নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি নিশাদ, আলহামদুলিল্লাহ্‌ আমি একজন সুখি মানুষ।

একজন নিশাদ

লেখার মাঝেই খুঁজে ফিরি সুখ নামক সুক্ষ অনুভূতিগুলোকে।

একজন নিশাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

চা-চু

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৩১


চা পানিয়টা আমার পছন্দ ছিল না কোনকালেই, ইদানিং মাগনা চা খাইতে খাইতে চা খাওয়ার একটা পাতি অভ্যাস আমার আপনাআপনি হয়ে উঠেছে, কিছু করার নাই শুনেছি ইংরেজরা নাকি এমনেই ফ্রী খাওয়াইতে খাওয়াইতে আমাদের অভ্যাসটাও
ইমুন বানাইলাইছে,
সময় থাকলে আসেন কিছু জ্ঞান চা খাই

চা আবিষ্কার করেন ২৭৩৭ খ্রিষ্টপুর্বাব্দে মহান চৈনিক শাসক শেন নাং( উচ্চারণটা শেনাং হতে পারে। চৈনিক নামগুলো উচ্চারণ করতে গেলে অধিকাংশ সময় আমি ক্লান্ত বোধ করি।)। শেন তার সাম্রাজ্যে এই বলে ডিক্রি করেন যে তার প্রজাদের সবাইকে জলপানের পূর্বে অবশ্যই সেটা ফুটিয়ে নিতে হবে। তিনি নিজেই সবসময় ফোঁটানো পানি পান করতেন। একদিনের কথা, শেন তখন চীনের জুন্নান প্রদেশে অবস্থান করছেন। যাত্রাপথে এক বনানীর নিচে যাত্রা বিরতি করা হলো। খোলা প্রান্তরে গাছের ছায়ায় বসে আছে সবাই। কেউ বিশ্রাম করছে, কেউ খাবারের ব্যবস্থা করছে। জলপাত্রে পানি ফুটানো হচ্ছে। রাজকীয় ফরমান সে তো আর বৃথা যেতে পারেনা। বাংলাদেশে সংসদে যারা আইন পাশ করেন তারাই কিন্তু আবার সেই আইনকে অশ্রদ্ধা করেন। শেনের রাজ্যে তা হবার জো নেই। তাই পানিকে ফুটতেই হবে। পানির স্ফূটনাংক ১০০ ডিগ্রি সেন্ট্রিগ্রেড। মৃদুমন্দ বাতাস বইছে। মনটাও ফুরফুরে হয়ে গেলো। গলা ছেড়ে গান গাওয়ার জন্য পারফেক্ট সময়।
হঠাৎ বাতাস পাশের ঝোপ থেকে কিছু পাতা উড়িয়ে এনে ফুটন্ত পানির ভিতর ফেলল। পাতাটাকে তুলে ফেলার চেষ্টা করার আগেই সেটা জলে দ্রবীভূত হয়ে গেছে। জলের রং বদলে গেলো। কৃষি এবং ভেষজ চিকিৎসায় শেনের ব্যাপক আগ্রহ ছিলো।
শেন কৌতূহলী হয়ে জলের ঘ্রাণ শুঁকে দেখেন অন্যরকম এক মাদকতা ছড়ানো গন্ধ। তিনি এটার স্বাদ নিলেন। প্রথম মানুষ চায়ের স্বাদ নিলো। তারপর তো রীতিমত চায়ের প্রেমে পড়ে গেলো। টি এর বাংলা হিসেবে আমরা চা ব্যবহার করি। চা কিন্তু বাংলা শব্দ না। চা চীনা শব্দ।
শাং শাসনামলে (১৫০০-১০৪৬ খ্রিষ্টপুর্বাব্দ) চা পাতার রস ঔষধি পানীয় হিসেবে সেবন করা হত। সিচুয়ান প্রদেশের লোকেরা প্রথম চা পাতা সিদ্ধ করে ঘন লিকার তৈরী করা শেখে।
খ্রিষ্টাব্দ ৪০০ শতকে চীনা অভিধানে চা স্থান পায় `কুয়াং ইয়া’ নামে। সেইসাথে বর্ণনা দেওয়া হয় চা তৈরীর পদ্ধতি। ৪০০ থেকে ৬০০ খ্রিষ্টাব্দ, এই সময় কালে চীনারা শুরু করে নানা রকম পরীক্ষা নিরীক্ষা। এরা চায়ের সাথে আদা, নানা রকম মশলা এবং কমলার রস মিশিয়ে চাকে আরও সুস্বাদু করার চেষ্টা করে। সেই সময় থেকে চীনারা বিশ্বাস করতে শুরু করে, চা হচ্ছে রোগ নিরাময়ে এক মহৌষধ।

