নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাস্তিকরা বঁদড়ামি করবো আর আমি নিশ্চিন্তে বেহেশতে চইলা যাওয়ার ধান্দা করমু ! কক্ষনো না, বরং আমি এই কুলাংগার গুলারে জাহান্নাম পর্যন্ত ধাওয়া করমু, ওগো লগে জাহান্নামে ঢুকমু, ওগো আগুনের চাপাতি দিয়া কুপামু.......এর পরে আমার কইলজা ঠান্ডা হইবো।

চেংকু প্যাঁক

চেংকু প্যাঁক › বিস্তারিত পোস্টঃ

৭১ এ অপকর্মের জন্য পাকিস্তান মাফ চেয়েছিল

২১ শে জুন, ২০১৭ রাত ৩:০৫

সাধারণে একটা কথা প্রচলিত আছে যে, ১৯৭১ সালের কৃত অপকর্মের জন্য পাকিস্তান এখনো ক্ষমা চায়নি। আসলে ক্ষমা তারা চেয়েছিল। ব্যক্তিগতভাবে পাকিস্তানীর সাথে কথা হলে, প্রায় সবাই সরি বলে। সিভিল সোসাইটি, সাংবাদিক অনেকেই এই বিষয়ে লেখালেখি করেছে। সরকারী ভাবেও একাধিক বার ক্ষমা চেয়েছে পাকিস্তান। একবার আওয়ামীলীগ সরকারের সময়, আরেকবার বিএনপি সরকারের সময়।
প্রথমবার ক্ষমা চেয়েছিলেন স্বাধীনতা উত্তর প্রথম পাক প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো।পুরো ক্রাইসের মূল হোতা ছিল এই লোকটি। তিনি ১৯৭৪ সালে যখন বাংলাদেশে আসেন তখন রাসুল (সঃ) এর নামে তওবা করে ক্ষমা চেয়ে বলেছিলেন;
“In the name of the last prophet, I say toba (sorry) to you.” With these words, Prime Minister Zulfikar All Bhutto of Pakistan last week asked forgiveness from the Bengali people for atrocities committed by the Pakistani Army during the Bangladesh struggle for independence. Mr. Bhutto arrived in Bangladesh to seek reconciliation between his country and its severed province.
Though he had been jeered by demonstrators as “Murderer Bhutto” earlier, he blamed the army's actions on the military regime his Government replaced. “Do not equate us with those who ruled over us and you,” he said, in a speech that moved many to tears. “We share your grief and sorrow, condole with you and lament the losses.” (১)
অনেকে আবার বলেন, সে তো আর্মির কেউ ছিলনা। আর্মির কেউ কি ক্ষমা চেয়েছে তাঁদের কুকর্মের জন্য? আসলে চেয়েছিল। দ্বিতীয়বার ক্ষমা চেয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ।তিনি পাক আর্মি প্রধান ছিলেন। ২০০২ সালে তিনি বাংলাদেশ সফর করতে এসে দুই বার ক্ষমা চেয়ে বলেছিলেন; "Your brothers and sisters in Pakistan share the pain of the events in 1971, The excesses committed during the unfortunate period are regretted. Let us bury the past in the spirit of magnanimity. Let not the light of the future be dimmed." (২)
এই বিষয়টি বারবার সামনে আনার হাকিকত আছে। মুক্তিযুদ্ধে নিহতদের প্রতি ভালবাসা থেকে এটা করা হয়ে থাকে মনে হলেও, বিষয়টা আসলে তা না। এই বিষয় সামনে আনার মূল উদ্দেশ্য পাকিস্তানের প্রতি ঘৃণা চর্চাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া।ভালবাসা দেখাতে গিয়ে ঘৃণার চর্চা? এক সাথে চলে ভালবাসা এবং ঘৃণা? গবেষক আনোয়ার মোহাম্মদ এই বিষয়টা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে পর্যবেক্ষণ করেন;
''আজ পাকিস্তানীদেরকে কাছে না পেয়ে আমরা নিজেরাই নিজেদেরকে ঘৃণা করছি এবং রাজনৈতিকভাবে প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে ‘ঘৃণার চর্চা’ করার জন্য।ক্ষেত্র বিশেষে মুক্তিযুদ্ধ চর্চা আজ পরিণত হয়ে ঘৃণা চর্চায়!...এই ঘৃণার চর্চা পাকিস্তানিদের কিছুই করতে পারছেনা কিন্তু চর্চার একটা ফলাফল আছে আর সেটা হচ্ছ-যারা আওয়ামীলিগের বিরোধীতা করে তারাই মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী-তাদেরকে ঘৃণা করা মানেই হচ্ছে পাকিস্তানীদের ঘৃণা করা! এটাই হচ্ছে ঘৃণার আউটকাম।শুরু হয় এক জায়গায় আর গিয়ে পৌঁছে অন্য জায়গায়। শুরু হয় পাকিস্তানিদের প্রতি ঘৃণা করার শপথ নিয়ে আর শেষ হয় নিজের দেশের, ভাষার, ধর্ম ও সংস্কৃতির মানুষকে পাকিস্তানি বা তার দোসর বানিয়ে!'' (৩)
ভারত আর পাকিস্তানের খেলায় ভারতের পরাজয়ে ব্যথিত হৃদয় থেকে যে ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ দেখা যাচ্ছে,সেটার সংকট এই জায়গায়। এই বাঙালী জাতীয়তাবাদীরা ইতিহাসকে ৭১ সালের মধ্যে সীমাবন্ধ করে অতীতের সাথে সংযোগ হারিয়েছে। যার কারণে তারা ভুলে গেছে যে, পূর্ববঙ্গের কংগ্রেসী অভিজাত হিন্দুরা ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের সক্রিয় বিরোধিতা করেছিল, ভোট দিয়েছিল বাঙলা ভাগের জন্য।(৪) এরপরেও তারা পাকিস্তানে রাজনীতি করেছে, সংসদে নির্বাচিত হয়েছিল। তাঁদের সেসময়কার অবস্থানের জন্য বাঙালী মুসলমান ঘৃণার চর্চা জারি রাখেনি। কেননা সেটাকে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হিসেবেই মেনে নেয়া হয়েছিল। এমনকি ৭১ সালের পরও নেতৃত্ব স্থানীয় হিন্দুদের কয়েকজন বাংলাদেশকে ভারতের অঙ্গ রাজ্য করে নিতে ইন্দিরা গান্ধীকে প্রস্তাব দিয়েছিল। (৫) তথাপি, বাঙালী মুসলমান হিন্দুদেরকে গনহারে দেশ বিরোধী হিসেবে ঘৃণা করে না।
তাহলে, আজও কেন গুঁটি কয়েক অখন্ড পাকিস্তানবাদীর কর্মকান্ডের কারণে পুরো দেশকে 'আমরা' এবং 'ওরা' বিভাজনে বিভক্ত রাখা? আমাদের বিভাজনে যাদের লাভ হয় বেশি,তারাই এইসব বিষয়গুলো সামনে আনে বারবার।
নোটঃ
(১) GARY HOENIG, Headliners, Bhutto Apologizes, New York Times, June 30, 1974, Click This Link )
(২) Telegraph, Musharraf apology to Bangladesh, 31 Jul 2002, UK, Click This Link
(৩) আনোয়ার মোহাম্মদ, স্বাধীনতার ইতিহাস পাঠের নয়া পদ্ধতি, মূলধারা বাংলাদেশ, ০৩ জানুয়ারী ২০১৬, http://www.muldharabd.com/?p=183
(৪) নুরুল কবির, উপনিবেশবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও বাংলা ভাগ (পর্ব-২), মূলধারা বাংলাদেশ, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৬, http://www.muldharabd.com/?p=333
(৫) বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরপর ২৮ ডিসেম্বর চিত্তরঞ্জন সূতার নেতৃত্বে বাংলাদেশের তিনজন সংখ্যালঘু নেতা ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী’র সঙ্গে দেখা করে বাংলাদেশকে ভারতের অংশ করে রাখার প্রস্তাব রাখেন। তাদের প্রস্তাবের জবাবে ইন্দিরা গান্ধী বলেন, ইয়ে না মুমকিন হ্যায় [মাসুদুল হক, “বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ‘র’ এবং সিআইএ” (পঞ্চম সংস্করণ),প্রচিন্তা প্রকাশনী, ২০১১,পৃঃ ১৪০], উদৃত http://www.muldharabd.com/?p=1174

