নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলো অন্ধকারে যাই

সময়টা কি করে দেবে সেটা তার অধিকারী জানে, চাইলে পোকায় ধরে নষ্ট কাল ভেসে যাবে যমুনার বানে

স্বদেশ হাসনাইন

ছোট একটা ফার্মে কাজ করছি । সৌখিন লেখক । ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করি । পকেটে পয়সা থাকলে এদিক ঘুরে খরচ করে ফেলি । সুনীলের লেখার ভক্ত, শামসুর রাহমানের কবিতা পড়ি। বিদেশী লেখকের মধ্যে ড্যানিয়েল স্টীলের লেখা ভাল লাগে । সবচেয়ে ঘৃণা করি স্বাধীনতার বিরোধী শক্তিকে । একাত্তর আমার সবচেয়ে বড় অহংকার। ইমেইল: [email protected]

স্বদেশ হাসনাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

শহরে আসা জহুর

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১১:৫৫

জহুরের কথা আব্বার কাছে শুনলাম। সতের বছরের কলেজের ছেলে নাকি স্লিপিং পিল খেয়ে ঘুমায়। তাও ঘুম হয় না। বড় একটা সমস্যা তার। যদিও গ্রামে থাকে। কিষানমজুরদের মত অভাবের কষ্ট নেই তার। থেকে শহর আসার পর ঠিক হয় নি তার বিষাদগ্রস্ত্তা।

তার কিছুই ভাললাগে না। এটা ধুম করে বেড়ে গেছে গত কয় মাসে। যা দেয় তাই কিনে দেয় বাবা। সিডির গান শুনতো বলে স্টেরিও দিয়েছিল। পুত্রের মনোবাসনা পুরাতে মোটর সাইকেল কিনে দিয়েছিল। এখন কিছুই সে চায় ান। পড়ে আছে বাইক। গানবাজনা শেখার তবলা। গত বছর পর্যন্ত শুরু করতো। তারপর ভাললাগত না। এখন ছুঁয়েও দেখে না। পড়াশোনা জোর করে করানো হয়েছে। বই পড়তে দিলে কিছুদুর গিয়ে পড়ে না।শুয়ে থাকে। মনমরা লাগে।

কেন ভাললাগে না জহু? ঢাকায় এসে মামীর বাসায় কি করো? টিভি দেখো না। কত চ্যানেল, হিন্দি গান? বা নাটক?

ভাললাগে না।

একসেট জিন্স টিশার্টের পোশাক...তাও আগ্রহ নেই।

আমার মনে হয়েছিল এ সব হলো স্বচ্ছল সন্তানদের ঘোড়ারোগ। আমি ফোনে বলেছিলাম আব্বা, এসব যত পাত্তা দেয়া হয় তত ভুতের মত মাথায় চেপে বেস। একে চ্যাং চ্যাং করে বেত দিয়ে পিটালে ঠিক হয়ে যাবে। ঘোড়া তখন সবল টাট্টু হয়ে দৌড়াবে।

পরদিন কলিং বেল বাজিয়ে ঘরে ঢুকলাম।

জহুর বসে আছে একটা চেয়ারে। নির্বিকার। মাথা দিয়ে আছে টেবিলে। মাথা কিন্তু ধরে নেই। তবুও। বললাম জহুর তোকে বই দিয়েছিলাম। ওটা পড়ে দেখেছিলে। হুমায়ুন আহমদ।

না। আরেকদিন দিলাম শির্ষেন্দু। গান দিলাম। মোজার্ট থেকে লালন। কি লাভ এইসবে? অনেক বড় হতে পারবা।

হলে?

অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গাতে যাবা। ঘুরবা।

আমার ঘুরতে ভাললাগে না।

বড় হবা হলে তোমার মত ভালবাসবা।বিয়ে করবা।

বিয়ে করে কি হবে?

কি হবে আর নিজের বাড়িতে থাকবা। হ্যাপিনেস।

না পেরে আমি আল্লাহর ভয় দেখাই। আল্লাহ শোকর না করলে অনেক সাস্তি দেবে।

কিন্তু সে বাঁচতেই চায় না।

তাকে খেলার মাঠে পাঠানো হলে তার মনে হয় প্রতিযোগিতায় গিয়ে কি লাভ?

হারজিক ভাল মন্দ কিছুই তার ভাললাগে না।

নিজের যুক্তির সাথে নিজে বাকাট্টা খেলি।

প্রশ এক: আমাদের কেন এত কিছু ভাললাগে? কেন আমরা স্বপ্ন দেখি। দেখি অনেক টাকা। আরলাল নীল বেলুন ওড়াচ্ছি। রঙের ছবিতে সুখ পাই - এই কি তার কারণ।

সুখের অর্থ খুঁজি। মাথার ভিতর এক চামুচ বেহেসতি মদ ঢেলে দেয় যেন কেউ। আমি প্রেম করার কথা গোপনে ভাবি। ঠিক বেঠিক সবাইকে না বললেও ভাবি। নারীর ঠোঁটের স্পর্শ পেয়ে ভেসে যাবো - এই গোপন স্বপ্নও কেমন জাগিয়ে দেয় রোমকূপ। এক চামুচ মদের মত সুখ দেয় সেটা। কি লাভ? কি ক্ষতি? মাছ ভাজার স্বাদ আর অনেক টাকা আয়ের আকাঙ্খ্যায় কেন লাভ হয়?

কোন লাভ নেই। সুখ যে পেতেই হবে এমন ও কথা নেই। হঠাৎ মনে হলো যারা সুখ পায় তারা অসুস্থ। আমরা কি সবাই অসুস্থ।জীবতত্বের গণতন্ত্রে এই মোহাচ্ছ্ন আর আশার অসুস্থদের সংখ্যা এত বেশি যে গণভোটে বিস্বাদ- ভাল লাগছে না যে বলছে সেই দিব্যি সুস্থ মৃত্যুকামী বালকটিকে বলছি মানসিক রোগী।



-

ড্রাফট ১.০

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.