৪৭৯ খ্রীষ্টাব্দের দিকে চায়ের খ্যাতি ছড়িয়ে পরে তুরস্ক পর্যন্ত এবং শুরু হয় চায়ের ব্যবাসায়ীক লেনদেন। ৫৯৩ খ্রিস্টাব্দে চায়ের ইতিহাস ছড়িয়ে পরে চীন থেকে জাপান পর্যন্ত যেখানে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা চা পানে আসক্ত হয়ে পড়েন। এই জাপানি ভিক্ষুরা প্রায় তাঁদের ভ্রমণের সময় চায়ের বীজ বহন করার স্বাক্ষী হয়ে আছেন।

৬৪৮ থেকে ৭৪৯ খ্রিষ্টাব্দ, এই সময়কালে গোয়োকি নামে এক জাপানি ভিক্ষু ৪৮ টি বৌদ্ধ মন্দিরে চা বাগান করার স্বীদ্ধান্ত নেন। সেই সময় জাপানের সাধারণ মানুষ চা সমন্ধে কিছুই জানতো না। চা পান সীমাবদ্ধ ছিল শুধুমাত্র উচ্চ পর্যায়ের ভিক্ষু এবং সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে।
৭২৯ খ্রীষ্টাব্দের দিকে জাপানিরা তৈরী করে গুঁড়ো চা, জাপানি ভাষায় যাকে বলা হয় `হিকি অচ্চা’। এই গুঁড়ো চা বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং জাপান সম্রাটের কাছে অতি প্রিয় পানীয় বলে বিবেচিত হতো। ৭৮০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে চা পুরো চীনে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করে এবং চীন সম্রাট জনগণের উপর চা কর প্রবর্তন করেন।

৭৮০ খ্রিস্টাব্দে তাং রাজবংশের সময় চীনা কবি লু ইউ, চা নিয়ে সর্ব প্রথম একটি প্রবন্ধ লিখেন `চা জিং’ (চা ক্লাসিক) নামে। তখন থেকে প্রতি বসন্তে চীনা কৃষক কর্তৃক সম্রাটকে তাদের উৎপাদিত সর্বোৎকৃষ্ট চা উপহার দেয়ার প্রচলন শুরু হয়। তখনকার দিনে পরিবহনের সুবিধার্থে চা পাতাকে দুই ইঁটের মাঝখানে ফেলে টুকরো করা হতো। তারপর সুবিধামতো এই চা পাতার টুকরো গুলোকে গুঁড়ো করা হতো।

চায়ের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে তাং রাজবংশের লু তাং লিখেছিলেন :

“প্রথম পেয়ালা ভেজায় আমার ওষ্ঠ এবং কণ্ঠ;

দ্বিতীয় পেয়ালা ঘোঁচায় আমার একাকীত্ব;

তৃতীয় পেয়ালা খুঁজে ফিরে আমার অনুর্বর রন্ধ্র আর তুলে আনে সহস্র ভুলে যাওয়া স্মৃতি;

চতুর্থ পেয়ালা করে কিঞ্চিৎ ঘর্মাক্ত আর জীবনের ভুলগুলো বেরিয়ে যায় লোমকূপ দিয়ে;

পঞ্চম পেয়ালায় হয়ে যায় শুদ্ধ আমি;

ষষ্ঠ পেয়ালা আমায় ডেকে নেয় অমরত্বের রাজ্যে।

সপ্তম পেয়ালা – আহ্ !, আর তো পারি না সইতে আমি !

আমার দুই বাহু ছুঁয়ে যাওয়া শীতল বাতাসের নিঃস্বাস টের পাই কেবলই।

দিব্যধাম কোথায়? এই মৃদুমন্দ বাতাসে আমাকে উড়িয়ে নাও সেথা আর আর ছিটিয়ে দাও এর শীতলতা”।

১৬১০ সালের দিকে ইউরোপে চায়ের প্রবেশ ঘটে পর্তুগীজদের হাত ধরে । শীতের দেশে উষ্ণ চায়ের কাপ প্রাণে স্ফুর্তির জোয়ার নিয়ে এলো। আজ থেকে আনুমানিক আড়াইশো বছর পুর্বে এশিয়ার অনেক দেশে চা পাতার তৈরী ইট মুদ্রার বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হত। এ থেকে সহজেই বোঝা যায় তৎকালীন সময়ে চায়ের কদর বোঝা যায়। ১৭০০ সালের দিকে ব্রিটেনে চা জনপ্রিয় হয়। ইংরেজদের হাত ধরে চা ভারতীয় উপমহাদেশে প্রবেশ করে। তারা ভারতের আসাম রাজ্যে চায়ের চাষ শুরু করে। চা উৎপাদনে চীনের একক আধিপত্যকে খর্ব করতে বিলাতিরা ভারতে চা চাষ শুরু করে। প্রথম দিকে এংলো ইন্ডিয়ানরাই চা ব্যবসা শুরু করে পরে ভারত স্বাধীনতা লাভ করার পর চা শিল্প দেশীয়দের হাতে বিকশিত হয়। আসাম থেকে ছড়িয়ে পড়ে দার্জিলিং, কেরালা, বাংলায়। ভারত পৃথিবীর এখন প্রধান চা উৎপাদনকারী দেশ। বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে আছে নয়নাভিরাম চা বাগান। পৃথিবীর অধিকাংশ বৃষ্টিবহুল দেশে এখন চা উৎপন্ন হয়। ইরানের নাম মনে আসলে আমাদের অবশ্যই চোখের সামনে মরু উদ্যানের কথা ভেসে উঠবে। সেই ইরানের গিলান প্রদেশে আছে শ্যামল চায়ের বাগান।

