নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলো অন্ধকারে যাই

সময়টা কি করে দেবে সেটা তার অধিকারী জানে, চাইলে পোকায় ধরে নষ্ট কাল ভেসে যাবে যমুনার বানে

স্বদেশ হাসনাইন

ছোট একটা ফার্মে কাজ করছি । সৌখিন লেখক । ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করি । পকেটে পয়সা থাকলে এদিক ঘুরে খরচ করে ফেলি । সুনীলের লেখার ভক্ত, শামসুর রাহমানের কবিতা পড়ি। বিদেশী লেখকের মধ্যে ড্যানিয়েল স্টীলের লেখা ভাল লাগে । সবচেয়ে ঘৃণা করি স্বাধীনতার বিরোধী শক্তিকে । একাত্তর আমার সবচেয়ে বড় অহংকার। ইমেইল: [email protected]

স্বদেশ হাসনাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

মিশ্র - ১০

০৩ রা মে, ২০১৪ রাত ১১:৪২

এত চিঠি চলে গেছে আকাশের ঘরে

কি হবে আমাদের?

শিলাবৃষ্টির মত যেদিন চিঠির ফেরত আসবে

কি হবে আমাদের?





যত তার সময় শেষ হতে থাকে

ঘণ্টা বাজে বাড়ি ফেরার

হাতের কলম শাণিত হতে থাকে,

তীব্র লেখার সাধ

মাটি ফুঁড়ে বের হয়..

অবেলায় উঠে আসে রঙিন স্বপ্ন লাল কাঁকড়ার মত!





সব কাজ ফেলে রাখো নির্জনা,

পালক পরিমান হাওয়া হাতের নরমে নিয়ে

গুটিয়ে থাকো, শীরণ পাইকাড় গাছের ছায়ার মতন -

গালে হাত দিয়ে সব শোনো,

অতন্দ্রিতা চোখে করে বোঝো

টেবিলে খাম হয়ে

আমি আছি পূর্ণিমার খুব কাছা কাছি







কিছু প্রশ্ন আমাকে লজ্জিত করে। কিছু করে মাথা নষ্ট। চোরাগুপ্তা হামলার মত কোন একটা দর্শন আমাকে ভাবাতেই থাকে।যখন ভাবনা শুরু হয়, একটা নাকফুলের মত লাগে। বেশ সুন্দর আর সবুজ। আমি যখন তার স্বাদ নিয়েছি, বুঝতে পেরেছি মরিচেরাও নাকফুলের মত থাকে।

আমাদের বাড়িতে আমি কোনদিন সোফা দেখি নি। কাঠের গদিবিহীন চেয়ার, মাদুর আর মেহমান এলে সামনে বিছিয়ে দেয়া শতরঞ্জি। কি থাকলো কি আসে যায়। আমি সোফায় বসে আছি। আমার গা ডুবে গেল তুলতুলে কাপড়ে। তখন মনে পড়েছে বৃষ্টি হল, মনে পড়েছে সাঙ্গুনদীর ধারে একটা বনদস্যু কাঠ কেটে সাইজ করছিল। আমার ঘৃণার বয়সটা কেটে গেছে।

আগে যে মানুষটা মিথ্যা বলতো ঘৃণা হতো। এরকম কিন্তু সবার হয়, আমি মিথ্যে বলার পর খোদার নামে কিরা কেটেছি কখনো অন্যায় করবো না। এখন কাউকে মিথ্যে কেনো, জঘন্য মিথ্যা দেখলেও পর মনে হয় না। কারণ সবার জন্যই নিয়মটা আলগা করে ফেলছি।

বেড়াতে গিয়ে বন্ধুর বাড়িতে খেতে বসেছিলাম, সেদিন আমি সকালে, সকালের পর দুপুরের আগে অন্তর্বতীকালিন নাস্তা খেয়েছি। কিছুক্ষণ পর চা, তারপর স্ন্যাক্স, টিভি দেখতে গিয়ে চিপস..এসব খেয়ে ক্ষুর্ধার্ত হয়ে গেলাম আরো। একটা বাড়তি গোশতের টুকরো চিবিয়ে ফেললাম, একটা মোটা বিড়াল এসে পায়ের দ্বারস্থ হল। তারপর সেই হাড় ডানে বামে ঘুরিয়ে খেতে থাকলো। প্রশ্ন এলো তখুনি। এই যে হাড়ের ক্যালসিয়ামটা যে প্রাণীর জীবনের সৌজন্যে তাকে কি দিয়েছি? যে পশু আজন্ম আমার গোশত যোগায় তার পুরষ্কার আমি তার সব চিবিয়ে খাই। মাছদের পুরষ্কার আমার দাঁতে তার শরীর কাঁটা হয়ে লেগে থাকে। এটা তাড়ালাম এই বলে আমার দরকার মানবিকতা। মানে মানুষের জন্য যেটা ভাল। অন্য সব প্রাণী আমার আহার। আমি আমার মতই ঘরোয়া ক্যাটকে দেখে বলতে চাইলাম,

