নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পেশায় শিক্ষক হলেও নেশায় লেখক ও পর্যটক। \'\'ভালো আদর মন্দ আদর\'\'(২০১৩) তাঁর প্রকাশিত প্রথম বই

এইযেদুনিয়া

আমার চোখে তো সকলই শোভন/সকলই নবীন,সকলই বিমল/ সুনীল আকাশ,শ্যামল কানন/বিশদ জোছনা,কুসুম কোমল/সকলই আমার মত

এইযেদুনিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

বছরের ব্যস্ততম দিনগুলোতে নারী

২০ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ২:২৯

সামনেই চলে আসছে সংযমের মাস রমজান। এসময়টাতে সবার মাঝেই ব্যস্ততা যেন একটু বেশি বেড়ে যায়। সময়ের পাগলা ঘোড়ার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে নারীদের ব্যস্ততাও বেড়ে যায় অনেকখানি। পরিবারের সবার জন্য সেহেরি, ইফতারের আয়োজন, ঈদের শপিং করা, তারাবীর নামাজ পড়া, কোরান খতম দেওয়া সব কিছু এক হাতেই নারীরা সামনে নেন।আর এবার বিশ্বকাপ ফুটবল যেন ব্যস্ততার মাঝে যুক্ত করেছে আরেক নতুন মাত্রা।এত কিছুর মাঝে নারীর নিজের জন্য একটু জিরিয়ে নেবার সময় কি হয়?



গৃহিণী তাহমিনা আক্তার অবশ্য মনে করেন রোজার সময় কিছু ঝামেলা কমে যায়। কারণ সারাদিনের জন্য রান্নাঘরে তাকে ঢুকতে হচ্ছে না। সারাদিন তেমন কাজও থাকে না। তাই কোরান তেলাওয়াত, নামাজ পড়ার জন্য অনেকটা সময় পাওয়া যায়। শুধু ইফতারের দু ঘণ্টা আগে তিনি তার কাজ শুরু করেন। ঐ সময়ের মধ্যেই সব কাজ শেষ করে ফেলেন। সেহেরির খাবার দাবার রাতেই সব রান্না করে ফ্রিজে রেখে দেন। পরে সেহেরির সময়ে শুধু ভাতটা রান্না করেন আর ফ্রিজের খাবারগুলো গরম করে নেন।সারাদিনের এসব কাজের মাঝে নিজের বিশ্রামের কথাও ভোলেন না। যোহর আর আসরের সময়টুকুর মাঝে অনেকখানি সময় পাওয়া যায়, তিনি তখন ঘুমিয়ে নেন।এর মাঝেই ফেসবুকে একটু খানি ঢুঁ মেরে বন্ধুদের সাথে আলাপ করে যান।আর ঈদের শপিং ২/৩ দিনের মধ্যেই সেরে ফেলার চেষ্টা করেন। এভাবেই সব ঝামেলা পরিস্থিতি অনুযায়ী সামলে নেন, তাই ঝামেলাকে আর ঝামেলাই মনে হয় না।



হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের সিনিয়র নার্স শামীম আরা সুলতানাও বললেন বছরের ব্যস্ততম দিনগুলোর কথা।রমজানে অন্য সময়ের তুলনায় স্বাভাবিকভাবেই ব্যস্ততা বেশি থাকে। তার পেশা অনুযায়ী ডিউটি একেক দিন একেক রকম থাকে বলে প্রতিদিনের রুটিন একভাবে চলে না।তবুও একহাতে সব ম্যানেজ করে নেন। কর্মজীবী নারী বলে তিনি কিছু কাজ সব সময় এগিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। অফিস থেকে ফিরতে পথের ট্রাফিক জ্যামে অনেকখানি সময় প্রায়ই নষ্ট হয়ে যায়। এ কথা মাথায় রেখেই কাজ করতে হয় তাকে। এখন প্রায় সবার বাসাতেই ফ্রিজ থাকায় খাবার সংরক্ষণও সহজ হয়েছে। তাই ইফতার তৈরিতে প্রতিদিন ডাল বাটা বা ছোলা সিদ্ধ করার ঝামেলায় তাকে যেতে হয় না, সময়ও বেঁচে যায় অনেকটা।ইফতারের পরে একটু বিশ্রাম নেন, এই ফাঁকে টিভিও দেখে নেন। এরপর তারাবির নামাজ সেরে রাতের খাবারের পাশাপাশি সেহেরির জন্য খাবারটা আগেই তৈরি করে নেন। অনেক সময় তার রাতেও ডিউটি থাকে। শামীম আরা তার সন্তানদেরকে আগেই খাবার গরম করে নেবার পদ্ধতি শিখিয়ে দিয়েছেন। তাই তিনি বাসায় না থাকলেও খুব একটা সমস্যা হয় না। বরং অনেক কাজে তার সন্তানদের সাহায্য পান, এতে তার পরিশ্রমও কমে। শুধু সন্তানেরাই নয়, ঘরের কাজে শামীম আরার স্বামীও তাকে অনেক সাহায্য করে থাকেন।