১৬১৮ সালে রাশিয়া সর্বপ্রথম চায়ের সাথে পরিচিত হয়। চীনা রাষ্ট্রদূত রাশিয়ার জার এলিক্সারের জন্য উপহার হিসেবে নিয়ে যান চা এবং জার তা প্রথমে গ্রহণ করলেও এর মূল্য না জানার কারণে তা ফেরতও দেন।

১৬০০ শতকে চা পা রাখে পশ্চিমাদের উঠোনে। তখন কেবল সুগন্ধীযুক্ত সবুজ চাই ছিল তাঁদের তৃষ্ণা নিবারণের উপায়। এখনকার মতো মোটা দানার কালো চা বা ব্ল্যাক টি তখনও আবিষ্কার হয়নি। এই শতকেই শুরু হয় চায়ের একচেটিয়া বানিজ্যিকরণ। বেনীয়া গোষ্ঠী ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ১৬৬৪ সালে ব্রিটিশ রাজা এবং রানীর জন্য উপহার হিসেবে নিয়ে আসে চা। ১৬৬৯ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী সরকারকে বুঝিয়ে, সকল চা আমদানীকারককে নিষিদ্ধ করাতে রাজি করে এবং নিজেরা একচেটিয়া আমদানিকারক হিসেবে আবির্ভুত হয়। ১৭০০ শতাব্দীতে একজন ইংরেজ বছরে গড়ে দুই পাউন্ড চা পান করতো যা পরবর্তী দশ বছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছিল পাঁচ গুণ।

১৮০০ শতকের মাঝামাঝি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী চীনের সাথে তাদের চায়ের বাণিজ্য সম্পর্ক হারায় তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চার্লস গ্রে কর্তৃক প্রণীত একটি আইন দ্বারা। পরবর্তীতে চার্লস গ্রে আর্ল গ্রে উপাধি প্রাপ্ত হন এবং চায়ের একটি ব্লেন্ডও তৈরী হয় আর্ল গ্রে নামে।

চীনের সাথে বাণিজ্য হারানোর পর ব্রিটিশরা রবার্ট ফরচুন নামে একজন ব্যক্তিকে চীনা পোশাক পরিয়ে নিষিদ্ধ চা অঞ্চল চীনে পাঠায়। রবার্ট ব্যাটা খুবই সতর্কতার সাথে চীনে চা উৎপাদন পর্যবেক্ষণ করে এবং যথেষ্ট পরিমান চায়ের বীজ নিয়ে ব্রিটিশ ভারতে ফেরত আসে। ১৮৩৫ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ভারতের আসাম অঞ্চলে চা রোপন এবং উৎপাদন শুরু করে। এবং ১৮৩৯ সালে তারা মোটামুটি উন্নত প্রজাতির কালো চা বা ব্ল্যাক টি উৎপাদন করতে সক্ষম হয়। ব্ল্যাক টি’র একটি নতুন বাজার তৈরী হলো যা ভারতে উৎপাদিত এবং যা ছিল চীনের চাইতে উন্নত মানের মোটা দানার কালো চা। যদিও এই উৎপাদন একটি সাফল্য বলে বিবেচিত হয়েছিল কিন্তু এই কালো চায়ের স্বাদ ছিল চীনে উৎপাদিত কালো চায়ের চাইতে কিছুটা তিক্ত, ফলে এর স্বাদ বৃদ্ধিতে প্রয়োজন ছিল আরও গবেষণা।

সময়ের সাথে সাথে চা আরও মিহি হতে থাকলো এবং ব্রিটিশ রাজের প্রথম চা লন্ডনে বিক্রি হলো ১৮৩৯ সালে। দিনে দিনে ভারতের চা আরও উন্নত হতে থাকলো এবং ১৮৮৬ সাল নাগাদ ব্ল্যাক টি’র বাজার দখল করে নিলো। ঠিক এই বছরেই চীন তার কালো চায়ের মুকুট হারালো।

চীনজাতীয় গাছের পাতা স্বাদ ও গন্ধের জন্য সুখ্যাত। কিন্তু আসামজাতীয় গাছের পাতা রঙের জন্য বিখ্যাত। এই দুই ধরণের চা-পাতার উন্নত সংমিশ্রণের উপরই এর গুণাগুন নির্ভর করে। স্বভাবতঃই চা মিশ্রণ একটি নিপুণতা ও অত্যন্ত কঠিন কাজ। তাই এটি অভিজ্ঞ ব্যক্তির দ্বারা সম্পাদনা করতে হয়। এরূপভাবে চা মিশ্রণে নৈপুণ্যতা লাভের প্রেক্ষাপটে লিপটন, ব্রুকবণ্ড প্রভৃতি চা প্রস্তুতকারক কোম্পানীগুলো বিশ্ববাজার দখল ও খ্যাতি লাভ করেছে।