শত শত প্রানী আফ্রিকার ডকুমেন্টারীতে জলের জন্য দাঁড়িয়ে আছে। ডিজিটাল মাখন চলো খাই আমি আর তুমি। বিড়াল তুমি কি হতে পারতে সেই আফ্রিকার মানুষ? হতে পারতে ইউরিনাল পরিষ্কার করে যায় যে তরুণ? অথবা পতিতালয়ের হাতআয়নায় মুখ দেখা রমণী যে দরজা বন্ধ করে সতর্ক অপেক্ষায় কখন নতুন কেউ এসে নক করবে। আমার কোন যোনী নেই বলে যোনীর পরবর্তী যে জরায়ু তার ভিতরের সুখ দুখ আমি বুঝবো না। একটা বাড়তি আগাছা প্রশ্ন জন্মে গেল, স্মরণ শক্তি বাড়াতে নাসা গবেষণা শুরু করছে। ভুলে যাবার জন্য কোন উপায়? বেছে বেছে যা ভাল লাগে না তাকে মুছে ফেলতে পারলে ভাল হতো। একটা কিশোরের বৃষ্টিতে ভেজা ছবি ভুলতে পারছিলাম না। সে সরাসরি শুয়ে থাকলো কাদার ভিতর। তার বাদামী নাভীতে বৃষ্টি জমলো। সে মাছ হয়ে গেল। আমি কমলাপুর ব্রিজ থেকে উঁচু বৃক্ষ আচ্ছাদিত জায়গায় ভবন দেখে রহস্য জানতে পারি নি। বহু পরে জেনেছি ওটা বঙ্গভবন। ওখানে কানাবগীর বাড়ির মত ঐ দেখা যায় ছড়ি আবৃত্তি করি, ওরা কি আমার মত কেউ? অবশ্য একটা প্রশ্ন আছে যাকে বলা হয় সৃষ্টির প্রথম জটিল প্রশ্ন। আমি কে? বা আমি কি?

আমার তারচে' বড় প্রশ্ন আমি কি আমি থাকলাম? আর আমি কি আমি? একদিন আমি জন্মেছিলাম জামা ছাড়া বাচ্চা হিসেবে। আমাকে পোশাক পরিয়ে ঢেকে ফেলে যা কিছু অবশিষ্ট সেটা আমিত্ববিহীন। কোন পশুর নিজস্ব জগত বেছে নেবার স্বাধীনতা ছিল। যেমন একটা সবুজ ঘাসেরও স্বাধীনতা আছে নিজেকে তার মত বাড়িয়ে নেবার। হরিণকে বাঘ যখন চেপে ধরে খেয়ে ফেলার জন্য আমি হরিণের বুনো নিয়মে যুদ্ধ করে মরে যাবার আনন্দকে দেখি। একটা বুনো লেবুঘাসের গন্ধ বন উচ্ছেদের পর হারিয়ে গেছে। আমি যেভাবে জন্মেছি তাকে কেটে ঘষে পালিশ করে হীরে করার চেষ্টায় আদতে আমি আর নেই। আমার একটা হীরে দেখার সখ, খনি থেকে যেটা নেমে আসে। কেটে কুটে তার উজ্জ্বলতা বাড়ানোর নামে ব্যক্তিত্বহীন করে ফেলা হচ্ছে - ওরকম নয়। হতে পারে কয়লা, হতে পারে হীরের দুল। আমি ওসবের চাইতে ভিন্ন কিছু হয়ে জন্মেছি।

আমি কোথায় যাবো সে প্রশ্ন বোঝার আগেই আমাকে বাড়ি থেকে বের হতে বলা হল। টের পেয়েছি কখন চলমান ভ্যানে উঠেই গেছি। দেয়ালে দেয়ালে শত শত নিয়ম লেখা। আমি পড়ছি আর মানছি। পড়ছি আর মুখস্ত করছি। এখন দেয়ালটা ভেঙে ফেলার পর ..ভৌতিক ছবির মত সেই নিয়ম দেখতে পাই। খোলা মাঠ, তবু আগের সেই দেয়াল লিখন আমাকে জীবনযাত্রা ঘটায়।

