নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলো অন্ধকারে যাই

সময়টা কি করে দেবে সেটা তার অধিকারী জানে, চাইলে পোকায় ধরে নষ্ট কাল ভেসে যাবে যমুনার বানে

স্বদেশ হাসনাইন

ছোট একটা ফার্মে কাজ করছি । সৌখিন লেখক । ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করি । পকেটে পয়সা থাকলে এদিক ঘুরে খরচ করে ফেলি । সুনীলের লেখার ভক্ত, শামসুর রাহমানের কবিতা পড়ি। বিদেশী লেখকের মধ্যে ড্যানিয়েল স্টীলের লেখা ভাল লাগে । সবচেয়ে ঘৃণা করি স্বাধীনতার বিরোধী শক্তিকে । একাত্তর আমার সবচেয়ে বড় অহংকার। ইমেইল: [email protected]

স্বদেশ হাসনাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

খবিসের ধার

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৫৬

সামনের অংশে চক চক করে ধার। রোদের ফালি চোখে পড়ে তখন মনে হয় গল্পে পড়া তেলেসমাতি ঘোড়ার উপর বসে থাকা বীর। তরবারী বলে কিছু এই যুগে মিলবে না। তার সাড়ে সাত ইঞ্চি ধারালো বস্তুটা এমন ভাবে বানানো তার সামনে চিকন অংশ মুহূর্তে হরিৎ আচ্ছাদন ছিন্ন ভিন্ন করতে পারে। তাকে সবাই জানে নষ্ট। সে চোর। একটা না দুটো নয় পুরো জায়গা সে যদি পেতো। প্রথমে সে মজুমদারের অঞ্চলে ছিল সেরা তস্কর। পুরো এলাকাকে নিজের বানাতো। মকবুল্যার মত এমন সাহসী কেউ নেই।

গত পরশুর কথা সে বজলু মেম্বারের পাঁচিল পার হয়েছে। একটা দীঘির পারে বড় একটা গাছের আড়ালে সব হলো।

মকবুল্যা চাক্কুটা নিয়ে উপরে উঠেছে। দুই পা কাঁচি দিয়ে ধরে একটাকে টেনে ধরেছে। শক্ত হয়ে আছে। কাঁপছে না। না, সময় লাগবে। কিন্তু একটু পর এসে হাজির হবে একজন। তখন নিস্তার নাই। মানুষের কণ্ঠস্বর থামাতে পালানো ছাড়া উপায় হবে না।

সময় কম বলে সে জোরে টানতে থাকে সবগুলো। তিন চারটা ফল এক সাথে। আমের এই স্বাদ অন্যরকম। পুরো ঝাঁকার গোড়া থেকে কেটে ফেলে যতগুলো সম্ভব নিয়ে পালাবে সে। লোকজন আসার আগে সব হবে। একটা মুখে দেয়, টক। মনে হয় শরীরে লবন মাখালেই কাজ হবে। এত অল্পতে হবে না। একটা সে ছিঁড়ে ফেলল। লবন পড়ে যায় কোঁচর থেকে। তখুনি শুনতে পায় মেম্বারের নাতি। ফর্সা ধব ধবে গালে ভদ্র ভাষায় বলে।

ওই খবিস আমগো গাছে উঠচস ক্যান? নাম। দাদারে ডাকলাম। সে একেবারে খুন কইরা ফালবো।

খবিস ছড় ছড় করে নেমে পালাবে। মেম্বারকে তার ভয়। এই নিয়ে এক সপ্তাহ ধরে এই ছেলেটা বাঁধা দিয়েছে। সে ভীত হয়ে পালাতে যাবে। হঠাৎ তার সাত ইঞ্চি ছুরিটার দিকে নজর যায়। যার হাতে ছুরি সে কেন পালাবে? তার কিসের অভাবা?