যেকোনো মৌসুমেই চা একটি সুস্বাদু পানীয় তা সে বরফ শীতল কিংবা গরম যেমনই হোক। আর এর উপকারিতা আপনার দেহ এবং মনকে চাঙ্গা করা ছাড়াও আরও বিস্তৃত। বেশ কিছু গবেষণা থেকে জানতে পারি, চা পান আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্যও বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

চায়ে রয়েছে `অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট’ যা আপনাকে রাখে চির তরুণ। আর আপনার শরীরকে রক্ষা করে দূষণ থেকে।
চায়ে ক্যাফেনের পরিমান অনেক কম আর তাই চা পান আপনার স্নায়ুতন্ত্রে কোনো রকম খারাপ প্রতিক্রিয়া করে না।
চা হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানতে পারি যে, যাঁরা দৈনিক এক থেকে তিন কাপ সবুজ চা পানে অভ্যস্ত তাঁদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি প্রায় কুড়ি শতাংশ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি প্রায় পঁয়ত্রিশ শতাংশ কম। আর যাঁরা দৈনিক চার কাপ বা তার বেশি সবুজ চা পান করেন তাঁদের হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ছাড়াও কোলেস্টেরল সমস্যা কমিয়ে দেয় প্রায় বত্রিশ শতাংশ।
নিজের ওজন নিয়ে হাঁসফাঁস করছেন? দুশ্চিন্তার কিছু নেই। প্রতিদিন যথেষ্ট পরিমান চা পান করুন, ওজন এমনিতেই কমে যাবে। আর হ্যাঁ, চা কিন্ত ওজন কমানোর অন্যান্য যে কোনো ওষুধের চাইতে নিরাপদ যার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
বয়স হচ্ছে। হাড় ক্ষয়ে যাবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি পশুদের উপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে যে, সবুজ চা হাড়ের ক্ষয় রোধে বেশ কার্যকরি। সুতরাং লৌহ সবল হাড় পেতে পান করুন সবুজ চা।
শীতে বেজায় ঠোঁট ফাটলে মানুষ যেরকম হাসে, এই বয়সে আপনার হাসিও সেইরকম? দাঁত ক্ষয়ে যাবার কারণে প্রাণ খুলে হাসতে পারছেন না? চা কিন্তু আপনার হাসি উজ্জ্বল রাখতে পারে। জাপানি গবেষকরা জানাচ্ছেন, চা দাঁতের ক্ষয়ে যাওয়া রোধ করে, আপনি যখন চা পান করেন তখন তা আপনার মুখের pH পরিবর্তন করে এবং ক্যাভিটি থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও চা দাঁতের এনামেলকে ক্ষয়ের হাত থেকে বাঁচায়।
চা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে। গবেষণা মতে, চা রোগ প্রতিরোধ করার কোষ সমূহকে দ্রুত প্রস্তুত করে তোলে যাতে করে এরা রোগ প্রতিরোধের লক্ষ্যে কার্যকরী হতে পারে।
ধারণা করা হয় চা ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধ করতে পারে তবে এই ব্যাপারে যে গবেষণা হয়েছে তাতে মিশ্র ফলাফল পাওয়া যায়। চায়ের এই উপকারিতার ব্যাপারে স্বীদ্ধান্ত নিতে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় ।
ভেষজ চা হজম সংক্রান্ত সমস্যা প্রশমিত করে। হজমের সমস্যা থাকলে ভেষজ চা যেমন উপকার করে আবার আদা দিয়ে চা বমি বমি ভাবকে রোধ করে।

চা গাছ হতে পাতা সংগ্রহ করতে ব্যক্তিকে যথেষ্ট নৈপুণ্যতা ও দক্ষতা অর্জন করতে হয়। কারণ দু’টি পাতা ও একটি কুঁড়ি একসঙ্গে তুলতে না পারলে চায়ের উৎকর্ষতা ও আমেজ অনেকাংশেই নষ্ট হয়ে যায়। চীন ও জাপানে বছরে গড়পড়তা তিনবার চা-পাতা সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু ভারত, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কায় খুব ঘন ঘন পাতা সংগ্রহ করা যায়। এদেশগুলোতে বছরে গড়ে ষোল থেকে বিশ বার পর্যন্ত চা পাতা সংগ্রহ করতে দেখা যায়।