খুব আরামে খাকতে পারলে হতো। যেমন একটা মানুষ আমাকে বলেছিল তার কাছে জটিল কিছু এলে মাথা খারাপ লাগে। তাই শুধু সরল কিছু নিয়ে সে চলে।

আমিও একমত হই প্রশ্ন মুখোমুখি দাঁড়ালে - সময় মত সেনাবাহিনীল নিয়মে তাকে হত্যা করতে হবে। নতুবা একদিন সেই শিশুপ্রশ্ন হৃদয়ের ক্ষমতা দখল করে নেবে। পরবর্তী প্রশ্ন আমাকে মল্লযুদ্ধের আমন্ত্রণ জানায়। আমি শব্দটির মত প্রিয় শব্দ - যদি দাঁত ব্রাশ করতে করতে স্নানঘরের আয়নায় আমি নিয়ে প্রশ্ন তুলি দ্বিধাগ্রস্ত হতে আর কি বাকি থাকে? আমার টেবিলে রেখেছি একটা কাগজ কাটার কাঁচি, কাল সেলফোন, চায়ের কাপ যাতে চামুচ ডোবানো। একটা যন্ত্রসর্বস্ব ইঁদুর। আমার লেখার পরই মনে হল, টেবিলটা আমার এমন অধিকার কবে থেকে পেলাম? আজকে আছি ..বেশ তো।





আমি শব্দহীন গ্রামের ছবি তুলে এনেছি। এটা মিথ্যে আমি দৈনতা চাই না। অভাবী পেট চাই না। তবে রোম্যান্টিসিজম কার না পছন্দ। বিষন্ন দিনে আমি ভালুকার অদুরে শিবগঞ্জের মোড়ে, যেখানে অটোর চাকা পাংচার হবার থামতে হল। একটা টিলার মত জাগায় যে দোকান, সেখানে রক্তিম পান খেয়ে দাঁত পত্রজ ডিনামাইটে উড়িয়ে দেয়া কৃষকটি এসে পা তুলে বসে। আড্ডা দেবার দোকানে এসে একটা জীবনের কথা বলেছিল। সেদিন থেকে আমি তার আত্মা ধার চাই।



-

ড্রাফট ১.০ / এক সাথে সব। বানানের ভুল মার্জনীয়।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা মে, ২০১৪ রাত ১২:২৫

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: বেশ সুন্দর অনুভুতি

২| ০৪ ঠা মে, ২০১৪ রাত ১:০৩

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: আপনার কবিতা এবং ড্রাফট দুইটাই আমার বেশ পছন্দ!

৩| ০৪ ঠা মে, ২০১৪ রাত ২:৪৮

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:

সুন্দর। ভালো লাগলো।

৪| ০৪ ঠা মে, ২০১৪ সকাল ৯:৫০

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: ২ আর ৩ বেশি ভাল লাগলো ।সুন্দর ।

৫| ০৪ ঠা মে, ২০১৪ সকাল ১০:০৪

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: সবগুলোই অসম্ভব সুন্দর------

৬| ০৪ ঠা মে, ২০১৪ সকাল ১১:৫৮

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: মুগ্ধপাঠ!

৭| ০৪ ঠা মে, ২০১৪ বিকাল ৪:১৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: বরাবরের মতই সুন্দর।

৮| ২২ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:১৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
হাসনাইন ভাই,

ফেইসবুকে আপনাকে কোন নামে পাওয়া যাবে? ফেইসবুকের এ স্টেটাসটি পড়ার জন্য অনুরোধ করছি। শীঘ্র রিসপন্স করবেন আশা করি।

সম্ভব হলে আমাকে আপনার ফ্রেন্ডলিস্টে এ্যাড করুন।

শুভেচ্ছা।

৯| ২৫ শে মে, ২০১৪ সকাল ৯:১৬

আলম িসিিদ্দকী বলেছেন:
যত তার সময় শেষ হতে থাকে
ঘণ্টা বাজে বাড়ি ফেরার
হাতের কলম শাণিত হতে থাকে,
তীব্র লেখার সাধ
মাটি ফুঁড়ে বের হয়..
অবেলায় উঠে আসে রঙিন স্বপ্ন লাল কাঁকড়ার মত!

.......................................................................

রক্তিম পান খেয়ে দাঁত পত্রজ ডিনামাইটে উড়িয়ে দেয়া কৃষকটি

..............................................................................

সুন্দর এক গুচ্ছ লেখা পড়ে দিন শুরু করলাম।
অনেক ভালো লাগলো।

১০| ২৬ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৫:২১

ছায়াপাখির অরণ্য বলেছেন: ৪ টা সবচে ভাল লেগেছে!

শুভেচ্ছা, হাসনাইন ভাই! :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.