স্কুল শিক্ষক শামসাদ বেগমের সাথেও কথা হল। রমজানের সময়টাই বছরের সবচেয়ে ব্যস্ততম দিন বলে তার মনে হয়।যদিও এ ব্যস্ততায় তিনি খুব সুন্দর ভাবেই তাল মিলিয়ে সব সামলে নেন। ঈদের শপিং সেরে ফেলেন শবে বরাতের পর পরই।আত্নীয় স্বজন সবার জন্য শপিং করে শেষ করতে না পারলে তাদেরকে উপহার কেনার টাকা দিয়ে নিজের পছন্দ মত কিছু কিনে নিতে বলেন।রমজানের জন্য চাল, ডাল ইত্যাদি আগেই কিনে ফেলেন। তাতে ঝামেলা কিছু কমে।সারাদিনে যেহেতু খাওয়া দাওয়া হয় না, তাই সকাল দুপুরের রান্নার ঝামেলাও তেমন থাকে না।বিকেলে অন্যান্য সময়ে এমনিতেই তো নাস্তার আয়োজন করতে হয়। তাই ইফতারের আয়োজন তার কাছে বাড়তি ঝামেলা মনে হয় না।ইফতারিতে তিনি স্বাস্থ্য সম্মত খাবারের দিকেই বেশি খেয়াল রাখেন। তাই খিচুড়ি, সেমাই, নুডুলস, দুধ-চিড়া-কলার মিশ্রণ, মৌসুমী ফল, শরবত এ ধরনের সহজ রেসিপির কিন্তু পুষ্টিকর খাবার তার তালিকায় রাখেন। ইফতারিতে নানাপদের আইটেম থাকতে হবে, এমন মানসিকতা শামসাদ বেগম পোষণ করেন না। তেমনি সন্তানদেরকেও তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, রমজান সংযমের মাস। সব কিছুতেই আমাদের সংযমী হতে হবে।তাই বলে একেবারেই যে পিঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ বা অন্যান্য ভাজাপোড়া খাবার তৈরি করেন না তা নয়। এক্ষেত্রে তিনি একবারে কয়েকদিনের ছোলা সিদ্ধ, ডাল বাটা, সেদ্ধ আলু ফ্রিজে সংরক্ষন করে রাখেন।এতে পরে কাজ করতে গেলে তার সময় বেঁচে যায়, পরিশ্রমও কমে।





রমজানের ব্যস্ততায় নিজেকে সুস্থ রাখার কথা ভুলে গেলে চলবে না একজন নারী, তা তিনি গৃহিণীই হন বা কর্মজীবী।অতিরিক্ত কাজ করতে গিয়ে তিনি নিজেই যদি অসুস্থ হয়ে পড়েন তবে পরিবারকে একটি বিপদের মুখেই ঠেলে দেওয়া হয়। তাই রমজানে নিজের বিশ্রামের কথাও ভাবতে হবে।কারণ, সুস্থতার জন্য বিশ্রাম করাও একটি বড় কাজ এবং এবাদত। রমজানে অনেকটা সময় রোজা রাখা, গরমে শরীরে পানির পরিমাণ কমে যাওয়া, প্রতিদিনের ব্যস্ততায় শরীরের উপর ধকল কম যায় না। তাই এ সময়টাতে নারীরা কিভাবে নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখবেন এ নিয়ে কথা হল চিকিৎসক নাসরিন তাহমিনা আজিজের সাথে ।রোজায় ভাজাপোড়া খাবারের আইটেম কম রেখে পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মমত খাবারের কথাই তিনি বললেন। ইফতারে একবারে অনেক খাবার না খেয়ে অল্প কিছু খাবার পরামর্শই দিলেন তিনি। পর্যাপ্ত পানি তো অবশ্যই পান করতে হবে। রাতের খাবার ও তারাবির নামাজ সেরে একটু তাড়াতাড়ি নারীদের ঘুমিয়ে পড়ার পরামর্শ দিলেন তিনি। সেহেরির জন্য মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠতে হয় বলে ঘুমের কিছু ব্যাঘাত ঘটে এবং দেহঘড়ির ব্যালেন্সও একটু এলোমেলো হয়ে যায়।তাই দিনে রাতে মিলে নিজের সুযোগ সুবিধা অনুযায়ী কমপক্ষে আট ঘণ্টা ঘুমিয়ে নিতেই হবে। রোজা মানেই সংযম ও কষ্ট। এসময় এই কষ্টটাকে মেনে নিয়েই নিজের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।‘’



রমজানে কাজের চাপও বেড়ে যায় অনেকটা। তাই সব কাজ সহজে করার কৌশল আপনাকে জেনে নিতে হবে।ঘরের কাজে স্বামী সন্তানদের সাহায্য নিতে পারেন। সবাই মিলে কাজ করতে গিয়ে মজার অভিজ্ঞতাও হবে।প্রতিদিনের খাবার প্রতিদিন তৈরি করার ঝামেলায় না গিয়ে, কিছু খাবার সংরক্ষণ করতে পারেন। অনেকে আবার দোকান থেকে খাবার কিনেও ইফতারের আয়োজন করে থাকে্ন। চিকিৎসক নাসরিন তাহমিনা এ প্রসংগে বললেন, ‘’আমাদের দেশে যেহেতু দোকানের খাবারের মানের উপর তেমন নিয়ন্ত্রণ নেই, তাই এসবের উপর নির্ভর করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। তবে শখ করে দু একদিন হয়ত বাইরের খাবার কিনে খাওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে ঘরোয়াভাবে তৈরি করা মানসম্মত খাবারগুলোর কথা ভাবা যেতে পারে।‘’ গৃহিণী তাহমিনা আক্তার অবশ্য মধ্যবিত্ত টানাপোড়েনের জীবনে এসব খাবারের উচচমূল্যের কথা ভেবে তার শংকার কথাই জানালেন।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জুন, ২০১৪ রাত ৮:২৭

আমি দিহান বলেছেন: সুন্দর পোস্ট!!?? বিশেষ করে নারীদের জন্য।

২২ শে জুন, ২০১৪ রাত ১১:১৮

এইযেদুনিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.