অনেকক্ষন কষ্ট করে পড়লেন, এবার এককাপ চা খাওয়ান :)
চা পানিয়টা আমার পছন্দ ছিল না কোনকালেই, ইদানিং মাগনা চা খাইতে খাইতে চা খাওয়ার একটা পাতি অভ্যাস আমার আপনাআপনি হয়ে উঠেছে, কিছু করার নাই শুনেছি ইংরেজরা নাকি এমনেই ফ্রী খাওয়াইতে খাওয়াইতে আমাদের অভ্যাসটাও
ইমুন বানাইলাইছে,
সময় থাকলে আসেন কিছু জ্ঞান চা খাই

চা আবিষ্কার করেন ২৭৩৭ খ্রিষ্টপুর্বাব্দে মহান চৈনিক শাসক শেন নাং( উচ্চারণটা শেনাং হতে পারে। চৈনিক নামগুলো উচ্চারণ করতে গেলে অধিকাংশ সময় আমি ক্লান্ত বোধ করি।)। শেন তার সাম্রাজ্যে এই বলে ডিক্রি করেন যে তার প্রজাদের সবাইকে জলপানের পূর্বে অবশ্যই সেটা ফুটিয়ে নিতে হবে। তিনি নিজেই সবসময় ফোঁটানো পানি পান করতেন। একদিনের কথা, শেন তখন চীনের জুন্নান প্রদেশে অবস্থান করছেন। যাত্রাপথে এক বনানীর নিচে যাত্রা বিরতি করা হলো। খোলা প্রান্তরে গাছের ছায়ায় বসে আছে সবাই। কেউ বিশ্রাম করছে, কেউ খাবারের ব্যবস্থা করছে। জলপাত্রে পানি ফুটানো হচ্ছে। রাজকীয় ফরমান সে তো আর বৃথা যেতে পারেনা। বাংলাদেশে সংসদে যারা আইন পাশ করেন তারাই কিন্তু আবার সেই আইনকে অশ্রদ্ধা করেন। শেনের রাজ্যে তা হবার জো নেই। তাই পানিকে ফুটতেই হবে। পানির স্ফূটনাংক ১০০ ডিগ্রি সেন্ট্রিগ্রেড। মৃদুমন্দ বাতাস বইছে। মনটাও ফুরফুরে হয়ে গেলো। গলা ছেড়ে গান গাওয়ার জন্য পারফেক্ট সময়।
হঠাৎ বাতাস পাশের ঝোপ থেকে কিছু পাতা উড়িয়ে এনে ফুটন্ত পানির ভিতর ফেলল। পাতাটাকে তুলে ফেলার চেষ্টা করার আগেই সেটা জলে দ্রবীভূত হয়ে গেছে। জলের রং বদলে গেলো। কৃষি এবং ভেষজ চিকিৎসায় শেনের ব্যাপক আগ্রহ ছিলো।
শেন কৌতূহলী হয়ে জলের ঘ্রাণ শুঁকে দেখেন অন্যরকম এক মাদকতা ছড়ানো গন্ধ। তিনি এটার স্বাদ নিলেন। প্রথম মানুষ চায়ের স্বাদ নিলো। তারপর তো রীতিমত চায়ের প্রেমে পড়ে গেলো। টি এর বাংলা হিসেবে আমরা চা ব্যবহার করি। চা কিন্তু বাংলা শব্দ না। চা চীনা শব্দ।
শাং শাসনামলে (১৫০০-১০৪৬ খ্রিষ্টপুর্বাব্দ) চা পাতার রস ঔষধি পানীয় হিসেবে সেবন করা হত। সিচুয়ান প্রদেশের লোকেরা প্রথম চা পাতা সিদ্ধ করে ঘন লিকার তৈরী করা শেখে।
খ্রিষ্টাব্দ ৪০০ শতকে চীনা অভিধানে চা স্থান পায় `কুয়াং ইয়া’ নামে। সেইসাথে বর্ণনা দেওয়া হয় চা তৈরীর পদ্ধতি। ৪০০ থেকে ৬০০ খ্রিষ্টাব্দ, এই সময় কালে চীনারা শুরু করে নানা রকম পরীক্ষা নিরীক্ষা। এরা চায়ের সাথে আদা, নানা রকম মশলা এবং কমলার রস মিশিয়ে চাকে আরও সুস্বাদু করার চেষ্টা করে। সেই সময় থেকে চীনারা বিশ্বাস করতে শুরু করে, চা হচ্ছে রোগ নিরাময়ে এক মহৌষধ।

৪৭৯ খ্রীষ্টাব্দের দিকে চায়ের খ্যাতি ছড়িয়ে পরে তুরস্ক পর্যন্ত এবং শুরু হয় চায়ের ব্যবাসায়ীক লেনদেন। ৫৯৩ খ্রিস্টাব্দে চায়ের ইতিহাস ছড়িয়ে পরে চীন থেকে জাপান পর্যন্ত যেখানে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা চা পানে আসক্ত হয়ে পড়েন। এই জাপানি ভিক্ষুরা প্রায় তাঁদের ভ্রমণের সময় চায়ের বীজ বহন করার স্বাক্ষী হয়ে আছেন।

