০০০ ৬মে,২০১৪ তে প্রকাশিত হয়েছে)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.