মকবুল্যার ভয়ে সমস্ত ফলের ঝাঁকা নুয়ে যায়। সে যেমন খুশি কেটে ফেলতে পারে নারকেল শবরি, আম! এই মানুষের শরীরকে কেটে ফেলাও সমস্যা না।

খবিস ডাকলি ক্যান, আমার নাম নাই? আমার হাতে কি দেখসস? এক্কেরা উঝুরি গালায়ে ফালবো।

মেম্বারের নাতি এসবে ভয় পায় না। তার নানার বন্দুক সে ধরে দেখেছে। গুলি না ফুটতে জানলে বন্দুক আর কাগজ এক সমান। এ মকবুল্যা ছাচড়া। তার হুমকিতে ভয়ের কিছু নাই। কিন্তু কিছুক্ষণ পর নাতির ধারণা মিথ্যে হয়। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ের শক্তির কাছে হেরে যায় মেম্বারের নাতি। তার পেটে বিদ্ধ হয় একটা তার ধারালো ছুরি।

কিশোর মকবুল সম্বিত ফিরে বুঝতে পারে মানুষ আর আম ফল এক না। সে ছুরিটা টেনে তুলে পুকুরের দিকে ছুটে পালায়। পা চলছে না। সে ভিতর গলা ডুবিয়ে কাঁপতে থাকে। আল্লাহ কে ডাকে। তার কোন রক্ষা নাই।

*

একটা ঘটনা ঘটে সেই দিন। ঘণ্টা খানেক পরেই ডাকাতি হয় মেম্বারের বাড়িতে। সে এক ভয়াবহ ঘটনা। হতে পারে আগের পরিকল্পিত। ডাকাত দলের সদস্যরা আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্রের সামনে আটক করে পুরো বাড়ি। গুলিতে মারা যায় মেম্বর সহ বাড়ির আরো তিনজন। মেম্বারের বড় মেয়ের লাশ পাওয়া যায় খড়ের গাদার পাশে। আর সেই মেয়ের সন্তানকে পাওয়া যায় আম গাছের তলায় রক্তাক্ত।

থানা পুলিশ হয় তাতে ডাকাতের দলের বিরুদ্ধে ।সব অভিযোগ প্রমাণিত হয়। ডাকাত দলের চারজনের ফাঁসি হয়।

*

মকবুল্যার কথা কেউ আর জানে না। কিন্তু সবাহ দেখে মকবুল্যা মকবুলে পরিণত হয়। সে মসজিদে যায় কোরান পড়তে। ফাইফরমাস খাটে, ধানের জমিতে চাচার সাথে কামালা দেয়। একদিন সন্ধ্যায় মকবুল যখন বাড়ি থেকে বের হয়। সে হঠাৎ দেখে মেম্বারের নাতি তার সামনে। হাতে ঠিক তার মত একটা ছুরি।

চারপাশ মাছের মত চকচকে মুখটা সূঁচালো। সে ডাকে, মকবুল ভেবেছিলি আমি নাই। আর আমার কিচ্ছু হয় নাই। আজকে মনে হল গাছে অনেক আম।

মকবুল দেখলো মেম্বারের নাতির মুখে কোন ক্রোধ নেই হাসি। মকবুলের মনে হয় আবারও ওর সাথে আম গাছে উঠে আম কেটে নেয়।

সে, এই মেম্বারের, সত্যি তো, অন্য কোন উদ্দেশ্য নাই তো?

কিসের উদ্দেশ্য থাকবে? মকবুল তখন মেম্বারের নাতির কাছে আসে। মেম্বারের নাতি কিছুই করে নি। তবে তার সারাটা শরীর ছুরির মত ধারালো।

_

ড্রাফট ১.০ / ২ মিনিটের টাইপে চাইলেই কিছু হয় না। থাকুক ড্রাফট।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:০৬

হাসান মাহবুব বলেছেন: শরীর ছুরির মত ধারালো কেনো?

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৫২

স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: আমার মনে হল এই লাইন না দিলে বাকি আর পড়ার কিছুই নাই। সাধারণত একটা কিছু লিখলে পরে এডিট করে বুদ্ধি বের করি। থ্যাঙ্কস হামা পড়ার জন্য।

২| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৩৮

অন্ধবিন্দু বলেছেন:
যা খুশি তাই ?

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৫৩

স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: অনেকটা তাই। যা খুশি। মনে হয় পরীক্ষায় এলাম। যখন লিখা শেষ করলাম ত্রৈমাসিক পরীক্ষায় গোল্লা পাবার মত পরীক্ষা দিলেও পরীক্ষা শেষ হয়েছে এরকম একটা খুশি লাগে।

৩| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৪৯

সকাল রয় বলেছেন:
চলুক

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৫৩

স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: না থামলেই হয় ..সকাল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.