৬৪৮ থেকে ৭৪৯ খ্রিষ্টাব্দ, এই সময়কালে গোয়োকি নামে এক জাপানি ভিক্ষু ৪৮ টি বৌদ্ধ মন্দিরে চা বাগান করার স্বীদ্ধান্ত নেন। সেই সময় জাপানের সাধারণ মানুষ চা সমন্ধে কিছুই জানতো না। চা পান সীমাবদ্ধ ছিল শুধুমাত্র উচ্চ পর্যায়ের ভিক্ষু এবং সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে।
৭২৯ খ্রীষ্টাব্দের দিকে জাপানিরা তৈরী করে গুঁড়ো চা, জাপানি ভাষায় যাকে বলা হয় `হিকি অচ্চা’। এই গুঁড়ো চা বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং জাপান সম্রাটের কাছে অতি প্রিয় পানীয় বলে বিবেচিত হতো। ৭৮০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে চা পুরো চীনে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করে এবং চীন সম্রাট জনগণের উপর চা কর প্রবর্তন করেন।

৭৮০ খ্রিস্টাব্দে তাং রাজবংশের সময় চীনা কবি লু ইউ, চা নিয়ে সর্ব প্রথম একটি প্রবন্ধ লিখেন `চা জিং’ (চা ক্লাসিক) নামে। তখন থেকে প্রতি বসন্তে চীনা কৃষক কর্তৃক সম্রাটকে তাদের উৎপাদিত সর্বোৎকৃষ্ট চা উপহার দেয়ার প্রচলন শুরু হয়। তখনকার দিনে পরিবহনের সুবিধার্থে চা পাতাকে দুই ইঁটের মাঝখানে ফেলে টুকরো করা হতো। তারপর সুবিধামতো এই চা পাতার টুকরো গুলোকে গুঁড়ো করা হতো।

চায়ের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে তাং রাজবংশের লু তাং লিখেছিলেন :

“প্রথম পেয়ালা ভেজায় আমার ওষ্ঠ এবং কণ্ঠ;

দ্বিতীয় পেয়ালা ঘোঁচায় আমার একাকীত্ব;

তৃতীয় পেয়ালা খুঁজে ফিরে আমার অনুর্বর রন্ধ্র আর তুলে আনে সহস্র ভুলে যাওয়া স্মৃতি;

চতুর্থ পেয়ালা করে কিঞ্চিৎ ঘর্মাক্ত আর জীবনের ভুলগুলো বেরিয়ে যায় লোমকূপ দিয়ে;

পঞ্চম পেয়ালায় হয়ে যায় শুদ্ধ আমি;

ষষ্ঠ পেয়ালা আমায় ডেকে নেয় অমরত্বের রাজ্যে।

সপ্তম পেয়ালা – আহ্ !, আর তো পারি না সইতে আমি !

আমার দুই বাহু ছুঁয়ে যাওয়া শীতল বাতাসের নিঃস্বাস টের পাই কেবলই।

দিব্যধাম কোথায়? এই মৃদুমন্দ বাতাসে আমাকে উড়িয়ে নাও সেথা আর আর ছিটিয়ে দাও এর শীতলতা”।

১৬১০ সালের দিকে ইউরোপে চায়ের প্রবেশ ঘটে পর্তুগীজদের হাত ধরে । শীতের দেশে উষ্ণ চায়ের কাপ প্রাণে স্ফুর্তির জোয়ার নিয়ে এলো। আজ থেকে আনুমানিক আড়াইশো বছর পুর্বে এশিয়ার অনেক দেশে চা পাতার তৈরী ইট মুদ্রার বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হত। এ থেকে সহজেই বোঝা যায় তৎকালীন সময়ে চায়ের কদর বোঝা যায়। ১৭০০ সালের দিকে ব্রিটেনে চা জনপ্রিয় হয়। ইংরেজদের হাত ধরে চা ভারতীয় উপমহাদেশে প্রবেশ করে। তারা ভারতের আসাম রাজ্যে চায়ের চাষ শুরু করে। চা উৎপাদনে চীনের একক আধিপত্যকে খর্ব করতে বিলাতিরা ভারতে চা চাষ শুরু করে। প্রথম দিকে এংলো ইন্ডিয়ানরাই চা ব্যবসা শুরু করে পরে ভারত স্বাধীনতা লাভ করার পর চা শিল্প দেশীয়দের হাতে বিকশিত হয়। আসাম থেকে ছড়িয়ে পড়ে দার্জিলিং, কেরালা, বাংলায়। ভারত পৃথিবীর এখন প্রধান চা উৎপাদনকারী দেশ। বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে আছে নয়নাভিরাম চা বাগান। পৃথিবীর অধিকাংশ বৃষ্টিবহুল দেশে এখন চা উৎপন্ন হয়। ইরানের নাম মনে আসলে আমাদের অবশ্যই চোখের সামনে মরু উদ্যানের কথা ভেসে উঠবে। সেই ইরানের গিলান প্রদেশে আছে শ্যামল চায়ের বাগান।

