নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলো অন্ধকারে যাই

সময়টা কি করে দেবে সেটা তার অধিকারী জানে, চাইলে পোকায় ধরে নষ্ট কাল ভেসে যাবে যমুনার বানে

স্বদেশ হাসনাইন

ছোট একটা ফার্মে কাজ করছি । সৌখিন লেখক । ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করি । পকেটে পয়সা থাকলে এদিক ঘুরে খরচ করে ফেলি । সুনীলের লেখার ভক্ত, শামসুর রাহমানের কবিতা পড়ি। বিদেশী লেখকের মধ্যে ড্যানিয়েল স্টীলের লেখা ভাল লাগে । সবচেয়ে ঘৃণা করি স্বাধীনতার বিরোধী শক্তিকে । একাত্তর আমার সবচেয়ে বড় অহংকার। ইমেইল: [email protected]

স্বদেশ হাসনাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্মৃতিহীন

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১১:৫৩

তোমাদের বাসায় কি যেন একটা নাড়ু খেত সবাই। সাদা রঙের উপরে তিল। সারদা থেকে ফেরার সময় তোমার মা আনতেন। প্লাস্টিকের প্যাকেট ভর্তি করে এনে তোমাদের বাসায় সঞ্চিত হবার পর সুদক্ষ পাচারকারীর মত তুমি আমার সীমানায় রেখে যেতে। সেই আমি এখন খুব মিষ্টি খাই। নুন দেয়া তেতুলের হজমী পাই না। যদি পেতাম এখনো বাচ্চাদের মত হাতে নিয়ে জিভ দিয়ে চেখে দেখতাম। যখন বললে পাঠাবে -তোমার প্রিয় যে কোনো খাবার দিও। এন্টাসিড খেয়ে পেটে আস্তর জমে গেছে। তবুও ডাক্তার বারণ করে নি। আর যদি সময় হয় একটা পাখা বানিয়ে দিও। এখনো কি পারো? কাঁচামাল যোগাড় করতে পারবে না। শাড়ীর কাপড়ের পাখা হোক। এই শহরের লোডশেডিং এ অফিসের কিউবিকলে আমি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে হাওয়া করবো নিজেকে। এসব ঢাকায় কে পাবে। বাঁশের ডাঁট দুর্লভ। ঘিয়ে রঙের বাঁশ। জমিতে যত্ন করে সুঁই দিয়ে তোমার নাম তুলো। আমি তোমাকে শুধু প্রথম অক্ষরেই ডাকতাম। তবে কি আমি খুব ভীতু ছিলাম। নাকি কৌশলি?

সবাই দেখবে অক্ষর কিন্তু মানে খুঁজে পাবে না। সহকর্মী মৃদুল এসে মুচকি হাসবে। ইন করা শার্টের উঁচু কর্মকর্তা সামনে ল্যাপটপ আর বাম হাতে হাত পাখা ঘুরাচ্ছে। আমি সখ করে পত্রিকায় লিখি প্রায় তিন বছর। গল্পের মধ্যে ঘটনা ওলট পালট করি কিন্তু আমার ভালবাসার মানুষদের নাম সত্যিটাই লিখেছি। রুমকির কথা জানে ওরা। হাঁসুর সাথে মতিবাহার স্কুলের কথা জানে। খাতার কাগজ ছিঁড়ে উড়োজাহাজ আর নৌকা বানিয়েছি। হাঁসুর বাবা ছিল জিএম ফার্মেসির কম্পাউন্ডার। আমি রঙ চড়িয়ে একটা পুরনো বাড়ির কথা বলেছি। হাঁসু চিটগাং এর পাহাড়তলীতে থাকে। বড় হবার পর আমার মেজ মামার পালিত মেয়েটা আমার খুব কাছে এসেছিল। আঠার মত লেগে থাকতো। আমি ভাবি নি ওর সাথে হুট করে একদিন বৃষ্টিতে ছাদে উঠে ভিজতে গিয়ে ভেজা সাদা পোশাক থেকে চায়ের পাতার কুঁড়ির মত স্তনাভাস দেখতে পাই। সে আমাকে পুরুষ ভাবতো না। অনায়াসে জামার উপর হাত ছাপিয়ে শরীর ডলে স্নান করতো। এ সব তোমাকে লিখছি - কারন তুমি জানো সব ঘটনা। মেজো মামার মেয়েটা আমাকে বন্ধু ভাবতো। অথবা তার চেয়ে বেশি। সেই রহস্যের গভীরতা আমার ভেদ করা হয় নি। তবে মেয়েরা যার মত করে জীবনে আসে, ফের চলে যায়। নিঝুটার বয়স সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। কিন্তু সময় থেমেই আছে।



তোমাকে এভাবে খুঁজে পাবো ভাবি নি। তোমার হয়তো মনে ছিল না। আমাদের বাড়ির এত কাছে ছিল। তোমাকে দেখার ছলে মজনুসর্দারের চায়ের দোকােনর সামনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতাম। ছেলেরা বোকার মতই এসব করে। আর প্রেমের সংখ্যাটা তাদের বেশ মনে থাকে। তবে আমি সবার কথা বললেও আমার কোন লেখাতেই তোমার কথা আমি বলি নি। কেন বলি নি?