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জুন, ২০১৭ রাত ৩:১৭

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: পুরো দেশকে 'আমরা' এবং 'ওরা' বিভাজনে বিভক্ত রাখা? এটাই রাজনৈতিক কূটচাাল!! আর তাতেই, আমরা বিভক্ত!!

২| ২১ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৪:০৭

শরদিন্দু রূপক বলেছেন: আওয়ামীলীগ এর বিরোধিতা করা মানে মুক্তিযুদ্ধ এর বিরোধিতা করা!!!বর্তমানে ক্ষমতাসীন এই আওয়ামীলীগ তো শান্তি বা সৌহার্দের কথা বলেনা।ক্ষমতাধর কোনো দলই এখন আর নি:স্বার্থ নয়।নিজেদের আখের গোছানো আর গদি দখলই সবার মূল উদ্দেশ্য।এই আওয়ামীলীগ তো সেই একাত্তরের নায়ক,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর যথার্থ প্রতিনিধি নয়।তাহলে কেউ আওয়ামীলীগ এর বিরোধিতা করা আর মুক্তিযুদ্ধ এর বিরোধিতা করা কিভাবে সমার্থক হয়??

৩| ২১ শে জুন, ২০১৭ সকাল ১০:০৬

বরিষ ধারা বলেছেন: ''আজ পাকিস্তানীদেরকে কাছে না পেয়ে আমরা নিজেরাই নিজেদেরকে ঘৃণা করছি এবং রাজনৈতিকভাবে প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে ‘ঘৃণার চর্চা’ করার জন্য।ক্ষেত্র বিশেষে মুক্তিযুদ্ধ চর্চা আজ পরিণত হয়ে ঘৃণা চর্চায়!...এই ঘৃণার চর্চা পাকিস্তানিদের কিছুই করতে পারছেনা কিন্তু চর্চার একটা ফলাফল আছে আর সেটা হচ্ছ-যারা আওয়ামীলিগের বিরোধীতা করে তারাই মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী-তাদেরকে ঘৃণা করা মানেই হচ্ছে পাকিস্তানীদের ঘৃণা করা! এটাই হচ্ছে ঘৃণার আউটকাম।শুরু হয় এক জায়গায় আর গিয়ে পৌঁছে অন্য জায়গায়। শুরু হয় পাকিস্তানিদের প্রতি ঘৃণা করার শপথ নিয়ে আর শেষ হয় নিজের দেশের, ভাষার, ধর্ম ও সংস্কৃতির মানুষকে পাকিস্তানি বা তার দোসর বানিয়ে!''

৪| ২১ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ২:১৭

উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: পাকিস্তানীরা ৭১ এর আর্মির অপকর্মের কারনে মর্মাহত। এই বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। তবে ফর্মাল কোন বিবৃতি দিবে কিনা সন্দেহ। দায়ভার চাপিয়ে বাংলাদেশ যদি ক্ষতি পূরন চায় - এই ভয়ে হয়তবা তারা অফিসিয়াল ক্ষমা প্রার্থনার দিকে যাবে না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.