১৬১৮ সালে রাশিয়া সর্বপ্রথম চায়ের সাথে পরিচিত হয়। চীনা রাষ্ট্রদূত রাশিয়ার জার এলিক্সারের জন্য উপহার হিসেবে নিয়ে যান চা এবং জার তা প্রথমে গ্রহণ করলেও এর মূল্য না জানার কারণে তা ফেরতও দেন।

১৬০০ শতকে চা পা রাখে পশ্চিমাদের উঠোনে। তখন কেবল সুগন্ধীযুক্ত সবুজ চাই ছিল তাঁদের তৃষ্ণা নিবারণের উপায়। এখনকার মতো মোটা দানার কালো চা বা ব্ল্যাক টি তখনও আবিষ্কার হয়নি। এই শতকেই শুরু হয় চায়ের একচেটিয়া বানিজ্যিকরণ। বেনীয়া গোষ্ঠী ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ১৬৬৪ সালে ব্রিটিশ রাজা এবং রানীর জন্য উপহার হিসেবে নিয়ে আসে চা। ১৬৬৯ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী সরকারকে বুঝিয়ে, সকল চা আমদানীকারককে নিষিদ্ধ করাতে রাজি করে এবং নিজেরা একচেটিয়া আমদানিকারক হিসেবে আবির্ভুত হয়। ১৭০০ শতাব্দীতে একজন ইংরেজ বছরে গড়ে দুই পাউন্ড চা পান করতো যা পরবর্তী দশ বছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছিল পাঁচ গুণ।

১৮০০ শতকের মাঝামাঝি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী চীনের সাথে তাদের চায়ের বাণিজ্য সম্পর্ক হারায় তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চার্লস গ্রে কর্তৃক প্রণীত একটি আইন দ্বারা। পরবর্তীতে চার্লস গ্রে আর্ল গ্রে উপাধি প্রাপ্ত হন এবং চায়ের একটি ব্লেন্ডও তৈরী হয় আর্ল গ্রে নামে।

চীনের সাথে বাণিজ্য হারানোর পর ব্রিটিশরা রবার্ট ফরচুন নামে একজন ব্যক্তিকে চীনা পোশাক পরিয়ে নিষিদ্ধ চা অঞ্চল চীনে পাঠায়। রবার্ট ব্যাটা খুবই সতর্কতার সাথে চীনে চা উৎপাদন পর্যবেক্ষণ করে এবং যথেষ্ট পরিমান চায়ের বীজ নিয়ে ব্রিটিশ ভারতে ফেরত আসে। ১৮৩৫ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ভারতের আসাম অঞ্চলে চা রোপন এবং উৎপাদন শুরু করে। এবং ১৮৩৯ সালে তারা মোটামুটি উন্নত প্রজাতির কালো চা বা ব্ল্যাক টি উৎপাদন করতে সক্ষম হয়। ব্ল্যাক টি’র একটি নতুন বাজার তৈরী হলো যা ভারতে উৎপাদিত এবং যা ছিল চীনের চাইতে উন্নত মানের মোটা দানার কালো চা। যদিও এই উৎপাদন একটি সাফল্য বলে বিবেচিত হয়েছিল কিন্তু এই কালো চায়ের স্বাদ ছিল চীনে উৎপাদিত কালো চায়ের চাইতে কিছুটা তিক্ত, ফলে এর স্বাদ বৃদ্ধিতে প্রয়োজন ছিল আরও গবেষণা।

সময়ের সাথে সাথে চা আরও মিহি হতে থাকলো এবং ব্রিটিশ রাজের প্রথম চা লন্ডনে বিক্রি হলো ১৮৩৯ সালে। দিনে দিনে ভারতের চা আরও উন্নত হতে থাকলো এবং ১৮৮৬ সাল নাগাদ ব্ল্যাক টি’র বাজার দখল করে নিলো। ঠিক এই বছরেই চীন তার কালো চায়ের মুকুট হারালো।

চীনজাতীয় গাছের পাতা স্বাদ ও গন্ধের জন্য সুখ্যাত। কিন্তু আসামজাতীয় গাছের পাতা রঙের জন্য বিখ্যাত। এই দুই ধরণের চা-পাতার উন্নত সংমিশ্রণের উপরই এর গুণাগুন নির্ভর করে। স্বভাবতঃই চা মিশ্রণ একটি নিপুণতা ও অত্যন্ত কঠিন কাজ। তাই এটি অভিজ্ঞ ব্যক্তির দ্বারা সম্পাদনা করতে হয়। এরূপভাবে চা মিশ্রণে নৈপুণ্যতা লাভের প্রেক্ষাপটে লিপটন, ব্রুকবণ্ড প্রভৃতি চা প্রস্তুতকারক কোম্পানীগুলো বিশ্ববাজার দখল ও খ্যাতি লাভ করেছে।