স্মৃতি, তোমাকে তো বলেছিই। উত্তরার বাড়িটাতে আমি একাই থাকি। মা চলে গেছেন। জীবন ফেরত মেলে না জানি কিন্তু যদি হয়ে যায়! ভেবো..প্লিজ





...

২/২/১০১৩। সৈয়দ জুবায়েরের সাথে হাতিরপুলে দেখা করেছি গতকাল। সে একটা প্যাকেট দিয়ে বলল

-আপা আপনার কথা জিজ্ঞেস করেছিলেন। আপনি কি আবার যাচ্ছেন ও দিকে। বেচারি ক্যান্সারে ভুগে কি হাল হয়েছে। ভাগ্য সুপ্রসন্ন সাক্সেসফুল অপারেশন হয়েছে। অনেকেই ফিরে আসে না। তারপর আপা স্বাভাবিক আছে। এদিকে আপার ছেলেটা পড়তে গেছে।



স্মৃতির কথা ভাবতে ভাবতে অফিস থেকে ফিরছি। কি করে আমি ফিরে পেয়েছি তাকে। খুব অবাক ভাবেই। আমি বহুবছর একা থাকার পর যখন মা চলে গেল। মিনু তার বাড়িতে চলে গেল স্বামীর সাথে। ঢাকার এক ঘটকের মাধ্যমে পাত্রীর খোঁজ করছি। আমার বয়সের সাথে মিল রেখে পাত্রী মেলা ভার। অবশেষে জানলাম ঢাকার বাইরে বসবাসরত এক বিধবার .. স্মৃতির সাথে দেখায় চমকে উঠেছি। এই নাম কত জনের হয়। আমি স্মৃতির বাসায় গিয়ে বললাম পরিচয়। ওরা আগ্রহী ছিল। জানলাম একের পর এক বিপর্যয়ে সে ভাল ছিল না। সব শেষে স্তনের ক্যান্সার এসে তার দেহের সুস্থতা কেড়ে নিল। অঙ্গবিচ্ছেদের পর সে ফিরে এলো বটে কিন্তু মেরামত করা মানুষ কত আর ভাল থাকে।

আমি ভাবতে পারি নি সেই সুশ্রী ছিপছিপে তন্বী মেয়ে এত বদলে গেল। তার সাথে প্রেম হবার একটি বছর যেন ঝড়ের মধ্যে গেছে। যদিও সে আমাকে আপনি করে বলে গেছে ...তর স্বাভাবের সাথে তাই মানায় কিন্তু সে তার খেলা সঙ্গীর মত করে যেন দেখতো আমাকে।

আমার মনে পড়ে একদিন সন্ধ্যায় ফিরে আসার সময় তাকে চুমু খেয়েছি। আমি জামাটার র ঙ মনে করতে চাইলাম। নি:শব্দ তেলরঙের মত হাত ছুঁয়ে দিয়েছিল তার কণ্ঠনালী, গ্রিবা হয়ে সেই আদিম পাথর। বহু আকা ঙ্খিত সে সৌন্দর্য! ভালবাসা একবার যেখানে স্পর্শ পেয়ে যায় .. সেটা তার পরিচিত বাড়ি হয়। স্মৃতি জানতো কি অমোঘ রহস্যের ভেতর আমার হাতের মুঠো বিজলী খুঁজতে থাকে। আমি হয়তো বেশি মাত্রায় শরীরের ছিলাম।

স্মৃতিকে বলেছিলাম, স্মৃতি আমি বড় একা। তোমার পথটাও ভেঙে গেছে। এসো দুজনের হোক। তোমার ছেলেটা বড় হয়েছে। ও মানবে।

স্মৃতি কিছু বলে নি। শুধু বলল লিখবেন। আমি আগের মত নেই। আমি এখনো খুব খারাপ সময়ে সুন্দর সময়কে তুলে আনি। আজ আমি সম্পুর্ণ নই আর।চাই না ভাল না লাগার ক্ষতটা বাড়ুক। করুণা হোক।

বোঝাতে না পেরে দুদিন ওখানে থেকে চলে আসি।

স্মৃতি আমাকে খিলগাঁর ঠিকানায় শুকনো মিষ্টি পাঠালো। একটা চিঠিতে লিখলো

জনাব কথাশিল্পী, দু দিনের জন্য এলেন।এসে মায়া বাড়িয়ে দিলেন। জং ধরে পড়ে থাকা জানলায় এখন কেমন স্বপ্নের মত লাগে। আর - দিন কে দিন কথায় পাকা হচ্ছেন। আমি সন্দেশ আর চিড়া পাঠালাম। এখন শহরে পানির আকাল। কথা দিয়ে ভিজিয়ে খাবেন।



-

ড্রাফট ১.০

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:৪৫

সুফিয়া বলেছেন: ভাল লাগল। ধন্যবাদ।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৬:০০

স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ সুফিয়া।

২| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:২৫

কলমের কালি শেষ বলেছেন: চমৎকার লেখা । পড়ে ভালো লাগলো । :)

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৬:০০

স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: পড়েছেন দেখে খুশি হলাম

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.