যেকোনো মৌসুমেই চা একটি সুস্বাদু পানীয় তা সে বরফ শীতল কিংবা গরম যেমনই হোক। আর এর উপকারিতা আপনার দেহ এবং মনকে চাঙ্গা করা ছাড়াও আরও বিস্তৃত। বেশ কিছু গবেষণা থেকে জানতে পারি, চা পান আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্যও বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

চায়ে রয়েছে `অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট’ যা আপনাকে রাখে চির তরুণ। আর আপনার শরীরকে রক্ষা করে দূষণ থেকে।
চায়ে ক্যাফেনের পরিমান অনেক কম আর তাই চা পান আপনার স্নায়ুতন্ত্রে কোনো রকম খারাপ প্রতিক্রিয়া করে না।
চা হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানতে পারি যে, যাঁরা দৈনিক এক থেকে তিন কাপ সবুজ চা পানে অভ্যস্ত তাঁদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি প্রায় কুড়ি শতাংশ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি প্রায় পঁয়ত্রিশ শতাংশ কম। আর যাঁরা দৈনিক চার কাপ বা তার বেশি সবুজ চা পান করেন তাঁদের হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ছাড়াও কোলেস্টেরল সমস্যা কমিয়ে দেয় প্রায় বত্রিশ শতাংশ।
নিজের ওজন নিয়ে হাঁসফাঁস করছেন? দুশ্চিন্তার কিছু নেই। প্রতিদিন যথেষ্ট পরিমান চা পান করুন, ওজন এমনিতেই কমে যাবে। আর হ্যাঁ, চা কিন্ত ওজন কমানোর অন্যান্য যে কোনো ওষুধের চাইতে নিরাপদ যার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
বয়স হচ্ছে। হাড় ক্ষয়ে যাবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি পশুদের উপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে যে, সবুজ চা হাড়ের ক্ষয় রোধে বেশ কার্যকরি। সুতরাং লৌহ সবল হাড় পেতে পান করুন সবুজ চা।
শীতে বেজায় ঠোঁট ফাটলে মানুষ যেরকম হাসে, এই বয়সে আপনার হাসিও সেইরকম? দাঁত ক্ষয়ে যাবার কারণে প্রাণ খুলে হাসতে পারছেন না? চা কিন্তু আপনার হাসি উজ্জ্বল রাখতে পারে। জাপানি গবেষকরা জানাচ্ছেন, চা দাঁতের ক্ষয়ে যাওয়া রোধ করে, আপনি যখন চা পান করেন তখন তা আপনার মুখের pH পরিবর্তন করে এবং ক্যাভিটি থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও চা দাঁতের এনামেলকে ক্ষয়ের হাত থেকে বাঁচায়।
চা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে। গবেষণা মতে, চা রোগ প্রতিরোধ করার কোষ সমূহকে দ্রুত প্রস্তুত করে তোলে যাতে করে এরা রোগ প্রতিরোধের লক্ষ্যে কার্যকরী হতে পারে।
ধারণা করা হয় চা ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধ করতে পারে তবে এই ব্যাপারে যে গবেষণা হয়েছে তাতে মিশ্র ফলাফল পাওয়া যায়। চায়ের এই উপকারিতার ব্যাপারে স্বীদ্ধান্ত নিতে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় ।
ভেষজ চা হজম সংক্রান্ত সমস্যা প্রশমিত করে। হজমের সমস্যা থাকলে ভেষজ চা যেমন উপকার করে আবার আদা দিয়ে চা বমি বমি ভাবকে রোধ করে।

চা গাছ হতে পাতা সংগ্রহ করতে ব্যক্তিকে যথেষ্ট নৈপুণ্যতা ও দক্ষতা অর্জন করতে হয়। কারণ দু’টি পাতা ও একটি কুঁড়ি একসঙ্গে তুলতে না পারলে চায়ের উৎকর্ষতা ও আমেজ অনেকাংশেই নষ্ট হয়ে যায়। চীন ও জাপানে বছরে গড়পড়তা তিনবার চা-পাতা সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু ভারত, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কায় খুব ঘন ঘন পাতা সংগ্রহ করা যায়। এদেশগুলোতে বছরে গড়ে ষোল থেকে বিশ বার পর্যন্ত চা পাতা সংগ্রহ করতে দেখা যায়।

অনেকক্ষন কষ্ট করে পড়লেন, এবার এককাপ চা খাওয়ান :)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৪৫

প্রামানিক বলেছেন: চা নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোষ্ট। অনেক কিছু জানা হলো। ধন্যবাদ আপনাকে।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:১৭

একজন নিশাদ বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ প্রিয় প্রামাণিক ভায়া

২| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:০৪

আশফাক ওশান বলেছেন: ভালো লাগলো।এইযে নেন আপনার এক কাপ চা :D

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৩

একজন নিশাদ বলেছেন: আহ বেশ ভালই লাগছে চা পেয়ে, আপনি অনেক দিন বাঁচুন ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.